নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুজায়েত শামীম

শামীম সুজায়েত

ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার হাতেখড়ি।শুরু করা শখের বসে। একসময় তা নেশা থেকে পেশা।ব্যবস্থাপনায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে পছন্দের এ পেশায় কেটে গেলো অনেকটা সময়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা পড়েছে পেশাগত জীবনে চলার পথে পাওয়া নানা অসঙ্গতির চিত্র।এখন লেখালেখি করি নিজের আনন্দে, ক্লান্তিহীন ভাবে যা ভালো লাগে।আমার জন্ম ১৯৭৭ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি যশোর উপশহর আবাসিক এলাকায়। আমার শৈশব ও কলেজ জীবন কেটেছে এখানেই।জীবন জীবিকার তাগিদে এখন গঙ্গাবুড়ির আলোঝলমল শহরে্ কাটছে সারাবেলা। যোগাযোগ:ই মেইল : [email protected]হটলাইন : +ফেসবুক : https://www.facebook.com/sumon.sujayet জন্মদিন : 02.02.1977

শামীম সুজায়েত › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিনতি লতা (পর্ব - ০৭)

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৩



পর্ব - ০৬, আপলোড ২৪/০৯/২০১৩

------------------------------------------------------------------

লতাকে নিয়ে টুকটাক খবর বেরচ্ছে কাগজে। কোন কোন পত্রিকার ফলোআপ রিপোর্ট থাকছে রহস্যে ঘেরা। অহেতুক রঙ চড়িয়ে আকর্ষণ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে ফলোআপের কারণে এক ধরণের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে পুলিশের ওপর। এটা অবশ্যই ভাল একটা ব্যাপার। সবারই মনে পড়ে যাচ্ছে, খুঁজতে শুরু করছে।

সাংবাদিকরা যে মাঝের মধ্যে লেখার কিছু না পেয়ে ডেস্কমেট নিউজ তৈরি করে থাকেন, তা বরং উপকারেই আসে । মানুষকে মনে করিয়ে দেয়া হয়। আজ স্থানীয় একটি কাগজে লিখেছে,

পাঁচ মাসেও খোঁজ মেলেনি লতার

নিউজের প্রথম দুই প্যারায় লিখেছে, গৃহবধূ লতার রহস্যজনক নিখোঁজের পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কোন সন্ধান মেলেনি। অনুদঘাটিত রয়ে গেছে তার অন্তর্ধান রহস্য। তাকে ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় দিন কাটছে স্বামী দু:খবন্ধুর।



নীলফামারির ডিমলা উপজেলার নাউতাড়া গ্রামের কলেজ শিক্ষক দু:খবন্ধুর সুন্দরী স্ত্রী মিনতি লতা নিখোঁজ হন চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল। তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন বলে জানিয়েছেন নিখোঁজের স্বামী ডিমলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক দু:খবন্ধু।

দীর্ঘ পাঁচ মাসেও গৃহবধূ লতার খোঁজ না মেলায় বিষয়টি রহস্যজনক বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে পুলিশ। দাম্পত্য কলহর জের ধরে তাকে গুম করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আলাপকালে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, লতা নিখোঁজের পেছনে সম্ভাব্য কারণগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তাকে খুঁজে বের করতে না পারা পর্যন্ত অন্তর্ধানের নেপথ্য কারণ নিয়ে আগাম কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না।



এদিকে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা সোনিয়া জানান, প্রভাষক দু:খবন্ধুর স্ত্রী লতা মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার এক মাস আগে থেকেই তিনি একজন মনোচিকিৎসকের তত্ববধানে ছিলেন।



সকাল থেকে এই একই নিউজ যে কতবার পড়লাম, তা বলতে পারবোনা। তবে প্রতিবারেই নিউজের প্রথম দুই প্যারা শেষ করে থেমে যাচ্ছি। পরের অংশ পড়তে গেলে রাগ হচ্ছে । হাস্যকর সাংবাদিকতা ! যা মনে আসলো, তাই বানিয়ে বানিয়ে যেন লিখে দিলো পত্রিকাটি। পরকীয়া প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়ে দেয়ারও এক ধরণের অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল এর আগে প্রকাশিত অপর একটি ফলোআপ রিপোর্টে। লতা গুম হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কার কথা ইনিয়েবিনিয়ে বলা হয়েছে আজ প্রকাশিত রিপোর্টে। এটিই এখন সামনে খুলে বসে আছি।

কেন আমার দিকে এভাবে সন্দেহর তীর ছুড়ে দেয়া হলো?

জানিনা কেনো স্থানীয় কাগজগুলো মাঝের মধ্যে এ কাজটা করে। এস আই সোনিয়া একদিন বলছিলেন, ওই কাগজের ক্রাইম রিপোর্টারের মোবাইলে ২শ টাকার ফ্ল্যাক্সি লোড করে দিতে। এতে মিডিয়ার সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। তাতে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। সোনিয়াকেও নাকি মাঝের মধ্যে দু'একজন সাংবাদিককে এভাবে খুশি করাতে হয়। এতে করে তার কর্মতৎপরতার ভাল দিকগুলো কাগজে হাইলাইট হয়।

মিডিয়াতে কর্মরত নীলফামারির লোকজনের সাথে কি আমার খুব ঘনিষ্ঠতা রাখার দরকার আছে? না আমি রাজনীতি করি, না করি কোন অবৈধ কারবার। ঘুষ-দুর্নীতি করে টাকা কামানোর সুযোগতো শিক্ষকতা পেশায় নেই। তাছাড়া ব্যাপারটা এমন না যে লতাকে আমি হত্যা শেষে লাশ গুম করে দিয়েছি। অথবা আমার অবহেলা ও প্ররোচনায় সে আত্নহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। এখন টাকা বিলিয়ে পুলিশ ও মিডিয়ার মুখ বন্ধ করার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই । এসব তো কিছু ঘটেনি।

মাস দুই আগেও এধরণের নিউজের একটি প্রতিবাদ লিপি পাঠিয়েছিলাম পত্রিকা অফিসে । তারা আমার প্রতিবাদটি ছাপালেও হুবহু প্রকাশ করেনি। সেখান থেকে কয়েকটি লাইন ছেটে দেয়ায় দূর্বল হয়ে যায় প্রতিবাদের ভাষা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদকের কাছে গিয়ে নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে এসেছিলাম।



আজ প্রকাশিত ফলোআপ রিপোর্টের শেষ প্যারায় বলা হয়েছে, দু:খবন্ধু তাঁর শিক্ষকতা পেশা বিশেষ করে প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন বেশি। এতে করে স্ত্রী লতার সাথে তাঁর এক ধরণের দূরত্ব তৈরি হয়। সেটির প্রভাবও পড়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে।

যেন মনে হচ্ছে আমার বাড়ির পাশেই থাকতেন এই সাংবাদিক! কাছ থেকে নিজের চোখেই দেখেছেন আমাদের দাম্পত্য জীবন।



এরপর আরও দু-এক লাইন আছে প্রকাশিত সংবাদে। সেখানে নতুন কোন তথ্য নেই। অগ্রগতির কোন কথা লেখা নেই।

আজ সারাদিন বিভিন্ন চায়ের দোকানে, শিক্ষক মহলে এবং আমার প্রতিবেশীরাও প্রকাশিত ওই সংবাদের সত্যতা মেলাতে কত কিছু যে আলোচনা করতে থাকবেন, তা অল্প কথায় বলে শেষ করা যাবেনা।

নিশ্চিত বলতে পারি আমার নিকটতম প্রতিবেশী সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা হরিপদ বাড়িতে ফেরার সময় বগলচাপা করে নিয়ে আসবেন খবরের কাগজ। বউকে পড়ে শোনাবেন । ছেলে-মেয়েরাও শুনবে। পরের দিন সকালে সোমা বৌদিকে কাগজটা দেখাবে হরিপদর বউ।

লতার হারিয়ে যাওয়া নিয়ে এলাকার মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। কিন্তু ওদের কারোর উপলব্দিতে আসেনা আমার বুকের ভেতর চলতে থাকা ক্ষরণের যন্ত্রণা কত গভীর।



মানতে দোষ নেই, যেকোন নিখোঁজের ঘটনা কৌতুহল সৃষ্টি করে। হারিয়ে যাওয়া সেই মানুষটি নারী হলে অধিকাংশ মানুষ বেশি কৌতুহল দেখান। আর গৃহবধূ হলেতো কথায় নেই।



ইদানিং নিজের অজান্তেই ভগবানকে ডেকে ফেলছি । মনে পড়ে না স্কুলের গন্ডি পেরোবার পর নিজের জন্য ভগবানের কাছে কখনও কিছু চেয়েছি। সত্যি কথা বলতে কি ধর্মের নিয়ম বালাই আমাকে টানেনি কখনও। তাই বলে ধর্মহীন নই। স্থুল বস্তুবাদিও নই। নাস্তিকতাকে যে মনে মনে লালন করি, তাও নয় । বিশ্বাসের জায়গা এটুকুই যে দুনিয়া সৃষ্টির মালিক একজন। ধর্ম সৃষ্টিকারী অনেকজন। আমার আকুতি সেই সৃষ্টিকর্তার নিকট যার কাছে রয়েছে তাঁর সকল সৃষ্টির সমান গুরুত্ব। যার কাছে ধর্মের কোন ভেদাভেদ নেই। আজ আমি মনে প্রাণে তাঁর কাছে চাইছি, আমার সমস্ত কিছুর বিনিময়ে চাইছি।কথা দিলাম, বাকি জীবনে আর কিছুই চাইবো না। সুস্থ শরীরে আমার কাছে ফিরে আসুক মিনতি লতা।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৫

মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌ বলেছেন: অসাধারণ লেখনী!!! শামীম সুজায়েত ভাই, আপনি অনেক বড় মাপের একজন লেখক!!! বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে একজন দিকপাল হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা আপনি রাখেন!!! আন্তরিক অভিনন্দন!!! আমি মুগ্ধ!!!

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৬

শামীম সুজায়েত বলেছেন: সাইফুল্লাহ ভাই,
না ভাই, অনেক ক্ষুদ্র একজন মানুষ আমি । চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু হচ্ছেনা মনের মত। আপনি অনেক বেশি ফুলিয়ে ফাপিয়ে বলছেন ভাই!

ভাল থাকবেন।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২৭

শামীম সুজায়েত বলেছেন: Click This Link

২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

দারুণ

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫০

শামীম সুজায়েত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩২

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ৮ পর্ব
Click This Link

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭

মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌ বলেছেন: শামীম সুজায়েত ভাই, আমি শুধু শুধু ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলেছি কথাটা ঠিক নয়। আমি তাই লিখেছি আমার কাছে যা মনে হয়েছে!!! আপনি দুঃখবন্ধুর মনস্তত্ব এতটাই দক্ষতার সাথে এতটাই হৃদয়গ্রাহী এবং জীবন্ত করে লিখলেন সাংবাদিকদের কার্যকলাপ এত জিবন্তভাবে লিখলেন ঠিক যেমনটা বাস্তবে প্রায়সই ঘটে থাকে! আর এই প্রকাশটা এতটাই ব্যালেন্সড যে আমার মনে হল আমার নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া বিব্রতকর কোন অভিজ্ঞতার কথাই পড়ছি!!! আপনার এই গুন কি আপনার ভক্ত হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়? আর এই গুনটাই যে একজন বড় মাপের লেখকের পরিচায়ক এই কথা টা নিঃশ্চয় ভুল নয়!!!

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০১

শামীম সুজায়েত বলেছেন: সাংবাদিকদের কার্যকলাপ বাস্তবে আসলে এমনটি ঘটে। বিশেষ করে মফস্বলের সাংবাদিকতায় এধরণের অভিযোগ খুব বেশি শোনা যায়। আমি নিজেও মফস্বলে সাংবাদিকতা করে এসেছি বহু বছর।
নিজের সততা ধরে রাখতে পেরে প্রশংসিত হয়েছি।

যাইহোক, মিনতি লতা আপনার ভাল লাগছে জেনে অনেক অনেক খুশি হলাম। ভাল থাকবেন।

৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্রথম পর্ব থেকে পড়ে আসি, তারপর মন্তব্য করা যাবে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৭

শামীম সুজায়েত বলেছেন: আপনার ছোট গল্প শেকড় নীতি পড়ে আসলাম। আপনার লেখা অসাধারণ। অনেক বড় লেখা। তবুও একটানে পড়ে গেলাম।

"মিনতি লতা" গল্প নিয়ে আপনার মন্তব্যর অপেক্ষায় রইলাম। লেখায় থাকা অসঙ্গতি দূরিকরণে আপনার মন্তব্য সহায়ক হবে বলে মনে করছি।

ভাল থাকবেন।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৩

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ৮ম পর্ব
Click This Link

৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৪

ভিয়েনাস বলেছেন: ৭ম পর্ব পড়া হলেও ১ম পর্ব পড়া হয়নি। সময় সুযোগে পড়ে ফেলবো :)

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

শামীম সুজায়েত বলেছেন: সময় করে পড়ে নেবেন প্লিজ।

৬| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

স্বপনচারিণী বলেছেন: একজন সাংবাদিক কী না করতে পারে? তিল কে তাল! পর্ব ভাল লেগেছে।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৩

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ৮ম পর্ব
Click This Link

৭| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬

ঘাসফুল বলেছেন: প্লাস বাটন কাজ করে না, তাই মনে মনে প্লাস দিলাম :)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ৮ম পর্ব এখানে
Click This Link

৮| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এই পর্বটা ভালো লাগলো।

ভুল কম আছে বানানের।

কেনো আমার দিকে এভাবে সন্দেহর তির ছুড়ে দেয়া হলো? >

কেন, তীর

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:০৮

শামীম সুজায়েত বলেছেন: বানান ভুলের মধ্যেও যে ভাল লাগাতে পেরেছি, তাতেই আনন্দে আমার পা পড়ছে না মাটিতে!

ভাল থেকেন সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.