নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প, অনুভূতি আর জীবনের টুকরো কথা

সুম১৪৩২

আমি লিখি আমার দেখা, শোনা আর অনুভবের গল্প। কল্পনা আর বাস্তবের মিলনে গড়ে তুলি নতুন এক জগত। কলমে আমি হলো আমার একান্ত লেখা, শুধু আমার নিজের শব্দের ভুবন।

সুম১৪৩২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা : বই পড়া আর বুক পোড়া

২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:২৮




কিছুদিন ধরে বই পড়ার ভাগ্যটাই যেন রাগ করে বসে আছে আমার উপর। একটার পর একটা বই পড়ছি, কিন্তু একটা মন ভরানো বই পাচ্ছি না। পরপর তিনটা বই পড়ে শেষ করেছি—তিনটাই ফালতু।

এর মধ্যে একটা অনুবাদ। এত জঘন্য অনুবাদ, বর্ণনা করার ভাষা নাই! মনে হয়েছে, লেখক না—কোনো ফাঁকিবাজ ছেলে গুগল ট্রান্সলেটে কপি-পেস্ট মেরে, দুই মিনিটে অনুবাদ করে প্রেসে দিয়ে এসেছে। তারপর প্রকাশনীও চোখ বন্ধ করে বসে গেছে। পাণ্ডুলিপি না পড়েই প্রেসে বসিয়ে দিয়েছে। আর প্রেসও নিজের কাজ করে গেছে—মেশিন ঘুরেছে, শব্দ বেরিয়েছে, বই ছাপা হয়েছে। শেষমেশ আমরা পাঠকরা সেই “কপি-পেস্ট” পড়ছি!
ভাবছি, খুব শিগগিরই এই বইটার রিভিউ লিখব— যদি কিছু মানুষের সময় বাঁচে ।

দ্বিতীয় বইটার অবস্থা আরেক রকম। মনে হয়েছে, লেখক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে—একটা বিষয় মুখস্থ করেছে, তারপর সেই একই জিনিস বারবার লিখে ফেলেছে। যেন মুখস্থ নোট গিলিয়ে দিচ্ছে পাঠকদের। আর আমাদের প্রকাশনীগুলোও একই কাণ্ড। টাকা পেলেই খুশি! পাণ্ডুলিপি না পড়েই ছাপার মেশিন চালিয়ে দেয়। সেই মেশিনটা যদি একবার কথা বলতে পারত—মনে হয় চিৎকার করে উঠত,
“আমারে দিয়া এসব ফালতু জিনিস কেন ছাপাও!”
তারপর হয়তো রাগে বেলুনের মতো ফুলে যেত।

তৃতীয় বইটার গল্পটা খুবই —দুঃখজনকও । বইটার ইংরেজি ভার্সন আমি আগেই পড়েছি। লেখক শুধু সেটাকে একটু ঘুরিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছে। কেন করেছে জানি না। আমার মতে দুইটা কারণ হতে পারে—

প্রথমত, হয়তো সে চেয়েছিল মূল প্রকাশকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে, কিন্তু প্রক্রিয়াটা ঝামেলার বলে নিজেই নিজের অনুমতি দিয়ে দিয়েছে!

দ্বিতীয়ত, হতে পারে সে প্রকাশককে বলেইনি যে অন্যের গল্প কপি করে নিজের মতো করে লিখেছে।

যে কারণেই হোক, ফলাফল একটাই - বাংলাদেশে অনেক পাঠক আছেন যারা ইংরেজি বই পড়েন না। তাদের কাছে এই বইটা যেন একেবারে “ওয়াও!” — মনে হয়েছে দারুণ কিছু পড়ে ফেলেছেন। আবার আবার কারো কাছে, “মোটামুটি ভালোই।” কিন্তু যাদের হাতে আগে থেকেই বইটার ইংরেজি সংস্করণ পড়া, তাদের কাছে এই বইটা স্রেফ একটাই শব্দ— “চুরি।” তাদের চোখে লেখক যেন সেই চিরচেনা ছেলেটা, পরীক্ষার হলে বন্ধুর খাতা থেকে হুবহু নকল করে নিজের নামে জমা দিয়েছে—একটু শব্দ পাল্টে, নিজের হাতের লেখা বানিয়ে।

সাম্প্রতিক সময়ে নতুন প্রজন্মের অনেক লেখকের বই কিনেছি। পড়তেও শুরু করেছি। কিন্তু মন ভরছে না। বেশিরভাগ বই নিম্নমানের। কিছু বই মোটামুটি টাইপের, কিন্তু “ওয়াও!” বলার মতো কোনো বই এখনো পাইনি। তবুও পড়ছি—ভাবছি, হয়তো কোনো এক সকালে এমন একটা বই হাতে পাব, যেটা পড়ে বলব—‘এই তো! এমন কিছুই খুঁজছিলাম।’

শেষে মনে পড়ে যায় হুমায়ূন আহমেদের কথা—
“যে বই প্রথম পাঁচ পৃষ্ঠা আমার আগ্রহ ধরে রাখতে পারে না, সেই বই আমি পড়ি না।”

ভাবছি, আমিও বোধহয় সেই নিয়মটাই মেনে চলব এখন থেকে।

পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই—এখন অনেক প্রকাশনী আছে, যারা টাকার বিনিময়ে যা পায় তাই ছাপিয়ে ফেলে। ওদের নিয়ে আর কী-ই বা বলব!

আজকাল বেশিরভাগ পাঠক অনলাইনে বই কেনে। বইমেলায় গিয়ে ভালো-মন্দ আলাদা করা একটু ঝামেলার, কিন্তু অনলাইনে যারা বই বিক্রি করে, তারা যদি অন্তত ফালতু বইগুলো একটু ফিল্টার করত, তাহলে অনেক প্রকাশনী এত সহজে “যা পায় তাই ছাপানো”র সাহস পেত না।

আমি প্রায়ই এই কথা বলি—অনলাইন প্ল্যাটফর্মের রিভিউ আর পাঠক বিশ্লেষণে। জানি, আমার একার বলায় কিছু হবে না। তবুও বলি। যদি কখনও কাজ হয় , তাহলে অনেকের টাকা আর সময়—দুটোই বেঁচে যেত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৩:০৬

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: অনলাইন প্ল্যাটফর্মের রিভিউ আর পাঠক বিশ্লেষণ।
...............................................................................
দুটোই অনেক জরুরী
কারন আমরা সবাই সারাদিন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি
তাই পসন্দের বই সম্পর্কে রিভিও থাকলে খুবই ভালো হয় ।

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৯:১৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার বইয়ের গল্প শেয়ার করুন মাঝেমধ্যে। আপনি ধুমকেতুর মতো ব্লগে আবির্ভাব হয়েছেন গল্পকার হিসাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.