নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প, অনুভূতি আর জীবনের টুকরো কথা

সুম১৪৩২

আমি লিখি আমার দেখা, শোনা আর অনুভবের গল্প। কল্পনা আর বাস্তবের মিলনে গড়ে তুলি নতুন এক জগত। কলমে আমি হলো আমার একান্ত লেখা, শুধু আমার নিজের শব্দের ভুবন।

সুম১৪৩২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভালো আছি। ইদানীং একটু ভয় পাচ্ছি। তবে কালকে রাতের কিছু ঘটনায় ভয়টা আরও বেড়ে গেছে। ভয় থেকেই আপনাকে একটা ছোট চিঠি লিখলাম। এই চিঠিটা পারতাম আপনার ফেসবুকে দিতে, দিইনি—কারণ “ভারতীয় দালাল” শুনতে ভালো লাগে না।

দাদা, তাহলে শুরু করি—কেন এই চিঠিটা লিখলাম।

অনেক আগে আপনার একটি ফেসবুক পোস্টে আমি একটি মন্তব্য করেছিলাম। হুবহু কমেন্টটি এখন আর খুঁজে পাচ্ছি না, তাই সংক্ষেপে আবার বলছি—ভাবটা ঠিক এমনই ছিল।
“ আমি নিয়মিত আপনার ভিডিও দেখি। আপনার বিশ্লেষণ ও যুক্তিভিত্তিক আলোচনা আমার ভালো লাগে। কিন্তু একদিন একটি ভিডিওতে আপনি বলেছিলেন— “মজলুমের পাশে দাঁড়াতে হবে”—এই কথাটা আপনি ঢাকায় ব্যাটারি রিকশাওয়ালাদের প্রসঙ্গে বলেছেন।
দাদা, আপনার তো অনেক ছোট ভাই–বোন আছেন। এই কথাটা বলার আগে কি আপনি ব্যাটারি রিকশা নিয়ে ওদের কাছ থেকে বাস্তব কোনো তথ্য নিয়েছিলেন? আমার ধারণা, আপনি কোনো খোঁজ না নিয়েই একপেশে ওদের সাপোর্ট করে কথাটা বলে চলে গেছেন।
আমার ধারণা, রিকশা নিয়ে কারও কোনো আপত্তি নেই—আপত্তিটা ছিল ব্যাটারি রিকশা নিয়ে। দাদা, আপনার কথা অনেক মানুষ শোনে এবং গুরুত্ব দেয়। আপনি যদি ছোট করে একটা ভিডিও করে দেন এই ব্যাটারি রিকশা নিয়ে, তাহলে আমার ধারণা অনেকেই সেটা শুনবে। ব্যাটারি রিকশা যারা করে ফেলেছে, তাদের তো আর কিছু করার নেই—শুধু মাত্র এটুকু বলে দিন, আর কেউ যেন ব্যাটারি রিকশা না কিনে, এবং যারা কিনে ফেলেছে তারা যেন বেপরোয়া ভাবে না চালায়। আশা করি আমার এই অনুরোধটুকু রাখবেন। আমার ধারণা এই অনুরোধ শুধু আমার একার না—অনেকেরই এই অনুরোধ। ভালো থাকবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। “


এই কমেন্টের বিপরীতে আমাকে যা শুনতে হয়েছে, তা নিচে দিলাম। তার আগে কিছু বলার ছিল—
গতকাল রাতে তিনটি জায়গায় আক্রমণ হয়েছে—এর মধ্যে প্রথম আলো, The Daily Star ও ছায়ানট । ছায়ানট ভবনে আক্রমণ হয় রাত দেড়টার দিকে, এবং সেখানে ভাঙচুর ও লুটপাটও হয়েছে। আসলে সব ভবন থেকেই আপনার ভাই–ব্রাদারেরা আক্রমণের পাশাপাশি লুটপাটও করেছে। ওইখানে আপনার ভাই–ব্রাদারেরা ছিল না—এই কথা বলার কোনো অবকাশ নেই। কারণ আপনার অসংখ্য ভিডিওতেই প্রমাণ আছে, যেখানে আপনি ওই তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওপর সরাসরি আক্রমণ করে কথা বলেছেন।

আপনি জানেন—শুক্র ও শনিবার ছায়ানট এ শিশুদের গান শেখানোর ক্লাস হয়। যদি ঘটনাটি সকালে হতো, আর কোনো বাচ্চার ক্ষতি হতো—তার দায় কে নিতো? রাষ্ট্র?
উসকানি দেবেন আপনি, আর দায় ভার নেবে রাষ্ট্র—ব্যাপারটা কেমন না?

The Daily Star এ আক্রমণের সময় আপনি লাইভে এসে বলছিলেন—ভেতরে অনেক সাংবাদিক আটকা পড়েছে, তাদের উদ্ধারের জন্য আর্মিকে ফোন দেওয়ার অনুরোধ করছেন। কিন্তু আপনি তো নিজেই বলতে থাকেন—“এই আমাকে ফোন দেয়, ওই আমাকে ফোন দেয়।” তাহলে আপনি নিজে সরাসরি ফোন দিতে পারতেন না? কিংবা আপনার পরিচিত কারও মাধ্যমে কল করাতে পারতেন। নাকি ওই লাইভ করে বুঝাচ্ছিলেন—আপনি এই ব্যাপারটা সাপোর্ট করেন না?

যেসব সাংবাদিক ওই পত্রিকাগুলোতে কাজ করেন, তাদেরও পরিবার আছে—স্ত্রী, সন্তান, বাবা–মা। এই বিষয়গুলো না ভেবেই যখন প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া হয় , অথচ আপনার ভিডিওর রেফারেন্সের বড় একটা অংশ আসে এই দুই পত্রিকা থেকেই।

আপনার মতো কিছু অনলাইন এক্টিভিস্ট মনে করে, আপনাদের কথায়ই সবাই জুলাই আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছে। আমি জানি না সবাই আপনাদের কথা শুনে রাস্তায় নেমে ছিল কিনা। কোনো রাজনৈতিক কারণে না—আমি নেমেছিলাম একজন বাবা হিসেবে। কারণ আমার সন্তানদের ওপর গুলি চলছিল। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমি রাস্তায় ছিলাম। কতটুকু পেরেছি সেটা বড় কথা না—বড় কথা হলো, আমি দাঁড়িয়েছিলাম।

আমার ধারণা, অনেক মানুষই এই কারণেই নেমেছিল।

ছায়ানটের ওপর আক্রমণ শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আক্রমণ না—এটা আমার সন্তানের মতো অসংখ্য বাবা–মায়ের সন্তানের ওপর আঘাত। একইভাবে প্রতিদিন ব্যাটারি রিকশার কারণে কত মানুষ দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছে, কত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে—এর হিসাব কেউ রাখে না। এই বেপরোয়া পরিস্থিতির পেছনে যারা একতরফা উসকানি দেয়, তার দায় আপনাকে নিতে হবে।

আপনার বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে—এটা শুনে আমাদের মনও কেঁদেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এইভাবে মব তৈরি করে সাধারণ মানুষের জান–মাল ধ্বংস হলে আপনার মন কি কাঁদে না? সব কিছুকে যদি একটাই চশমা দিয়ে দেখা হয়, তাহলে সমাজ আরও বিপজ্জনক জায়গায় যাবে।

আমি মন থেকে একটা দোয়া করি—আপনি যেন কখনো নিজের চোখে এই ব্যাটারি রিকশার বেপরোয়া ব্যবহারের ভয়াবহ পরিণতি দেখতে বাধ্য না হন। আপনার মতো আমি কোনো বিশেষ ব্যক্তি নই—আমার কথায় হাজার মানুষ রাস্তায় নামে না। আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমার হাতে ক্ষমতা নেই, প্রভাব নেই—শুধু প্রশ্ন করার অধিকার আছে, আর প্রতিবাদ করার নৈতিক দায় আছে। তার বাইরে আমার আর কিছুই করার নেই।

সবশেষে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই—
আমি ভারতীয় দালাল না। আপনার পোস্টে মন্তব্য করার পর আপনার কিছু অনুসারী আমাকে এই অপবাদ দিয়েছিল। আপনি একসময় ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমি সেই বয়কট মেনে চলছি।
আপনিও কি এখনো তা মেনে চলছেন?
আপনার অনুসারীরাও কি মেনে চলছে?
এই প্রশ্নটা করা কি অন্যায়?

লুটপাট আর চাঁদাবাজির মধ্যে পার্থক্য কী—এই প্রশ্নটার উত্তর জানার খুব আগ্রহ আছে আপনার কাছ থেকে। রাজনৈতিক কিছু দল করছে চাঁদাবাজি। আর আপনি করছেন লুটপাট।

আমি এই কথাগুলো লিখেছি কোনো বিদ্বেষ থেকে না—লিখেছি একজন সাধারণ নাগরিক, একজন বাবা, এবং একজন সচেতন মানুষ হিসেবে।
আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন।
শুভকামনা রইল আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১০

ধুলো মেঘ বলেছেন: অত্যন্ত বাস্তবসম্মত কথা বলেছেন। এই উস্কানি দাতারা দেশের মানুষকে একটা বড় বিপদে ফেলবে। আওয়ামী লীগাররা এরকম কিছু হবার অপেক্ষায় চাতক পাখির মত তাকিয়ে আছে।

আওয়ামীরা এখন যে কোন পর্যায়ে ঢুকে গেছে, তা বিএনপি জামায়াতের দলীয় মনোনয়ন দেখলে অনেকটাই পরিষ্কার।

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৫

ধীবধির বলেছেন: এইটা একটা সর্বনাশের মূল। এই লোক আসলে একা না। পেছনে বড় কেউ আছে।

৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২০

শ্রাবণধারা বলেছেন: উনি আপনার দাদা হন! আবার এর ভুডুও দেখেন!!!! আপনি আপনার বুদ্ধিবৃত্তি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা দিয়ে ফেলেছেন। এই লোকটা আপাদমস্তক শয়তান। এই ব্লগে একসময় লিখতো। আর এর চেয়েও আরও একধাপ নিচের শয়তান হলো ইলিয়াস।

৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৮

আরোগ্য বলেছেন: গতকাল থেকে শহীদ ভাই ওসমান হাদীকে নিয়ে বেশ কতগুলো পোস্ট এসেছে কিন্তু এ বিষয়ে মন্তব্য করার মত মানসিক অবস্থা নেই। আপনার এই পোস্ট আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এবং তা যথোচিত।
শ্রাবণধারা বলেছেন: এই লোকটা আপাদমস্তক শয়তান। এই ব্লগে একসময় লিখতো। আর এর চেয়েও আরও একধাপ নিচের শয়তান হলো ইলিয়াস। আমার এক কাজিন বলে ইবলিয়াস, মানতে বাধ্য হলাম। প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রশংসা মানুষকে অহংকারী করে তোলে আর অহংকার ইবলিসের অবাধ্যতার মূল কারণ। গতকাল রাতে এই দুই জন মানবিক বৈশিষ্ট্য ছাড়িয়ে গেছে। একজন বিপ্লবী নেতার শোকের মুহূর্তকে তামাশায় পরিণত করেছে। আজকে একটা ভিডিও দেখলাম এক লোক ৩২ নম্বর ভাঙছে আর কারণ হিসেবে হাদীর প্রতি ভালোবাসা উল্লেখ করছে অথচ হাদীর পুরো নামটাও ঠিকমত জানে না। প্রথম আলোর বিষয়ে হাদীর বক্তব্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.