নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://m.facebook.com/sumon.miya.7330

এস,এম,সুমন

সাধারন ক্যারেক্টার।

এস,এম,সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বদলে যাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মানচিত্র।

৩১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:২৬

আজ শুক্রবার বহু
প্রতীক্ষিত
সেই দিন। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তার
পর
প্রত্যাশার সেই ক্ষণ। ঘড়ির কাঁটা রাত
১২টা পার
হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে
ছিটমহল
বিনিময়। বাংলাদেশের ভেতরে থাকা
১৭ হাজার ১৬০
দশমিক ৬৩ একর আয়তনের ভারতের
১১১টি
ছিটমহল হবে বাংলাদেশের।
অন্যদিকে,
ভারতের
মধ্যে থাকা ৭ হাজার ১১০ দশমিক শূন্য

একর
আয়তনের বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল
ভারতের
হয়ে যাবে। ফলে বদলে যাবে
বাংলাদেশ ও
ভারতের মানচিত্র। ছিটমহল নামে আর
কোনো
জনপদ থাকবে না। সে সঙ্গে দীর্ঘ ৬৮
বছরের অবরুদ্ধ আর যন্ত্রণার জীবন
থেকে মুক্তি পাবেন দু'দেশের ১৬২
ছিটমহলের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। তাই
তো
প্রত্যাশার ক্ষণটির অপেক্ষায়
ছিটমহলগুলোতে
এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত
ভারতের
কোচবিহার জেলাধীন ১১১টি
ছিটমহলের
মধ্যে
লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি,
কুড়িগ্রামে
১২টি ও নীলফামারীতে চারটি
অবস্থিত।
ভারতের
কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলার
অভ্যন্তরে
রয়েছে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল।
এই
ছিটমহলগুলোর মধ্যে ১৮টি কুড়িগ্রাম ও
৩৩টি
লালমনিরহাট জেলার অধীন। নিজ
নিজ
দেশের
মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এসব ছিটমহলের
সরাসরি
কোনো যোগাযোগ না থাকায়
রাষ্ট্রীয়
কর্তৃত্ব ছিল না। এ কারণে সব ধরনের
রাষ্ট্রীয়
সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে
অবরুদ্ধ
জীবনযাপন করে আসছিলেন
ছিটমহলবাসী।
মূলত ১৯৪৭ সালের ১৫ জুলাই ব্রিটিশ
পার্লামেন্ট
'ইন্ডিয়ান ইনডিপেনডেন্স অ্যাক্ট,
১৯৪৭'
পাস
করে। এর পর এই আইনের ভিত্তিতে ওই
বছরের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ রাজত্ব
বিলুপ্ত
হয় এবং
ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র
গঠিত হয়।
প্রণীত আইনে উল্লেখ ছিল,
উপমহাদেশের
'স্বাধীন' অঞ্চলগুলোর নিজ নিজ ইচ্ছা
অনুযায়ী
ভারত কিংবা পাকিস্তানে যোগ
দেওয়ার সুযোগ
থাকবে অথবা তারা ইচ্ছা করলে
স্বাধীন
সত্তা
নিয়ে থাকতে পারবে। সে সময়
রাঙামাটি, রামগড় ও
বান্দরবান পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে
এবং
পূর্ব
সীমান্তের পার্বত্য ত্রিপুরা ও
উত্তরের
কোচবিহার ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়। এ
সময়
অন্য কোনো রাজ্যের জমি নিয়ে
সমস্যা
দেখা
না দিলেও সমস্যা বাধে
কোচবিহারে।
তখনকার
কোচ রাজা জগদ্দীপেন্দ্র্র নারায়ণের
কিছু
জমিদারি স্বত্ব ছিল বৃহত্তর রংপুর ও
দিনাজপুর
জেলার মধ্যে। একইভাবে রংপুর ও
দিনাজপুরের
জমিদারদের কিছু তালুক ছিল
কোচবিহার
সীমানার
ভেতরে। এ নিয়ে জমিদাররা কোনো
সমঝোতায় আসতে ব্যর্থ হন।
ভারত ভাগের উদ্দেশ্যে সীমানা
নির্ধারণের
জন্য ১৯৪৭ সালে সিরিল
র্যাডক্লিফকে
সভাপতি
করে কমিশন গঠন করা হয়েছিল। তিনি
ছিলেন
একজন আইনবেত্তা, দেশের সীমানা
নির্ধারণের মতো কাজে তার তেমন
কোনো
জ্ঞান ছিল না। তা ছাড়া তার হাতে
সময়ও ছিল কম।
কমিশনের অন্য সদস্যদের অবস্থা ছিল
একই
রকম। এ অবস্থায় র্যাডক্লিফ ১৯৪৭
সালের
৮ জুলাই
ভারতে আসেন। মাত্র ছয় সপ্তাহ কাজ
করে ১৩
আগস্ট সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত
প্রতিবেদন
দাখিল করেন। কমিশন সদস্যদের
নিষ্ক্রিয়তা এবং
একই সঙ্গে জমিদার, নবাব ও স্থানীয়
রাজনীতিবিদদের দ্বারা দেশের
সীমারেখা
নির্ধারণ প্রভাবিত হয়েছে। কমিশন
কোচবিহার ও
রংপুর এলাকার ছিটমহলগুলো নিয়ে
কোনো
সমাধানে আসতে পারেনি। ফলে
র্যাডক্লিফের
আঁকা মানচিত্র অনুসারেই শেষ পর্যন্ত
ভারত ভাগ
হয় এবং দু'দেশেরই অভ্যন্তরে অন্য
দেশের
ছিটমহলগুলো রয়ে যায়।
১৯৫৮ সালে ভারতের তৎকালীন
প্রধানমন্ত্রী
জওয়াহেরলাল নেহরু এবং
পাকিস্তানের
তৎকালীন
প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নূনের মধ্যে
ছিটমহল সমস্যার সমাধানে একটি
চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয়,
যা নেহরু-নূন চুক্তি নামে পরিচিত। সে
সময়
বেরুবাড়ী ছিটমহল হস্তান্তরের বিষয়ে
একটি
ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছিলেন তারা।
কিন্তু এর
বিরুদ্ধে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের
আদেশের কারণে তা বাস্তবায়িত
হয়নি।
দেশ
ভাগের পর থেকে ছিটমহল সমস্যা
সমাধানের
ক্ষেত্রে দেশ দুটির মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্বও
অন্তরায় হয়ে ছিল।
এর পর ১৯৭৪ সালে ছিটমহল বিনিময়,
অমীমাংসিত
সীমান্ত ও অপদখলীয় জমি নিয়ে
সমস্যা
সমাধানে বাংলাদেশের জাতির জনক

তৎকালীন
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এবং
ভারতের
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা
গান্ধীর
মধ্যে
স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা
মুজিব-ইন্দিরা
চুক্তি নামে পরিচিত। এই চুক্তি
অনুযায়ী
বেরুবাড়ীর বিনিময়ে বাংলাদেশের
দহগ্রাম-
আঙ্গরপোতার সঙ্গে মূল ভূখণ্ড
সংযোগের
জন্য তিনবিঘা করিডোর চিরস্থায়ী
বন্দোবস্ত
হিসেবে পাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশ
চুক্তিটি
সংসদে অনুমোদনের পর বেরুবাড়ী
দিয়ে
দিলেও ভারত চুক্তিটি তাদের সংসদে
অনুমোদন
করতে না পারায় বিনিময়ে
তাৎক্ষণিকভাবে
করিডোরটি দিতে পারেনি। অথচ কথা
ছিল, উভয়
দেশই নিজ নিজ সংসদে চুক্তি
অনুমোদন
করবে। কেননা, এ চুক্তি অনুমোদনে
ভারতের
সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন দেখা
দেওয়ায়
তাদের সংসদে চুক্তিটি অনুমোদিত
হয়নি।
এদিকে, ১৯৯০ সালে ভারতীয় সুপ্রিম
কোর্ট
তিনবিঘা করিডোর বিষয়ে অনুমতি
দেয়
ভারত
সরকারকে। এরই ভিত্তিতে ১৯৯২ সালে
ভারতের
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও
এবং
বাংলাদেশের তৎকালীন
প্রধানমন্ত্রী
খালেদা
জিয়ার মধ্যে আবার একটি চুক্তি
স্বাক্ষর
হয়। এই
চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৯৯২ সালের ২৬
জুন
থেকে তিনবিঘা করিডোর প্রতিদিন
দিনের বেলা
এক ঘণ্টা পরপর মোট ছয় ঘণ্টা
ব্যবহারের
জন্য
খুলে দেওয়া হয়। এর পর ১৯৯৯ সালে
করিডোরের গেট সকাল ৬টা থেকে
বিকেল
৬টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা খোলা
রাখা
শুরু হয়। পরে
২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের
প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং
বাংলাদেশ
সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার
সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ৮
সেপ্টেম্বর থেকে করিডোরের গেট ২৪
ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে। এর ফলে
দহগ্রাম-
আঙ্গরপোতা ছিটমহলের অধিবাসীরা
পেয়েছেন মুক্তির স্বাদ। অবসান ঘটে
তাদের
অবরুদ্ধ জীবনের।
অন্যদিকে, স্থলসীমান্ত চুক্তি
বাস্তবায়ন
বিষয়ে
শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিং
স্বাক্ষরিত
প্রটোকলের পর ছিটমহল বিনিময়
বিষয়ে
আবার
আশার আলো জ্বলে ওঠে। এই প্রটোকল
স্বাক্ষরের আগে ২০১১ সালের জুলাই
মাসে
দু'দেশের যৌথ উদ্যোগে ১৬২
ছিটমহলে
জনগণনার কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু
স্থলসীমান্ত
চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতীয় সংবিধান
সংশোধন নিয়ে
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্বের
কারণে
তা আটকে যায়।
এ অবস্থায় নরেন্দ্র মোদি ভারতের
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর
পরিস্থিতি
দ্রুত পাল্টাতে থাকে। চলতি বছরের ৭
মে
ভারতের সংসদে তাদের সংবিধান
সংশোধনী বিল
পাস হওয়ার পর সব জটিলতার অবসান
ঘটে।
এর
ফলে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের
দুয়ার
উন্মোচিত হয়। সবশেষে বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির
উপস্থিতিতে
গত ৬ জুন স্থলসীমান্ত চুক্তি
বাস্তবায়নের
অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হলে
স্থলসীমান্ত
চুক্তি বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার হয়ে
দাঁড়ায়।
এর পর গত ১৬ জুন পশ্চিমবঙ্গের
কলকাতায়
দু'দেশের জয়েন্ট বাউন্ডারি
ওয়ার্কিং
গ্রুপের
বৈঠকে ছিটমহল বিনিময়ে কর্মকৌশল
নির্ধারণ
করা হয়। এই কর্মকৌশলের আওতায় ৬
থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত
ছিটমহলগুলোতে
যৌথ সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এই
সমীক্ষার আওতায় ছিটমহলগুলোতে
জনগণনা
হালনাগাদ এবং নাগরিকত্ব
নির্ধারণে
ছিটবাসীর মতামত
নেওয়া হয়েছে।
নাগরিকত্ব নির্ধারণের সময়
বাংলাদেশের
অভ্যন্তরে অবস্থিত ভারতের ১১১টি
ছিটমহলের
অধিকাংশ অধিবাসী বাংলাদেশের
নাগরিকত্ব
চেয়েছেন। শুধু ৯৭৯ জন ভারতের
নাগরিকত্ব
বহাল রেখে সে দেশে যেতে
চেয়েছেন। অন্যদিকে, ভারতের
অভ্যন্তরে
অবস্থিত বাংলাদেশের ৫১টি
ছিটমহলের
অধিবাসীর
সবাই ভারতের নাগরিকত্ব চেয়েছেন।
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়
সমন্বয়
কমিটি,
বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মইনুল
হক
জানিয়েছেন, ছিটমহল বিনিময়ের
ঐতিহাসিক
দিনক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে
১১১টি
ছিটমহলে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের
উদ্যোগ
নিয়েছেন তারা। এরই প্রস্তুতি
হিসেবে
গত
সোমবার বিকেলে দাসিয়ারছড়া
ছিটমহলের
কামালপুর দেবীরপাট এলাকার জামে
মসজিদ মাঠে
সভা করেছেন তারা। বিভিন্ন
ছিটমহলের
প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ
সভার
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ শুক্রবার জুমার
নামাজের
পর থেকে লাঠিখেলা, ভাওয়াইয়াসহ
জারি-সারি গানের
আসর বসবে। এর পর রাতে মোমবাতি ও
প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসব
পালন
করবেন তারা।
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়
সমন্বয়
কমিটি, ভারত
ইউনিটের সহসম্পাদক দীপ্তিমান
সেনগুপ্ত
জানান,
এই ঐতিহাসিক দিনক্ষণকে স্মরণীয়
করে
রাখতে ভারতের অভ্যন্তরে
বাংলাদেশি
ছিটমহল
মশালডাঙ্গায় আজ শুক্রবার রাত ৮টায়
জনসমাবেশের
আয়োজন করেছেন তারা।
এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল
বিনিময় সমন্বয়
কমিটি, বাংলাদেশ ইউনিটের
উপদেষ্টা
আব্রাহাম
লিংকন ছিটমহল সমস্যার সমাধান
হওয়ায়
জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রয়াত
ইন্দিরা
গান্ধী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
নরেন্দ্র
মোদি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ
সংশ্লিষ্ট সবাইকে
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


দেশ ১০ হাজার একর জমি পেলো।

তবে, ছিট মহল ( বাংলাদেশ বা ভারতের অভ্যন্তরে) যারা বাংলাদেশের সিটিজেনশীপ নিয়েছেন, তারা ঠকছেন; কারণ, তাদের জীবন অতিস্ঠ হয়ে যাবে, ও শীঘ্রই ভয়ংকর বাস্তবতার সন্মুখীন হবেন।

২| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪

ছাসা ডোনার বলেছেন: অভিনন্দন নতুন বাংলাদেশী রাগরিকদের।অবিস্মরনীয় এই দিনটি তথাকথিত সিটমহল বাসীদের জন্য বয়ে আনুক আনন্দ উল্লাস, পুরন হোক সবার মনের বাসনা।শুভ কামনা রইল সবার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.