![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ১০০% সুমন । বড় হয়ে ডাক্তার, উকিল, ইন্জিনিয়ার হব মা বাবার এমন কোন স্বপ্ন ছিল না। কিন্তু আমার ছোট একটা স্বপ্ন, কবি হব । খুব পড়তাম একসময় । তবে একাডেমিক বই নয় । পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকী, রবীন্দ্র, শরৎ চন্দ্র, মানিক, বিভূতিভূষন, হুমায়ূন আজাদ, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হক, আহমদ ছফা, শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুন, আবু হাসান শাহরিয়ার সহ হাল আমলের মনিরা কায়েস, আহমদ মোস্তফা কামাল, সাদ কামালি, সাইদ হাসান দারা, টোকন ঠাকুর, শামীম রেজা সহ আরো অনেকের লেখা । একাডেমিক পাট্য বই পড়ার ইচ্ছে হতো না । তাই বছর শেষে লোভনীয় কোন রেজাল্ট হাতড়ে পাওয়া ভারী মুশকিল ছিল । তবুও বলতে পারি আমি পুরোপুরি অমেধাবী নই । কেননা সারাটা বছর আমার বেহুদা কাব্যপনা আর এপাশ থেকে ওপাশে শরীর টানা দিয়ে হাতের নাগালের সব সাহিত্য গলাধঃকরণে বিদ্যাদেবী মোটেও খারাপ চোখে নিতেন না । পরীক্ষার দিন সকালে সিলেবাস শেষ করে শান্ত সুবোধ বালকটির মত মাথায় তেল দিয়ে চুল ভাঁজ করে হলে যেতাম । যথারীতি পাশটাও জুটে যেত। ভাল রেজাল্ট নয় পাশটাই ছিল মুখ্য । যাতে মা বাবা বলতে পারেন ‘ছেলে অমুক পাশ’। শিক্ষাবিদেরা হয়ত এসব খেয়ালিপনা কথা শুনে এক তিল ছাড় না দিয়ে উপহাস করবেন । কিন্তু এসব বোহেমিয়ান বালখিল্যতা দারুন মুখরোচক হয়ে আনন্দের রসদ জোগায় আমার বন্দ্ধুদের জাত-পাতহীন সালতামামিতে । আমি ভারী একা । একা হাঁটি । প্রকৃতি বড় ভালবাসি । বই আমার নেশা । সত্য কথা বলতে ভয় নেই আমার । সবাই আসে লোকালয়ের কাছে, মানুষের কাছে, আমি হাঁটি উল্টো পথে । এখন যে সুমনকে দেখতে পাবেন আপনারা সে চলমান পৃথিবীর উপযোগী হয়ে উটা ওরস্যালাইন মার্কা কপিরাইট । এখন আমি বদলে যাচ্ছি ধীরে ধীরে। হাস্যকর সত্যি এটাই এখন আমি আগের সুমনের ধ্বংসাবশেষ । আমি মজবুদ কিছু নই । কাচের মতনই ভেঙ্গে পড়ি । আমি বোধ হয় সেই মানুষটি যার ঢেরকাল পূর্বে ফাঁসি ঘোষনা হয়ে গেছে । আমি প্রচন্ড আবেগী মানুষ। নাগরিক সেজে কাঁদতে ভুলে যাইনি । এবং ১০০ ভাগ দেশপ্রেমিক । কবিতা আমার আশৈশব নেশা । জীবনের তাগিধে অল্প বেতনের মাইনেতে কেরানী গতর খেটেছি কয়েক বছর । আর এখন কক্ষচ্যুত হয়ে হাল আমলের পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িয়ে থাকা প্রযুক্তির কাছে নিজেকে সমর্পিত করেছি । ‘ কম্পিউটার ক্যাপে ’ (কম্পিউটার সেলস, সাভিসিং এবং সাইবার ক্যাপে) নামে ব্যবসা করছি । আমি মনে মনে এখনো কবি । অধুনালু্প্ত স্বপ্নটাকে মাঝে মাঝে দুয়েকটা কবিতা লিখে উসকে দিচ্ছি ফের । আর মনে মনে আওড়াতে থাকি সর্বধা, আই উইল ড্রিন্ক টু দ্যা গ্লাস অব লাইফ টু দ্যা লিজ” । সুমন কম্পিউটার ক্যাফে ভাটিয়ারী, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম ।
গল্পটা এমনই, আমি দেখছিলাম না চারপাশের কিছুই আর
পত্রিকার হেডিং, চায়ের কাপের কুয়াশাবাস্প ধোয়া
সফেদ আকাশ কিংবা সবুজ কামিজের পাহাড় ।
কিছুদিন আমি কেবল দুটি চোখে খেইহারা
কিছুদিন আমি এই দু চোখে আর কিছুই দেখছি না সমুদ্র ছাড়া !
এমন শান্ত গভীর সমুদ্র
মিছিল জানে না ঢেউ তার ।
আমি দেখছি না কিছুই আর, উত্তর দক্ষিণ কিংবা বড়সড় বিলবোর্ড !
দেখছি, হরিণ দুরন্ত ডানার দুটি চোখ
তোমার চোখ ।
আমার নাতিদীর্ঘ জীবনের সমস্ত আয়ু পরমায়ু
তোমার দু চোখে কেবল
আমার হস্তরেখায় লেখা এতসব সর্বনাশ !!
তোমার দু চোখে ডুবে আমি মৃত ভেসে উঠি রোজ
আনাড়ি নাবিকের মত ।
ক্যামেরাতে সমুদ্র ছড়িয়ে পড়ে চারিদিক
মুহু মুহু ক্লিকে বেপরোয়া ঢেউ আছড়ে পড়ছে হৃদয়ে ।
রোদ্দুর মড়ক ধুলোয় ইস্টিশন খুঁজে পায় না হাওয়া
তুমুল বৃষ্টিতে হাওয়ারা আদ্র হয়
ঘাপটি মেরে বসে থাকা বিষন্ন বিকেলের মত
ক্রম বর্ধমান আঁধার হয়ে ওঠে সে একদিন ।
তোমার চোখের দিকে তাকালে
আমি ভরা মজলিসে একা হয়ে যাই
আমি কবি হয়ে ভাবি, কি সব হাসি হয়ে গেছি আজকাল
যেন সাঁতার না জানায় ডুবে মরছে একটি হাঁসের বাচ্চা !
আমার চারপাশে কিছুই নেই আর দেখার মত
বাইরের ভীষন বৃষ্টি দেখে বিজ্ঞলোকটার কথাই মনে পড়ল,
অসম্ভব সম্ভব হইবার পূর্বেই তাহা কেবল অসম্ভব ।
শিল্পকলা আমি বুঝি না, কবিতাও নয় কিছু মাত্র
তার চেয়েও দেখি তোমার চোখ দুটি এক দূর্লঙ্গ প্রাচীর !
তবু টপকে যাই নকল করে
যেন সব বুঝি
জানি সব ।।
তোমাকে যেটুকু বুঝি না ভাবি অন্দ্ধকার !
শিল্পকলা !!
কবিতা !!!
তোমার চোখে সমুদ্র ছিল এই সত্য জেনে গেলে
আমি সাহসী নই অতটা তবু
আহাম্মকের মত পতন মেনে ডুবে যাই সেই গভীরে
ছোট ছোট মিছিলের মত ঢেউ তুলে ।
তোমার চোখের নিচে কি মেঘ ছিল মেয়ে ?
কেন এই অকাল শ্রাবণ তবে ?
বরষা প্রলয় মাতম তুলছে হৃদয় জুড়ে অহর্নিশ !
আমি জানতাম না, তোমার দু চোখে আমার এত কবিতা জমা ছিল ।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩
২৯ ভাদ্র ১৪২০
// প্রিয়দি হৃদিতা জাহানকে । আজ আবার তার জন্মদিন । //
©somewhere in net ltd.