নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুলফিকার

জুলফিকা৩৩

জুলফিকা৩৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের কারণে যে জিনিস গুলো আজ বিলুপ্তির পথে

০৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯

আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। প্রযুক্তি বিষয়ক আলোচনা নিয়ে আজকের লেখালেখি। তার আগে কিছু গল্প করে নেই।

পদ্মার রুপালি ইলিশ আর মাশকলাইয়ের ডাল। দুটি খাবার নিয়ে একটু ভাবুনতো। .................ভেবেছেন নিশ্চয়ই। ১৫-২০ বছর আগের সময় আর এখনকার সময়ে এই দুটি খাবারের ব্যবধান নিয়ে আরেকটু ভাবুন।..............ভেবেছেন নিশ্চয়ই। ব্যবধান কি পেলেন? ‍উত্তরটা এরকম ১৫-২০ বছর আগে এই দুটি খাবার চুলায় বসানো হলে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এই দুটি খাবারের ঘ্রান এ বাড়ি সে বাড়ি করে সারা গ্রাম ছড়িয়ে পড়ত, আর আজ এই দুটি খাবার তৈরি হলে আমার ঘরে আমিই টের পাইনা। কেন খাবারের ঘ্রান নষ্ট হয়ে গেল ও খাবারের গুনাগুন নষ্ট হয় এর ব্যাখ্যা কমবেশ আমরা সবাই জানি।এসবের ব্যাখ্যা আজকের আলোচনার বিষয় নয়। প্রেক্ষাপট বলার জন্যই এই আলোচনাটা করলাম।



আজ থেকে ১৫-২০ আগে আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক কিছুই ব্যবহার করতাম আমাদের জীবনযাত্রায় যেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে আর অনেকগুলো বিলুপ্ত হওয়ার পথে।

জ্বি হ্যাঁ, এমন কিছু জিনিষ যা প্রযুক্তি আর ইন্টারনেট এর কারণে আজ বিলুপ্তের পথে এটাই আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।

এবার আমরা একে একে দেখে নেই কোন কোন জিনিষগুলোর বেহাল অবস্থা প্রযুক্তি আর ইন্টারনেটের ক্রমবর্ধমান দাপটের কারনে।



১) পাবলিক ফোন:

আমরা সবাই জানি 1876 সালে আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল টেলিফোন আবিস্কার করেন। কিন্তু যদি না জানেন জেনে নিন সর্বপ্রথম পাবলিক ফোন স্থাপিত হয় 1878 সালে। 1878 সালে একজন সহায়তাকারীর উপস্থিতিতে পাবলিক ফোনগুলো স্থাপন করা হতো হোটেলে লবিতে, রেলওয়ে স্টেশন, কোন জনবহুল মার্কেটের নিকট। প্রথম চলত কাস্টমার কল শেষ করার পর সহায়তাকারীর নিকট টাকা দিয়ে দিত। কিন্তু একসময় দেখা গেল এইভাবে ফোনকল করা সম্ভব নয় এবং সেটা বিরক্তিকরও। এ ধারনা থেকেই কয়েন চালিত পাবলিক ফোন স্থাপন হয় সর্বপ্রথম 1889 সালে। প্রথমে পোষ্ট পে এবং পরে ফ্রি পে পাবলিক ফোন চালু হয় 1898 সালে যার নাম ছিল No. 5 Coin collector. 1905 সালে সর্বপ্রথম স্ট্রিট পাবলিক ফোন স্থাপিত হয়। 1950 সালে চালু হয় 3-স্লট ডায়াল পাবলিক ফোন যেটিতে ফোন কলার 10 পয়সার মুদ্রা, নিকেল ধাতুর মুদ্রা ও সিকি মুদ্রা দিয়ে কল করার সুবিধা পেলেন। আস্তে আস্তে েএটি জনপ্রিয় হয়ে উঠে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন পাবলিক ফোন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। নিচের চিত্রটি দেখে একটু পরিচিত হয়ে নেই পাবলিক ফোনের সাথে-

কিন্তু এত জনপ্রিয় পাবলিক ফোন আজ বিলুপ্ত প্রায়। এর অন্যতম কারন হলো ইন্টারনেটের আগমন এবং প্রসার। ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে ই-মেইল, সোস্যাল মিডিয়া, ভয়েস চ্যাট করার বিভিন্ন এ্যাপলিকেশন, এর পর মোবাইল ফোনের কারনে যোগাযোগ চলে এসেছে ঘড়ির কাটায়। একটি সেল ফোন হাতে থাকলে কেন আমরা রাস্তার ধারে পাবলিক ফোনে কথা বলব। ইন্টারনেটের দাপটে আর প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কারের ফলে পাবলিক ফোন বিলুপ্তির পথে।

তবে পাবলিক ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শেষ ব্যবহারকারী পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজী আছে। তাই হয়ত আমরা অল্প হলেও আরও কিছুদিন দেখতে পাব এই পাবলিক ফোন।



2) ক্যাসেট ও সিডি:

বেশ কিছুদিন আগেও ক্যাসেট ছিল আমাদের গান শোনার একমাত্র ভরসা।অথচ দেখুন আজ ক্যাসেট নেই বললেই চলে। সিডি, ডিভিডি দখল করে নিয়েছে ক্যাসেটের স্থান।তবে অনেক জনপ্রিয় এই সিডি ও ডিভিডিও নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারছেনা। প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কারের কারনে এগুলোও আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে।

এখন আমরা একটু পেছন ফিরে তাকাই।১৯৫৮ সালে RCA Victor প্রথম স্টেরিও ক্যাসেট আবিস্কার করেন যার সাইজ ছিল ৫”x৭” এবং এটি ছিল প্রি রেকর্ড করা তাই এটি ব্যার্থ হয়। ১৯৬২ সালে নেদারল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানি ফিলিপস সর্বপ্রথম কমপেক্ট অডিও ক্যাসেট আবিস্কার করেন এবং বাজারজাত করেন।উন্নত মানের ১/৮ ইঞ্চি পলিষ্টার টেপ দিয়েই এটি তৈরি হয়। রেকর্ড ও প্লেব্যাক স্পিড ছিল প্রতি সেকেন্ডে ১.৭/৮ ইঞ্চি ।যখন ক্যাসেট পূর্নতা পায় তখন এর দুটি সাইডে ৩০/৪৫ মিনিট সময় প্লেব্যাক করা যেত। এরপর ফিলিপস ও সনির যৌথ প্রচেষ্টা শুরু হয় ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৮২ সালে এই দুই কোম্পানির যৌথ প্রচেষ্টায় সিডি আসে বাজারে। এর পর আমরা সিডির জনপ্রিয়তা দেখলাম। ক্যাসেট হারিয়ে গেল। সিডি বাজারের দখল নিল। এই সিডিও আজ প্রায় বিলুপ্ত প্রায়।সিডির ক্যাপাসিটি হচ্ছে ৭০০ MiB এবং সময়ের হিসেবে প্রায় ৮০ মিনিট।



এবারে একটু দেখে নেই কেন এগুলো বিলুপ্ত হচ্ছে।এক সময়কার তুমুল জনপ্রিয় ক্যাসেট স্থান হারালো সিডি ও ডিভিডি আবিস্কার হওয়ার পর। আর প্রযুক্তির কল্যানে ও ইন্টারনেটের প্রসারে আমরা এখন অনলাইনে গান শুনি, মূভি দেখি। মোবাইলে গান শুনি, কেন সিডি কিনব? আর প্রযুক্তির সর্বশেষ সংযোগ এফ.এম রেডিও। বিশ্বব্যাপি এখন এফ.এম. রেডিওর জয়জয়কার। এক একটা মিউজিক ষ্টেশান এখন মানুষের পকেটেই থাকে। এসব কারনেই সিডি, ক্যাসেট বিলুপ্তির পথে।



৩) রোলোডেক্স (Rolodex):

ইংরেজী দুটি শব্দ Rolling ও Index মিলেই Rolodex শব্দটি তৈরি। এটি হচ্ছে কোন তথ্যকে সংরক্ষন করার একটি মেশিন যেখানে কাগজে অথবা কার্ড এ তথ্য লিখে এই মেশিনে েগেঁথে রাখা হত। রোলোডেক্স এর চিত্রটি দেখুন-

Arnold Neustadter এবং Hildaur Neilsen ১৯৫৬ সালে এটি আবিষ্কার করেন আর ১৯৫৮ সালে প্রথম বাজারজাত করেন।একসময় ছিলনা কোন ভার্সুয়্যাল সোস্যাল নেটওয়ার্ক, ছিলনা কোন এড্রেস বুক, ছিলনা স্মার্ট ফোন, ছিলনা অনলাইন স্টোরেজ। কিন্তু তখনও মানুষের ছিল ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত তথ্য, ছিল ঠিকানা লিখে রাখার প্রয়োজনীয়তা, ছিল পাবলিক ফোন নাম্বারসহ আরও মনে রাখতে হবে এ ধরনের অনেক তথ্য। আর এ তথ্যগুলোই মানুষ কাগজে লিখে রোলোডেক্সে সংরক্ষন করত।

এই ডিভাইসটি আজ বিলুপ্ত শুধুই প্রযুক্তি আর ইন্টারনেটের কারনে।আজ আমাদের রয়েছে মোবাইল ফোন, স্মার্ট ফোন, নোটবুক, ট্যাব, কার্ড হোল্ডার, অনলাইন স্টোরেজ সহ তথ্য সংরক্ষন করার অনেক ব্যবস্থা। এগুলোই ইতিহাস করেছে এই Rolodex নামক ডিভাইসটিকে।



পোষ্টটি অনেক বড়, ছবি সমৃদ্ধ ও আরো প্রায় ১৩ টি পূর্ব-প্রযুক্তি নিয়ে সেখানে আলোচনা করা হয়েছে । আসুন তাহলে মূল পোষ্টটি একবার ঘুরে আসি ও আমাদরে ফেলে আসা পুরনো প্রযুক্তি গুলো একবার দেখে নেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৩০

উজবুক ইশতি বলেছেন: ফিতার ক্যাসেট কে অনেক মিস করি ভাই

২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩২

সুমন কর বলেছেন: গুড পোস্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.