নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুনন্দিত বাতায়ন ফেসবুক www.facebook.com/sunondito

সুনন্দিত রায় সুমন

আমি একজন ভেটেরিনারিয়ান। বর্তমানে ছাত্রাবস্থায় আছি।

সুনন্দিত রায় সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

উটপাখি পালন হতে পারে বাংলাদেশের জন্য আরেক সম্ভাবনাময় খাত

১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:৫২



বাংলাদেশে সর্বপ্রথম হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুরে টার্কি ও উটপাখি পালন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এদের আচার আচরণ, আমাদের দেশের আবহাওয়াতে খাপ খাওয়ানো, খাদ্য, বাসস্থান, প্রজনন, ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এবং সর্বোপরি বাংলাদেশে এদের বাণিজ্যিকভাবে পালনের সম্ভাব্যতা ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করছেন জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের প্রফেসর ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রাণী প্রজনন বিজ্ঞানী ড. আব্দুল গাফ্ফা্র মিয়া স্যার ও তার গবেষক দল। পাশাপাশি তারা প্রাণিজ আমিষের বিকল্প উৎস হিসেবে খরগোশ লালন পালন নিয়েও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন । উল্লেখ্য যে, হেকেপ/ইউজিসি/বিশ্ব ব্যাংক এর আর্থিক সহায়তায় এসব গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

পোল্ট্রির ১১টি প্রজাতির মধ্যে অন্যতম একটি প্রজাতি উটপাখি । ইংরেজি পরিভাষায় উটপাখিকে Ostrich বলা হয় এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Struthio camelis, সোমালিয়ান ভাষায় ‘বলোবল’ বলে। পক্ষীকুলের মধ্যে উটপাখি হচ্ছে সর্ববৃহৎ এবং এদের ডিমও আকারে সর্বাপেক্ষা বড় হয়ে থাকে। দুর্ভাগ্য কি সৌভাগ্য তা জানিনা, মস্ত বড় এক জোড়া পাখা থাকলেও এরা কিন্তু একদম উড়তে পারে না। তবে তাতে কি, ভূমিতে বিচরণশীল প্রাণীদের মধ্যে এরা হচ্ছে দ্বিতীয় দ্রুতগ্রামী প্রাণী, ঘন্টায় ৭০ কিমি বেগে দৌড়াতে পারে। দৌড়ানোর সময় এদের দুই পাখাকে “রাডার” হিসাবে ব্যবহার করে বলে এরা দ্রুত গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। এ সময় লম্বা এক পদক্ষেপে এরা ১০ থেকে ১৫ ফিট পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। আক্রান্ত হলে এরা শত্রুকে বোকা বানানোর জন্য মাটিতে শুয়ে মাথা ও গলা এমনভাবে বিছিয়ে দেয় যে তখন দূর থেকে তা মাটির ডিবির মতো মনে হয়। শত্রু থেকে রক্ষা পাবার জন্য এরা এদের অতি শক্তিশালী পা ব্যবহার করে, পায়ের লাথিতে শত্রু আহত হয়ে অনেক সময় মারাও যায়। চিতাবাঘও এদের ভয়ে একদম কাছে ভিড়ে না।

উটপাখি সাধারণত ২-৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। স্ত্রী উটপাখি পুরুষের থেকে ৬ মাস আগেই প্রজননক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। বন্য অবস্থায় একটি এলাকার প্রধান পুরুষ উটপাখি ২ থেকে ৭টি স্ত্রী উটপাখির সমন্বয়ে গঠিত “হারেম” বা দলের কর্তৃত্ব গ্রহণের জন্য মুখ থেকে একজাতীয় ফোঁস ফোঁস শব্দ করতে থাকে। বিজয়ী প্রধান উটপাখি প্রতিটি স্ত্রী উটপাখির সাথে মিলিত হয় তবে এদের মধ্যে প্রভাবশালী একটি পুরুষ পাখি প্রধান একটি স্ত্রী উটপাখির সঙ্গে জোড়া বাঁধে।পুরুষ উটপাখি ঘনঘন পাখা আন্দোলিত করে তার সঙ্গিনীকে আকর্ষণ করে। এরপর তারা আড়ালে চলে যায় ও অনাহুত সকলকে বিতাড়িত করে। সকল স্ত্রী উটপাখি একটি ১২-২৪ ইঞ্চি গভীর ও ৯.৮ ফুট প্রশস্ত সাধারণ গর্তের মধ্যে ডিম পাড়ে। পুরুষ পাখি কর্তৃক এ গর্ত তৈরি করে। হারেমের প্রধান উটপাখি সর্বপ্রথমে ডিম পাড়ে। এরপর ডিমে তা দেয়ার সময় সে অন্যান্যদের ডিমগুলো ফেলে দিয়ে অবশিষ্ট ২০টি ডিমে (অধিকাংশ ক্ষেত্রে) তা দেয়া শুরু করে। একটি ডিম গড়ে ৫.৯ ইঞ্চি লম্বা, ৫.১ ইঞ্চি প্রস্থ এবং ১.৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। ডিমের খোসা পুরু ও চকচকে ক্রিম বর্ণের হয়ে থাকে। ডিমের উপরিভাগে গর্তের ন্যায় ছোট ছোট দাগ থাকে। স্ত্রী উটপাখি দিনে এবং পুরুষ পাখি রাত্রে পালাক্রমে ডিমে তা দেয়। দিনের বেলা উটপাখির বাসা যেন চিহ্নিত না করা যায় সে জন্য স্ত্রী উটপাখি বালু দ্বারা নিজেকে বেন্ড করে এবং কৃষ্ণ বর্ণের পুরুষ পাখিকে রাতের অন্ধকারে প্রায়শ সনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এভাবেই এরা শত্রু থেকে নিজেদেরকে আড়াল করে রাখে। সাধারণত ৪০-৪২ দিন পর্যন্ত ডিমে তা দেবার পর বাচ্চা ফুটে। পুরুষ পাখি বাচ্চাদেরকে খাদ্য খাওয়ানো শেখায় এবং এদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করে। মাংসাশী প্রানীদের জন্য বাচ্চাদের বেঁচে থাকার হার খুবই কম হয়ে থাকে।

প্রশ্ন হতে পারে যে, এদের পালন করে কি লাভ, তাই না? অনেক লাভ আছে, এদের পালক অত্যন্ত মূল্যবান যা মূলত সাজসজ্জার কাজে ব্যবহৃত হয়। এদের চামড়াও খুবই মূল্যবান এবং এদের মাংস আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। একটি বয়স্ক উটপাখির ওজন ৬০ থেকে১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যান্য প্রাণীর মাংসের তুলনায় উটপাখির মাংসে চর্বির পরিমাণ (৩%) কম ও অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশী থাকাতে স্বাস্থ্য-সচেতন লোকজনেরা উটপাখির মাংস গ্রহণে অধিকতর আগ্রহ প্রকাশ করে


ফেসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করুন http://www.facebook.com/sunondito

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:৪৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: খুবই উপকারী পোষ্ট । উটপাখি পালনের আর্থিক দিক সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য যথা এর দৈনিক খাদ্য গ্রহনের পরিমান কত , বানিজ্যিক ভাবে একটি উটপাখী বিক্রয়যোগ্য হতে কতদিন লাগে , বাজারে এর বিক্রয়মুল্য কত হতে পারে প্রভৃতি বিষয়ে যদি সম্ভব হয় তথ্য জানালে খুশী হব ।
শুভেচ্ছা রইল ।

১১ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১৯

সুনন্দিত রায় সুমন বলেছেন: পরবর্তী বাণিজ্যিক পোস্টে এসব তুলে ধরতে চেষ্টা করবো। সময় নিয়ে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:২২

সৌমিক আহমেদ খান বলেছেন: ভাল খবর

১১ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১৯

সুনন্দিত রায় সুমন বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:৩১

তপোবণ বলেছেন: ডঃ এম এ আলী স্যারের সাথে একমত। পোষ্টটি ভাল লাগল। বিষয়গুলো অজানা ছিল।

১১ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:২২

সুনন্দিত রায় সুমন বলেছেন: স্রষ্টা সহায় থাকলে পরে পোস্ট করবো। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.