নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতার প্রেমে অক্ষরের সঙ্গে শুরু হয়েছিল ঘরবসতি। এখন আমি কবিতার; কবিতা আমার। শব্দচাষে সময় কাটাই...
আমি কোথায়? সেটা ঠিক ঠাহর করতে পারছি না। কেন? তাও অনুধাবনেন্দ্রিয় অনুভব করছে না। কিন্তু আমি কোথাও আছি! একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে সব কিছু অবলোকন করছি; সেটাও অনেক্ষণ পর মস্তিষ্ক সিগনাল দিল। অথচ আমার সত্তাটা ঠিকই অনুভব করছি। মনে হচ্ছে আমার ভেতর আমি একা নই। আরো একজন আছে; অথবা আরেকটি সত্তা গজিয়ে ওঠছে আমার ভেতর! সেই সত্তাটা কে? আমি কি ইহজাগতিক চেতনার বাইরে? কিংবা আমাকে দিয়ে নিয়ন্তার প্রয়োজন শেষ! নাকি আমার মগজের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট ক্রাশ করেছে? অনেক্ষণ ধরে ভাবনায় তোলপাড় করতে চেষ্টা করলাম। সম্ভব হলো না! আমি এখনো এলামেলোই আছি। চারপাশে এতক্ষণ অনেক কিছুই ছিল। এখন সব কিছু ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। তাহলে আমি কি মারা যাচ্ছি? পৃথিবীর অবস্থানকাল শেষ আমার? নাহ তেমনটা আবার ভাবতেও পারছি না। ভাববোই কেমনে? আমার ভাবনাই তো দেখছি নাই!
এই তো একটা বাস চলে গেল। সাবাশ চেতনা! তুমি ফিরে এসছো। সম্ভবত আমার ভাবনারা মস্তিষ্কের কোষে রিইন্সটল হয়েছে। আমি কিছু কিছু ভাবতে পারছি। দেখতে পারছি আমি একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। আমার উত্তর দিকে একটা সেতু আছে। বেশ ব্যস্ত সেটা। এখন আরো স্পষ্ট হচ্ছে... আমি সেতুটার আরো উত্তরে- একটা বাজার দেখতে পাচ্ছি। স্মৃতিরা সেই বাজারটাকে খুব চেনা মনে করছে। মস্তিষ্ক সেটাকে চেতনার মনিটরে দেখচ্ছে না। বেশ জটিলতার মধ্যে আটকে গেলাম দেখছি! তার চেয়ে আরো জটিল প্রশ্ন আমি এখানে কেন? আমার তো এখানে থাকার কথা না! যাক এবার আমার মাথাটা ঠিকঠাক কাজ করছে।
আমার এখন থাকার কথা ক্যাম্পাসে। সবুজ ক্যাম্পাসের ঘাসের মাঠে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার কথা আজ। আজকেই তো। মোবাইলটা হাতে নিলাম তারিখ দেখতে। নাহ ভুলেই গিয়েছিলাম ডিসপ্লেটা নষ্ট। অবশ্য বেকারদের মোবাইলই থাকার কথা না। আমি বেকারাবস্থায় মোবাইল কিনে বেশ লজ্জা পেতাম। বাবা-মাকে সেটা দেখাই নি। প্রায় একবছর। এই তো আমার স্মৃতিও ফেরত আসছে। গুড। এখন সময়টা কার কাছে জানি? আমার আশপাশে অনেক মানুষ আছে। এদের কাছে সময়টা জানা যায়।
হ্যালো ব্রাদার, হ্যালো ব্রাদার, আরে একি! লোকটা তো শুনছে না। মনে হয় বধির! আচ্ছা সামনের লোকটাকে জিজ্ঞেস করি। এই যে ভাই, কয়টা বাজে? আমার হাসি পাচ্ছে; নিজেকে স্মার্ট দেখাতে আমি কখনই ‘এই যে ভাই’ বাক্যটা ব্যবহার করি না; ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে। কিন্তু এখন করছি! কেন করলাম আমার বর্তমান সমাধানহীন রহস্যভ্রমনের মত এইটাও কি একটা রহস্য? থাক এসব। আমি ভিন্ন দিকে চলে যাচ্ছি। আমার জানার দরকার সময়। এই লোকও তো কোন উত্তর দিচ্ছে না। মনে হয় সে কথা বলতে পারে না। এই তো দোকানটায় দেখা যায় একটা ঘড়ি আছে। দেখি তো কয়টা বাজে? কী অদ্ভূত ব্যাপার! ঘড়িটা চলছে অথচ সময়টা নির্দেশ করছে না! তাহলে আমি কী এখনো ঘোরের মধ্যেই আছি?
নাহ! তুমি ঘোরের মধ্যে নেই। নেই কোন অতীন্দ্রীয় জগতেও! আরে কে কথা বললো? কে কে? আমি আরো জোরে চিৎকার করে উঠি। মনে হয় সারা বাজার সেটা শুনতে পারছে। কিন্তু হাজার হাজার মানুষ কেউই শুনছে না। ধ্যাৎ! আমি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি! একটু আগেও তো এখানে তেমন কোন মানুষ দেখিনি! একটা ছোট বাজরে সাধারণত যে কজন মানুষ থাকার কথা, তাই ছিল। এখন হাজার হাজার মানুষ কোত্থেকে আসলো? আরে মিছিলের মতো মানুষ কোথায় যায়? আচ্ছা যেতে চায় যাক। জাহান্নামে যাক! কিন্তু আমার চিৎকার শুনে না কেন? আমার কান্না পাচ্ছে। কেউ আমার কোন কথা শুনছে না। আমি সময়টা জানতে পারছি না!
পেয়েছি! ইউনিক আইডিয়া! হলে ফোন দেই। সময়টা জানার জন্য। আমি মোবাইলের ডিসপ্লে নষ্ট হওয়ার পর একটা ধারুণ আইডিয়া বের করেছি। প্রেস গুনে গুনে কাছের বন্ধুদের নম্বর বের করতে পারি। প্রথমে একটু সমস্যা হতো। অন্য জায়গায় কল চলে যেতো। এখন সেটা হয় না। খুবই দক্ষ হয়ে গেছি। দক্ষ শব্দটাতে আমার বিশেষ দুর্বলতা। আমি আসলে একজন দক্ষ প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। একসময় দক্ষ নেতা হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু না আমি একজন দক্ষ বেকার হয়েছি। এই তো আমার মাথা কাজ করছে। চারপাশে এখন আর কোন প্রচ্ছন্নতা নেই। সবকিছু ঠিকঠাক আছে। এই তো মসজিদের বড় ঘড়িটা দেখা যাচ্ছে। সময় এখন দুইটা পঁচিশ। নাহ আবারো প্যাঁচ খেয়ে গেলো! আমি তো হল থেকে বেরই হয়েছিলাম দুইটা পঁছিশে।
না! তুমি হলথেকে বের হয়েছো সকাল দশটা পঁছিশে। কিন্তু রুবেল দুষ্টুমি করে তোমার ঘড়িতে দুইটা পঁচিশ করে রেখেছিলো। আবার কে কথা বলে? কে? কে? কে? নাহ কোন উত্তর নেই। আমি হতাশ হয়ে গেলাম। আমার উচিৎ এখন এই জায়গাটা ছেড়ে দেওয়া। এবং কোন কিছু চিন্তা না করা।
_ আরে তুমি চিন্তা করবে কেমনে? তোমার চিন্তা তো লোপ পেয়েছে! আর তুমি এখান থেকে কোথাও যেতে পারবে না। তোমাকে এখানে আনা হয়েছে বিশেষ একটা কাজে। সেটা এখনো শেষ হয় নি।
_ কে? কে? কে? কে তুমি? আমাকে এমনভাবে পেইন দিচ্ছো কেন?
_ তোমাকে পেইন দেওয়া হচ্ছে না। আমিও দিচ্ছি না। সব কিছুই তোমার বিবেক। যখন হাজার হাজার মানুষ নির্যাতিত হচ্ছিল, তখন তুমি নিশ্চুপ ছিলে। সেই হজার হাজার মানুষকেই দেখছো এখন। তোমার কলম ছিলো তুমি কলম ধরো নি! তোমার ভাষা ছিলো তুমি কথা বলো নি! তোমার বিবেক ছিলো তুমি পার্থক্য করো নি! তোমার দিকে চেয়েছিলো শত জনতা তুমি তাকাও নি! দেখলে তো, আজ কে-উ তোমাকে সময় বলে দেয় নি। তুমি নতুন পথের সন্ধান দিতে পারতে; পথ হারা মানুষকে। কিন্তু দাও নি। দেখলে তো পথ হারালে কেমন লাগে? অসংখ্য মানুষ তার নিজস্বতা হারিয়ে এখন দেউলিয়া। কিন্ত তুমি তাদের চেতনাকে পূর্ণ করে দিতে পারতে; করো নি। আজ দেখো তুমি কত অসহায়! যে চেতনার কারণে ‘তুমি’ সেই চেতনাই তোমার নিয়ন্ত্রণে নেই। তুমি এখন চরম অসহায়। এবার ভাবো তো তোমার ভাই, বন্ধু, প্রতিবেশির চেতনা যখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দখল হয়েছিলো তখন তাদের কী অবস্থা হয়েছিলো? আর যারা এখনো দখল হয়ে আছে তাদের অবস্থাই বা কেমন?
_ এ্যাই তুমি এত কথা বলো কেন? আগে নিজের পরিচয় দাও। নইলে ব্লক খাবে... বললাম! আমি আসলেই চৈতণ্যহীন হয়ে গেছি। ব্লক তো ফেসবুকের ব্যাপার-স্যাপার এখানে কেন?
_ হা হা হা হাহ্ তুমি পুরাই গেছো। যেমনে গেছে তোমার পুরো জাতি। পুরো দেশ! পুরো সমাজ এবং সমাজপতিরা। আচ্ছা! তুমি আমার পরিচয়ের জন্য খুব ব্যাকুল হয়ে গেছো! দিচ্ছি দিচ্ছি। একটু অপেক্ষা করো। আরেকটা কথা বলে নেই। তেমার চারপাশে যখন সত্য ডুবতে থাকে তখন তোমার কেমন লাগে? থাক বলার দরকার নেই। আমি জানি! তখন তেমার খুব খারাপ লাগে। খুব খারাপ লাগে! তুমি আহত হও! রাতে কখনো কখনো কাঁদো। কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ তোমার পদস্খলন হয়। তুমি নেমে যাও। নামতে থাকো. নামতে থাকো.. নামতে থাকো... নেমে যাও অন্ধকার কুপে। প্রগতির অন্ধকারে। যেখানে থাকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশে নিষিদ্ধ আনন্দ। আমি তোমার সেই কান্না।
_ বলে কি! আমি তাহলে এখন দ্বৈত সত্তার মানুষ। আমার ভেতর তাহলে দুটি চেতনা কাজ করছে? আচ্ছা, আমার অসহায়ত্বে তুমি হাসলে কেন?
_ নাহ চেতনা একটিই। কিন্তু দুটি সত্তা এখন তোমাতে বসবাস করছে। এই দেশটার প্রতিটি মানুষের ভেতরই এখন দ্বৈত সত্তার বসবাস। কিন্তু দেশের প্রায় শতভাগ মানুষ মৃতপ্রায়। মানে চেতনাগত অথাবা বিশ্বাসগত। তারা শাসকের সামনে ভেজা বেড়াল হয়ে থাকে। প্রয়োজনের সময় ঝুকি নেয় না। দায়িত্ব দেখে পালিয়ে যায়। কষ্ট দেখে স্বয়ং স্রষ্টাকে ভুলে যায়। তাদের কাছে শাসকেই হয়ে যায় জীবনের দিগন্ত! কিন্তু তোমাকে এখন ঝাকুনি দেওয়া হচ্ছে। কারণ তোমর ভেতর যন্ত্রণার আগুন আছে। দগদগে ঘা আছে। তাই তোমাকে একটু... ওহ! হাসি; আমি হাসিনি! হেসেছো তুমিই। আমাকে তুমিই নিয়ন্ত্রণ করছো! মানে তোমার আত্মাই আমাকে নিয়ন্ত্রণ করছে!
_ বেশ গোলমেলে তোমার কথা! আমাকে ঝাকুনি দেওয়ার দরকার নেই। এই দেশে হাজার হাজার ‘প্রভুর অভিভাবক’ আছেন। আছেন অবিনশ্বর জগতের পথ দেখানো মহামানব। তুমি তাদের কাছে যাও। তাদের কাছে যাও আমাকে আমার মত থাকতে দাও। এই আমি তো গানের কথায় কথা বলছি... তাহলে আমি মনে হয় কিছুটা মুক্ত। মুক্ত মানে? তাহলে আমি কি বন্দি? নাহ আমি বন্দিও না। আসলে এখন আম্মার খুব দরকার ছিলো। তিনি থাকলে বলতেন বাবা তুমি আউলায়া গেছো। একটু ঘুমাও সব ঠিক হয়ে যাবে। মা! মা!! মা!!!
_ ধ্যাৎ তুমি তোমার কর্তব্য থেকে পালাতে চাচ্ছো। এখানে তোমার মা আসবেন কোত্থেকে? তুমি আছো এমন একটায় জায়গায় যেখানে সবাই আছে। আছে তোমার অনেক আত্মীয়। যাও তোমাকে একটু সময় দিলাম। পালাবে না কিন্তু। আমি আপাতত কথা বলছি না।
আমার আশাপাশে বেশ কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। একটা জটলার মতোই হবে। অথবা ফেরিঅলার একটা মজমার সমান মানুষ হবে। আমি এখন এমন হিসেব নিকেশের জায়গায় নেই। বেশ ক্লান্ত। এত কথা আমি কখনই বলে অভ্যস্ত না। কিন্তু কোন কুক্ষণেই না হল ছাড়লাম!
_ এই তারিক! তারিক! তুমি এখানে কী করছো? দেখলাম তুমি আসছো এর পর আর দেখছি না। তোমর জন্য সবাই অপেক্ষা করে বসে আছে। তুমি না বিয়ে পড়ানোর কথা। বর কনে অপেক্ষা করছে। আরে তাড়াতাড়ি আসো! রাত হয়ে যাবে। পথে ছিনতাই ডাকাতের ভয় আছে। একজন বললো।
কণ্ঠটা খুব চেনা হলেও আমি তাকে চিনতে পারছি না। জটলা থেকে একজন বললো, ভাইজান নেশা করছেন নাকি? না কারো সাথে ব্লুটুথে কথা বলছেন? অবশ্য আপনার কথাগুলো নেশাখোরের মত না।
বেশ রেগে গেলাম। বললাম এ্যাই কে কথাটা বললো! সাহস তো কম না। দশ বছর ধরে নেশার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আমাকে বলে নেশা করেছি।
রাগটায় কাজ হচ্ছে। জটলাটা সরে গেছে। কেউ কেউ বলতেছে। আরে আধুনিক প্রযুক্তির যুগ কোথায় কী রেখে কথা বলছে কে জানে। চল অযথাই সময়টা নষ্ট করলাম। মজাটা নেওয়া হলো না!
আমাদের সমাজের এই আরেকটা সমস্যা। সবাই সব কিছু থেকে মজা নিতে চায়। আমি একসময় গবেষণা করে দেখেছি প্রতিটা মজা বা হাসির পেছনে একটা কান্না বা লজ্জা লুকিয়ে আছেই। আছেই। যাক, তাও বাঁচা গেল; এরা যে আমাকে পাগল ঠাওরে মজা করতে শুরু করে নি।
রাগটায় আসলেই কাজ হয়েছে। আমার মস্তিষ্ক বেশ ফ্রেশ মনে হচ্ছে। তবুও চিন্তা করছি না। কারণ আবার আউলায়া যেতে পারে। এবার স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। আমি একটা কলেজের গেইটে দাঁড়িয়ে আছি। আমার উত্তরে একটা সেতু। তার উত্তরে একটা বাজার। আমার দক্ষিণে রাস্তার ডানপাশে একটা বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান। হ্যাঁ আমার মনে পড়েছে। রূপন্তির ভাই আহনাফের বিয়ে আজকে। আহনাফ আমার বন্ধু। তবে ক্লাসমেট বা প্রতিবেশি হিসেবে না। আমি আহনাফদের বাড়িতে জায়গির থাকতাম। যদিও আহনাফদের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে দশ মিনিটের পথ। তবুও কেন থাকতাম? এখন আর মনে করতে পারছি না। অবশ্য এটা মনে করতে পারছি যে আহনাফের বাবাই আমাকে পথে এনেছেন।
আমি বখে যাওয়া একজন হতে হতে বেঁছে গেছি এই লোকটার জন্য। কী যেন নামটা! আসলেই আমি সব ভুলে যাচ্ছি।
_ ভুলবে না। পুরো জাতিটাই তো ভুলো মনা। প্রতি পাঁচ বছর পর পর তোমরা একই গর্তে পা দাও। তার পর তোমাদের ঘুম পাড়ানি গানের মত করে ইতিহাস শেখনো হয়। প্রতিদিনই তোমাদের দেশে ইতিহাস জন্ম নেয়। অতীত বদলানোর আশ্চর্য এক ক্ষমতা নিয়ে, তোমাদের অভিভাবকরা জন্ম নিয়েছেন। সেখানে তোমার জীবনের গতি বদলে দিয়ে যিনি তোমকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন; তাঁর নাম ভুলে গেছো সেটা কোন বড় ব্যপার নয়! বড় ব্যাপার হলো তুমি সেটা স্বীকার করো। এবং এখনো সেটা মনে করছো। তাই তোমাকে সাহয্য...
_ থাক! থাক!! মনে পড়ছে। নাম তাঁর, জনাব সুবহান সাহেব। তিনি অবশ্য ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। আমাকে অনেক আদর করতেন।
_ আমি যখন মাধ্যমিক পাশ করে মটরগাড়ি মেরামত করা শিখতে লাগলাম। সেই সময়ের ঘটনা। সুবহান সাহেব গেলেন গেরেজে। মটর সাইকেল মেরামত করতে। আমি তাঁকে প্রয়োজনীয় নতুন পার্টসগুলোর একটা তালিকা লিখে দিলাম।
_ আরে! তোমার হাতের লেখা এত সুন্দর! ইংরেজি বনানও তো নির্ভুল। তুমি এই গ্যারেজে কেন? বললেন তিনি।
_ আমি বললাম। লেখাটা এমনিতেই সুন্দর। আর বানানগুলো কমন তো; শেখা হয়ে গেছে।
আমার উস্তাদ তা হতে দিলেন না। অবশ্য মানুষটা ভাল ছিলেন। তিনি বললেন সাহেব, ছেলেটা আপনাদেরই। তারপর বাবার নাম, পাড়ার নাম বললেন। এবার মেট্রিকে সেকেন্ড ডিভিশন পাইছে। তাই, তার বাবা তাকে আর খরচ দিবে না। সে চাইতেছে, এই কাজটা শিখে ঢাকা চলে যাবে। তারপর রাতে কাজ করবে। দিনে ক্লাস করবে। আমি অবশ্য তাকে অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু সে নাছোড়...
পরদিন তিনি আমার কোন কথাই শুনেন নি। বাবাকে বেশ ধমক-ধামক দিয়ে আমাকে নিয়ে আসলেন তাঁর বাড়িতে। সেই আমার প্রথম জায়গির অভিজ্ঞতা। আমার দিনগুলো বেশ ভালই কাটতে লাগলো। আহনাফ আর আমি, একসাথে কলেজে যাই। রূপন্তি তখন সেভেনে।
এইবার আমার খুব ভাল লাগতেছে। দীর্ঘ সময় ধরে আমি নিজের ভেতর আছি। বাস্তব জগতের ভাবনাগুলো আমি ভাবতে পারছি। আমার চারপাশে অনেক মানুষ। শিশু থেকে বুড়ো সব রকমের। না ভুল হলো; শিশু,কিশোর-কিশোরি, জোয়ান-যুবতি, বুড়ো-বুড়ি সবাই আছে। নানা রঙ্গের পোশাক। কেউ শাড়ি। কেউ আবার শার্ট-প্যান্ট। কিন্তু একদল মানুষের পোষাকের কোন নাম জানি না। জানতে ইচ্ছেও করছে না। এরা পোশকটাকে একটা অনর্থক বিষয় মনে করে। মনে হয়। কারো কারো সাজ-সজ্জার বাহুল্য তাকে পেত্নীর মত দেখাচ্ছে। সেটা তার অনুভবে নাই। কেউ কেউ একটু বেশিই খোলামেলা। পুরুষগুলো একবারে শ্যূটেড বুটেড। মানে প্যাকড। কিন্তু তাদের বাহুলগ্নাদের দেখলে মনে হয় হলিউড নেমে গেছে এখানেই। আমি একটু বিব্রত হয়ে দূরে দাঁড়িয়ে আছি।
জগৎটাই উল্টায়া গেছে। উল্টায়া গেছে মানে? তাইলে তো সব ধ্বংস হয়ে যেতো! আমি সব কিছু ঠিকঠাক দেখতেছি! আইলে আমি কেন বললাম, ‘জগৎটাই উল্টায়া গেছে’?
_ তুমি বলো নি। বলছে তোমার অবচেতন মন! কারণ পৃথিবীতে মানুষ অবচেতন অবস্থায় চূড়ান্ত সত্যটা বলে।
_ তাহলে আমার অবচেতন মন সত্য বলে নি! কারণ আমি দেখছি সব ঠিকঠাক। তুমি আবার এসছো? আমাকে কি এই শত শত মানুষের সামনে লজ্জিত করবে?
_ শোনো, পুরো জগৎটাই উল্টায়া গেছে। এই জন্য কেউ ধরতে পারতেছে না। তুমি পারতেছো কারণ, তুমি এখনো নষ্ট হতে কিছুটা বাকি। তোমার ‘অবচেতন মন’ বলে একটা কিছু আছে। এই জগতের সবার ভেতরই এখন আছে কেবল লৌকিকতা। আর আছে আগুনের দিকে ক্রমধাবমানতা... তুমি অবশ্য লজ্জার কথা বলেছো। সেটা আছে তোমার এবং তোমার মত অল্প ক’জন মানুষের। বাকি কারো সেটা নেই। দেখো নি! এই সেদিনও প্রকাশ্য চৌর্যবৃত্তির পরও কেমন দাঁত কেলিয়ে হেসেছে। পুরো দেশটাকে দেউলিয়া বানিয়ে কেমন দেশপ্রেমিক সেজে আছে! এরা দিবে তোমাকে লজ্জা! আরে জাস্ট তোমাকে মেরে ফেলবে। যদি এরা তোমার ভেতর মানুষটাকে দেখে। কারণ এই ‘ভেতর মানুষগুলো’ বেঁচে থাকলে ওরা সবটুকো নষ্ট হতে পারবে না। যতটুকো নষ্ট হলে পৃথিবীটা শেষ হয়ে যাবে...
ঠিক এমন সময় কেউ একজন বললেল, মিয়া বিয়ে বাড়িতে এমন একটু আধটু হয়েই। আমি বুঝতে পারছি আপনার সমস্যা হচ্ছে। আপনি বিয়েটা পড়িয়ে শেষ করে দিন। আপনাকে খাবার দিয়ে বিদায় করে দিবো। আমি অবশ্য জানতে চাইছিলাম, আপনি কি মনের খবর পড়তে পারেন? আরো মজা করতে পারতাম। করলাম না।
হঠাৎ বরের কণ্ঠ শুনতে পেলাম। আরে চাচা আপনি কী বলছেন এসব? সে যাবে কোথায়? সে আমার বন্ধু। আমার সাথে একই গাড়িতে আমাদের বাড়ি যাবে। আর আপনি বলছেন তাকে বিদায় করে দেবেন।
_ স্যরি। আমি অবশ্য এমনটা মনে করিনি। যখন শুনলাম উনি বিয়ে পড়াবেন। তখন ভাবলাম হুজুর মনে হয়।
_ নাহ! হুজুর নয়। আমরা দুজন একসময় অঙ্গিকার করেছিলাম। একে অন্যের বিয়ে পড়াবো। একসময় বাড়ির মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে সেটা শিখে নেই। আমি তাকে বলতে চাইলাম নতুন জামাইয়ের কথা বলতে হয় না। বললাম না, হয়তো সে বলবে বিয়ে তুই আগে করসস, না আমি আগে করছি?
উপস্থিত সবাই একটু হেসে ওঠবে এমনটাই আশা করছিল আহনাফ। কিন্তু কেউই নতুন জামাইয়ের এমন কথায় হাসলো না। বরং বিরক্ত হলো মনে হয়। আহনাফ এই কথাটা মিথ্যা বলেছে! তার কারণটা সম্ভবত; এখানে একজন হুজুর দিয়ে বিয়ে পড়ালে তাকে কম করে হলেও এক হাজার টাকা দিতে হবে। শত হলেও একজন ব্যাংকার। হাজারের কমে হবেই না। সেই টাকাটা বাঁচাতে সে আমাকে বিয়ে পড়াতে বলতেছে। যদিও ওরা বলতেছে আমারই বিয়ে পড়ানোর কথা। ওটা মিথ্যে। আমি কি সেই মিথ্যেটা প্রকাশ করে দেবো? নাহ থাক। কী দরকার! চলুক না। সারা দেশই চলছে মিথ্যার ভেলায় চড়ে। সেখানে এইটা কিছুই না।
আমি বেশ অবাক হই। আহনাফ তো আমাকে দাওয়াতই করার কথা না। তবুও কেন করলো? আমি অবাক হবো? না খুশি হবো বুঝতে পারছি না! ঘটনা হলো, আমি উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেই চলে যাই সেনাবাহিনীতে। তখন রূপন্তির বিয়ের
প্রস্তাব দেন তার বাবা। আমি নিমরাজি থাকলেও আমার পরিবার রাজি হয়নি। “মানুষ ভাববে জায়গির ছিলো, তো কি জানি কি করছে- এখন মাইয়া দিয়া দিছে।” এই যুক্তিতে।
আমি নিম রাজি ছিলাম। এই যে ভুলে গেলাম! আবার কি তাহলে আমার স্মৃতি আউলায়া গেছে? নাহ! মনে পড়ছে। সেই কারণটা ছিলো রূপন্তি খুব সুন্দরি হলেও; ও ছিলো বেশ বোকা-সোকা। কোন কথাই গুছিয়ে বলতে পারতো না। আর আমার পরিবারের মধ্যে একটু চালাক না হলে টিকে থাকা যাবে না। আমি দেখেছি ভাবিরা যে কি চালাক! যাক এর সাথে আমার বিয়ে হয়নি, সেটাও সমস্যা ছিল না। বন্ধুত্ব অটুট ছিলো আহনাফের সাথে।
হঠাৎ করেই ভর্তি পরীক্ষা দেই পরের বছর। চান্স পেয়ে যাই ইংলিশে। চাকরিটা ছেড়ে দেই। তখন আমার ভেতরে অযথাই রূপন্তির প্রেম জেগে ওঠে। পরামর্শ চাই এজন স্যারে কাছে। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় জীবনের জন্য ঝুকি নিতে হয়’। বিয়ে করে ফেল। বাকিটা আমি দেখবো। কিন্তু তখন আর তার বাবা বেঁচে নেই। ভাইয়েরা আমাকে পাত্তা দিলো না। বেকার ছেলে আবার বিয়ে! সখ কত! এই কথা বলে সবাই আমাকে উপেক্ষা করেন। তখন আহনাফের সাথে আমার সম্পর্কটা ভাটা পড়ে। কিন্তু কেন আজ বিয়ের দাওয়াত?
আমিই বিয়ে পড়ালাম। কিন্তু এখানে দেখলাম উল্টো নিয়ম। তাই তো হবে, ‘জগৎটাই উল্টায়া গেছে’! বিয়ের পর বরকে গেট পাস করাচ্ছে। আমি দাঁড়িয়ে আছি গেটে। কত রকমের পোশাক পড়া মেয়ে যে এসেছে এখানে। আমার সব চিন্তা হঠাৎ করে নিবন্ধিত হয়ে যায়; গেটে দাঁড়ানো ললনাদের দিকে। নিজেকে প্রশ্ন করি। বউ তো একটার বিয়ে হবে। তাহলে এত এত বউ সাজার দরকার কী?
_ আমি দিচ্ছি উত্তরটা। প্রতিটা বিয়েতে কুমারিরা সাজে নিজেকে প্রকাশ করার জন্য। আর বিবাহিত নারিরা সাজে দেখাতে আমি বুড়িয়ে যাই নি! সুতারাং স্বামি তুমি ওদের দিকে চোখ দিও না। বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত কবি শাসুর রাহমান বিয়ে বাড়িতে দেখেই নিজের বউ পছন্দ করে ছিলেন। তোমার মাথা আবার হ্যাং হয়ে যাবে। তাই আমিই উত্তরটা দিয়ে দিলাম। আমার অচেনা সত্তার কথাটা আমি শুনতে পাই।
ভাবি তাহলে কি আমার জন্যও এখানে কেউ অপেক্ষা করছে? ধ্যাৎ! এসব কী বলছি। এখানে যারা আছে এরা তো প্রায় সবই আল্ট্রামডার্ন। আমার মত গেঁয়োকে কেই পছন্দ করবে না। মনে মনে হাসি। আবার চেয়ে দেখি কেউ দেখেছে কি না...
_ আচ্ছা আমার সাথে যে সব কথা হচ্ছে, তা কি সব মানুষ শুনছে বা শুনতে পারছে।
_ আরে নাহ। এইসব কথা কেবল জীবিতরাই শুনে। মৃতরা কখনই এসব শুনে না। এখানে যারা এসছে এদরে সবাই মৃত। তুমিই কেবল জীবিত এসছো এখানে। তাই এই সমাজের সব কিছুই তোমার কাছে গোলমেলে লাগছে।
আমি এখন সত্যিই দেখছি আমার চারপাশে লাশের মিছিল। পঁচা-গলা লাশ। মাথাহীন, চোখহীন, হাতহীন, পাহীন, মগজহীন, চেতনাহীন, লজ্জাহীন, জিহ্বাহীন এমন হাজারো রকমের লাশ আমার চারপাশে। দুয়েকটা লাশকে দেখলাম বক্তব্য দিতে চেষ্টা করছে। যে দুয়েকটা কথা বলতে পারছে, তারা সবই মিথ্যা বলছে। কারণ তাদের থেকে একজন বলতেছে আমি তোমাদের জন্য সবরকম সুখ শান্তির ব্যবস্থ করে দেবো। কিন্তু লাশের আবার সুখ শান্তি কি। আমার মনে হয় বক্তব্য দিতে চেষ্টা করা মানুষগুলো মরার আগে রাজনীতিবীদ ছিলো। কারণ, লাশ হয়েও ওরা প্রতিশ্র“তি দিচ্ছে। আমি দেখছি একটা লাশ আমার দিকে ধেয়ে আসছে। আমি কি দৌড় দিবো না দিবো না। ভাবছি। এমন সময় আহনাফের শ্যালকটা আমকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলে, এই বেওয়াই আপনার একটু বিশ্রমাম দরকার। খালি ঝিমাইতেছেন।
_ আরে কি বলো? আমি তো কাল রাতে প্রায় নয় ঘন্টা ঘুমিয়েছি।
_ তাইলে, হঠাৎ হঠাৎ নিরব হয়ে যান কেন? মানুষ তো নানা কিছু ভাবছে। আসেন আমার সাথে। ঘরে এসে বসেন। বলেই হাত ধরে নিয়ে গেল।
আমি একটা ঘরে বসে আছি। ঘরটার চারপাশে নানা শব্দ হচ্ছে। হঠাৎ শুনতে পাই একটা কণ্ঠ। আরে রূপন্তির কণ্ঠ! কিন্তু ওকে তো এখানে কখনই দেখি নি।
আবার শুনতে পাই। কেউ কেউ আমাকে দেখাচ্ছে। এই যে ছেলেটা, রূপন্তি বেয়াইনের বিয়ার কথা বলছিল। এমন একটা ছেলের কাছে মাইনষে বিয়া দেয় না! অহন তো দেখছি; কেমন ছেলের কাছে বিয়া দিসে! একটা বদের হাড্ডি। বেয়াইনডারে খালি জ্বালায়। কয় কেমন পিরিত করছিলা? কই বিয়া তো করলো না!
এই মাত্র আমি খুব আঘাত পেলাম। রুপন্তির বিয়ে হয়েছে। আমি জানি। জানি না ওর বরটা বদের হাড্ডি। হঠাৎ আমার কান্না আসে! মনের হয় আমিই রূপন্তি!!
এবার আরেকটা কণ্ঠ শুনতে পাই। খুবই স্পষ্ট, খুবই তীক্ষ্ণ... বলছে, “মানুষ পারে না এমন কোন কাজ আছে। অথচ নিজের প্রেমটাকে এভাবে কেউ ঠেলে দেয়? জানো রূপন্তি কতটা কষ্টে আছে? আর তুমি তো দিব্যি সুখেই আছো! তুমি না একদিন বলেছিলে, রূপন্তিকে বিয়ে করলে দেশ ও জাতির জন্য আমার আর কিছু করা হবে না। কারণ ও এইসব বুঝবে না। কই তোমার সেই দেশ-জাতির কাজ? কই তোমার বিপ্লবী আদর্শ? কই তোমার মননের প্রকাশ? কিছুই তো করছো না।”
আমি তীব্র চিৎকার করছি। বলতে চাচ্ছি আমি কখনই এসব বলি নি। কখনই না! অথচ নেপথ্যের কণ্ঠটি আমার কোন কথাই শুনছে না। আমাকে ধিক্কার দিয়ে বলেই যাচ্ছে! আমি বলতে চাচ্ছি আমার কর্মব্যস্থতার কথা। বলতে চাচ্ছি আমার স্যোসাল ওয়ার্কের কথা। না কোন কথাই আমি শুনাতে পারছি না তাকে।
আমি ঘরটা থেকে বেড়িয়ে আসি। একটা সুন্দর ওঠোনে। অবশ্য যাওয়ার সময় আমি এই ওঠোনটা দেখিনি!
ওঠোনটা পেড়িয়ে আমি আসি বাড়িটার পেছনে। দেখি এখানে অনেক মানুষ বেশ আনন্দ ফূর্তি করছে। এদের আনন্দ দেখে আমারও মনটা বেশ জেগে ওঠে। একটু ফান করলে মন্দ হয় না। মনে মনে বেশ কয়েকটা চুটকি ঠোঁটের ডগায় নিয়ে আসি। এমন সময় আমার দিকে এগিয়ে আসে কয়েকজন। দেখলাম আহনাফের বড় দুলাভাইও আছেন এখনে। আমি খুশি হয়ে উঠি; আমার চিন্তারা আমার ভেতরে এখনো সজাগ আছে দেখে!
লোকগুলো আমার সামনে এসে আমার কুশল জানতে চায়। আমি তাদের বলি আলহামদুলিল্লাহ। হঠাৎ করেই আমি আমার কণ্ঠটা চিনতে পারছি না। এমন সময় দেখি একটা ছোট মেয়ে দৌঁড়ে আসছে আমার দিকে। চিৎকার করে কাঁদতেছে সে অনেক্ষণ ধরে। আমি সেটা দেখেও তাকে থামাতে পারছিলাম না। কেননা, আজ পর্যন্ত কোন শিশুই দেখিনি, যে আমাকে দেখে কেঁদে ওঠে নি! কিন্তু সে কেন আমার দিকে আসছে? তার পেছনে দেখছি রূপন্তিও আসছে!
ধ্যাৎ! আমি রূপন্তি বলছি যাকে – সেই মেয়েটিকে তো অনেক বার দেখেছি। করুণ চোখে, আমার দিকে বেশ কবার চেয়ে থেকেছে। কিন্তু তখন! তখন তো তাকে চিনতে পারি নি! আবারও আমি চৈতন্যরহিত হতে যাচ্ছি...
আমি আর ভাবতে পারিনি। ছোট্ট মেয়েটি এক দৌঁড়ে এসে আমার কোলে ওঠে যায়! থমকে যাই আমি। আমার চারপাশ। আমার দ্বৈত সত্তা। এখন আর নেই আমার নেপথ্যের সত্তাটি...
থমকে যায় রূপন্তি...
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৯
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা।
গ্রামে চলে আসার পর থেকে প্রিয় অঙ্গণ সামুতে নিয়মিত না হতে হতে একেবারে দূরেই সরে গেসলাম।
আজ এক বন্ধুর কল্যাণে এন্ড্রয়েডে ডেস্কটপ সামুর ব্যবহার শিখলাম। তাই এই পোস্ট।
গল্প নিয়ে আপনার মন্তব্য আমাকে আস্বস্ত করলো। আমি যা বলতে চেয়েছি আপনি তাই উপলব্ধি করেছেন।
আবারো কৃতজ্ঞতা পাঠ ও মন্তব্যের জন্য।
২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
সবাই সব কিছু থেকে মজা নিতে চায়। সুপান্থ সুরাহী, আমি হয়তো আপনার গল্পটি থেকে ‘মজা’ নিয়ে বাড়ি ফিরলুম বলে ...
১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:০১
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: বহুদিন পরে ব্লগে এসে আপনার মন্তব্য দেখে ভাল লাগল। বিলম্বিত রিপ্লাইয়ে দুঃখিত।
৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৫
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অদ্ভুত সুন্দর একটা গল্প। চমৎকার লিখেছেন, প্রকাশ করেছেন ভেতরের দ্বন্দ্বগুলো। ভাল লেগেছে।
১১ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৯
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
স্যরি ফর লেট রিপ্লাই...
৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২০
অরুদ্ধ সকাল বলেছেন:
অনেকদিন পর পড়িলাম--- আমি ইহাকে পড়িলাম
আপনার গল্প পড়িলাম। খানিকটা সময় তাকিয়ে রইলুম
১১ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪০
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: কেমনাছেন কবি?
বহুদিন পর রিপ্লাই দিলাম।
ভালো আছেন তো!
৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লাগলো।
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৩
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: মেলাদিন পরে এই মন্তব্য চোখে ভাসল।
ভালোবাসা জানবেন হামা।
৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:২১
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন!
গালে চপেটাঘাতের লাল টুকু যেন ফুটে আছে!
আমরা সবাই সবাই একই শ্রেণীভূক্ত! পলায়নপর! আত্মরতিমগ্ন! স্বার্থপর!
চেতনা যদি সবাইকে একটু করে নাড়িয়ে দিত- শুধু সত্যের চেতনা। সত্য বলার! সত্য বিশ্বাস করার! সত্য প্রমাণ করার- দেশ, জাতি সত্যিই বদলে যেত!!!
পঁচা গলা লাশের মিছিলে নিজেকে দেখে চমকে উঠাও কি ভুলে যাচ্ছি!!!!!!!!!
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++