নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাষ্ট্রদ্রোহী

আমিই মানুষ

শুধু খাইতে পারি।

আমিই মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এবারের অস্কার এবং মেহেরজান

০৮ ই মে, ২০১৪ রাত ২:৩৬

তিনটি অস্কারসহ শ্রেষ্ঠ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ‘১২ বছর ক্রীতদাস’ নিয়ে দেশের প্রায় সব ক’টি পত্রিকাতেই খবর হলেও ছবিটির বিষয়বস্তু হয়তো অনেকেই জানেন না। ছবিটি আমি দু’বার দেখেছি। পশ্চিমা মিডিয়ার অভিমত হলো, কাহিনী অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ছবির বিষয়বস্তু হলো ১৮৪১ সালে নায়ক সলোমন নামের গুম হয়ে যাওয়া এক বেহালাবাদকের ১২ বছরের ক্রীতদাস জীবন নিয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর শ্বেতাঙ্গদের নির্মম নির্যাতনের একটি বাস্তব কাহিনী, যা মৃত্যুর আগে সলোমন নিজেই লিখে গেছেন। দাসপ্রথার নির্মম অত্যাচারের কিছুটা জানি। তবে ছবিতে পৈশাচিক নির্যাতন যেভাবে দেখানো হলো, শ্বেতাঙ্গদের জন্য চরম অপমান সত্ত্বেও ছবিগুলো এরাই তৈরি করে; কিন্তু বর্ণবাদী বনাম বর্ণবাদবিরোধী নামে প-বিপরে সুযোগ নেই। আফ্রিকা থেকে গুম ও ছিনতাই করে আনা দাস ব্যবসায়ীরা গরু-ছাগলের মতো খোলাবাজারে কেনাবেচা ছাড়াও ধর্ষণের জন্য কালো নারীদের আলাদা স্টকের নির্মম দৃশ্যগুলো বড়ই করুণ। কোনো রকম অনুকম্পা ছাড়াই সন্তান, বাবা-মাকে আলাদা বিক্রি করে দিত শ্বেতাঙ্গরা। বর্ণবিরোধী এমন কোনো নিষ্ঠুরতাই নেই ছবিতে যা দেখানো হয়নি। অবাক যে বইপুস্তক, গবেষণা, ফিল্মে রেড ইন্ডিয়ান ও কালোদের ওপর নির্যাতনের তথ্যগুলো প্রচার করে কিন্তু শ্বেতাঙ্গরাই। এমনকি জাতির পিতা জর্জ ওয়াশিংটনের ক্রীতদাস রাখা নিয়েও নিন্দার ঝড়, শিা কারিকুলামেও এসব ইতিহাস অবিকৃত। জানি না ব্রাহ্মণদের মতো উচ্চ গোত্র হয়েও কৃষ্ণাঙ্গদের এই অপমান কী করে সহ্য করে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যাগুরুরা! ফেব্র“য়ারি সরকারিভাবে স্বীকৃত কালো ইতিহাসের মাস, দাসপ্রথা বিরোধী নানান কার্যক্রমে শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত মিডিয়াও পিছিয়ে নেই। যা বলতে চাইছি, এ দেশেও বাংলাদেশের মতো ‘চেতনা’ নামে কিছু থাকলে ছবিটি অবশ্যই নিষিদ্ধ হতো। তার মানে কি মার্কিন সরকারের উচিত ছিল ছবিটি নিষিদ্ধ করা? না, এতে স্বাধীনতার ইতিহাস যেমন কলঙ্কিত হয়নি, তেমনি জাতির পিতা জর্জ ওয়াশিংটনেরও সম্মান যায়নি; কিন্তু বিপে গেলেই বাংলাদেশীদের জাতির পিতা আর মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে সাথে সাথে শরীরে এক কড়াই গরম তেল পড়ার বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক। এদের দাপটে আকাশ কাঁপে। কথায় কথায় বই, ছবি, গবেষণা, মিডিয়া নিষিদ্ধ এখন ধর্মগ্রন্থের মতো নিয়মই হয়ে গেছে। মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে পাঁচ বছর রেকর্ড ভেঙেছে আগের ১৮ বছরের। কথায় কথায় নিষিদ্ধ, বহিষ্কার, কারাগার, ক্রসফায়ার। অথচ ‘১২ বছর ক্রীতদাস’, ‘বাটলার’, ‘রুটস’-এর মতো দাসপ্রথাবিরোধী উত্তপ্ত ছবিগুলো শ্বেতাঙ্গদেরই তৈরি, ওরাই অস্কার দেয়। তাহলে ‘মেহেরজান’ নিষিদ্ধ বা মিডিয়া বন্ধ কোন দাসপ্রথার আলামত! মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ বছর আগে সক্রেটিসকে প্রাণদণ্ড দেয়া হলেও ২১শ’ শতাব্দীতে আমাদের দেশে সেই বর্বরতা! আত্মপ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই পর পর বন্ধ হয়ে চলেছে মুক্তচিন্তার মাধ্যম, প্রতিবাদীরা অন্তরীণ, শত শত মিডিয়াকর্মী মানবেতর জীবনের মুখোমুখি, খড়গহস্ত ও হুঁশিয়ারির রেকর্ড। জার্মান শাসকও দেশটাকে ইউরোপের সবচেয়ে উন্নত করার পদপে হিসেবে ইহুদিমুক্ত জার্মানি চেয়েছিল, যা ১৮ দলীয় জোট বিলুপ্ত করার সমান্তরালে। আমাদের মতো ফেসবুকে স্ট্যাটাস নয়, বরং বাস্তবেই তথ্যপ্রযুক্তিতে এত উন্নতি করেছিল, আমেরিকার আগেই অ্যাটম বোমা তৈরি করা শেষ; কিন্তু তারপরও মতায় চিরস্থায়ী হয়নি হিটলার। যা বলতে চাইছি, মুক্তিযুদ্ধে দু’টি পরিবার কোথায় ছিল বিষয়টি আজো পরিষ্কার না হওয়ায় একপীয় অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য। গণতন্ত্রের নিয়ম হলো শুধু গোয়েন্দারাই হাঁড়ির খবর জানবে না, বরং ভোটারদেরকেও রাজনীতিবিদদের হাঁড়ির খবর জানতে হবে। এমনকি ২০১২ সালে ওবামার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে জন্মসনদ প্রকাশে বাধ্য করল ওবামাবিরোধী অ্যাক্টিভিস্টরা। জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব কুর্ট ওয়ার্ল্ডহেইম যে নাৎসি কর্মী ছিলেন, ফাঁস হওয়া মাত্র অপসারণ। মাইকেল মুর, অলিভার স্টোনের মতো অ্যাক্টিভিস্টরা ক্রমাগত সরকারের বিরুদ্ধে ছবি করছে, বই লিখছে, যার অন্যতম ‘ফারেনহাইট ৯/১১’, ‘ওবামা জাম্বি’, ‘শয়তান বুশ’ ইত্যাদি; কিন্তু ফারেনহাইট ৯/১১-এর মতো বুশবিরোধী ছবির জন্য মাইকেল মুরকে কি আমেরিকা থেকে বের করে দিয়া হয়েছিল? ছবি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল? বরং বুশের আমলেই অস্কার পায় ‘ফারেনহাইট ৯/১১’। যা বলতে চাইছি, গ্লোবাল ভিলেজে বাস করেও প্রাগৈতিহাসিক সরকারের শিকার আমরা। এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে না এলে তথ্যহীনতায় অন্ধ হবে মানুষ। মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক অ্যানরেন্ড বলেছেন, ‘মনকে সব সময় ভালো চিন্তা দিয়ে ব্যস্ত রাখবে, এমনকি যখন দাঁত ব্রাশ করবে, মাথা আঁচড়াবে কিংবা বাসে বসে থাকবে।’ আমাদের রাজনীতিবিদেরা তাদের অন্ধ-অম চিন্তা দিয়ে দখলে রেখেছেন ১৬ কোটি মানুষের মন, ব্যস্ত রেখেছেন প-বিপরে মারণাস্ত্র দিয়ে। সুলতান, মোগল, ব্রিটিশ, কংগ্রেস ও পাকিস্তানিদের পর ’৭১ থেকে বুদ্ধিবৃত্তির ওপর যে খড়গহস্ত, তাতে করে বুদ্ধিবৃত্তির ধ্বংসযজ্ঞ চলতে পারে আগামী ১০০ বছর ধরে হিরোশিমার পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়ার মতো ধীরে কিন্তু নিশ্চিত।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৪ সকাল ৮:২৯

আসফি আজাদ বলেছেন: +++

১০ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

আমিই মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৮ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

সোহানী বলেছেন: সহমত...

১০ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৪

আমিই মানুষ বলেছেন: উপায় আছে সহমত না হওয়ার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.