নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাষ্ট্রদ্রোহী

আমিই মানুষ

শুধু খাইতে পারি।

আমিই মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন

২২ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

গায়ক বলেছেন, "যারে ঘর দিলা সংসার দিলারে, তারে বৈরাগী মন কেন দিলারে?" আমি বলি, বৈরাগী হওয়া খারাপ কিছুনা। প্রত্যেক মানুষের ভেতর কোথাও না কোথাও সন্ন্যাস জীবন যাপনের এক তীব্র আকাংখা থাকে। অনেকেই গৌতম বুদ্ধ হতে চায়। কিন্তু সংসার এমনি এক মায়ার জাল ছড়িয়ে রাখে, মানুষেরা চাইলেই পারেনা সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে গৃহত্যাগী হতে। যদিও একদিন ছাড়তেই হয়। ধাঁধা দিয়ে শুরু করি উপদেশমূলক চরম বোরিং সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব।



সংসারে এমন জিনিস কি'বা আছে বল?

লইতে না চাহে তারে মানব সকল।

কিন্তু তাহা সবে পাবে, অতি আশ্চর্য!

বল দেখি? বুঝি তব বুদ্ধির তাৎপর্য।



৫. মৃত্যু রয়েছে কিন্তু নিয়তি বলে কিছু নেই। এবং এটা একটা সুখবর! নিয়তি'র দোহাই দিয়ে আমরা অনেকেই জীবনে ভালো কিছু করা থেকে বিরত থাকি। আসল ঘটনা হচ্ছে নিয়তি বলে কিছু নাই। আপনার ব্যর্থতা কিংবা সীমাবদ্ধতা আপনার নিয়তির ওপর নির্ভর করেনা। আপনার ভাগ্য ভালো কিংবা মন্দ এই দোহাই দিয়ে আপনার সীমাবদ্ধতাকে আপনি জাস্টিফাই করতে পারবেননা। যদি সত্যিকারভাবে সংকল্পবদ্ধ হন, তাহলে জীবনে অর্জন করার অজস্র সুযোগ আছে। পবিত্র কুরআনে ভাগ্যের কথা বলা আছে। কিন্তু ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে কাজ বন্ধ রাখতে বলা নেই। ভাগ্যকে ব্যাখ্যা করাও অতীব দুরহ কাজ। তাই ধরে নিন ভাগ্য বলতে কিছুই নেই।





৬. আপনার থেকে ভিন্ন বিশ্বাস ও মতের মানুষের সাথে কথা বলুন এবং তাদের বক্তব্য বোঝার চেষ্টা করুন। অধৈর্য হবেন না। আল্লাহ্‌ পাক বলেছেন, "মানব সন্তান, তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া!" আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাসের সাথে পৃথিবীর অনেক মানুষের বিশ্বাসের কোনো মিল নাই। কিন্তু মানুষ এই ভিন্ন বিশ্বাসে থেকেও জীবনের তাৎপর্য খুঁজে পায়। যদি সবাই আপনার মতো বিশ্বাস করতো এবং ভাবতো তাহলে পৃথিবীটা একটা রসকষহীন জায়গায় পরিণত হতো। আমি যখন ভিন্ন বিশ্বাসের কোনো মানুষের সাথে মিশি, তখন তাদেরকে আমার বিশ্বাসে জোর করে নিয়ে আসার চেষ্টা চালাইনা।





কেউ যখন তার কোনো বিশ্বাস এর ব্যাপারে "১০০% নিশ্চিত" এবং বহু বছর ধরে সেই বিশ্বাস ধারণ করে আসছে, তখন তাকে কিছু চালাকী কথাবার্তার মাধ্যমে তার বিশ্বাস থেকে সরানো যায় না। সবাই কিছু কিছু ব্যাপারে বদ্ধ মনের মানুষ, আমি নিজেও তাই।

কেউ যদি নিজে নিজের বদ্ধ মন থেকে বের হতে না পারে তাহলে তাকে সেটাই বিশ্বাস করতে দেওয়া উচিত। আপনিই ঠিক আর অন্যরা ভুল - পৃথিবীকে এটা বোঝানোর দায়িত্ব নেওয়ার দরকার নাই। কখনো কখনো হয়তো আপনার বিশ্বাসটিই ভুল!





পৃথিবী আরো অনেক বেশি মজার জায়গা হয় যখন সেখানে বিভিন্ন বিশ্বাসের এবং আগ্রহের মানুষ থাকে। আমার নিজের সন্দেহবাদীতা সত্ত্বেও আমি অনেক জ্যোতিষী, হস্তরেখা বিশারদ, অত্যন্ত ধার্মিক মানুষ, রক্ষণশীল মানুষ, এবং প্রযুক্তিকে ঘৃনা করে এমন অনেক মানুষের সাথে মিশেছি। এবং সেজন্যে আমার জীবন অনেক বেশী বৈচিত্রময় এবং সমৃদ্ধ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আপনি যদি শুধুমাত্র যারা আপনার সব কথায় হ্যাঁ বলে এমন মানুষদের সাথে মেশেন তাহলে আপনি কখনো ভুল করছেন কিনা এটা জানার সুযোগ পাবেন না এবং নতুন জিনিস শিখতেও পারবেন না।





৭. মানুষকে কোনো কিছু বিশ্বাস করানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নিজে একটা চমৎকার জীবন যাপন করা। কথা কিংবা যুক্তি-তর্ক দিয়ে মানুষকে যতটা না বোঝাতে পারবেন, যেটার কথা বলছেন সেটা নিজে করে তার চেয়ে অনেক ভালো বোঝাতে পারবেন। যখন মানুষ আপনাকে দেখবে, আপনার কাজ দেখবে, তখন আপনার ওদেরকে আর আলাদাভাবে বিশ্বাস করানোর দরকার হবে না। তাদেরকে শুধু বলুন আপনি আপনার কাঙ্খিত জিনিসটি অর্জন করেছেন। জীবনে যেখানে পৌঁছাতে চান সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন কিংবা সেদিকেই ধাবিত হচ্ছেন। এরপর তাদেরকে জানান কীভাবে আপনি সেটি অর্জন করেছেন। তাহলেই সবাই বুঝতে পারবে আপনি আসলে ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছেননা।





৮. পৃথিবীর কেউই সবকিছু পেয়ে বসে নেই। সবারই কিছু না কিছু সমস্যা আছে, কিন্তু তারা সেটা গোপন করে চলে। আপনি যখন একজন মানুষকে দেখেন তখন শুধু সে তাকে যেভাবে বাইরের পৃথিবীর কাছে দেখাতে চায় সেটাই দেখেন। আপনি হয়তো ভাবতেও পারবেন না তারা কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। কিংবা যে সুখী অবস্থায় তাদের দেখছেন সে অবস্থায় আসতে তাদের কিসের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। এটা সবার জন্যে সত্যি। কোটিপতি, ছাত্রছাত্রী, স্মার্ট তরুণ-তরুণী, লাজুক মানুষটি, এবং আর যেকোনো ধরণের মানুষই বলুন না কেনো, তাদের সবারই ভেতরের একটা জগত আছে। বাইরে থেকে তাদেরকে যেমনই মনে হোক না কেনো। কারো সম্পর্কে সবকিছু জানার আগে কখনোই ভাববেন না সে খুব সহজে জীবনে সবকিছু পেয়ে গেছে।



৯. "আমি জানিনা" - এটি বলায় কোনো লজ্জা নেই। পৃথিবীর সবাই সব কিছু জেনে বসে থাকবে, ব্যাপারটি এমন নয়। অনেকে কোনো বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করায় লজ্জা পান। কেন জানলামনা, কিংবা জানিনা বলে সে কি ভাববে, তা নিয়ে কোনো ভাবাভাবির অবকাশ নাই। জাস্ট বলে ফেলুন "আমি ব্যাপারটি সম্পর্কে আসলে জানিনা"। অজ্ঞতা লুকানোর চেয়ে সততা অনেক বেশি স্মার্ট একটা ব্যাপার।



১০. আরো বেশি টাকা কখনোই আপনার সব সমস্যার সমাধান করবেনা। আপনার যদি খাবার এবং থাকার জন্যে পর্যাপ্ত টাকা থাকে তাহলে এরচেয়ে বেশি টাকা ছাড়াও আপনি জীবন চালিয়ে নিতে পারবেন। এটা আরো ভালো করে বুঝতে পারবেন যদি আপনি অসচ্ছল অথচ মোটামুটি সুখী এমন মানুষদের সাথে মিশেন। আমি জীবনের একটা সময়ে দরিদ্র মানুষদের সাথে থেকেছি। তখন বুঝতে পেরেছি, জীবনের সবচেয়ে সুন্দর জিনিসগুলি পেতে কোনো টাকা লাগেনা। আর বাদবাকী জিনিসগুলো আপনি যতো দামী ভাবছেন ঠিক ততোটা দামী না। আমরা পুরো জীবন পার করে দেই টাকার পেছনে সুখ কিনতে গিয়ে। পরবর্তীতে দেখা যায় নিজের অর্জন শুন্য। হাহুতাশ তখনো থেকে যায়।





১১. আপনার সম্পদ আপনাকে কিনে নেয়। কিন্তু আপনি ভাবেন, সম্পদ কিনেছেন। এটি খুবই করুন! সত্যিকারের দরকারী জিনিসগুলো ছাড়া মানুষের অন্যান্য দামী সম্পত্তি-সম্পদ আসলে অন্যের কাছ থেকে স্বীকৃতি বা এক ধরণের লোক দেখানো, শো-আপ ছাড়া কিছুই না। বেঁচে থাকা এবং জীবন যাপনে সুবিধের জন্যে দরকারি না হলে, এসব দামী জিনিসপত্র ছাড়া আপনি অনায়াসে আপনার জীবন কাটিয়ে দিতে পারবেন।



যখন আপনি জীবনে দামী জিনিসপত্র ছাড়া চলতে পারবেননা তখন এই জিনিসপত্রগুলি আপনার জীবনকে পরিচালিত করবে। আপনার দামী বাড়ি বা ফ্ল্যাট এবং ঘরের দামী ফার্নিচার থাকার কারণে আপনি অন্য জায়গায় সহজে চলে যেতে পারবেন না। এবং এগুলো পাবার জন্যে আপনাকে সবসময় অনেক বেশি উপার্জন করা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এবং আমার ধারণা এইসব দামী সম্পদ আপনার জীবনকে খুব বেশি সমৃদ্ধ করেনা। জীবনে যতো কম সম্পদ থাকবে ততোই আসলে ভালো।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৫০

নাসরীন খান বলেছেন: valo

২| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:১৩

পংবাড়ী বলেছেন:
গৌতম ভুল করেছিল, স্ত্রীকে পেছেন ফেলে ক্যাওয়া ভুল ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.