![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ভালোবাসার নাম তামান্না ই জাহান ডাক নিতি। আমি যখন ক্লাশ সিক্সে পড়ি এক বিয়ের নৌকা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন বর্ষাকাল। ডিঙ্গি নৌকা। দোল খাচ্ছিল, হঠাৎ একটি মেয়ে আমার ডান হাতটা ধরলো। আমি তাকালাম মেয়েটির দিকে। বাদামী রং এর ফ্রক পড়া এক ডানাকাটা পরী। ও আমার চেয়ে এক ক্লাশ নিচে পড়ে। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ চলে বাসায়। ভালো লেগে যায় সেই মেয়েটিকে। পারিবারিকভাবে ওদের আর আমাদের ঘনিষ্ঠতা বেশ ভালো। ওর বাবার ঔধদের দোকান আছে।
কিছুদিন পরে জানতে পারলাম ক্লাশ ফাইভ পড়ুয়া মেয়ে ই রাসেল নামক বেকারী দোকানদারের সাথে প্রেম করে।
আমি তখন ক্লাশ এইটে পড়ি। বৃত্তি কোচিং এর পর এক ঘন্টা সময় থাকতো ক্লাশ শুরু হওয়ার। আমি আর আমার বন্ধু স্কুলের এক পুকুরের পাড়ে দাড়িয়ে গল্প করতাম।
হঠাৎ রাফি বললো দেখতো মেয়েটা বেশ সুন্দরী। আমি তাকিয়ে দেখলাম সে যে স্বপ্নের নায়িকা তামান্না। ভালো করে তাকাতেই দেখলাম রাসেল নামের ছেলেটি। আমার মনটি ভীষন খারাপ হয়ে গেল। আমি চলে আসলাম স্কুলে। সেদিনের পর থেকে আর কখনো পুকুর পাড়ে যায়নি।
২০০৫ এসএসসি পাশ এ প্লাস সহ। ঢাকার সিদ্বেশ্বরী বিশ্ববিদ্যা কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হলাম। যদিও তামান্নাকে স্বপ্ন দেখতাম কিন্তু ইন্টারমিডিয়েটের সাইন্সের এতো পড়া নিয়ে প্রেম করার সাহস মনে পায়নি। ২০০৭ সালে এইচএইসসিতে এ প্লাস পেলাম। খুব জাহাংগীর নগর ইউনিভার্সিটিতে ফার্মাসী অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বো। কিন্তু বাবার ইচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া। তাই বাবার ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে সানরাইজিং ভার্তি কোচিং ভর্তি হলাম। বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। কিছুদিন পর রেজাল্ট বের হলো। মেধা তালিকায় ৩৮ তম হলাম। নজরুল ইসলাম হলে শুরু হল আমার ভার্সিটি লাইফ।
আর স্বপ্নের নায়িকা তামান্না এসএসসি ও এইচএসসি উভয়ে দুবারে পাশ করে।
একদিন নারায়নগঞ্জের চাষাড়া যাই। ফেরার পথে তাকে দেখি। তখনও ২০০৭ সালই। আমি জীজ্ঞাস এখানে কি করো, সে বললো এক ভাইয়ার কাছে ইংরেজী প্রাইভেট পড়ি। আমি তাকে বললাম সপ্তাহে কয়দিন আসো? সে বললো তিনদিন। তখনও আমার ক্লাশ শুরু হয়নি। আমি ওকে বললাম আরে আমি সপ্তাহে এইতিন আসি। বানিয়ে মিথ্যা কথা বললাম। বাসায় বললাম চাষাড়ায় কম্পিউটার শিখতে যাবো। আব্বা তো রাজি। ও প্রাইভেট পড়া বাদ দিয়ে আমার ঘুড়ে বেরাত। মার্ক টাওয়ারের ডলসি ইটালিয়াতে বসে কোল্ড কফি কিংবা শীতলক্ষ্যায় নৌকা ঘুড়ে বেড়াম। একদিন রাসেল সম্পর্কে জীজ্ঞাসা করলাম। বললো ও একটা নরকের কীট। ওর সাথে আমার সম্পর্ক নেই। আমি মনে মনে খুশি হলাম। ও টেলিটক সীম ব্যবহার করতো। আমিও একটা কিনে নিলাম। ২৫ পয়সা সারাদিন কথা চলতো।
ভার্সিটির ক্লাশ শুরু হল। আমি হলে চলে আসলাম। চার টিউশনি করাতাম। বুয়েটর ট্যাগ থাকার ভালোই আয় হতো। যাক এর মাঝে ওর আমার সম্পর্ক তৈরি হল। মাঝখানে এই সম্পর্কের কারনে দুই ফ্যামিলীর অনেক ঝড় ঝাপটা হয়েছে। বড়দের সম্পর্ক নষ্ট আর আমাদের রোমান্টিকতা আরো বাড়লো। আমি ইউনিভার্সিটি ভর্তি কোচিং আর টিউশনে করে যা আয় করতাম তার ৭০ ভাগ ওর পেছনে ব্যয় করতাম।
আমাদের সম্পর্কটা প্লেটোনিক লাভ। যদিও ওর আগের সম্পর্ক রাসেলের ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল। তামান্নাই আমাকে বলেছিল। আমি এটাকে সহজেই মেনে নিয়েছিলাম।
এভাবেই চারটি মধুর বছর কেটেগেল। আমারও গ্রাজুয়েশন শেষ হল। ও অনার্স প্রথম বর্ষে তোলারাম কলেজে।
হঠাৎ ওর পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। ও বললো ফোনে কথা বলা যাবে না, আব্বু ফোন নিয়ে গেছে। ওদের পাশের ফ্ল্যাটের এক মামী ওর ফোন বিষয়ক কথা জীজ্ঞাসা করলাম। সে বললো ও তো সারাদিন ফোনে কথা বলে। অবশ্য ফোন করলে ফোন বন্ধ পেতাম (মানে সীম পরিবর্তন করেছে)। আমি এই বিষয়ে কিছু বলিনি। আগুন দিয়ে পুড়ে বুকে ওর নামটা লিখে রেখেছি। একবার বসন্ত দিবসে রক্ত বিক্রি করে ওর জন্য গিফট কিনেছিলাম।
ওর দ্বিতীয় বর্ষে নন মেজর সাবজেক্ট ছিল ইংরেজী। ও আমাকে ইংরেজী ওকে পড়াতে হবে। আমার এলাকায় আমার এক বন্ধু কোচিং সেন্টার ছিল। আমি সেখানে ওকে সপ্তানে তিনদিন পড়াতাম। শনি, সোম ও বৃহঃস্পতি। তিনদিন ওর জন্য ক্যাডবেরী সিল্ক চকলেট নিয়ে যেতাম।
এক শনিবার আমার পড়ে গেছে আবার রবিবার ও কে আমার এলাকায় দেখলাম। বললাম কেনো এসেছো? ও এক আন্টির কাছে এসেছি। ও এক বিল্ডিং এর ৪র্থ তলায় উঠলো। আমি দাড়িয়ে থাকলাম। দুই ঘন্টা একটি ছেলেকে নিয়ে নামলো। আমি বললাম উনি কে? তামান্না বললো ওর নাম বাবু, আমি ওকে বিয়ে করেছি। আমি একথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। নিচে ঐই বাড়ির দাড়োয়ান আর ড্রাইভার ওকে নিয় কি সব বাজে বললো। আমি আমার এক বন্ধু ফোন করলাম। আমার বন্ধু হাসান এসে আমাকে নিয়ে গেল। বাসায় অনেকক্ষন কাদঁলাম। হাসান আমাকে বাহিরে নিয়ে গেল। দুপুর ১২ টায় ও ফোন বললো, তাকে যেন ক্ষমা করে দেই। হাসান ফোনটা আমার কাছ নিয়ে ওর সাথে বেশ উচুঁ গলায় কথা বললো। সন্ধ্যায় আমি তিনটা ডেক্সপোটেন সিরাপ একসাথে গেলাম। আমি এক অন্য জগতে চলে গেলাম। ও আবার ফোন করে কেদেঁ বললো, দেখো আমার সুন্দরী তুমি পাবে কিন্তু আমি এক রত্ন নিজে নিজে হারালাম।
ওর বাসায় যখন ওর বিয়ের বিষয়টা জেনে গেল, তখন দোষ চাপাল আমার উপরে। আমি নাকি ফাঁদে ফেলে ওকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছি। দুদিন পর ও আবার ফোন করলো। আমি ভয়েজ রেকোর্ডার অন করে কিভাবে বাবুর সাথে সম্পর্ক হল, ওর বিবাহবর্হিভূত শাররীক সম্পর্ক ইত্যাদি জানতে চেলাম। সেদিন সব সত্য কথা বললো। আর আমাদের প্রথম যেদিন যেখানে দেখা হয়েছিল পরদিন যেন তার সাথে সেখানে দেখা করি। আমি গিয়েছিলাম দেখা করতে। ও অনেককিছুই কিন্তু আমার কিছু হলো না।
ওর বাবা আমার বাবাকে ফোন দিয়ে বললো, আমি তার মেয়ের জীবন নষ্ট করেছি। ওর মেঝো মামা জাহাংগীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিপার্টমেন্টর চেয়ারম্যান। আমি ভাবলাম তার কাছে সব কিছু বলি। আমি সাভারে গিয়ে Khaled Hossain স্যার কে সব বলি। প্রমান ভয়েজ ক্লিপিংস দিয়েছিলাম। কিন্তু শর্ত উনি ছাড়া কাউকে শুনাবেন না।
আমার ভালোবাসা যে সুখের কয়েকজনকে ছাড়লো, সে আজ সুখে নেই। ওর সুখই আমার একমাত্র কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:৪৯
পংবাড়ী বলেছেন: বুয়েটে গরু, ছাগল ভর্তি হচ্ছে জানতাম; এখন দেখছি ওরা গাধাও পড়াচ্ছে, ভালো।