নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা নিয়ে বসে আছি ।

রানার ব্লগ

দুরে থাকুন তারা যারা ধর্ম কে পুজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশ বিরধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্থানী প্রেমী গন।

রানার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিঠি -১

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৪৩




কিরে বাদর,

কেমন আছিস, চিনলি না তো, মনে পরে তোর সেই যে পলাশ ডাঙ্গার ঘাটে আমরা দুজন বক ওরা দেখতাম, আমার খুব পছন্দের একটা বক ছিল, তুই বকটাকে এক দম সহ্য করতে পারতি না, বলতি পছন্দের কাতারে এক মাত্র তোরি নাম থাকবে। আমি হাসতাম , আর তুই রেগে মেগে বক টাকে ঢিল ছুড়ে মারতি। মনে পরে তোর ? সকালে আমার জানালায় তুই প্রথম কড়া নারতি, আর ধুপ করে পালিয়ে যেতি, ভাবছিস আমি জানাতাম না ওটা তুই ছিলি , আমি কিন্তু জানতাম, আমি জানালার ফাক গলে তাকিয়ে দেখতাম তোর পালিয়ে যাওয়া। এখন তো তুই টেকো বুড়, ছেলে বেলায় তোর মাথার ঝাঁকড়া চুল আমার কি যে ভালো লাগত, পাড়ার মেয়ে গুল হ্যাংলার মত করত আমার হত বেদম রাগ, তাই এক দিন আমি তোর চুল কাচি দিয়ে কেটে দিয়ে ছিলাম, তুই তখন বেঘোরে গুমুচ্ছিলি। ঘুম থেকে উঠে যখন দেখলি তোর সে কি কান্না, আমার কিন্তু বেশ হাসি পাচ্ছিল, তার পর কাকু তকে ধরে নাপিতের কাছে নিয়ে গেল, গোঁসাই নাপিত তোর মাথাটা দুই হাটুর মাঝখানে রেখে খুর দিয়ে যেভাবে তোর চুল গুল কাটছিল আমার না কেমন জানি লাগছিল ওই সময়। তোর সে কাটা চুল আমি লুকিয়ে রেখে দিয়ে ছিলাম অনেক বছর, কি রে অবাক হয়ে কি ভাবছিস, তুই কি জানতি নাকি এই সব কথা? তুই তো সেই গঙ্গারামের মত মাথায় হাত বুলতি আর ভ্যাবলার মতো হাসি দিয়ে বলতি চুল গুল কেটে ভালই হয়েছে, মাথা খানিক হালকা লাগছে। আচ্ছা গরু তোর মনে পরে, এই শোন গরু বলে ডাকলাম বলে রাগ করিস না, তকে আমার গরু ছাড়া কিছুই মনে হয় না, সেই যে তুই রান্না ঘর থেকে তরকারি চুরি করে খেতে গিয়ে ধরে পরে যে উদম ক্যালানীটা খেলি কাকিমার হাতে। আমার যতবারি মনে পরে আমি হাঁসতে হাঁসতে পেট চেপে ধরি, তোর সেই ছোঁচা সভাব টা আছে এখনো? তোর বউ কি তোকে বেলন দিয়ে উমদ কেলান ক্যলায়? আচ্ছা তোদের বাড়ির পেছনে যে পেয়ারা গাছটা ছিল, ওটা আছে ? প্রতিদিন ভর দুপুরে তুই ওটায় উঠে হেরে গলায় গান গাইতি, আমার না, তখন বড্ড ইচ্ছে হতো তোর সাথে আমিও গাছটায় উঠে গান গাই, তোর থেকে অনেক ভালো গাইতাম এটা নিশ্চিত থাকিস।

তুই কি আমায় এখনো চিনলি না ? এই যে তুই ভুরূ কুঁচকে চিঠি খানা পড়ছিস, আর মাঝে মাঝে ঠোট বাকিয়ে ভাবছিস এটা বেশ বিচ্ছিরী, আমায় তুই চিনিতে পারছিস না এটা ভাবতেই আমার কান্না পাচ্ছে, ক্যানো তুই আমাকে চিনবি না? এক শিতের রাতে সবে বরাতের দিনে তুই মিলাদের মিষ্টি বিলতে এসে আমাদের বাড়ির গাছের আড়ালে টেনে নিয়ে আমায়ে যখন চুমু খেলি, বিশ্বাস কর আমি আমার পূর্ণ স্বত্বা দিয়ে তোকে আঁকড়ে ধরেছিলাম। তুই তো ওই সেই টপাস টপাস চুমু দিয়েই ভুতে ধরা রুগির মতো পালিয়ে গেলি, এক সপ্তাহ আমার সামনে এলি না, অথচ আজো আমার মনে পরলে নিজের ভেতরে সেই পৌলুমি কে খুজে পাই। এই বার চিন্তে পারলি !!! এড়ে বাছুর !! এই শোন ঢং করে বলিশ না কোন পৌলমি ? তুই মাধ্যমিকে ফেল মেরে ফেলু বাবু হলি আর আমি কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে, ভাবলাম এই বার তুই সাইজ হবি, আমাকে সন্মান দিয়ে কথা বলবি, কোথায় কি, সেই ড্যাং ড্যাং করে অসভ্যের মতো আমার কলেজে এসে আমার কাছে হ্যাব্লার মতো টাকা চাইতিস, আমার বেশ লাগত, আমার ইচ্ছে হতো এই পৃথিবীর সব টাকা আমি তোর হাতে দিয়ে দেই, তোকে পড়ানর ভার পড়লো আমার হাতে, প্রতিদিন সন্ধ্যায় তুই মুখ ভার করে আমার কাছে পড়তে আসতি, আমি বেশ মাস্টারি ঢঙ্গে পড়াতাম, তোর সে কি অভিমান, তুই মুখ ভার করে বাধা ষাঁড়ের মতো গো গো করে পড়তি, আমার বেশ লাগতো, ইচ্ছা হতো......... থাক ইচ্ছেটা না হয় নাই বা শুনলি, আর এখন শুনেই বা কি লাভ। আচ্ছা রিতাদি কেমন আছে রে? বিয়ে হয়ে যাওার পর রিতাদি মোটে একবার এলো তারপর আর এলো না।আচ্ছা রিতাদি কি তোর আপন বোন ছিল? আমার না মাঝে মাঝে সন্দেহ হতো, দিদি কতো কষ্ট করতো সারা দিন সব কাজ করতো তার উপর তোর মতো বাঁদরের সব অত্যাচার সহ্য করতো, অথচ কাকা কেমন জানি , দিদি কে একদম সহ্য করতে পারত না।

আচ্ছা তোর বউ কি আমার থেকেও সুন্দুরি, হতেই পারে না, তুই তো বলেছিলি আমি নাকি তোর দেখা সেরা সুন্দুরি। সেইযে আমাদের একটা নদী ছিল, সত্যবাদি নদী, যে নদীর পারে আমরা সবসময় সত্য কথা বলতাম, ওই নদীর পারে দাড়িয়েই তো আমাকে বলেছিলি, খবরদার এখন মিথ্যা বলবি না।

আচ্ছা শোন, এখন আমি ঢাকায় থাকি, তোর বাসা থেকে বেশ দূরে আমার বাসা, তোর বাসা কিভাবে খুজে পেলাম, তোকে কি ভাবে খুজে পেলাম, সে অনেক বড় ইতিহাস, সে না হয় পরে বলব। ভাবিস না বেচে গেছিস, আমি তোকে আমার চোখে চোখে রাকছি, সেই ছেলে বেলার মতো। যে তুই আমাকে ভুলে জাবি , আমার থেকে দূরে চলে যাবি অমনি কপ করে তোকে ধরে ফেলব। কানামাছি খেলায় তুই কাউকেই ধরতে পারতি না শুধু আমাকেই ধরে উলটা পালটা নাম বলতি, তেমনি করে তোকে ধরে ফেলব। ভালো থাকিসরে হতোভাগা। আমার ঠিকানা তোকে দিলাম না, যদি উত্তর দিতে মন চায় তবে, তোদের গলির মোড়ে যে ভাঙ্গা পুরনো ডাকপোস্ট টা আছে ওতেই ফেলে দিস চিঠি খানি আমি পেয়ে যাবো।

ইতি
পৌ।
তারিখঃ ১২ মে ২০১১

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০০

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর আবেগময় চিঠি।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ !!!

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৪

চাঙ্কু বলেছেন: সুন্দর চিঠি!

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৭

রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাল থাকবেন !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.