![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুই আর দুই যোগ করলে কত হয়? আমি: চার ব্যতীত অন্য কোন সংখ্যা হতে পারে না। হলে ভেবে দেখছি....।
একবার চাকরীর সাক্ষাতকার দিতে গেলাম একটা চাইনিজ মালিকানার গণমাধ্যমে। মানে তাদের কার্যক্রম বাংলাদেশে। জীবন বৃত্তান্ত (সিভি) দেয়ার পর থেকেই একটু ভয়ে ছিলাম, চাইনিজ ভাষা জানতে হবে নাতো? ভেতরে ঢুকে তো পুরোপুরি ভড়কে গেলাম। চাইনিজ এক সুদর্শনা দাঁড়িয়ে। আমি তো এবার পুরোটাই শেষ। কিন্তু অবাক করে দিয়ে সেই নারী আমায় বললেন- পাশের কক্ষে গিয়ে বসো (সবাইকেই তুমি সম্বোধন করেছিলেন)। সময় হলে পরীক্ষার জন্য ডাক দেয়া হবে। আমি যেন প্রাণ ফিরে ফেলাম। পুরো পরীক্ষা বাংলায় হলো। সাক্ষাতের জন্য ডাক দেয়া হলো ভেতরে। চাইনিজ সেই মহিলা পুরো সময়টা আমার সাথে বাংলায় কথা বললেন। আমি একবার প্রশ্ন না বুঝতে পেরে 'সরি' বলায় তিনি ইতস্ততবোধ করলেন। পাশে বসা আরেকজনকে বলেই ফেললেন- আমার বাংলা কী বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে? আমার বাংলা কী এতটা অস্পষ্ট? বিশ্বাস করেন আমি লজ্জা পেলাম ভীষণ। আমি দুঃখিত বলে আবার প্রশ্ন করতে বললাম। চাকরীটা আমার হয়নি। তবে শিক্ষা হয়েছে বেশ। পুরোটা সময়জুড়ে আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত তার বাংলা শুনছিলাম। যতটা গর্ব হয়েছে আমার ভাষা নিয়ে, ততটাই লজ্জাবোধ নিয়ে ফিরে এসেছি সেদিন।
আরেকটা গল্প। বাংলাদেশেরই একটা সনামধন্য সংস্থায় গেলাম সাক্ষাতকারে। কাজ প্রবন্ধ লেখা। অবশ্যই ইংরেজিতে নয়। জামার সাথে শোভাবর্ধক গলাবন্ধনী (টাই), সাথে ব্রিটিশদের কালো জুতো। বাবারে বাবা, আপাতদৃষ্টিতে নিজেকে দেখেই মনে হচ্ছিলো হ্যাঁ সত্যিই দেশটা এককালে বৃটিশরা শাষন করে গিয়েছে। যাইহোক, ভেতরে ঢুকে সালাম দিলাম। উত্তর না দিয়ে ভদ্রলোক মাথা নাড়লেন। বললেন -সিট ডাউন, গিভ মি ইউর সিভি। আমি আমার বৃত্তান্ত এগিয়ে দিলাম। তারপরে যা যা হয় তা আপনাদের বোঝার বাকি নেই। বকনা বাছুরের মত কিছুক্ষণ ইংরেজি আওড়ালাম। যদিও আমার ইংরেজী অতটাও খারাপ না। তারপরেও কেন জানি মনে হচ্ছিলো বলছি ঠিকই, কিন্তু গলার মাঝে ভাবটা আটকে আছে। আচ্ছা, কেন তারা ইংরেজিতে সাক্ষাতকার নেবেন আমার? কী প্রয়োজন এখানে ইংরেজির? আমি নিশ্চই ইংল্যান্ডের দূতাবাসে চাকরী নেয়ার জন্য যাইনি। তাহলে কেন? আমি প্রশ্ন করতে পারিনি।
ভালো একটা চাকরী চাই তো ইংরেজি শেখা বাধ্যতামূলক। দেশের যে কোন 'প্রাইভেট' থেকে শুরু করে 'পাবলিক' বিভাগেও ইংরেজি চাই ই চাই। মানে বাংলাটা তোমার হোক আর না হোক, ইংরেজিটাই অবশ্যই চাই বাপু। জার্মানি যেতে চাও, জার্মান ভাষা শেখো। স্পেনে যেতে চাও, তো স্প্যানিশ শেখো। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অস্ট্রেলিয়া যেতে চাও তাহলে ইংরেজি শেখো। বাংলাদেশে যেতে চাও, কিচ্ছু শেখার দরকার নেই তোমার। ওরাই তোমার জন্য তোমার ভাষাটা শিখে নেবে। এর পেছনে কারণ জিজ্ঞেস করলে হড়হড় করে শিক্ষিতরা বলে দেন- তোমরা পিছিয়ে আছো তাই তোমাদের অন্য ভাষা শিখতে হয়। তোমরা শিখতে বাধ্য। কথা মিথ্যে না হলেও আমার গাত্রদাহ রয়েই যায়। বাংলাটা কী এতই নিচু কোন ভাষা যেটার মূল্য ওদের কাছে কানাকড়িও নেই?
এরকম আরও শত অভিজ্ঞতা আছে আমার। প্রিয় বাংলাকে আমি ফেসবুক কিংবা ব্লগে নয়, মন থেকে ভালোবাসি। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেই বায়ান্নকে। ভাষা এবং মা দিবসটা আমি বছরের ৩৬৫ দিনেই করে নিয়েছি। এটা উদযাপন করতে আমার আলাদা কোন দিবস লাগে না। আমার পৃথিবীটা আমার নিয়মেই চলুক।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫০
জনৈক অভদ্রলোক বলেছেন: আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সহপাঠীদের দেখলে মাঝে মাঝে মনে হতো- আমি যদি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক হতাম তাহলে হয়তো তোমাদের ভর্তিই নিতাম না। আমি তাদের ছোট করছি না। ভাষা নিয়ে তাদের উদাসীনতাটা বোঝালাম আরকি।
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৫
শাহ আজিজ বলেছেন: অন্য ভাষা শেখাতে নিন্দনীয় কিছু নেই । আমরা বিদেশী ভাষার কঠিনতম ভার্শন চীনা শিখেছি , প্রয়োজনে ,জীবন ও জীবিকার তাগিদে । এই ভাষা তারপর ইংরেজির ধকল এসব করতে গিয়ে দেখলাম বাংলার উন্নতি হচ্ছে , কলমের আগায় বাংলা উথলে উঠছে । বিদেশী ভাষা শিখলে মাতৃভাষার প্রতি দরদ বেড়ে যায় ।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৮
জনৈক অভদ্রলোক বলেছেন: বিদেশে থাকলে দেশের প্রতি দরদ বেড়ে যায় সেই যুক্তি আপনি ভাষার ক্ষেত্রেও সাটিয়ে দিলেন। বিষয়টা মোটেও সেরকম নয়। আর আমি ভাষা নিয়ে লিখছি গত দু'দিন যাবত নয়। বলেছেন, বাংলা ভাষার উন্নতি হচ্ছে। কী উন্নতি হচ্ছে জানেন? আমরা বাংলার ভেতরে ৪০ শতাংশ ইংরেজি মিশিয়ে বলছি আজকাল। এই হয়েছে উন্নতি। জীবন ও জীবিকার তাগিদে ভিন্ন ভাষা শিখতে হবে এটাতে আমি দোষের কিছু দেখছি না। দোষটা হচ্ছে প্রাধন্যতা নিয়ে। আর অন্য ভাষা শেখা যে নিন্দার সেটাও কিন্তু উল্লেখ করিনি আমি।
৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫২
একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: বাঙলা ভাষা লাখো শহিদের রক্তের বিনিময় কেনা আমাদের বাঙালিদের শ্রেষ্ঠ উপার্যন আর তাকে আমরা আজও ঠিকমত আকড়ে ধরতে পারলাম না।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৩
জনৈক অভদ্রলোক বলেছেন: একদমই তাই।
৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৭
শাহ আজিজ বলেছেন: আমরা বাংলার ভেতরে ৪০ শতাংশ ইংরেজি মিশিয়ে বলছি আজকাল। এই হয়েছে উন্নতি।[/sb
আমি বলি না ।।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৪
জনৈক অভদ্রলোক বলেছেন: আমিও যাতে সেরকম হতে পারি সেই শুভকামনা রাখবেন।
৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভাল একটা চাকরির জন্য সবার আগে দরকার ক্ষমতাবান মামা চাচা।
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৫১
জনৈক অভদ্রলোক বলেছেন: এই চর্চা গণমাধ্যমগুলোতেও বেশ চর্চিত হচ্ছে। দুঃখের সাথে বলতে হয়, এ বিষয়ে মুখ খোলার কথা ছিলো গণমাধ্যমেরই। অথচ খোদ তারাই আজ কলুষিত।
৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আবদুল কাইয়ুম একজন বাংলা ব্যাকরণ নিয়ে ফেসবুকে লিখেন আমি তা নিয়মিত পড়ি শিখার জন্য
৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:৫৯
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আমরা তো বাংলিশ - জাতি। নতুন করে বলার কিছু নেই।
৮| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৫:৩৫
জনৈক অভদ্রলোক বলেছেন: সম্ভব হলে আমাদেরও সুযোগ করে দেবেন আশা করি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার কথার সাথে একমত। আসলে বাংলা ভাষাকে সস্তা আমরা বানিয়েছি। আমরা আসলে নিজেদের দেশকে ততটা ভালবাসি না যতটা আমরা বলে বেড়াই। বাংলা ভাষাও আমরা ভালো করে বলতে বা লিখতে পারি না। এটার জন্য আমাদের কোনও লজ্জাও নেই।