নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রত্যাশাদের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা আর প্রত্যাশা পূরণ হয় না... তাও তারা স্বপ্নচারিণী নামে পরিচিতি পেয়ে গেল... ইন্সটাগ্রাম ― @swarochita
ভারতের অনেক ছোট একটি রাজ্য কেরালা। ৩৮,৮৬৩ বর্গ কিলোমিটারের এই রাজ্যের রাজধানী কোচিতে গড়ে উঠেছে মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কোন জাঁককমক নেই এদের চলচ্চিত্রে। নেপোটিজম আর স্টারডমেরও কোন মূল্য নেই এই ইন্ডাস্ট্রি তে। স্বল্প বাজেটের এই ফিল্ম গুলোর মূল আকর্ষণ এর বাস্তবধর্মী গল্প, নিখুঁত পরিচালনা আর অসাধারণ অভিনয়। এই ইন্ডাস্ট্রির একজন প্রতিভাবান অভিনেতা দুলকার সালমানের জন্মদিন আজ। প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাম্মুতির পুত্র হলেও নিজ যোগ্যতায় মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন দুলকার। বাবা মাম্মুতির থেকে দুলকারের অভিনয়ের ধরণও সম্পূর্ণ আলাদা। তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমার প্রিয় দুলকারের সাতটি চলচ্চিত্র নিয়ে লিখবো বলে ঠিক করেছিলাম। প্রথম পর্বে পছন্দের তিনটি ফিল্ম নিয়ে লিখেছি। এই পর্বে দিয়ে দিলাম বাকি চারটি।
৪) Ustad Hotel:
অঞ্জলি মেননের অসাধারণ গল্পে নির্মিত আনোয়ার রশীদের অসম্ভব সুন্দর একটি চলচ্চিত্র। মুভির জনরা কামিং অফ এজ ড্রামা। অসাধারণ এই মুভিতে ফাইজির চরিত্রে দুলকার ছাড়া অন্য কাউকে আসলেই কল্পনা করা যায় না। কিন্তু প্রথমে এমনটাই হয়েছিল। যেহেতু দুলকারের তখন ফিল্মে ডেব্যু হয় নি, প্রথমে ফিল্মটা অফার করা হয়েছিল সিদ্ধার্থ কে। সে অফার টি ফিরিয়ে দিলে চলে যায় দুলকারের কাছে। দুলকার এক মূহুর্ত চিন্তা না করে তার দ্বিতীয় মুভি হিসেবে এটি সাইন করেন। কামিং অফ এজ ড্রামা তার সব সময়ই খুব পছন্দ। Wake Up Sid, Udaan দেখার পর এই ধরণের ফিল্মের প্রতি একটা অন্য রকম আকর্ষণ বোধ করতেন। তবে উস্তাদ হোটেলের স্টোরি এই দুটোর কোনটার সাথেই যেমন মিলবে না, তেমনি Salt N’ Peeper এর সাথেও এর কোন মিল নেই। অঞ্জলি মেনন আর আনোয়ার রশীদ চিন্তা করছিলেন ফুড রিলেটেড কোন মুভি বানাবেন যেখানে সুফি দর্শনের হালকা ছোঁয়া থাকবে। ঠিক তখনই রিলিজ পেল সল্ট এন পিপার। দুটো মুভি খাদ্য সম্পর্কিত হলেও কাহিনী আর চিত্রনাট্য সম্পূর্ণ আলাদা।
“অনেকেই অন্যের জন্য খাবার তৈরি করতে পারে। কিন্তু পরিতৃপ্ত করার ক্ষমতা সবার নেই।”
উস্তাদ হোটেল ফাইজি নামের একটি তরুণের গল্প। এটি তার দাদা করিম ইক্কার গল্প। ফাইজি হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার জন্য সুইজারল্যান্ড যায়। ফিরে আসার পর সে জানায় সে লন্ডনের আইভি রেস্টুরেন্টে শেফ হিসেবে জব পেয়েছে এবং এক সপ্তাহের ভিতর জয়েন করতে চায়। এরপর কিছুটা অ্যাজ ইউজ্যুয়াল কাহিনী। ফাইজির বাবা সেটা মেনে নিতে পারেন না, তাই তার পাসপোর্ট নিজের কাছে রেখে দেন। ফলশ্রুতিতে ফাইজি বাসা ছেড়ে তার দাদা করিম ইক্কার কাছে চলে আসে আর এখান থেকেই শুরু হয় মুভির কাহিনী। আমরা অনেকেই হয়ত অনেক কিছু ঠিক করে রাখি ফাইজির মত। কিন্তু হয়ে যায় হিতে বিপরীত। হয়ত এর থেকে ভালো কোন সুযোগ আমাদের হাতের কাছেই আছে। যা আমরা চাইলেই কাজে লাগাতে পারি। কিন্তু সেটা উপলব্ধি করতে পারি না। ফিল্মের শেষের দিকে নারায়ণ কৃষ্ণন নামের একটি চরিত্র আছে যেটা ভারতের একজন সোশ্যাল ওয়ার্কার এর জীবনের উপর বেইজ করে বানানো। তাঁর নামও নারায়ণ কৃষ্ণন।
উস্তাদ হোটেল, চার্লি এবং ব্যাঙ্গালোর ডেইজ আমার দেখা শুধু দুলকারের নয়, এই পর্যন্ত দেখা সব থেকে প্রিয় তিনটি মালায়ালাম ফিল্ম। শুধু আমার নয়, উস্তাদ হোটেল অনেক মুভি লাভারদের সব থেকে প্রিয় মুভি। আর হবে না কেন? আনোয়ার রশীদের পরিচালনা সবসময়ই দুর্দান্ত, আর সাথে রয়েছে অঞ্জলি মেননের গল্প। অঞ্জলির কাহিনীতে সবসময় সম্পর্কের গুরুত্ব প্রাধান্য পায়। আর সম্পর্কের গল্পগুলো সবসময়ই সুন্দর।
এই মুভিটি তিনটি ক্যাটেগরিতে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। এর ভিতর একটি করিম ইক্কা ওরফে থিলাকান কে স্পেশাল মেনশনে মরণোত্তর পুরষ্কৃত করা হয়।
মুক্তির তারিখ - ১৩ জুলাই ২০১২
আইএমডিবি রেটিং - ৮.৩/১০
ব্যক্তিগত রেটিং – ১০/১০
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার – জাতীয় পুরস্কার (৩টি)
গানের ইউটিউব লিংক – Sanchari Nee
এইন্থুসান লিংক – Ustad Hotel - Einthusan
৫) 100 Days of Love:
অনেকে হয়ত কপাল কুঁচকে বসতে পারেন। সবচেয়ে পছন্দের সাতটি মুভিতে পাঁচ আর ছয় নম্বরের দুটো কিভাবে এল? দুলকারের এর থেকে আরও ভালো মুভি আছে যেগুলো সমালোচকদের রিভিউ, আইএমডিবি রেটিং এবং বক্স অফিস কালেকশনের দিক থেকে আরও এগিয়ে। এটা আসলে আমার পার্সোনাল ফেভারিট।
বালান কে. নায়ারের বাবা, মা এবং বড় ভাই সফল চিকিৎসক। এখানে বলে রাখি বালান কে. নায়ার নামে হয়তো পুরো ভারতে একজন মানুষই পাওয়া যাবে। যিনি সত্তর-আশির দশকে মালায়ালাম ফিল্মের অতি জনপ্রিয় ভিলেন ছিলেন। ফিল্মে আসলে দুলকারের নানার নাম থাকে বালান। তিনি মারা যাওয়ার পর পরই এই বালান জন্মানোতে তার মা ছেলের নামও বালান রেখে দেন। আর বাবার লাস্ট নেম অ্যাড হওয়াতে সে হয়ে যায় বালান কে. নায়ার। এই নাম নিয়ে তার বিড়ম্বনার শেষ নেই। তার উপর আবার তার বেস্ট ফ্রেন্ডের ডাকনামও আর এক পুরানো মালায়ালাম ভিলেনের নামে। বালানের ভাই রকি কে. নায়ার দুবাইতে তাদের বাবা-মায়ের হাসপাতালের সি.ই.ও. এবং চীফ সার্জন। কিন্তু এই টিপিক্যাল ডক্টর পরিবারের সব সদস্যদের থেকে অন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখে বালান। তার আইডল এক সময়ের সফল কার্টুনিস্ট আর. কে. লক্ষ্মণ। বর্তমানে বালান দ্যা টাইমসে আছে ফিচার রাইটার পোস্টে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মুভিটা শুরু হয় তার চাকুরী হারানোর মধ্য দিয়ে। আর ঐ সন্ধ্যায় ঝুম বৃষ্টির ভিতর একটা ট্যাক্সি ডেকে তাতে উঠতে গিয়ে দেখে তার আগেই অন্য একটি মেয়ে উঠে পড়েছে। বালান ট্যাক্সি টি ছেড়ে দেয়, কিন্তু রাস্তায় পড়ে থাকে ঐ মেয়ের ভুলবশত ফেলে যাওয়া মান্ধাতা আমলের একটি ক্যামেরা। ভালবাসার একশ দিনের শুরু এখান থেকে।
এটাকে টিপিক্যাল লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট মুভি ভেবে ভুল করে বসবেন না। মুভিটি অর্ধেকটা দেখার পর বুঝতে পারবেন। মুভিটিতে প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে ছিলেন নিত্যা মেনেন। নিত্যা এর আগে দুলকারের সাথে উস্তাদ হোটেলেও ছিলেন। কিন্তু সেখানে নিত্যা অভিনীত চরিত্রটির গুরুত্ব কিছুটা কম ছিল অন্য চরিত্রগুলোর তুলনায়। রোমান্টিক ফিল্ম হিসেবে দুলকার আর নিত্যার এটাই প্রথম ফিল্ম ছিল। এই মুভিটির ঠিক এক মাস পর তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে এই জুটির আরও একটি রোমান্টিক মুভি (O Kadhal Kanmani) মুক্তি পায়। এটার পরিচালনায় ছিলেন মণি রত্নম। ও কাদাল কানমানি অনেকের খুব প্রিয় একটি ফিল্ম। আমার আবার ভালবাসার একশ দিন বেশি প্রিয়।
ফিল্মের কাহিনী এবং পরিচালনা ছিল জেনুস মোহাম্মদের। যারা রোমান্টিক ঘরানার ফিল্ম পছন্দ করেন তাদের জন্য এই মুভি সাজেস্ট করবো। এই মুভির কাহিনী অবলম্বনে বাংলাদেশে একটি টেলিফিল্ম নির্মিত হয়েছে। যারা টেলিফিল্মটি দেখেছেন কিন্তু এই মুভিটি দেখেন নি, তাদেরও এটা দেখার জন্য সাজেস্ট করবো। কেন সাজেস্ট করছি সেটা দেখার পর বুঝতে পারবেন।
মুক্তির তারিখ - ২০ মার্চ ২০১৫
আইএমডিবি রেটিং – ৬.৫/১০
ব্যক্তিগত রেটিং – ৯/১০
গানের ইউটিউব লিংক – Hridayathin Niramayi
এইন্থুসান লিংক – 100 Days of Love - Einrhusan
৬) Solo:
আগে বলে রাখি এই মুভিটি ভালো লাগেনি এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। এটি একটি এন্থলজি ফিল্ম। মোট চারটি আলাদা আলাদা গল্প নিয়ে একটি ফিল্ম। একটি গল্পের সাথে অন্য গল্পের কোন মিল নেই। চারটি স্টোরির লীড রোলে রয়েছে দুলকার। চারটা চরিত্রও সম্পূর্ন আলাদা। Blind Love, The Cyclist, Ties of Blood এবং The Affair – এই হল চারটি গল্প। ব্যক্তিগতভাবে The Cyclist আমার বেশি পছন্দের। স্টোরি গুলো নিয়ে কিছুই বলবো না। যারা জানতে চান নিজ দায়িত্বে দেখে নিবেন।
মালায়ালাম থ্রিলার গুলো অনেক সুন্দর হয়ে থাকে। যারা নিয়মিত দেখেন তারা ভালো জানেন। যারা দেখেন নি তারা মালায়ালাম মুভি Drishyam এর হিন্দি বা অন্য কোন একটি রিমেক হয়ত দেখেছেন। সেভাবে আন্দাজ করে নিতে পারেন। এটা মালায়ালাম অন্যান্য থ্রিলার এর মত মনে রাখার মত কোন মুভি না। তাছাড়া দুলকারের বেশির ভাগ মুভির বক্স অফিস পারফরমেন্স অনেক ভালো। কিন্তু এটা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। এত কিছুর পরও মুভিটা ভাল লাগার পিছনে কারণ হচ্ছে চার রকম চরিত্রে দুলকারের অসাধারণ অভিনয়। যারা ডিকিউ এর ভক্ত তাদের মিস করা ঠিক হবেনা। চারটা স্টোরি আলাদা ঘরানার। প্রথমটি রোমান্টিক ড্রামা, দ্বিতীয়টি রিভেঞ্জ থ্রিলার, তৃতীয়টি ক্রাইম থ্রিলার এবং চতুর্থটি রোমান্টিক থ্রিলার। যারা এই জনরা গুলো পছন্দ করেন তাদের ফিল্মটি ভালো লাগতে পারে। কাহিনী এবং পরিচালনা ছিল বিজয় নামবিয়ারের । এই পরিচালকের একটি হিন্দি ফিল্ম (Wazir) আগে দেখেছিলাম। যাদের ওয়াজির ভালো লেগেছিল তারাও দেখতে পারেন। আর দুলকারের আপকামিং হিন্দি ফিল্মটির (Karwaan) মূল কাহিনীও বিজয় নামবিয়ারের। এটাতে দুলকারের সাথে থাকবেন আরও একজন প্রিয় অভিনেতা ইরফান খান।
এই ফিল্মে চারটি স্টোরি সম্পূর্ন আলাদা হলেও স্টোরি গুলোর ভিতরে চারটি কমন কানেকশন আমার চোখে পড়েছে। এটা দিচ্ছি কারণ অনেকে মুভিটি রিলিজ পাওয়ার পর কমন কানেকশন গুলো কি ছিল সেটা জানতে চেয়েছিলেন।
ক) এটা যারা মুভিটি দেখেছেন তারা জানেন। মুভির চারটি গল্প চারটি প্রাকৃতিক উপাদানকে রিপ্রেজেন্ট করেছে – পানি, বায়ূ, অগ্নি এবং ভূমি। চারটি উপাদানই পঞ্চ মহাভূত এর অন্তর্গত, যেগুলো দেবতা শিবের এক একটি ফ্যাসেট (হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আরও ভালো জানবেন)। প্রতিটা এলিমেন্টের সাথে স্টোরির হালকা কানেকশন আছে।
খ) চারটি কাহিনীতে দুলকারের চারটি চরিত্রের নাম থাকে – শেখর, ত্রিলোক, শিবা এবং রুদ্র। চারটিই দেবতা শিবের নাম।
গ) চারটি স্টোরি তে একজন মেয়ের ভিন্ন ভিন্ন চারটি সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে, যারা দুলকার অভিনীত চরিত্র গুলোর খুব কাছের মানুষ ছিল। কোন গল্পে কোনটার কথা বলা হয়েছে, সেটা আর লিখছি না। যেহেতু এটা গত বছরের মুভি, অনেকের নাও দেখা থাকতে পারে।
ঘ) প্রতিটা স্টোরি তে একটি শিশুর কথা বলা আছে। হয়তো সে পৃথিবীতে এসেছে কিংবা আসার আগেই চলে গিয়েছে।
এই চারটি ছাড়া আরও কমন কানেকশন থাকতে পারে। আমার অবজারভেশনে শুধু চারটিই পেয়েছি।
মুক্তির তারিখ - ৫ অক্টোবর ২০১৭
আইএমডিবি রেটিং – ৭.১/১০
ব্যক্তিগত রেটিং – ৮.৫/১০
গানের ইউটিউব লিংক – Sita Kalyanam
এইন্থুসান লিংক – Solo - Einthusan
৭) Mahanati:
মহানতি বা মহান অভিনেত্রী !!
সাতটি ফিল্মের মধ্যে শুধু এটি মালায়ালাম নয়। মহানতি এবছর রিলিজ পাওয়া দুলকারের প্রথম তেলুগু চলচ্চিত্র। এটি পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকের বিখ্যাত তেলুগু অভিনেত্রী সাবিত্রীর বায়োপিক। তাঁকে তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রথম ফিমেল সুপারস্টার বলা হয়ে থাকে। তাঁর স্বামী সেই সময়ের খ্যাতনামা তামিল অভিনেতা জেমিনি গণেশান। তিনি তামিল সিনেমার Kadhal Mannan বা King of Romance হিসেবে পরিচিত। মহানতিতে জেমিনি গণেশান এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুলকার। পরিচালক এই মুভিটি করার জন্য দুলকারকে যখন অফার দিয়েছিলেন, তখন তিনি একটু অবাক হয়েছিলেন। একে তো জেমিনির সাথে দুলকারের কোনদিক দিয়ে কোন মিল নেই, তার উপর তেলুগু ভাষা সম্পর্কেও তার ভালো ধারণা নেই। মালায়ালাম আর তামিল জানলেও তেলুগু ভাষা বেশ কঠিন মনে হয় তার কাছে। পর্দায় যতটুকু জেমিনিকে দেখেছেন ঠিক ততটুকুই তিনি জানেন জেমিনি সম্পর্কে। তাই তিনি জেমিনিকে অনুকরণ করার চেষ্টা করেন নি। একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি পঞ্চাশ বা ষাটের দশকের অভিনেতা হলে যেমন হতেন ঠিক তেমন ভাবে নিজের মত করে জেমিনি গণেশানকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এত কিছুর পরও নারীকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র হওয়ার সত্ত্বেও এই চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য সমালোচকদের কাছ থেকে অনেক প্রশংসা পেয়েছেন দুলকার। বিখ্যাত সব তেলুগু পরিচালক তার ভক্ত হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ফিল্মটি দেখার পর অনেকে দুলকারের চরম ভক্ত হওয়ার পরও তার উপর রেগে গিয়েছিলেন। জেমিনি একজন অসাধারণ অভিনেতা ছিলেন সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। অগণিত ভক্ত ছিল এই তারকার। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে ছিলেন বেশ বিতর্কিত। দুলকার সেই চরিত্রের সাথে এত সুন্দরভাবে মিশে গিয়েছেন যে মুভিটি দেখার সময় এক পর্যায়ে সবাই তাকে কিছুক্ষণের জন্য অপছন্দ করতে শুরু করেছিলেন। অবশ্য জেমিনির মেয়ে কমলা ফিল্মটি দেখার পর অভিযোগ করেছেন জেমিনির চরিত্রকে বাস্তব জীবনের থেকে আরও বেশি নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার কিছু কিছু কথার সঙ্গে জেমিনি এবং সাবিত্রীর মেয়ে বিজয়াও একমত পোষণ করেছেন।
মহানতি তে শুধু দুলকার নয়, সাবিত্রী চরিত্রে অভিনয় করা কীর্তি সুরেশ সহ প্রতিটি অভিনেতা-অভিনেত্রী তাদের অভিনীত চরিত্রের সাথে খুব সুন্দরভাবে মানিয়ে গিয়েছেন। যে কোন ফিল্মের জন্যই এটা অপরিহার্য, আর বায়োপিক হলে তো অবশ্যই। যারা সাদাকালো যুগের সেই চিরায়ত সিনেমা দেখতে খুব পছন্দ করেন তাদের মহানতি অনেক ভালো লাগবে। যারা বায়োপিক দেখতে ভালবাসেন তাদেরও ভালো লাগবে।
মুক্তির তারিখ - ৯ মে ২০১৮
আইএমডিবি রেটিং – ৯/১০
ব্যক্তিগত রেটিং – ৯/১০
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার – জাতীয় পুরস্কার (৩টি), ফিল্মফেয়ার (৪টি)
গানের ইউটিউব লিংক – Mooga Manasulu
এইন্থুসান লিংক – Mahanati - Einthusan
এই ছিল আমার পছন্দ অনুযায়ী দুলকারের সেরা সাতটি মুভি। এক একজনের পছন্দ অনুযায়ী সেরা সাতের পরিবর্তন হবে। এগুলো ছাড়াও দুলকারের আরও কিছু মুভি আছে যেগুলো আমার বেশ ভালো লেগেছে। আজকের মত এমন আরও অনেক গুলো জন্মদিন পার করুক তিনি, আর আমাদের এমন সুন্দর সুন্দর সব চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে যাক – এটাই প্রত্যাশা থাকবে সব সময়।
“Because we all need to believe in movies, sometimes.” ― Iain S. Thomas (pleasefindthis)
প্রথম পর্বের লিংক – দুলকার সালমান – এক মুগ্ধতার নাম (মুভি রিভিউ – প্রথম পর্ব)
বি:দ্র: মালায়ালাম মুভির সাধারণত ডাব হয়না। দেখতে চাইলে সাবটাইটেল দিয়ে দেখতে হবে। দুলকারের প্রতিটি মুভির ইংরেজি এবং বাংলা সাবটাইটেল আছে। যার যেটা পছন্দ সেটা দিয়ে দেখতে পারেন। সাবসিনে সবগুলো মুভির দুটো ভাষার সাবটাইটেলই পেয়ে যাবেন।
০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৩৪
স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আসলে বলতে গেলে আমার লেখালেখির অভ্যাস একেবারেই নেই। কি চিন্তা করে যে এখানে অ্যাকাউন্ট খুলেছি নিজেও জানি না। প্রিয় অভিনেতার জন্মদিন ছিল তাই ভাবলাম তার মুভি সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু লিখি। আবার যদি কখনও কিছু লিখতে ইচ্ছা করে আর যদি সময় পাই তাহলে অবশ্যই লেখার চেষ্টা করবো।
২| ১০ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৪৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
চমৎকার পোস্ট; ভাল লাগলো..,.........
১০ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৩
স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৩৮
আখেনাটেন বলেছেন: উনার ওস্তাত হোটেল অামাকে আমার এক ভারতীয় বন্ধু রেফার করেছিল। নিরাসক্ত হয়ে দেখা শুরু করেছিলাম। দেখা শেষ করে একটি শব্দই বের হয়েছিল 'ওয়াও'।
রীতিমত ক্লাসিক ছবি। কী গেটআপে, কী অভিনয়ে। অসাম। আপনার লেখা সেটা স্মরণ করে দিল।
ব্লগিং এ শুভেচ্ছা রইল।
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৫৩
স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। বলাই বাহুল্য উস্তাদ হোটেল আমারও খুব প্রিয় একটি মুভি। উস্তাদ হোটেল, চার্লি, ব্যাঙ্গালোর ডেইজ ― এই ফিল্মগুলোর অবদান অনেক বেশি আমার মালায়ালাম চলচ্চিত্রের ভক্ত হওয়ার পিছনে।
৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনার মুভি প্রেম ও তার বিশ্লেষণ ধর্মী দেখে মুগ্ধ হচ্ছি। তবে এক সঙ্গে এতগুলি না দিয়ে একাধিক পোস্ট আকারে দিলে আপনার পরিসংখ্যান বাড়তো যা আপনার সেফ হতে সহায়ক হত বলে আমার বিশ্বাস ।
আমি ঠিক উল্টোটাা ছাত্রাবস্থায় যা একটুআধটু দেখতাম, বর্তমানে কর্মব্যস্ততা ও অবসর টাইমে ব্লগিং ছাড়া অন্যকিছু ভাবতে পারিনা। যাইহোক আমরা আপনার রিভিউ পড়ে না হয় অবগত হবো।
শুভকামনা জানবেন ।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৩
স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: এটা ঠিক একটা পোস্টে শুধু একটা মুভি নিয়ে লিখলে আরও বেশি বড় আর সুন্দর করে লেখা যেত। সাথে পোস্টের সংখ্যাও বাড়তো। কিন্তু কেন যেন ইচ্ছা করেনি। ঠিক আছে এরপরে এটা মাথায় রাখার চেষ্টা করবো। সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ।
আমি নিজেও সময় পাই না খুব বেশি। তারপরও মুভি দেখা আর আউটবই পড়াকে একেবারে বাদ দিতে পারি না। মাঝে মাঝে দরকারি কাজ বাদ দিয়ে এই দুটো কাজ করে থাকি।
মন্তব্য আর শুভকামনার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৫| ২২ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: দুলকার সালমান এর মুভি আমি দেখি। ভালো লাগে।
ইরফান আর দুলকার সালমান একটা মুভি করেছেন। নামটা এই মুহুর্তে মনে করতে পারছি না। মুভিটা কি আপনি দেখেছেন?
২২ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫১
স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: হ্যাঁ, Karwaan নাম। আমার প্রিয় মুভিটা।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১২
রাকু হাসান বলেছেন: আপনার চলচ্চিত্র প্রেম ,বিশ্লেষণ দেখে অবাক হচ্ছি । আপনি লিখুুন না কেন আরও ! এ ব্লগের হিসাবে নতুন কিন্তু পোস্ট অনেক পরিপক্ষ ।শুভকামনা ভাই!