| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মধুর দুঃস্বপ্ন
I am nothing but an IDIOT :)
সাম্প্রতিক সময়ে বাঙালি জাতির সেন্স অব হিউমার এতই বেড়ে গেছে যে বাংলাদেশে আজ রিউমারের ছড়াছড়ি প্রায় বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে। প্রথমে শুনলাম চাঁদে সাইদি হুজুরের মুখদর্শন করে অনেকেই অশেষ সওয়াব লাভের সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। সেই সওয়াব লাভের ফলশ্রুতিতে অনেক বুরখাওয়ালী মহিলা যুদ্ধাদেরকেও আমরা দেখেছি ঝাঁটা হাতে মিছিল করতে। আর চাঁদের তাণ্ডব পৃথিবীর আর কথাও না ঘটলেও, বাংলাদেশ এর কোন অঞ্চল-ই রেহাই পায়নি এ থেকে। বেঘুরে প্রাণও হারাতে হল অনেককে। এরই মাঝে শুনতে পেলাম সাইদি হুজুরের ফাঁসি হয়ে গেলে সৌদি সরকার বাংলাদেশের সব প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে পাঠিয়ে দিবে। এটাও যে গুজব ছিল তার প্রমান সময়াতীত। গতকাল যে নতুন গুজবটি ছড়াল তা হল ভিটামিন এ+ ক্যাপস্যুল নিয়ে। আজ যখন সকাল বেলা ব্যাংক-এ যাচ্ছিলাম আমার পাশ বরাবর হেঁটে যাচ্ছিলেন জন তিনেক হুজুর যাদের হাতে বইয়ের স্তূপ দেখে বোঝা যাচ্ছিল তেনারা কোন মাদ্রাসার উচ্চ স্তরের ছাত্র। একজন আবার বেশ উঁচু গলায় গালিগালাজ করছিলেন এই নাস্তিক সরকারকে। আফসোস করে বলছিলেন কি করে এই নিষ্ঠুর সরকার ওষুধের নামে বিষ খাওয়াতে পারল! তার কাছে শিশুমৃত্যুরও একটা পরিসংখ্যানের চিত্র ছিল। এটা তো ছিল হাসপাতালে যারা মারা গেছে তাদের হিসাব কিন্তু বাড়িতে আরও কত হাজার হাজার শিশু মারা গেছে তার হিসাব দিতে না পেরে তার আফসোস আরও বেড়ে গেল। এমতাবস্তায় আমি আশেপাশে এমন অনেক মহিলাকেই দেখতা পাচ্ছিলাম যাদের কোলে ৫বছরের কম বয়সী শিশুরা দিব্যি সুস্থভাবে মায়ের কোলে হাসছিল। ভাবলাম তারা হয়তো ক্যাপস্যুল -ই খায় নি। অতঃপর মনে পড়ল আমার নিজেরই তিন তিনটা ভাগ্নি গতকাল ক্যাপস্যুল খেয়েছে যারাও কিনা আজ সকালেও আমাকে ঘর থেকে বেরুবার সময় টাটা গুডবাই মামা বলে বিদায় জানিয়েছে। আমার খুব ইচ্ছা হল সেই বিজ্ঞ আলেমকে জিজ্ঞেস করি, তা কয়টা বাচ্চা আপনার চোখের সামনে মারা গেছে? কিন্তু তার সাথে তর্ক করতে যাওয়া হয়তো আমার জন্য খাল কেটে কুমির আনার সমান হত, তাই পাশ কাটিয়ে আর একটু সামনে এগিয়ে গেলাম। শুনতে পেলাম একজন আধুনিকা আপু উনার বান্ধবীদের বলছেন, এই জানিস, এগুলো সবই রিউমার ছিল। তখন তার থেকেও আধুনিকা আরেক আপু ঠোঁট উলটিয়ে জানতে চাইল, রিউমার মানে কী!?
©somewhere in net ltd.