নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সাংবাদিক। ‘জল পরীর ডানায় ঝাপটা লাগা বাতাস’ (২০১৩), ‘সাদা হাওয়ায় পর্দাপন’ (২০১৫) দুটি কবিতার বই প্রকাশিত। তার লেখা নাটকের মধ্যে ফেরা, তৎকালীন, আদমের সন্তানেরা উল্লেখযোগ্য। লেখালেখির জন্য ২০১৫ সালে হত্যার হুমকি প্রাপ্ত হন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান

আমার পরিচয় খুঁজচ্ছি জন্মের পর থেকেই। কেউ পেলে জানাবেন কিন্তু....

সৈয়দ মেহেদী হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অশুভবার্তা

১৬ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৪



প্রথম আলো পত্রিকায় শুক্রবার (১৩ মে) তাজমহল নিয়ে ভারতের একটি সংবাদ প্রকাশ করে প্রথম পাতায়। সেখানে বলা হয়েছে, তাজমহলের ২২টি বন্ধ ঘরে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে আন্দাজ করে দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ। এমনকি মামলার বাদীকে ভর্ৎসনাও করেন আদালত।

কিন্তু খটকার জায়গা হলো সংবাদের শেষের অংশে প্রতিবেদক যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে।

প্রতিবেদক যুক্ত করেছেন, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন বিখ্যাত স্থাপনা নিয়ে কট্টর ধর্মবাদীদের অনুসন্ধানের একটি চিত্র। হিন্দু সাধুসন্ত বিশ্বাস করে তাজমহলের স্থানে তেজো মহালয় নামে শিবমন্দির ছিল। যা ১২১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা পরমর্দি দেব। এরআগে ২০১৫ সালে উত্তর প্রদেশের আইনজীবীরাও তাজমহলের স্থানে শিবমন্দির ছিল দাবী করে মামলা করেছিলেন। যদিও ইতিহাস বলছে, ১৬৩১ সালে শুরু করে ২২ বছর ধরে ২২ হাজার শ্রমিকের পরিশ্রমে তাজমহল গড়ে তুলেছিলেন সম্রাট শাহজাহান। এছাড়া ২০১৭ সালে এক মন্ত্রী দাবী করেন তাজমহলের ভিতরে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি থাকতে পারে। ২০১৯ সালে কর্ণাটকের এক নেতা দাবি করেন, শাহজাহান তাজমহল তৈরি করেননি। ওটা তিনি কিনেছিলেন রাজা জয় সিংয়ের কাছ থেকে।



হয়তো তাজমহলের বৈশ্বিক প্রভাবের কারনে এখনো কট্টররা কব্জ করতে পারেনি। তবে সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইতোমধ্যে বিভিন্ন শহর, জেলা, জনপদ, রাস্তার নাম বদলের একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ইসলামি নামের সঙ্গে যা কিছু যুক্ত, ভারতীয়করণের নামে তার হিন্দুত্বকরণ করছে। এলাহাবাদের নাম বদলে করা হয়েছে প্রয়াগরাজ। ফৈজাবাদ জেলার নাম বদলে করা হয়েছে অযোধ্যা।মুজাফফরনগরের নাম বদলে লক্ষ্মীনগর, আহমেদাবাদের নাম বদলে ‘কর্ণাবতী’, আগ্রার নাম পাল্টে ‘অগ্রবন’ কুতুব মিনারের নাম বদলে বিষ্ণু স্তম্ভ করার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া রাজধানীর ছয়টি রাস্তার মধ্যে শাহজাহান রোডের নাম বদলে জেনারেল বিপিন রাওয়াত রোড, হুমায়ুন রোডের নাম বদলে মহর্ষি বাল্মীকি রোড, আওরঙ্গজেব লেনের নাম বদলে ড. এপিজে আবদুল কালাম লেন, তুঘলক রোডের নাম বদলে গুরু গোবিন্দ সিং রোড, আকবর রোডের রোডের নাম বদলে মহারাণা প্রতাপ রোড এবং বাবর লেনের রোডের নাম বদলে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বোস লেন করার দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

ভারতের অভ্যান্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা বাস্তবিক সাজে না। যেহেতু বাংলাদেশী পত্রিকায় সংবাদটি গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে, এজন্য মন্তব্য করার যুক্তি সিঁকি হলেও আছে। সে অনুসারে বলতে হয়, স্থাপনা, সড়কের নাম বদলে ফেলে কখনোই ইতিহাস মুছে ফেলা সম্ভব নয়। বিশ্বের মধ্যে যে কয়টি রাষ্ট্র আছে তারমধ্যে আদর্শ গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে একটি ভারত। সেখানে মানুষের ভোটের অধিকার যদি নিশ্চিত করা হয় তাহলে ইতিহাসও ইতিহাসের মত বয়ে চলার অধিকার রয়েছে। বাবরি মসজিদ নিয়ে যে কাণ্ড হলো তার আলোচনা-সমালোচনা এখনো থামেনি। তাই সাম্যক রাজনৈতিক বা ধর্মীয় তুষ্টির জন্য ইতিহাস মুছে ফেলার চর্চা একটি জাতিকে বিপন্ন করে। ইতিহাস মুছে ফেলে গণতন্ত্র চর্চা হয় না।

ভারতে দীর্ঘদিন ধরে নাম বদলের যে চেষ্টা চলে আসছে তা নিঃসন্দেহে একটি গোষ্ঠি করছেন। যারা রাজনৈতিক বিবেচনা ও ধর্মীয় বিবেচনা পুঁজি করে জনসমর্থন আদায় করতে চান। কিন্তু এটি মনে রাখা জরুরী, ভারতে বসবাস করা হিন্দু, মুসলমান বা অন্য ধর্মের মানুষ যেমন ভারতের সম্পদ। তেমনি ওখানকার ইতিহাসও তাদের সম্পদ। শুধু সম্প্রদায়ের বিবেচনায় ইতিহাস মুছে ফেলা আর জাতীয়তার সাথে বেঈমানী করা সমান কথা। আদালতের কঠোর অবস্থানে এখন পর্যন্ত ভারতে নাম বদলের মৌসুম শুরু না হলেও এই চেষ্টা একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক রাষ্টের জন্য অশনি সংকেত বটে।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৩

ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: তাজমহল কেস খারিজ করে দিয়েছে তো কোর্ট। নো টেনশন।

২| ১৬ ই মে, ২০২২ রাত ৮:১১

শাহ আজিজ বলেছেন: মুঘলরা ভারতে সুশাসনের জন্য আসেনি , এসেছিল দখলদারি আর লুট তরাজ করতে । বিভক্ত হিন্দু সমাজে তারা সহজেই জায়গা করে নিয়েছিল । কুতুব মিনারের ছাদ নেই কিন্তু আয়রন কাস্টিং কলামের মাথায় হিন্দু দেবদেবীদের ভাস্কর্য আছে । শুধু কুতুবুদ্দিন আইবেকের জন্য মিনার বানিয়েছিল স্থানীয় সনাতনী সম্প্রদায় । উল্লেখিত সব কিছুই দেখেছি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ৪০ বছর আগে ।

হিস্টোরি রিপিট ইটসেলফ ।

তাজের নিচে যদি কিছু থেকে থাকে তাতে আমি বিস্মিত হব না , বাকি সিদ্ধান্ত ভারতীয়দের ।

৩| ১৬ ই মে, ২০২২ রাত ৮:১৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: সৈয়দ মেহেদী হাসান,




ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা সকল সমাজ-রাষ্ট্রের জন্যেই অশুভবার্তা।

৪| ১৬ ই মে, ২০২২ রাত ৮:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বজরংগিদের যে চেতনা, তার যদি শতভাগের একভাগও থাকতো মুসলমানদের মাথায়-
সুদীর্ঘ ছয়/সাত শত বছরের শাসনের পর প্রত্নতত্ত্ব ছাড়া হিন্দুদরে নাম ও নিশানা থাকতো না।

কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ শাসক মুসলমানদের উদারতা, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি তারা শুধু ভুলেই যায় নি
বরং মিথ্যা আরোপ দিয়ে ইতিহাসকে বদলে দিতে চাইছে।

মনে পড়ে গাজওয়ায়ে হিন্দের ভবিষ্যত বানীর কথা।
পরিস্থিতি যেন ক্রমেই সেদিকেই ধাবমান!

৫| ১৬ ই মে, ২০২২ রাত ৮:৫৭

মিঃ আতিক বলেছেন: ভারতকে গণতান্ত্রিক রাস্ট্র আর বলা যায়না,ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের কারিশমায় ভানুমতির খেল, মোদি ক্ষমতায় বারবার এসেছে, ভবিষ্যতেও যতবার ইচ্ছা আসবে।

৬| ১৬ ই মে, ২০২২ রাত ৯:১২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গতবছর বিজেপির সিভিল সার্ভিস কোচিং থেকে সর্বাধিক যতদূর সম্ভব 256 জন আইএএস/ আইপিএস হয়েছিল। এরা কারা? এই কোচিংয়ে কোচিংয়ে দিতে পারবেন তারাই, যারা বি এইচ পি (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ), আরএসএস বা বজরংবলী মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদীর সদস্য ।মোদি জামনায় প্রতিবছর এইভাবে রিক্রুট হতে থাকলে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গৈরিকীকরণ যে সম্পন্ন হবে সেকথা বলাই যায়।
ভারতের প্রশাসনিক ব্যবস্থাতে নিজের মতো করে খুঁটি সাজিয়ে এবার মোদিজি রাজ্যের বিসিএসদের তুলনায় কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভেন্টদের অধিক ক্ষমতাশালী করবার জন্য আইন প্রণয়ন করে ফেলেছেন এখন শুধু বাস্তবটা সামনে আসার অপেক্ষায়।

ঠিক একই পথে বিচারব্যবস্থাতেও বিজেপি গৈরিকীকরণের রিক্রুটমেন্ট অব্যাহত রেখেছে। আজ এলাহাবাদ হাইকোর্টের নিরপেক্ষ বেঞ্চ যে রায় দিয়েছেন এটা নিয়ে আশান্বিত হওয়ার কারণ নেই কারণ খুব শীঘ্রই বিজেপির শক্তিশালী গৈরিকীকরণের বেঞ্চ ক্ষমতায় চলে আসবে এবং তারা তাদের পছন্দমতো রায়দান করে ভারতবর্ষের পছন্দমত যে যে মসজিদগুলোকে মন্দির বানাতে চায় তার পক্ষে রায় দান করবেন।
কাজেই একথা বলাই যায় পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে মোদীজি যদি ক্ষমতায় আবার আসেন তাহলে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণকে দুবেলা-দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা না করতে পারলেও মসজিদগুলোকে মন্দিরে রুপান্তরিত করার আনন্দের আতিশয্যে ভুখা পেটকে সান্ত্বনা দিয়ে মোদি বন্দনায় মেতে থাকবেন এটাই হবে তাদের সবচেয়ে বড় পাওনা।


৭| ১৬ ই মে, ২০২২ রাত ১০:১২

তানভির জুমার বলেছেন: জ্ঞানবাপী মসজিদ কি আরেক বাবরি মসজিদ হতে যাচ্ছে? বারানসির কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদটি ভেঙ্গে মন্দির বানাবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে। আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টের এ বিষয়ে একটা রায় দেওয়ার কথা রায়। আজ সোমবার সকাল থেকেই বারানসি সরগরম। রটে গেছে, মসজিদ চত্বরে অজু করার পুকুরে নাকি শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে। এইবার বুঝে নেন সামনে কি হবে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে হিন্দুদের ভয়ংকর উগ্র রুপ ক্রমশই খশে পড়ছে

নিউজ লিংক.

৮| ১৭ ই মে, ২০২২ রাত ১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: ইতিহাস মুছে ফেলা এখন সম্ভব নয়। দুনিয়া বদলে গেছে।

৯| ১৭ ই মে, ২০২২ রাত ৩:৫৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
শাহ আজিজ সুন্দর ভাবে সঠিক টি বলেছেন।
উনি নিজেই এই লাইনে চীন ভারত অনেক। নিজে অনেক কিছু দেখেও এসেছেন।
ধন্যবাদ আজিজ ভাই।

১০| ১৭ ই মে, ২০২২ ভোর ৪:৪৯

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: ভারতের মুঘল রাজারা খুব খারাপ, সব ভালো হচ্ছে তৎকালীন হিন্দুস্থানী রাজারা। মুঘলদের সব স্থাপনা ভেঙে ফেলা হোক। বাঙালরা আবার শিশুদের ঘুম পাড়াবে: খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গী এলো দেশে। বর্গীর জায়গায় অবশ্য এবার বিজেপি হবে।

১১| ১৭ ই মে, ২০২২ বিকাল ৩:২২

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: সকল দখলদার শক্তি নির্মিত স্থাপনা অবিলম্বে ভেংগে ফেলা দরকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.