![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তখন সম্ভবত ষষ্ঠ অথবা সপ্তম শ্রেনীতে পড়ি।ছোট কাকা সবে মাত্র তখনকার জগন্নাথ কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করে বাড়ি এসেছেন । উনার আবার একটা ছোট খাট (বদ) অভ্যাস ছিল, হাটার সময় পা টেনে টেনে হাটেন, ফলে একটা বিশ্রী শব্দ হয় যা চরম ভাবে কানে লাগে। তো এই সময় কোন এক ছুটির দিনে চাচাত ভাই বোন সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম অথবা লুডু জাতীয় কোন এক খেলায় মত্ত ছিলাম। হঠাৎ ছোট কাকা আমাদের আড্ডার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তাই উনার পায়ের শব্দ শুনে হঠাৎ পিচ্চি চাচাতো বোন বলে উঠল ছোট কাকা মাস্টার্স পাশ করে এখনও ঠিকমত হাটা শিখতে পারলেন না। কথাটা ও না বুঝেই বললেও কথাটা শুনেই ছোট কাকার মুখ কালো হয়ে গিয়েছিল, মনে হয়েছিল উনি প্রচন্ড অপমানিত বোধ করেছিলেন। ওর নির্মল রসিকতা বা মজা যাই বলি না কেন ছোট কাকার হাটার স্টাইলে কতটুকু পরিবর্তন এনেছিল তা এখন মনে করতে পারছিনা কিন্তু ছোটবেলার সেই কথাটা চিরদিনের জন্য আমাকে সচেতন করে দিয়েছিল। আজও যেকোন কাজ করার আগেই আমার মানসপটে ভেসে উঠে সেই ছোট্ট কথাটি।আমার যেকোন কাজতো সাধারণ মানুষ সাধারণ ভাবে নেবে না। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয় পাশ!!! তাই আমার কথা-বার্তাও হওয়া চাই বিশ্ববিদ্যালয় পাশ ব্যক্তির মত। শিক্ষা আমাদের পরিশীলিত করে। শিক্ষিত মানুষ আর সবার মত নয়। তাদের সবার কাজে কর্মে-কথা-বার্তায় তার প্রমাণ থাকবেই। কিন্তু হায়!! আজ আমরা কি দেখি? যে যত বেশী শিক্ষিত, এখন সে তত বেশী উল্টা-পাল্টা।
কথাটা আমাদের রাজনীতির বেলায় মনে হয় আরও বেশী সত্য। আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অশিক্ষিত, সন্ত্রাসীদের নেতা হয়ে উঠার সুন্দর ব্যবস্থা থাকলেও এর মাঝে বেশ কিছু উচ্চশিক্ষিত নেতাও রয়েছেন।মানলাম শেখ হসিনা..খালেদাজিয়া খুব বেশী পড়াশুনা করেননি। কিন্তু যারা ডক্টরেট ডিগ্রিধারী, দুনিয়ার সেরা সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন তারা রাজনীতিতে কি ভূমিকা রাখছেন।এদের মধ্যে অনেকের আবার বেশ কিছু লেখাও প্রকাশিত হয়েছে দুনিয়ার সেরা সেরা জার্নালে। আমাদের অর্থমন্ত্রীতো হার্ভাডের মত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন আবার ইউএসের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে অধ্যাপনাও করেছেন। ঢাবিতে পড়ার সময় গবেষণা করতে গিয়ে তাঁর বেশ কিছু লেখা পড়ারও সুযোগ হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি পিএইচ ডি করেছেন বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী তনয় জয়তো ইউএসের সেরা দুই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর আর মার্স্টাস করেছেন। বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যেও এমন অনেক নেতা আছেন যারা খুবই উচ্চ শিক্ষিত। ড: খন্দকার মোশারফ হোসাইন ডক্টরেট করেছেন লন্ডন ইউনিভার্সিটির মত প্রতিষ্টান থেকে। কিন্তু রাজনীতির ময়দানের তাদের সে শিক্ষার প্রতিফলন মোটেও দেখা যায়না। তাদের কথা বার্তা কোন কোন সময় সেই সব সন্ত্রাসী আর মূর্খ নেতার মত হয়ে যায়, যারা কোনদিন স্কুলর বারান্দায়ও যায়নি, নষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে অস্ত্রের জোরে নেতা হয়ে গেছে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর অর্থমন্ত্রীতো মাঝে মাঝে এমন কথা বার্তা বলেন, দেশের মানুষ তাদের মস্তিষ্কের সুস্থ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের চাটুকারিতা প্রফেশনাল চাটুকারদেরও হার মানায় (হওয়ারই কথা-তারাতো আবার উচ্চ শিক্ষিত চাটুকার )। দেশের এই চরম অবস্থায় যাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা, তাদের কথা শুনে মনে হয় তারা সমস্যা সৃষ্টিতে আরও একধাপ বেশী পারঙ্গম। আমাদের হার্ভার্ড শিক্ষিত প্রধানমন্ত্রী তনয়ের কথা শুনে মনে হয় উনি উনার মায়ের চেয়েও এক কাটি বেশী রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন। প্রধান মন্ত্রীর উপদেষ্টাগনের প্রোফাইলও খুবই হাই। কিন্তু উনাদের কাজ দেখলে সাধারণ দলবাজ ক্যাডার আর উনাদের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় পাশ বলে মানুষ অনেক সম্মান করে, অনেক সিনিয়র মানুষ নিজে উঠে গিয়ে বসার যায়গা করে দেয় (আহা শিক্ষার কি দাম), কিন্তু উনাদের কাজ-কর্ম নিজের মাঝে এক ধরনের হীনমন্যতা তৈরী করে ফেলে, আমিও তো উনাদের মত (তথাকথিত) ডিগ্রিধারী। আমার ডিগ্রি কি একধরনের প্রতারণা নাকি?
দেশের এই কঠিন মূহুর্তে আমাদের তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত নেতাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক বেশী। নিজেদের শ্রেষ্টত্ব আর পার্থক্য তাদের এখনই প্রমাণ করার সময়। তারা যে আর দশজন ক্যাডার, তেলবাজ আর চাটুকার নয় জাতিকে ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতির হাত থেকে রক্ষা করতে তাই তাদের প্রজ্ঞার পরিচয় নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত। প্রমাণ করুন আপনারা চাটুকার আর দলবাজ নয়। টাকা পয়সার তো আপনাদের কোন অভাব নেই? তাহলে আর কিসের ভয়।
১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮
সিলেটি পুয়া বলেছেন: কিন্তু কে বুঝাবে এইডা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:১২
আমিই মিসিরআলি বলেছেন: উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি স্বশিক্ষিত হওয়াটাও জরুরী