নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবাসী চিকিৎসক ও স্বপ্নচারী। শখের বশে কবিতা লেখার প্রয়াস হয়। হয়তো সেগুলা কবিতা হয়ে ওঠে না, হয় অগোছালো শব্দমালা,জীবনের মতোন...
দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত 'সুলতান সুলেমান' সিরিজের মারফতে অনেকেই হয়তো শাহজাদা মুস্তাফা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল আছেন। শাহজাদা মুস্তাফা হলেন উসমানিয়া বা 'অটোমান' সম্রাজ্যের সবচাইতে প্রতাপশালী সুলতান, প্রথম সুলেমান এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। বলা হয়ে থাকে উসমানিয়া সাম্রাজ্যের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় শাহজাদা ছিলেন এই মুস্তাফা। বাবা মহামতি সুলেমানকেও ছাড়িয়ে যাবার সকল প্রতিভা ছিলো তাঁর, এই বিশ্লেষণ ইতিহাসের নির্মোহ পর্যালোচকদেরই। কিন্তু ঐ যে বলা হয়ে থাকে, এ জগতে যা কিছু সব নারীর কারণে, শাহজাদা মুস্তাফার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নাই।
রাজ-হেরেমের প্রভাবশালী রক্ষিতা, আলেক্সান্ড্রার কুটচালে মহামতি সুলেমান নিজেই খুন করান প্রিয় পুত্র মুস্তাফাকে আর সামাজ্যে জ্বলে উঠে বিদ্রোহের আগুন। যোগ্য উত্তরাধিকারীর করুণ মৃত্যু আলেক্সান্ড্রার অযোগ্য পুত্র-প্রপৌত্রদের ইস্তাম্বুলের মসনদে বসায় আর শুরু হয় উসমানদের পতনের ধারা। এরই ধারাবাহিকতায় কালক্রমে বিলুপ্ত হয় তুরস্ক-কেন্দ্রিক উসমানী খেলাফতের। ভেবে হবাক হতে হয়, এক সামান্য রুশদাসী কিভাবে পৃথিবীর ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়! অবশ্য বৈশ্বিক ইতিহাসে, প্রকৃত ইসলামী স্বর্ণযুগ পরবর্তী অধিকাংশ মুসলিম শাসকদের কর্মকান্ড এমনই, হঠাকারী ও অদূরদর্শী।
অন্যদিকে, মুস্তাফা হয়তো সম্রাট হতে পারেননি কিন্তু ইতিহাস ও মানবমন থেকেও বিস্মৃত হননি। মুস্তাফা মৃত্যুর পূর্বে পিতার সাম্রাজ্যের গুরুত্বপুর্ণ প্রদেশ, আনাতোলিয়ার প্রশাসক ছিলেন, এবং শাসক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সফল। আজও আনাতোলিয়ার কবিরা মুস্তাফাকে স্মরণ করে, লেখা হয় গাঁথা আর আম-আনাতোলিয়াবাসী মাঝে মাঝেই ঘুরে আসে মুস্তাফার সমাধিতে। এইতো কিছুদিন আগেই ৫ মিলিয়ন মার্কিন মুদ্রায় সংস্কার হয়েছে মুস্তাফার মাজার।পৃথিবীর ইতিহাসে বহু প্রতাপশালী রাজা-বাদশাহ, সুলতান কিংবা জমিদাররা দাপটের সাথে রাজ্যশাসন করে গেছেন, খোদ উসমানিয়া বংশেরই বহু সুলতান আছেন,কিন্তু তাঁদের অনেকেই আজ বিস্মৃত। অথচ মুস্তাফা আজও সমাদৃত, আপন মহিমায়।
নিচের প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে তুরস্কের বুর্সায় মুস্তাফার সমাধি (একইসাথে সমাধিস্থ আছেন মুস্তাফার মা, গুলবাহার ওরফে মাহিদেভরান, পুত্রশোকে যিনি টপিকাপি প্রাসাদ ছেড়ে সন্যাসব্রত নেন) আর ২য় ছবিতে চিত্রিত হয়েছে পিতার গুপ্তবাহিনীর হতে পুত্র হত্যার অভাবনীয় দৃশ্য (১৮শ শতাব্দীতে চিত্রিত)
©somewhere in net ltd.