নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন অলস মানুষ; ভালোবাসি স্বপ্ন দেখতে, চিন্তা করতে, আর কবিতা লিখতে।পেশায় চিকিৎসক, তবে স্বপ্ন দেখি সাহিত্যের সাথে নিবিড় সখ্য গড়বার।ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলাম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে, ভবিষ্যতে কাজ করতে চাই কন্যাশিশু নিরাপত্তা ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে।

তাহমিদ রহমান

প্রবাসী চিকিৎসক ও স্বপ্নচারী। শখের বশে কবিতা লেখার প্রয়াস হয়। হয়তো সেগুলা কবিতা হয়ে ওঠে না, হয় অগোছালো শব্দমালা,জীবনের মতোন...

তাহমিদ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বইয়ের কথা ২ঃ \'আমার ছেলেবেলা\'

২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৬


"আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা
খুলে দিক।কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক।
কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক: ’তোমার চোখ এত লাল কেন?’ "

আপনি যদি এই লেখাটি পড়া শুরু করে থাকেন, তাহলে আপনি নিশ্চিত বুঝে গেছেন 'আমার ছেলেবেলা' বইটি কার লেখা। চেনা বামুনের যেমন পৈতা লাগেনা, তেমনি নাম উল্লেখ না করে সিরফ উপরের লাইন ক'খানা দিয়েই বইটির লেখকের পরিচয় দিয়ে দেওয়া যায়।

নির্মলেন্দু গুণ।
পূর্ব-বাংলার জনপ্রিয় কবি।
আধুনিক, সমসাময়িক কবিতার জন্য গুণ খ্যাতিমান হলেও উনার গদ্যসাহিত্য লেখার হাতও যে বেশ ভালো, তার চমৎকার উদাহরণ 'আমার ছেলেবেলা' বইটি।








বয়স যখন চল্লিশের দশকে, অর্থাৎ যুবাবস্থায়-ই গুণ লিখেছেন তার প্রথম আত্মজীবনী। স্বভাবতই গুণের পুরো জীবনকে এই বইয়ে এক মলাটে পাওয়া যাবেনা, তবে তার শিকড়ের সন্ধান আছে এখানে। গুণ কেন কবি হলেন,শখের বশে হলেও ছবি আকার তাগিদ কোথায় পেলেন, সেসমস্ত কথা এই বইয়ে বারবার উঠে এসেছে প্রত্যক্ষ -পরোক্ষভাবে।

এই বইয়ের ভূমিকায় গুণ ম্যাক্সিম গোর্কীর কথা বলেছেন, গোর্কীর প্রথম জীবনের দুর্দশার সাথে নিজের কিছুটা সাদৃশ্য দেখেছেন। ফলে বইটার শুরু-ই হয়েছে গুণের মাকে হারানো আর প্রথম জীবনের দারিদ্র্যের কথা দিয়ে। গ্রামীন পূর্ব-বাংলায় দারিদ্র‍্যর সাথে সহবাস করেই জীবনকে উপভোগের কথা আছে, আছে পরিবারের মধ্যে সংকট আর ভালোবাসার কথা। দুঃখের কথার মাঝেও লেখক রম্যের চমৎকার ছোয়া দিয়ে গেছেন পুরো বইজুড়ে। গ্রামীণ কিশোরের দৃষ্টিতে আইয়ুবশাহীর শাসনামল আর যাদু দেখাতে যেয়ে পাওয়া কর্মফলের মজার চিত্রও উঠে এসেছে গুণের লেখায়।


আমার দৃষ্টিতে 'আমার ছেলেবেলা'র সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক নির্মলেন্দু গুণের অকপট সত্যবচন। বাঙালি লেখকেরা আত্মজীবনীতে অপ্রিয় বা অস্বস্তিকর সত্য কতোটা তুলে ধরেন সেটা আলোচনার বিষয়, তবে এক্ষেত্রে গুণকে পুরো নাম্বার দেওয়া যায়। বৃহত্তর পরিবারের মধ্যকার বিরোধের কথা সাবলিলভাবে লিখেছেন। স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন দাঙ্গা নয় বরং নানাবিধ প্রচার-প্রচারণা আর নিজস্বস্বার্থে তার এলাকার মানুষের দেশত্যাগের কথা।

'আমার ছেলেবেলা' আশির দশকের শেষভাগে প্রথম প্রকাশিত হয়। আর কাকলী প্রকাশনী থেকে ২০১৭ সালে সম্ভবত সর্বশেষ মুদ্রণটি ছাপা হয়েছে।

বই কখনো পুরনো হয়না, আর এরকম সুন্দর একটি লেখা সবসময়-ই নতুন থাকবে। সুতরাং এখনো যদি না পড়ে থাকেন তবে দ্রুতই পড়ে ফেলতে পারেন বইটি; নিশ্চিতভাবেই আনন্দে কিছুটা সময় কাটবে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৭

ওমেরা বলেছেন: কবি নির্মলেন্দু গুণ সম্পর্কে আমি খুব বেশী জানি না উনার কোন লিখাও আমার পড়া হয়নি, এই কবিতার মাধ্যমেই আমি উনার নাম শুনেছি ।

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা
খুলে দিক।কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক।
কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক: ’তোমার চোখ এত লাল কেন?’ "
কিন্ত এই কবিতাটা আমার এক বন্ধু নিজে আবৃত্তি করে আমাকে উপহার দিয়েছিল।
কিছুদিন খুব শুনতাম, খুব ভালো লাগতো ।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।


২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:২৯

তাহমিদ রহমান বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আর আপনার বন্ধু অত্যন্ত রুচিশীল, এবং আপনাকে খুব সুন্দর উপহার দিয়েছে সেটা বলতেই হবে।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

তবে তিনি নাকি স্বাধীনতা পুরস্কার না কি পুরস্কার যেন চেয়ে নিয়েছিলেন।
এটা আমার কাছে ভালো মনে হয়নি।

২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:৩৩

তাহমিদ রহমান বলেছেন: এই বইটি উনি অপেক্ষাকৃত যুবক বয়সে লিখেছন, বইটিতে উনার অসংকোচ,অকপট চরিত্র খুঁজে পাই। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের চরিত্র বদলে যায়, আমাদের দেশে এমন বহু উদাহরণ আছে। স্বাধীনতা পুরষ্কারের এই বিষয়টি আমার স্পষ্টভাবে জানা নেই।

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৪

জুন বলেছেন: আমার ছেলেবেলা বই এর নাম শুনেই ম্যাক্সিম গোর্কির কথা মনে হলো। মনে পড়লো সেই ইতিহাস বিখ্যাত নীল রঙের প্রচ্ছদের বইটির কথা। এই নামে যে আর কোন বিখ্যাত বই আছে তা সত্যি জানা ছিল না ।

২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:৩৪

তাহমিদ রহমান বলেছেন: সম্ভবত 'আমার ছেলেবেলা' নামে আরো বই খুঁজে পাবেন, যেহেতু আআত্মজীবনীর জন্য বেশ কমন একটা নাম।

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০১

কবীর হুমায়ূন বলেছেন: কবি নির্মলেন্দু গুণ আমারও একজন প্রিয় মানুষ। সত্যকে সাবলীলভাবে বলা সততা এবং সাহস তাঁর আছে। কবির সাথে একান্তে আড্ডায় মাঝে মাঝে কথা হতো; তখন হাস্যোচ্ছলে অনেক কথাই বলতেন। একবার কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, পত্রিকার সাহিত্যের পাতায় কবিতা পাঠালে ছাপা হতো না; তাই, তিনি কবি মধুসূদনের কবিতা কপি (নকল) করে, কোন এক পত্রিকায় পাঠিয়েছিলেন। অতঃপর, সেই পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক নাকি কবিতাটি ফেরৎ পাঠিয়ে বলেছিলেন, এ কবিতা আপনার নয় ইত্যাদি। এরূপ মজার মজার তথ্যগুলো অবলীলায় বলে ফেলতেন। ধন্যবাদ আপনাকে কবিকে তুলে ধরার জন্য।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮

তাহমিদ রহমান বলেছেন: মধুসূদনের কবিতার কাহিনীটা এই বইয়েও লিখেছেন কবি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর বিষয় তুলে ধরেছেন

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮

তাহমিদ রহমান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৬| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: বইটি পড়ার ইচ্ছা থাকলো।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৫৯

তাহমিদ রহমান বলেছেন: পড়ে দেখতে পারেন রাজীব ভাই, সুখপাঠ্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.