নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।
মো: আহরার : সিইও, মাওলানা ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি
আশির দশকে কেউ তেমন গুরুত্বের সাথে ভাবেনি বেসরকারি খাতে এদেশে আবাসন ও নির্মাণ শিল্প গড়ে উঠবে। পাকা বা বহুতল ভবন বলতে তখন সরকারি অফিস-আদালত, কোয়ার্টার ও অন্যান্য অবকাঠামোকেই বুঝাত। এর বাইরে ছিটেফোঁটা পাকা দালানকোটা, যা গড়ে উঠত সবই সচ্ছল বিত্তবানদের বাসস্থান। মধ্য-সত্তরের আগে এ দেশের নারীসমাজ কর্মের প্রয়োজনে অন্দরমহলের চৌকাঠ ডিঙাবে এটা যেমন অকল্পনীয় ছিল, তেমনি অকল্পনীয় ছিল ষড়ঋতুর এই কাদামাটির শহর-জনপদের মধ্যে আকাশছোঁয়া বহুতল ভবন তৈরি হবে, হবে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘন জন-অধ্যুষিত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক শঙ্কা ও ভয়। কিন্তু মানুষের হাত দুটো যখন কর্মীর হাতিয়ার হয়ে ওঠে তখন ভয়ের স্থলে ওঠে জয়ধ্বনি। মধ্য আশিতেও যারা ভাবতে পারেননি বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে, তারা এখন সবিস্ময়ে দেখছে, বাংলাদেশ শুধু ঘুরে দাঁড়ায়নি। বলিষ্ঠ পদক্ষেপে সামনের দিকে এগোচ্ছে ।
এ দেশে যত আবাসন ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান দেয়া কিছুটা দুরূহ হলেও এ কথা নির্দ্বিধায় বল চলে যে, ঢাকা-চট্টগ্রম বড় বড় শহর ছাড়িয়ে এ শিল্প এখন দেশের ৬৪টি জেলা ও উপজেলায়ও ছড়িয়ে পড়ছে। আবাসন শিল্প এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। এ শিল্পে অতি দক্ষ ও কর্মঠ শ্রমিক মিলিয়ে এক বিশাল টেকনিক্যাল বাহিনী কর্মরত। যার সংখ্যা কমপক্ষে ১০ লাখ। উচ্চ মজুরির এ শিল্প খাতে কর্মী-শ্রমিকেরা যেমন ভালো আয় পাচ্ছেন, সাথে সাথে লোহ-ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, সিরামিক, কাচ, কাঠসহ ইটপাথর ও বালুর এক বিশাল বাজার সৃষ্টি হয়েছে। যার সাথে জড়িত প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। আবাসন ও নির্মাণ শিল্প খাতকে ঘিরে অন্য যেসব উৎপাদনমুখী শিল্পের বিকাশ ঘটেছে তাতে যে শুধু বিশাল অঙ্কের পুঁজি বিনিয়োগ হয়েছে তা নয় আমাদের চির অবহেলিত শ্রমিকের আয়-উপার্জনও এখন একটি যৌক্তিক মাত্রায় পৌঁছে গেছে। শ্রমের বাজারই শুধু বাড়েনি, শ্রমের মূল্য বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে। আশি-নব্বই দশকে একজন দক্ষ নির্মাণশ্রমিক দৈনিক মজুরি পেতেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। অদক্ষ শ্রমিক ১০০ টাকা। এখন দিন বদলে গেছে। বর্তমানে একজন দক্ষ নির্মাণশ্রমিক তথা রাজমিস্ত্রির বেতন ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গড়ে ৬০০ টাকা অর্থাৎ গড়ে সাত ডলার বা মাসিক ২২০ ডলার এবং বছরে দুই হাজার ৬৩৪ ডলার। অথচ এক দশক আগেও এ দেশের গড় মাথাপিছু বার্ষিক আয় ছিল ৫০০ ডলার।
এ শিল্প শুধু যে শ্রমিকদের শ্রমের মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে চলেছে তা নয়, এ দেশের এক বিরাটসংখ্যক উচ্চপ্রযুক্তিবিদ্যার মেধাবী তরুণদের চৌকস কর্মীতে পরিণত করেছে। প্ল্যানিং ডিজাইনিং, মনিটরিং, নির্মাণ ও সমন্বয় প্রভৃতি কাজের ব্যবস্থাপনায় যারা নিয়োজিত তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি এখন বিশ্বমানের তাই তাদের মজুরিও বিশ্বমানের। আমাদের তরুণ মেধাবী প্রকৌশলী, প্লানার, ডিজাইনার, ব্যবস্থাপক, বিশেষজ্ঞদের আর বিদেশ পাড়ি দিয়ে চাকরি খোঁজার বড় একটা দরকার আছে বলে মনে হয় না। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বা মফস্বল যেকোনো শহরের দিকে তাকান না কেন, দৃষ্টিনন্দন, সুরম্য যে বহুতল ভবন নজরে পড়ছে, এসব অবকাঠামো শুধু নির্মাণের দিক দিয়েই নয়, ডিজাইন ও সাজসজ্জার দিক দিয়েও সর্বাধুনিক ও নবীনতম।
৫৫ হাজার বর্গমাইলের ুদ্র বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের বাস। মাথাপিছু ভূমির পরিমাণ ২০ ডেসিম্যালেরও কম। এমন ভয়াবহ ভূমি সঙ্কটে, আবাসন নির্মাণে আমাদের কুশলী ও বিবেচক হতেই হবে। ভূমির সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা করতে হলে বাংলাদেশের সব জনপদকে আজ হোক, কাল হোক একটি সুসমন্বিত আবাসন নির্মাণের চকে ফেলার উদ্যোগ নিতে হবে। যেখানে-সেখানে যার যেমন ইচ্ছে আর বাড়িঘর নির্মাণ করে ভূমির অপচয় করা যাবে না।
অল্প জমিতে কিভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করে বহু মানুষের বাস নিশ্চিত করা যায় তা এখন শুধু পরিবারের একার মাথা ব্যথা নয়, দেশ ও জাতির মাথা ব্যথা। আজকের আবাসন নির্মাণ শিল্পে দেশ ও জাতির সেই মাথাব্যথার উপশম দিতে অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষমাণ।
বাংলার মেহনতী মানুষের সোয়া কোটি সদস্য আজ অভিবাসনে, পৌনে এক কোটি দরিদ্র ঘরের জায়া-জননী-ভগ্নি আজ পোশাক শিল্পে। আর বাংলাকে নতুন আঙ্গিকে গড়ার যে বিশাল আবাসন ও নির্মাণকাজ চলছে, তার মূল চালিকাশক্তিও ওই জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ। বাংলার ভাগ্যের সাথে আজ জড়িয়ে আছে তিনটি প্রধান খাতের চার কোটি মানুষ। সুতরাং এ দেশকে আর কোনো কালো হাত দাবিয়ে রাখতে পারবে না। কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের আর বাংলাদেশ বির্নিমাণের প্রধান কাণ্ডারি এ দেশের খেটে খাওয়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমবেত শক্তি যে কোনো বিপ্লব ও পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট।
http://www.dailynayadiganta.com/?p=3287
১৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ডেভেলপারেরা যত টাকাই কামাক তাতে কোন আপত্তি নাই যদি কোন বাটপারি না করে।
আমার পরিচিত একজন ছোট্ট একটা প্রজেক্ট করেছিলেন, ১০০% তার কমিটমেন্ট ঠিক রেখেছিল। এখনো অনেকে ফোন করে জিগায় ভাই আপনার ২য় প্রজেক্ট কখন শুরু করবেন?
২| ১৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৪০
ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: কাম কইরাই কামায়, খাইটা কামাইতে কোন অসুবিধা নাই
১৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আমারও একটাই কথা, কত লাভ করল তা আমার দেখার বিষয় না আমার সাথে দওয়া তার ১০০% কমিটমেন্ট ঠিক আছে কিনা তাহল দেখার বিষয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:২৬
সোহাগ সকাল বলেছেন: ডেভেলপারেরা ম্যালা ট্যাকা কামায়!