![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আসলে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ বা জ্ঞানী ব্যাক্তি নই। কিন্তু আমি তাই বলি যাই বলি তা আমি বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশের আজ সমস্ত শরীর জুড়ে ক্ষত।আজ আমাদের বাংলাদেশের
রাজনীতিবিদেরা রাজনীতি করে না, রাজনীতি করে ব্যাবসায়ী এবং আমলারা। রাজনীতি এখন আর মানুষের সেবা করার মাধ্যম না, রাজনীতি এখন টাকা কামানোর চাবিকাঠি। এখন নির্বাচনে কেউ যোগ্যতার ভিত্তিতে মনোনয়ন পায় না, মনোনয়ন পায় টাকা আর লবিং এর মাধ্যমে। রাজনীতি এখন জনগনকেন্দ্রিক না হয়ে ক্ষমতাকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। কোন রাজনৈতিক দলের ভিতরেই এখন গনতন্ত্র চর্চা নেই। চাটুকারিতা আর টাকাই এখন রাজনীতির সিঁড়ির উপরে ওঠার একমাত্র মাধ্যম। চাটুকারিতা না করলে আজ কেউই দলে টিকতে পারে না। ছাত্র রাজনীতি বলতে আমরা এখন টেন্ডারবাজি, হল দখল, মারামারি, কোপাকুপি ইত্যাদি অনৈতিক কাজ। ছাত্র রাজনীতির ছাত্র নেতারা আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির বদলে ধ্বংস করছে।
আজ বিচার ব্যাবস্থার কথা আর কি বলবো, দুঃখজনক হলেও সত্যি এখন নাকি রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ হয়। এখন মামলা ,মোকদ্দমা হয়ে গেছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার হাতিয়ার। যেই দলই ক্ষমতায় আসে সেই দলের বিপুল নেতা কর্মীরা ছাড়া পায় , আমরা শুনি এগুলো নাকি রাজনৈতিক হয়রানি মামলা, কথা হল তাহলে ক্ষমতায় আসার পূর্বে তাদের এগুলো থেকে নিষ্কৃতি মেলে না কেন?
বিসিএস পরিক্ষার মাধ্যমে সারা দেশে সরকারী প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ পায়। আপনি ভাবতে পারেন এটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের দেশের জন্য? আর সেই পরীক্ষার প্রশ্ন অহরহ ফাঁশ হচ্ছে। এখন রাজনৈতিক পরিচয় আর টাকার বিনিময়ে এখন বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ হয়।রাজনৈতিক ভাবে যারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয় তারা সর্বদা প্রতিপক্ষকে দমনপীড়নে ব্যাস্ত থাকে। শান্তি আসবে কিভাবে? আর ঘুষের কথা কি বলবো, ঘুষ এখন কে খায় না তাইই বিবেচ্য বিষয়।
চিকিৎসা আর চিকিৎসক সাধারন মানুষের জন্য যেন শুধুই ভোগান্তির অপর নাম।ঢাকা মেডিকেলে নাকি সিট পেতে এখন রাজনৈতিক পরিচয় লাগে। ডাক্তাররা এখন যে সব কোম্পানির কাছ থেকে টাকা পায় এবং তাদের ঔষধের নাম লিখতে ভুল করে না। কমিশনের লোভে একগাদা টেস্ট রোগীর হাতে ধরিয়ে দেয়, একবারও ভাবে না রোগীর আর্থিক অবস্থা।
আজ শিক্ষা খাতের অবস্থা বেহাল। ভালো পড়ালেখা আজ আর গরীবের নাই। এটা যেন শুধুই এখন বড়লোকের অধিকার। আজ ভালো স্কুলে ভর্তি হতে হলে ডোনেশনের নামে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়, আজ ভালো স্কুলের এক মাসের বেতন সদ্য গ্রাজুয়েট করা চাকুরিজীবীর সম্মানির চাইতে বেশি।আজ শিক্ষকরা মানুষ গড়ার চাইতে গাড়ি বাড়ি গড়ার দিকে বেশী নজর দেয়। নিজ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছাত্র- ছাত্রীদের প্রাইভেট/কোচিং তো করায়ই, আবার যেসব ছাত্রছাত্রীরা তাদের কাছে পড়ে না তাদের ফেল করাতেও দ্বিধা করে না। মনুষ্যত্ব আজ কই গিয়ে দাঁড়িয়েছে ভাবুন? আজ বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষকরা লাল,নীল,সবুজ ইত্যাদি দলে বিভক্ত হয়ে একে অপরের মুখোমুখি। ছাত্ররা কি শিখবে শিক্ষকদের কাছ থেকে?
আজকে পরিবহন মালিকরা একতাবদ্ধ হয়ে অন্যায়ভাবে ভাড়া বাড়ায়। যাত্রীদের জিম্মি করে বেআইনিভাবে বাসের সাথে জুড়ে দেয় সিটিং, গেইটলক, বিরতিহীন ইত্যাদি টাইটেল। আর সাথে সাথে বাস ভাড়া তো বাড়াচ্ছেই। কিছু বলবেন তাহলে লাঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী কারন পরিবহন শ্রমিকরা একতাবদ্ধ কিন্তু জনতা তো একতাবদ্ধ না। বিআরটিসি, বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ সব্বাই কিন্তু চুপ। জনগন বাঁশ খেলে কার কি।
এমনিভাবে দেশের প্রতিটি জায়গায় ক্ষত।এইসব ক্ষতে বিক্ষত হয়ে আছে আমাদের সবার প্রিয় বাংলাদেশ। আপনি কি মনে করেন এত কিছুর পরও সাধারন মানুষ ক্ষুব্ধ না? হ্যা, বাংলাদেশের প্রতিটা সাধারন মানুষ আজ বিক্ষুব্ধ তাইতো আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ক্ষত স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার নিয়ে আতাতের গন্ধ পেয়ে সাথে সাথে সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে আসে যুদ্ধাপরাধীর সর্বচ্চ শাস্তির দাবিতে। সাধারন মানুষ এতদিন বিচ্ছিন্ন ছিল কিন্তু এখন মানুষ একতাবদ্ধ হয়েছে। আর সাধারন মানুষ একতাবদ্ধ হলে কখনো কোন শক্তিই তাদের দাবায়া রাখতে পারে না। সবচেয়ে পুরনো ক্ষত সারানোর দাবী নিয়েই সাধারন মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছে অপেক্ষা করুন সাধারন মানুষ বাংলাদেশের সব ক্ষত সারিয়েই ক্ষান্ত হবে। সবশেষে শাহাবাগের প্রজন্ম চত্বরে গাওয়া একটা গানের কথা বলি,
"তোর শরীর জুড়ে ঘা
কি ঘেন্না কি ঘেন্না।।
কি ঘেন্না কি ঘেন্না বলে বিদেশী রাষ্ট্র, বিদেশী মিডিয়া শুধু মজাই নিবে। তাই তাদের অপেক্ষায় না থেকে আসুন নিজের শরীরের ঘা নিজেরাই দূর করি। আপনি যদি দেশপ্রেমিক হন, আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধ কে সম্মান করেন, আপনি যদি বাংলাদেশকে একটা উন্নত রাষ্ট্র দেখতে চান তবে সবার সাথে হাতে হাত ধরে শ্লোগান তলুন,
জয় বাংলা
জয় জনতা।।
©somewhere in net ltd.