নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ালেখা করছি। পাশাপাশি অনলাইন জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করছি দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে। ব্লগে ফেরার ইচ্ছা বহুদিনের। একদিন হয়তো হুট করে আবারও রেগুলার হয়ে যাবো।

তাজুল ইসলাম মুন্না

একসময় ব্লগ দিয়ে দুনিয়া বদলানোর স্বপ্ন দেখতাম। এখন সাংবাদিকতায় সেই স্বপ্ন দেখি। ফেসবুক প্রোফাইলঃ https://www.facebook.com/ItsTajul

তাজুল ইসলাম মুন্না › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভুলে ভরা পাঠ্যবই-২ শব্দ ও বানানে জগাখিচুড়ি

০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:২২

"শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করে, একজন শিক্ষক ভুল করতে পারেন, কিন্তু পাঠ্যবইয়ে ভুল থাকতে পারে না।" চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাহিদা নাসরিন এ মন্তব্য করে বলেন, "শিক্ষার্থী শিক্ষকের চেয়েও বইকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই সঠিক শব্দ, তথ্য, বাক্য ও বানান জানার পরও শিক্ষককে প্রায়ই ছাত্রছাত্রীর কাছে বিব্রত হতে হয়। এমনকি শিক্ষক সঠিক বিষয়টি জানলেও তা সংশোধনের ক্ষমতা তাঁর নেই। কারণ, এ ধরনের দিকনির্দেশনা তাঁকে দেওয়া হয় না। তাই শিক্ষার্থী ভুল শেখে, ভুল লেখে এবং শিক্ষক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে নম্বর দেন।"

"পাঠ্য বইয়ের বানান" শিরোনামে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড−এনসিটিবির একটি বই রয়েছে। ওই বইয়ের শুরুতে বলা হয়েছে, "একটি সুস্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য বানানরীতির অভাব দুর করতে এবং সব স্তরের পাঠ্যপুস্তক লেখক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাংলা বানানের ক্ষেত্রে অসমতাজনিত বিভ্রান্তি নিরসনে বইটি সহায়ক হবে।" বাস্তবতা হচ্ছে, নিজেদের তৈরি ওই বানানরীতি না মেনে এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বছরের পর বছর কোটি কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।

এনসিটিবির বানানরীতিতে দেশী বানান দেশি, বিদেশী বানান বিদেশি, উপর-ওপর, শ্রেণী-শ্রেণি হিসেবে লেখার নির্দেশনা রয়েছে। কোনো পাঠ্যবইয়ে ওই নির্দেশনার প্রতিফলন নেই। সংযুক্ত অক্ষরে "স" এবং "ষ"-এর ব্যবহারে অসংখ্য ভুল পাওয়া গেছে। যেমন, পুরষ্ককার লেখা থাকলেও সঠিক বানান পুরস্কার।

নবম-দশম শ্রেণীর ভুগোল বইজুড়ে অসংখ্যবার মৌসুমী শব্দটি " ী" দিয়ে লেখা হয়েছে। এনসিটিবির বানানরীতি অনুযায়ী "ি " হওয়ার কথা। এ ছাড়া বইটিতে সঞ্চয়ের হয়ে গেছে সঞ্চায়ের, আবাদি হয়েছে আবাদী, ঢিলা হয়েছে ডিলা, উদগিরণের ছাপা হয়েছে উদগিরিণের। বইটির ৯২ পৃষ্ঠায় "অড়হর" শব্দটি চারবার উল্লেখ করা হয়েছে, কোথাও শেষ শব্দে "ঢ়" এবং কোথাও "র" দেওয়া হয়েছে। বইয়ের বিভিন্ন স্থানে "তৈরি" পোশাকের বানানে "রী" দেওয়া হয়েছে। ভুগোল বইয়ে এমন কোনো পৃষ্ঠা নেই, যেখানে এক বা একাধিক ভুল পাওয়া যায়নি। কবিতার বইয়ে অন্তর্গত, পর্তুগিজ, বলিষ্ঠ, ব্যাখ্যা শব্দগুলো ছাপা হয়েছে যথাক্রমে "অর্ন্তগত", "প্তগিজ", "বলিষ্ট" এবং "ব্যাখা"।

৩০টি কবিতায় একই ভুল: মাধ্যমিক কবিতার বইয়ে থাকা ৩০টি কবিতার প্রতিটিতে কবি-পরিচিতিতে খ্রিষ্টাব্দ শব্দের বানানে এক বা একাধিক ভুল রয়েছে। "ষ" এবং "ট" যুক্ত অক্ষর (ষ্ট) দেওয়ার বদলে সর্বত্রই "স" এবং "ট" যুক্ত (স্ট) করা হয়েছে। এ ছাড়া বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠার দ্বিতীয় লাইনে "বন্দনা" কবিতায় "খ্রিষ্টাব্দ" বানান লেখা হয়েছে "খিস্টাব্দ"।

"পাঠ্য বইয়ের বানান" শিরোনামে এনসিটিবি প্রকাশিত বইয়ের ১৩ পৃষ্ঠায় বলা আছে, ইংরেজি থেকে বাংলায় আত্তীকৃত বলে এবং উচ্চারণগত কারণেও খ্রিষ্ট ও খ্রিষ্টান শব্দ ষ ও ট যুক্ত করে ষ্ট যুক্তবর্ণ দিয়ে লিখতে হবে। কিন্তু নিজের তৈরি নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এনসিটিবি।

কথার ঝুরি: কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর "মাগো ওরা বলে" কবিতায় আছে− "কথার ঝুড়ি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরব।" এখানে হবে "কথার ঝুরি"। তাঁর "আমি কিংবদন্তির কথা বলছি" শীর্ষক কাব্যগ্রন্েথর নামে মাঝখানের শব্দটি হবে "কিংবদন্তী"।

"যেখানে লেঝে মারছে বাড়ি একটা রুপালি চিতল"−লেখক সৈয়দ শামসুল হকের "তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ" কবিতার এ লাইনে রয়েছে দুটি ভুল। ৯৭ পৃষ্ঠায় লেঝে শব্দে জ এবং রুপালি শব্দে উ-কার ( ু) হবে। একটি কবিতায় "কোন এক মাজারে" কথাটি "কেনো এক মাজারে" ছাপা হয়েছে। শুধু একটি আ-কার (া)-এর অভাবে বাক্যটি বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠেছে। "কপোতাক্ষ নদ" কবিতায় উল্লেখ করা "স্কুর্তি" ভুল বানান, ঊ-কার ( ু) দিতে হবে।

কৃষিশিক্ষায় ভুলের চাষ: নবম-দশম শ্রেণীর ২১৬ পৃষ্ঠার কৃষিশিক্ষা বইয়ে কমপক্ষে ছোট-বড় ২৮৩টি ভুল রয়েছে। ত্রুটিমুক্ত একটি পৃষ্ঠাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিক্ষকেরা বলছেন, সংশ্লিষ্টদের অজ্ঞতা বা অসতর্কতা ছাড়া একটি পাঠ্যবইয়ে এত ভুল থাকতে পারে না।

বই খুললেই দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় আর্দ্রতা শব্দটি হয়ে আছে উত্তআর্দ্রতা। এরপর সামনে এগোলে নাইট্রোজেন হয়েছে "নাইট্টোজেন", বাঞ্ছনীয় হয়েছে "বাঞ্চনীয়" এবং পটাশ হয়েছে "পটাস"। ভারি, পাহাড়ি শব্দ দুটি " ী" দিয়ে ভারাক্রান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তুত, উঁচু, স্তুপের, শণ, শব্দগুলো বইয়ে লেখা হয়েছে যথাক্রমে "প্রস্তুর", উচ,ু স্তুপের, শন। বইয়ের ১৭ থেকে ২০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পটাসিয়াম শব্দটির বানান অন্তত ছয়টি স্থানে লেখা হয়েছে "পটাশিয়াম"। ১০৫ পৃষ্ঠায় লোনা পানি হয়ে আছে "নোলা পানি"।

এ ছাড়া কৃষিশিক্ষা বইয়ে যেসব ভুল রয়েছে, তার কয়েকটি বন্ধনীতে উল্লেখ করা হলো। রোদে (রৌদ্রে), দমন (দলন), ছুরি (ছুড়ি), প্যাডেল (পেডেল), জ্বালানি (জ্বালানী), স্টিয়ারিং (ষ্টিয়ারিং), লাঙল (লাঙ্গল), পশ্চিমাঞ্চলে (পশ্চিামাঞ্চলে), কর্ণফুলি (কর্ণফুলী), সিলিন্ডার (সিলিন্ডার), স্টাফিং (ষ্টাফিং), পাম্প (পামস্ল), অবস্থায় (অবস্তায়), পামরি (পামরী), মশারি (মশারী), রোপণ (রোপন), যায় (যয়), উপরিউক্ত (উপরোক্ত), বাঞ্ছনীয় (বাঞ্চনীয়), গ্রিন (গ্রীন), ভালভাবে (ভালোভাবে), ধসা (ধ্বসা), লক্ষ (লক্ষ্য), কোনায় (কোণায়), ভুমিকা (ভুমিকা), গ্রামাঞ্চলে (গ্রামঞ্চলে), সমতল-ভুমির (সমতল-ভুমির), সম্পদ (সমদ), লিপিবদ্ধ (লিপিবন্ধ), বিপণন (বিপনন), সিড (সীড), গ্রিন (গ্রীণ), কমপোস্ট (কমপোষ্ট), যাবতীয় (যারতীয়), দরকার (দরকা), প্রান্তসীমা (প্রাম্পসীমা), দুরে দুরে (দুরে দুরে), ভুমি (ভুমি), সুর্যালোক (সুর্যালোক), স্পাইরোগাইরা (সম্লাইরোগাইরা), সম্পুরক (সম্পুরক), চাল (চাউল), কাচ (কাঁচ), বায়ুর (বায়ুর), বছর (বৎসর), ভুসি (ভুমি), বুস্টার (বুষ্টার), বিষ্ঠা (বিষ্টা), স্থায়িত্বের (স্থায়ীত্বের), ভুসি (ভুষি), তেল (তৈল), অপুষ্টিজনিত (অনুষ্টিজনিত), আয়োডিন (আযোসিন), অন্ত্রনালির (অন্ত্রনালীর), নাড়ির (নাড়ীর), জীবাণুমুক্ত (জীবানুমুক্ত)।

ন এবং ণ ব্যবহারে বিভ্রান্তি: ন এবং ণ-এর ব্যবহার বাংলা গদ্য বইয়ের অধিকাংশ জায়গায় ঠিকমতো হয়নি। বিশেষ করে এই দুটি অক্ষর দিয়ে তৈরি বইয়ের অধিকাংশ যুক্তাক্ষরই ভুল। পান্ডিত্য লেখা থাকলেও সঠিক বানান পান্ডিত্য। প্রাণদন্ড হবে প্রাণদন্ড। এ ছাড়া রসমন্ডিত, কপালকুন্ডলা, ডান্ডা, বন্টন, প্রচন্ড শব্দগুলো হবে রসমন্ডিত, কপালকুন্ডলা, ডান্ডা, বণ্টন এবং প্রচন্ড। একইভাবে প্রকান্ড, ভান্ডার, জ্ঞানকান্ড বানানগুলো বইয়ে ঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। "ম্রিয়মান" শব্দে "ণ" থাকার কথা, দেওয়া হয়েছে "ন"। আবার বলেছেন ও পরিবহন শব্দ দুটিতে "ণ" ব্যবহার করা হয়েছে। জন্নগ্রহণ শব্দে "ন" ব্যবহার অযৌক্তিক। এ ছাড়া এক্ষনে হবে এক্ষণে।

ই-কার (ি ) এবং ঈ-কার ( ী): বানান বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পাঠ্যবইয়ে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ভুল রয়েছে ই-কার (ি ) এবং ঈ-কার ( ী) সংক্রান্ত। বিশেষ করে মাধ্যমিকের ইসলাম শিক্ষা বইজুড়ে রয়েছে ই-কার এবং ঈ-কার বিভ্রান্তি। ইসলাম শিক্ষায় হাদিস বানানটি লেখা আছে "হাদীস"। এ ছাড়া আসমানি, গুণাবলি, দাবি, ভন্ডামি, সহিফা, সাহাবি, খলিফা, হিজরি, লটারি, হাউজি, ভারি, হালিমা, আমিন, খাদিজা, মদিনা, মুরগি, শরিফ, শরিক, হাসিল, কুরসি, দেশি, বিদেশি, গোলামি, ইহুদি শব্দগুলোতে এনসিটিবির বানানরীতি অনুসরণ না করে ঈ-কার দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ইসলামি শিক্ষায় উল্লেখ করা কিছু ভুল শব্দ বন্ধনীতে সঠিকভাবে দেখানো হলো। তৈরী (তৈরি), উদগীরণ (উদগিরণ), জালালী (জালালি), গ্রেগরী (গ্রেগরি), প্রতিবেশির হক (প্রতিবেশীর হক), খলীফা (খলিফা), লক্ষ্যে (লক্ষে), গ্রীক (গ্রিক), ইউনানী (ইউনানি), শীরক (শিরক)।

বইটিতে তৈরি শব্দটি তৈর, শরিয়ত শব্দটি শরীআত, হাশর শব্দটি হাশার, ইসরাফিল শব্দটি ঈসরাফিল, প্রকৃতপক্ষে শব্দটি প্রকুতপক্ষে, দ্ব্যর্থহীন শব্দটি দ্ব্যার্থহীন ছাপা হয়েছে। এ ধরনের আরও কিছু ভুল হচ্ছে প্রাণালী (প্রণালি), রাসুল (রাসুল), সুরা (সুরা), ভালো (ভাল), রমজান (রমযান), জাকাত (যাকাত)।

গদ্যে ভুল ২৫৯টি: একজন বাংলা শিক্ষক ও ভাষা বিশেষজ্ঞ গদ্য বইটি পর্যালোচনা করে কমপক্ষে ২৫৯টি ভুল চিহ্নিত করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, হসচিহ্ন, দাড়ি, কমা, সেমিকোলনের মতো ভুলসহ সব ধরনের ভুল চিহ্নিত করা হলে মোট সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে। বইটি পড়ে ছেলেমেয়েরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা বন্ধনীতে উল্লেখ করা সঠিক শব্দগুলো দেখলে বোঝা যায়। টিকা (টীকা), বিদ্রুপ (বিদ্রূপ), বসতুর (বস্তুর), দস্থর (দস্তুর), আকাঙ্খি (আকাঙ্ক্ষী), অগ্নিমুর্তি (অগ্নিমূর্তি), মুখস্ত (মুখস্থ), ফেরেস্তা (ফেরেশতা), মতা (ক্ষমতা), র্মাবতা (ধর্মাবতার), নিরক্ষীণ (নিরীক্ষণ), প্রতিবন্ধিতার (প্রতিবন্ধকতার)। এ ছাড়া ভারকান্ত (ভারাক্রান্ত), প্রত্যশা (প্রত্যাশা), গ্রগতিশীল (প্রগতিশীল), স্বচ্ছলতা (সচ্ছলতা), মুহুর্মুহু (মুহুর্মুহু), চুড়ই (চড়ুই), খুঁটে খঁটে (খুঁটে খুঁটে), সরাদিন (সারাদিন), যন্ত্রনায় (যন্ত্রণায়), বোমরু (বোমারু), আনুপূর্বক (আনুপূর্বিক), এলোমোলো (এলোমেলো), মুরুভুমি (মরুভুমি), শীররটা (শরীরটা), অকান্ত (অক্লান্ত), অল্লাহ (আল্লাহ), কথাসাহিতোর (কথাসাহিত্যের), বাস্তকলায় (বাস্তুকলা), নিরক্ষীণ (নিরীক্ষণ), প্রতষ্ঠিত (প্রতিষ্ঠিত), নভেম্বও (নভেম্বর), পশ্চিমবঙ্গোর (পশ্চিমবঙ্গের), কওে (করে), আমাদেও (আমাদের), মাথামুন্ড (মাথামুন্ডু), দর্বোর্ধ (দুর্বোধ্য), সঞ্চারী করে (সঞ্চারিত করে), গেুরুয়া (গেরুয়া), ফটেছে (ফুটেছে), জোয়ার্দা (জোয়ার্দার), সঞ্জীতিব (সঞ্জীবিত) প্রভৃতি শব্দগুলো ভুল ছাপা হয়েছে।

লেখক কাবেদুল ইসলাম বলেন, "একজন সচেতন নাগরিক এবং মাধ্যমিক স্তরে পড়া দুই সন্তানের অভিভাবক হিসেবে নিজ উদ্যোগে বইটি পড়েছি। কারও সমালোচনার জন্য নয়, এই পরিশ্রম ছিল আমার মর্মপীড়ার প্রতিফলন।" তিনি আরও বলেন, উপযুক্ত বিরামচিহ্ন প্রতিস্থাপনে অসংগতি তথা অসতর্কতা ও অমনোযোগ, শব্দের সঠিক অর্থনির্দেশে ব্যর্থতা, ভাষা ও ব্যাকরণগত ভুল এবং নানারকম ত্রুটি-বিচ্যুতিতে আকীর্ণ গদ্য বইটি। ১৪৮ পৃষ্ঠার বাংলা গদ্য বইয়ে এমন পৃষ্ঠা খুবই কম আছে, যেখানে এক বা একাধিক ভুল নেই−এমন মন্তব্য কাবেদুল ইসলামের।

কবিতায় ভুল ৬৯টি: বাংলা কবিতার বইয়ে শুধু শব্দের ভুল বানান চিহ্নিত করা হয়েছে ৬৯টি। লেখকদের নাম, বাক্যে অসংগতিসহ অন্যান্য ভুল এর বাইরে। বানান ভুলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে (বন্ধনীতে সঠিক বানান): ওরিয়েণ্টাল (ওরিয়েন্টাল), সেমিনারী (সেমিনার), পাষানের (পাষাণের), ঐশ্বর্য্য (ঐশ্বর্য), দেশত্ববোধক (দেশাত্মবোধক), স্তুপ (স্তুপ), মর্ত্ত্যে (মর্ত্য)ে, চুমকীর (চুমকির), প্রতিক্ষায় (প্রতীক্ষায়), হরিনীর, (হরিণীর), উঠে (ওঠে), অর্পণা (অপর্ণা), জন্নগ্রহন (জন্নগ্রহণ), সম্মোধন (সম্বোধন), ঘোষনা (ঘোষণা), নৈপূন্য (নৈপুণ্য), দুঃখিনী (দুখিনী), ধুলার তখত (ধুলার তখত), প্রতিষ্টাতা (প্রতিষ্ঠাতা), কান্ডারী (কান্ডারি), পুত্রবধু (পুত্রবধু), ঝিয়ারী (ঝিয়ারি), যতদুর (যতদুর), চাষীরা (চাষিরা), আমীর (আমির), মঞ্জুরী (মঞ্জুরি), উচ্ছলি (উছলি), রাগিনী (রাগিণী), অনুশীলনীমূলক (অনুশীলনমূলক), আর্বিভাবে (আবির্ভাবে), রাগিনী (রাগিণী), জন্নগ্রহন (জন্নগ্রহণ), জীবজগত (জীবজগৎ), মরিচিকা (মরীচিকা), প্রতীকি (প্রতীকী), ইস্পিত (ঈপ্সিত), অভীষ্ঠ (অভীষ্ট), ইন্ডিয়া (ইন্ডিয়া), অনুশীলনীমূলক কাজ (অনুশীলনমূলক কাজ), ভুতুড়ে (ভুতুড়ে), ধরণের (ধরনের), চাষীর (চাষির), রৌদ্রজ্জ্বল (রৌদ্রোজ্জ্বল), রুপ (রূপ), সুনিপুন (সুনিপুণ), প্রাকেন্ত (প্রান্তে), মৃত্যতে (মৃত্যুতে), ধ্বংসস্তুপের (ধ্বংসস্তুপে), বিষন্ন (বিষণ্ন), লাঞ্চিত (লাঞ্ছিত), লেফটেনাণ্ট (লেফটেন্যান্ট)।

সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা ও লেখক শফিউল আলম বলেন, "একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা কী শিখেছি এবং এখনকার শিক্ষার্থীদের কী শেখানো হচ্ছে, এটা ভেবে খুবই আফসোস হয়।" তিনি বলেন, প্রথম সংস্করণে দু-একটি ভুল থাকতে পারে, এর পরের বছর ভুল থাকার কথা নয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ত্রুটিমুক্ত হওয়ার বদলে বইগুলোতে ভুলের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শফিউল আলম এনসিটিবির কর্মকর্তা ছাড়াও বাইরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বইগুলো আদ্যোপান্ত পর্যালোচনার প্রস্তাব দেন। এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের কথা বলেন তিনি।

সংশোধনী: গতকাল সোমবার প্রথম আলোয় "ভুলে ভরা পাঠ্যবই" শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম কিস্তিতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচিতি দিতে গিয়ে "ওরিয়েন্টাল সেমিনারি" শব্দ দুটির মধ্যে একটি কমা (,) উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে শব্দ দুটির মাঝখানে কোনো চিহ্ন প্রযোজ্য নয়।

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে কয়েকজন ভাষা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তাঁদের ধন্যবাদ]



প্রথম আলো থেকে সংগ্রহীত



প্রথম পর্ব



তৃতীয় পর্ব

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৭/-১

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:২৯

পথিক মানিক বলেছেন: জটিল কার্টুন হইছে.......আর লেখাটার কথা কইতে গেলে ,,,,,,,,,,,চমৎকার। :)

০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৩১

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: ছবিটা আসলেই জটিল। :)

২| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৩৮

বুমবুম বলেছেন: মুন্না আইজকা কাম ই করছে একটা।ভাল জিনিস দিছ।পেলাচ।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৪

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: ধইন্যবাদ। আমি আর কি করলাম। প্রথম আলো থিকা আইনা দিলাম। :)

৩| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৩৮

ত্রিভুজ বলেছেন:

কঠিন পোস্ট! গবেষক হয়ে যাচ্ছো দেখি? গুড... কিপ ইট আপ...

আর পাঠ্যবই- যারা লিখে এবং যারা ছাপে, তাদের জন্য বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম নেয়া দরকার।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৫

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: কথাটা ভালই বলছেন।

প্রথম আলোরে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। :)

৪| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৩৯

ত্রিভুজ বলেছেন:

"প্রথম আলো থেকে সংগ্রহীত " কথাটা লক্ষ্য করিনি প্রথমে... যাই হোক, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৫

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: প্রথম আলো থিকা কপি করাও কিন্তু সোজা না। ;)

৫| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৭

বুমবুম বলেছেন: আইজকা আর সৌরজগতের বাইরে যাওন লাগে নাই।সোজা পাঠ্য বইতে ঢুইকা গেছি:)

০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৫১

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: মনের ভুলেও ঢুইকেন না। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্লুটোরে বাদ দিলেও ওনারা বাদ দেননাই। কষ্ট লাগে মুন অয়। :)

৬| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৫৯

শওকত হোসেন মাসুম বলেছেন: রিপোর্টটির প্রতিবেদক পিন্টুকে ডেকে এই পোস্ট এবং মন্তব্যগুলো দেখালাম।
আসলেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০০

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: আপনি কি প্রথম আলোর?


তাহলে ধন্যবাদটি আপনাকে দিয়েই পৌছে দিলাম প্রথম আলোকে।

প্রতিবেদক পিন্টু ভাইকেও ধন্যবাদ।।।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০১

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: ছবিটার জইন্য একটা ইস্পিশাল থ্যাংকু। :)

৭| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

বুমবুম বলেছেন: প্লুটোর তো শুনলাম নতুন নাম দিছে।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১১

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: গ্রহের তালিকা দিয়া বাদ দিছে। একটা নতুন গ্রুপ করা হইছে অহন প্লুটোর জইন্য।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: প্লুটোর সাথে ওই গ্রুপে আরো দুইটা থাকবো। দুইটা কি থাকবো তা মনে পড়তাছে না।


তয় এদের খুব সম্ভবত বামন গ্রহ কয়।

৮| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২০

বুমবুম বলেছেন: প্লুটো যাইতাম মুন চায়:|

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৪

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: যাইবার পারবেন না। :(


প্লুটো আপনারে লাইথ্থাইয়া বাইর কইরা দিব। :(

আমারওতো যাইবার মুন চায়। :(

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৭

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: প্লুটোরে নিয়া এইকানে অনেক কিচু লেকা আচে।

http://en.wikipedia.org/wiki/Pluto

৯| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫

বুমবুম বলেছেন: ফিনিক্স যদি মঙ্গল যাইতে পারে তয় আমরাও পারুম কি কও।মান ইজ্জতের ব্যাপার।প্রস্তুতি নেওন দরকার।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪০

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: হ। ঠিক কইচেন।



নাসা মহাকাশযান পাঠাইছে। আমগো নিজেগোই যাওয়া উচিত।



সমস্যা একটাই। ওইকানে নাকি শ্বাস নেওন যায়না। :(

১০| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

বুমবুম বলেছেন: মুন্না এতদিনে এই কথা কইলে হইব।বস্তায় কইরা নিয়া যাব যা লাগে।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৪৫

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: ঠিকাছে। কাম শুরু করেন। আমি আছি। আপনি অর্থ আর শ্রম দিবেন। আর আমি বুদ্ধি দিমু। :)

১১| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ৮:০১

নুরুন্নবী হাছিব বলেছেন: ভাল একটি পোষ্ট....আসলেই আমাদের এই ভুলের মধ্যে যে আর কতদিন পড়ে থাকতে হবে...??

০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৪৯

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: যতদিন বানর থেকে মানুষ হবার মতো গরু থেকে মানুষ না হয়।

১২| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৫২

তানজু রাহমান বলেছেন: ভালো ১টা পোস্ট দিয়েছ মুন্নাভাই।

০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৫৭

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.