নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ রক্ষার সৈনিক

মারুফ মুনজির

আমাকে যে ভালবাসে তাকে আমার খুব ভাল লাগে

মারুফ মুনজির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বসগিরি সিনেমার মুভি রিভিউ

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৮


গতকাল শনিবার (১৭.৯.১৬) সাকিব- বুবলীর “বসগিরি” সিনেমা দেখলাম, সাধারনত সকালের শো শুরু হয় ১২.৩০-৪৫ এর মধ্যে। আমি হলে গেলাম ১২.১৫ দিকে দেখি হলের সামনে জনা পাচেক ছাড়া লোক নেই, নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, সাকিব খানের ছবি আর লোক নেই অস্বাভাবিক লাগলো যাহোক টিকিট কেটে হলে ঢুকে আবার হতবাক এত লোক, সাধারনত আমি ডিসির একেবারে পিছনের লাইনে বসি আজ একদম সামনের ৪ লাইনের পর বসতে পারলাম, আগেই দর্শক সিট ভরে ফেলেছে, অনেক দিন পর এই অবস্থায় পরলাম, এর আগে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর টেলিভিশন দেখতে গিয়ে এই অবস্থায় পড়েছিলাম, সাকিব খানের ২০১৫ সাল পর্যন্ত কোন সিনেমা আমি দেখিনি, তবে ২০১৬ সালের সাকিব খানের প্রায় সব ছবি আমি দেখেছি, এখন পর্যন্ত যে কোন নায়কের থেকে আমি সাকিব খানের ছবির দর্শক বেশি পেয়েছি, এমন কি সাকিব খানের সিনেমার সময় স্বাভাবিক সময়ের থেকে টিকিটের দাম বাড়িয়ে দেয় হল কর্তপক্ষ, আমি মনে করি সাকিব খানের কারনেই হলের মালিকরা টিকে আছে। আমার চোখের সামনেই দু:খ জনক ঘটনা দেখেছি, “বাপজানের বায়োস্কোপ” সিনেমা দেখতে গিয়ে। শুক্রবার সিনেমাটি লাগিয়েছিল, আমি শনিবারের মর্নিং শো দেখতে গেছি, হল থেকে বেড়িয়ে দেখি অন্য ছবির পোস্টার ব্যানার লাগানো, মাত্র ৪ শোতে সিনেমা বদলিয়ে ফেললো, অথচ অনেক ছবির মধ্যে বাপজানের বায়োস্কোপ অনেক ভালো ছবি বিশেষ করে চিত্রগ্রহনে, লোকেশনে সিনেমাটি অনেক ভালো মানের।
আমি খেয়াল করে দেখেছি সাকিব খানের পর সব থেকে বেশি দর্শক হয় আরেফিন শুভর সিনেমায়, এমনকি ভারত বাঙলাদেশ যৌথ প্রযোজনার সিনেমা থেকেও সাকিব খানের দর্শক বেশি (এ হিসেব চম্পাকলি/আনারকলি সিনেমার)। এরপর অন্য নায়কদের সিরিয়াল।
যা হোক “বসগিরি” বিশাল সিনেমা, মাঝে মাঝে মনে হয়েছে বিরতি দিতে এত দেড়ি কেনো হচ্ছে। এ সিনেমা না রোমান্টিক না একশন তবে কমেডি সিনেমা বলা যেতে পারে। কোন গল্প নেই, কঠিন বাস্তবতার কোন প্রেম নেই, আছে কিছু কমেডি। ইন্ডিয়ান সিরিয়াল টাইপের স্লোমিশন সিনে বিরক্ত হয়েছি, নায়কের প্রথম দৃশ্য একশনের সিন কিন্তু একশন যদি এত স্লোমিশনে দেখায় তাহলে তা আর একশন হলো কেমনে, একশন হবে দ্রুত গতির দৃশ্য, পরিচালক প্রতিটি একশন দৃশ্য এই একাজটা করেছেন, আমি বিরক্ত হয়েছি, এরকম করা মানে হলো উত্তেজনার মধ্যে বরফ পানি গায়ে ঢেলে দেবার মতো, যেমন তামিল সিনেমার একশন স্লোমিশন দেখিয়ে ধুম করে শেষ করে, এতো একধরনের উত্তেজনার ছোয়া লাগে, কিন্তু এসিনেমায় একশন দৃশ্য এতক্ষন ধরে ঝুলিয়ে রাখল সেটা আর একশন মনে হলো না, সেটা উত্তেজিত করার বদলে হতাশ করে।
আরেক দৃশ্য স্লোমিশনে এত দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলিয়ে রাখলো মনে হচ্ছে কখন শেষ হবে জানা নেই, শেষ পর্যন্ত আমি পর্দা থেকে অন্য দিকে চোখ সরিয়ে নিয়েছি, সেটা হলো নায়িকার প্রথম দৃশ্য, নায়িকা পাটের বস্তা থেকে বের হলো এরপর হিন্দি সিরিয়ালের মতো এক লম্বা দৃশ্য, মনে হলো সিন শেষ হবে না, এরপর হঠাত করে নায়িকা নায়কের গালে চর মেরে বসলো, এখন আমার প্রশ্ন যদি নায়িকা নায়ককে অপছন্দ করে তাহলে নায়িকা এতক্ষন ধরে নায়কের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকলো কেনো, এটা কি স্বাভাবিক? আমি যদি কাউকে অপছন্দ করি তার দিকে মিনিট খানেক তাকিয়ে থাকবো আহ কি সুন্দর তারপর চর মারবো, এটা আরোপিত দৃশ্য যা চোখে পড়ার মতো, যদি এই সিন দ্বারা নায়িকার সৌন্দর্য প্রকাশ করার প্রথম দৃশ্য দেখাতে চান, তাহলে হালের “বাদশা” সিনেমার নায়িকা নুসরাত ফারিয়ার মতো দেখান হা হা হা কি দৃশ্য রে বাবা।
যা হোক “বসগিরি” সিনেমার নায়িকা বুবলীর প্রথম ছবি হিসেবে, বুবলী সফল, বুবলীর মুখমন্ডল সুন্দর হলেও তার অসুন্দররের জায়গা হলো গলার অংশ, পুরো ছবিতে বারবার গলার অংশটা আমাকে অন্যমনস্ক করে ফেলছিল, তার উচিত হবে এখানে ভালোভাবে মেকাপ করা যাতে করে গলার হাড় না দেখা যায় বা গলায় কোন মালা পরে থাকা, মোটকথা গলাটা ডেকে রাখলে তার সৌন্দর্য অনেক বেড়ে যায়, হাত ও বাহুর নিচের অংশ হোয়াইটিনিং করা উচিত ছিল ভালো করে। এটা দেখতে অসুন্দর লেগেছে, নায়িকা কে নায়িকার মতো না দেখলে দর্শকদের তার অভিনয়ের দিকে মনোযোগ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, এসমস্যা বাঙলাদেশের প্রায় সব নায়িকার রয়েছে। যা হোক বুবলীর সেরা মেকাপ হয়েছে গানগুলোতে, বুবলীর অভিনয় স্বতস্ফুর্ত। বুবলী নাচতে পারে কিনা তা এসিনেমায় বোঝা গেল না। দিল দিল গান ছাড়া কোন গানে নাচের দৃশ্য নেই বললেই চলে।
এ সিনেমাতে কোন গানই মনে লাগেনি, বুবলী বুবলী গানটি আইটেম সং কিনা বুঝা গেল না। ইমরানের কন্ঠে প্রথম গানটি একটু ভালো লেগেছে। এ ছবির সবকটা গান দেশের বাইরে (থাইল্যান্ড) শ্যুট করা হয়েছে, সবকটা গানে সাকিব খানের দাড়ি রয়েছে, শেষের কয়েকটা দৃশ্য ছাড়া সারা সিনেমায় সাকিব খানের দাড়ি নেই, হুট করে গান এলেই সাকিব খান দাড়িওয়ালা, গান শেষ হলেই নায়কের চোহারা নিয়ে কেমন জানি ধাক্কা খাই, পুরো সিনেমার গান ছাড়া সবদৃশ্য বাঙলাদেশে, তাও আবার এফডিসি ও তার আশেপাশে আর উত্তরার কিছু লোকেশনে শুট করা হয় (স্নেহপল্লীর দৃশ্য ছাড়া), সিনেমাতে এসব পরিচিত দৃশ্য দেখতে দেখতে একগুয়ে লাগছিল, লোকেশনে কোন নতুনত্ব খুজে পাই নি।

আগেই বলেছি সিনেমার কোন কাহীনি নেই, নেই কোন ম্যাসেজ, নেই কোন ভালবাসার রসায়ন, নায়িকার সাথে প্রেম করার জন্য সাকিব খান যা যা করেছেন তা কোন রিয়েল কাপল এগুলো করেনা, সিনেমাতে আছে কিছু কমেডি, তবে বাঙলা সিনেমাতে কমেডিয়ানের চরম ঘাটতি, অনেক দিন ধরে কোন মনে ধরা কমেডিয়ান পাচ্ছিনা, যাকে দেখলেই হাসি পায় বা পর্দায় আসলেই দর্শক চিতকার করে, আগে যেমন দিলদার দৃশ্যতে আসলেই আমরা মজা পেতাম, এরকম অনেকদিন কমেডিয়ান চোখে পড়ছেনা, তবে এ ছবিতে মাজনুন মিজানকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তাতে তার অভিনয়ের কোন দক্ষতা মনে ধরেনি, মিজান বড় শক্তিমান অভিনেতা, কিন্তু এ সিনেমাতে তার দক্ষতার সিকিভাগও দেখাতে পারেননি, তবে কমেডি হিসেবে চিকন করে মাথায় ক্যাপ পড়া (নাম মনে নেই, মনে হয় চিকন আলী) অভিনেতার অভিনয় ভাল লেগেছে, এই ছেলেটাকে নার্সিং করা উচিত, তিনি ভবিষ্যতে ভাল করবেন। এ ছবিতে মিজু আহমেদের চেহারা বদলে গেছে, সেই টান টান ভীলেনের চেহারা নেই তিনি বুড়ো হয়ে গিয়েছেন, সাদেক বাচ্চু অভিনয় ভালো লেগেছে, হঠাত করে ডাবল ডিকে হিসেবে ভারতের রজতাব দত্ত রনির আগমনে ভালই লাগছিল, কিন্তু এরকম শক্তিমান অভিনেতার কি হতাশাজনক অভিনয়, পরিচালক তাকে ঠিকমত ব্যবহার করেননি, অনেকদিন ধরে অমিত হাসান ভীলেন হওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাকে ভীলেন হিসেবে সহজভাবে নিতে পারছি না, অগ্নি টু তে থাইল্যান্ডের পুলিশদের সাথে বাংলায় কথপোকথনে চরম বিরক্ত হয়েছিলাম, যা হোক নায়ক থেকে ভীলেন হওয়ায় আগের দর্শকদের মেনে নিতে একটু ইতস্তত রয়েছে।

চিত্রগ্রহন মধ্যমমানের, পোশাক চয়েজ তেমন ভালো হয়নি, পোশাক চয়েজ দেখেছিলাম- নায়িকা জলির প্রথম ছবি অঙ্গারে, এই ছবির প্রতিটি দৃশ্যের সাথে নায়িকার প্রতিটি পোশাক খুব সুন্দরভাবে মানিয়েছিল। বসগিরিতে একশন সাউন্ডে নতুনত্ব রয়েছে, স্টিলের বডিতে আঘাত করলে যে শব্দ হয় সেশব্দটা একশনকে অন্যরকমভাবে উপস্থাপন করেছে।

আমার মনে হচ্ছে সাকিব খান দিন দিন ভালো করছেন, তার বসগিরি শিকারীকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, রাজা ৪২০ এর কমেডি থেকে বসগিরি কমেডি ভালো লেগেছে, তবে তার একশনের দিক থেকে “সম্রাট ” বসগিরির উপরে, সাকিব খান প্রায় সব ছবিতে ফাটা কেষ্ট সিনেমার মতো “মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মসানে” এরকম ডায়ালগ দিচ্ছেন। সম্রাট, রাজা ৪২০, মেন্টাল এ দিয়েছেন কিন্তু কোনটাই জনপ্রিয়তা পায়নি, বসগিরিতেও দিয়েছেন মনে ধরেনি, হলের বাইরে এসে ঘন্টাখানেক পরে আর পুরোটা মনে করতে পারিনি, যাহোক এ ছবিতে ভালো লাগার মতো আছে কমেডি গুলো, পুরো ছবি নায়ক নির্ভর, সাকিবের ভুড়ি চোখে পড়ার মতো, পেটের মেদ- গানের নাচে ও একশনের সময় বাড়তি মনোযোগ নিয়ে নিচ্ছিল, যা দৃষ্টিকটু। যারা ছবি দেখে ম্যাসেজ চান, যারা ক্লাসিকাল মুভি দেখতে চান, যারা আইটেম নাচ দেখতে চান তারা ছবিটি না দেখলেও চলবে, আর যারা গড়পড়তা কমেডি দেখতে চান তারা হলে গিয়ে বসগিরি দেখুন।

ছবি: বসগিরি
হল : চম্পাকলি, টঙ্গী

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



ছাগলের লাফালাফির বায়োস্কোপ

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৯

মারুফ মুনজির বলেছেন: বুঝলাম না ...

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫

একটি পেন্সিল বলেছেন: বলেছেন: যত ধরনের পঁচা ছবি বানান, চার আনার মেধা খাটান না, সেই ছবি দেখে নিজের টাকা নষ্ট করে অশ্লীল মানুষিকতার মানুষদের পকেটা ভারি করব, সেটাতো হতে পারেনা।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৫

মারুফ মুনজির বলেছেন: সেটা অাপনার চয়েজ, ছবি না দেখলে ছবি বানাবে কেমন করে, দেখুন সমালোচনা করুন, ভাল ছবি হবেই.।

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৩৭

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: ভাল রিভিউ। তবে, কাহিনীর মান বাড়ানো খুবই আবশ্যক এখন।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫২

মারুফ মুনজির বলেছেন: ঠিক বলেছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.