![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দর্পন বিসর্জন, ইদুল ফিতরের সময় যমুনা ব্লকবাস্টারে বাদশা সিনেমা দেখতে গিয়ে এ সিনেমার পোস্টার দেখেছিলাম, একটু অবাক হয়েছিলাম প্রচারনা ছাড়া ইমপ্রেস এর মুভি মুক্তি পেলো, যাহোক হঠাৎ করে ইউটিউবে পেয়ে গেলাম, গতকাল রাতে দেখেছি, ছবির কাহীনি পল্লী কবি জসিম উদ্দিন এর ছোট গল্প আয়না থেকে নেয়া হয়েছে, মুল কাহীনি হলো, জেলে নুরা একদিন মাছ ধরতে গিয়ে তার জালে আয়না উঠে আসে, এর আগে সে কখনো আয়না দেখেনি, যখন নুরা আয়নার দিকে তাকায় তার নিজের প্রতিবিম্বকে তার বাবার ছবি মনে করে, নুরার বাবা অনেক আগে মারা গেছে, নুরা ভাবে এর মাধ্যেমে তার বাবা ফিরে এসেছে, নুরা তার বাবাকে আর হারাতে চায়না তাই ঘরের মধ্যে আয়নাটাকে লুকিয়ে রাখে, নুরা লুকিয়ে লুকিয়ে তার বাবার সাথে কথা বলে, এদিকে নুরার স্ত্রীর সন্দেহ হয়, তিনি মনে করেন তার স্বামী এখন আর আগের মতো ভালবাসে না, একদিন নুরার স্ত্রী লুকিয়ে রাখা আয়না দেখে, আয়নায় নিজের চেহারা দেখে মনে করে তার স্বামী আরেকটা বিয়ে করে এখানে লুকিয়ে রেখেছে, তিনি কান্নাকাটি শুরু করে নুরা যতই বলে এটা তার বাবা, অন্য দিকে নুরা স্ত্রী মনে করে এটা তার সতীন, পাড়ার লোকজন চলে আসে নুরার বোন তার নিজের চেহারা থেকে বলে- বিয়ে করলি একটা বুড়া মহিলারে, এরপর এলাকার চাচা আসলে তিনি তার নিজের চেহারা দেখে - নাউজুবিল্লাহ বলে কি করলি শেষ পর্যন্ত একজন পুরুষ মানুষরে বিয়ে করলি, সারা গ্রাম ছি ছি করতে থাকে নুরা পুরুষ মানুষরে বিয়ে করছে, শেষের দিকে যখন একসাথে কয়েকজন আয়নায় তাকায়, তখন একে অপরকে চিনতে পারে, তখন তাদের মনে হলো এটা আয়না যেখানে নিজের চেহারা দেখা যায়, এভাবে নুরা ও তার স্ত্রীর মধ্যে সর্ম্পক আবার তৈরী হয়, সিনেমা শেষ হয়।
নুরার স্ত্রীর ভুমিকায় অভিনয় করেছেন অপর্ণা সেন, নুরার ভুমিকায় অভিনয় করেছেন নবাগত আজাদ, তার অভিনয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে, তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে, যেমন আজাদের কন্ঠে আঞ্চলিক ডায়ালগ শ্রুতিমধুর লাগছিল না যতটা ভালো লাগছিল অপর্ণা সেনের।
এ ছবির সব থেকে ভালো লেগেছে গ্রাম বাংলার দৃশ্য, এসব দৃশ্য আসলেই চোখ আটকে থাকে পর্দায়, লোকেশন মুন্সিগঞ্জের জেলার বিভিন্ন স্থানের, জোসনা রাত, ধান ক্ষেত, পাট ক্ষেত, নদী, মেঘবর্তী আকাশ, কুমরোর হলুদ ফুল, নদীর ঢেউ, মাঝে মাঝে আমি আমার গ্রামের বাড়িতে চলে যাই, সেই মেঠোপথ, নদীর পানিতে গোসল, ঘরের সামনে মাঠির উঠোন, বিভিন্ন সবজির মাচা। ড্রোন ক্যামেরার দৃশ্য সুন্দর লেগেছে।
কে কিরকম অভিনয় করলো তা আর বললাম না, এ সিনেমা মাঝারি মানের সিনেমা, তাই খুব বেশি বলার কিছু নাই। ডাবিঙ ও ভালো হয়নি, পুথি পাঠের সময় ডাবিং ভালো হয়নি বুঝা যাচ্ছিল। এ ছবির বলার মতো আছে চিত্র গ্রহন ও গান নিয়ে।
সিনেমা দেখতে গিয়ে প্রশ্ন জাগে মনে, এটা এমন যুগের কাহীনি যে গ্রামের লোক কোন দিন আয়না দেখে নাই কিন্তু সবচেয়ে হাসি পাইল, গ্রামের পুথি পাঠক চাচার চোখে আধুনিক ফ্রেমের চশমা, হা হা হা যারা চশমা চেনে তারা আয়না চেনে না এটা কিছু হইল, তারপর নুরার ঘর ঝকঝকে টিনের, জানালায় স্টিলের শিক, অপর্না সেনের গলায় কানে আধুনিক অলংকার, যাগো করে টিন আছে তারা আয়না চেনে না, টিনেও তো চেহারা রিফ্লেক্ট করে। পরিচালকের সেট নির্মানের দূর্বলতা চোখে পড়ে বিরক্ত হয়েছি। যাহোক পরিচালকের জন্য শুভ কামনা রইল। পরিচালনা করছেন সুমন ধর
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৩০
অচেনা পথিক ৫ বলেছেন: