নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ রক্ষার সৈনিক

মারুফ মুনজির

আমাকে যে ভালবাসে তাকে আমার খুব ভাল লাগে

মারুফ মুনজির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈশাখের এলিজি

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭

সেই আগের মতো কারওয়ান বাজার থেকে হাঁটা শুরু করি
আমি হেঁটে হেঁটে অনেক শব্দের ভীড়ে কান পেতে রই
সেদিনের মতো হয়তো বলবে- এই ব্যানারটা মাথায় লাগাও,
এই বাশিঁটা কিনোতো, ওই পাখাটা, ওই টা।
কি হলো জানিনা মূহুর্তে সব কিনে ফেলি
কিন্তু মানুষ আর মানুষ, শুধু তুমি আমার নেই।
আছে শুধু তোমার আমার অযৌন মুহূর্তগুলি

আমি জানি এই কোলাহলের ভীড়ে তুমি নেই,
তবুও সম্মিলিত শোকের তাড়া খেয়ে তোমায় খুঁজি
যদি তুমি এপথ ধরে হেঁটে আসো
যদি তোমায় দেখার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
এখনতো রাতের পর রাত ঠেলে হয় আমার প্রতিটি সকাল
আমি এখনো জানি না
এই শহরের কোথায় খুঁজবো ভালোবাসা।

শাহবাগের চিরচেনা মোড়ে এসে,
বিগত জীবন ভাবনায়
সাদা শাড়ীর নাগরিক মিছিল দেখে মন হয়
এক একটি স্বপ্নাহত মৃত ভালোবাসার কাফন পড়ে ঘুরছে নারীরা।
এরকম বৈশাখের দিনে যে ছবিগুলো তুলেছি
তা মোবাইলে নিয়ে বের হয়েছি।

ঘুরে বেড়াই তোমাকে নিয়ে,
আমার বুকে থাকা তোমাকে নিয়ে।
শাহবাগের ফুলবিতান থেকে গোলাপ কিনে
যেখানে যেখানে স্বপ্নের কথা হয়েছে সেখানে
তোমার স্মরণে রেখে আসি
নিবিড় শোকের রক্তক্ষরণের লাল গোলাপ।
এটুকু করেই আমার চোখে আনন্দে জল এসে যায়।
এ বিশাল জনসমুদ্রে সবার হাসিমুখ
আমার চোখে ক্রমশ বাড়ে বেমানান জল।

রমনা পার্কে হেঁটে হেঁটে সেবারের মতো বাদাম খেতে খেতে
বটমূলে ছায়ানটের মঞ্চের সামনে দাড়াই।
ওরা গাইছে- ‌যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে”
আমার মাথায় ঘুরছে-
আমার হৃদয় আছে তোমার কাছে।

সোহরাওয়ার্দীর মধ্য দিয়ে একাকী হেঁটে
দোয়েল চত্বরে আসলেই, স্মৃতি ফুঁড়ে জেগে ওঠে।
সেবার তোমায় এখানে মাটির কিছু গয়না কিনে দেই।
বলেছিলে- লাল শাড়িতে মাটির গয়না পড়ে ঘুরতে যাবে পদ্মার পাড়ে।
ইলিশের সাথে পা ভিজাবে পদ্মার জলে
সেই গয়না পড়ে আমাদের আর ঘুরতে যাওয়া হয়নি।
কি যে হলো, স্মৃতির জানালা দিয়ে হুড়মুড় করে ঠুকছে বিষাদ।

টিএসসির চায়ের দোকানে আসতেই-
এইতো এইতো এখানেই
তুমি কাধে মাথা রেখে বলেছিলে-
এই ছোট জীবনে আমার সাথে থাকবে?
আমি বলেছিলাম-এই ছোট জীবনে
বড় বড় কিছু মুহূর্ত বানিয়ে নাও,
তাহলে ছোট জীবনের আক্ষেপ থাকবে না।

ঘুরতে ঘুরতে পাবলিক লাইব্রেরির সিড়িতে এসে বসলাম
সেবারও এখানেই দীর্ঘক্ষণ বসে
যৌথ সম্ভাবনায় দুরন্ত স্বপ্ন একেঁছি।
আমাকে লাল পাঞ্জাবিটা তুমিই কিনে দিয়েছিলে।
আমি অদক্ষ, কিছুক্ষণ আগে কেনা বাশিঁতে ফু দিচ্ছিলাম।
আজও কিছু কাপলের বয়ফ্রেন্ড সেটাই করছে
ওরা কি জানে, ওদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ?

বহুদিন দেখা নেই আমাদের,
জলে ডুবে গেছে ধানক্ষেত।
সন্ধ্যার কিনারে ক্রম বেদনায়
বিকেলের নিস্তেজ রোদ।

মানসিক অভিযাত্রার শেষে কোথাও তোমাকে না পেয়ে
আধুনিকতার গুগল আর্থ, স্ট্রিটভিউ আর ম্যাপে
ঘুরে আসি তোমার আশেপাশে।
ঘরের ছাদ দেখে ভাবি এঘরে তুমি ঘুমাও
এইতো তোমার অফিস,
যে অফিসের একটি চেয়ার
আমাদের মাঝে বিভেদের দেয়াল তৈরী করে দিলো।

সন্ধ্যা নামার শেষে
বৈশাখের আর্দ্র রজনীতে
নগরায়নের স্রোতে
ব্যাচেলরদের নীচতলার অন্ধকার একরুমে শুয়ে পড়লাম
আজ আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না
আমাকে এখন ঘুমুতে হবে,
কাল সকাল ৬টা থেকে নিরানন্দ অফিস আছে।

১৫ই এপ্রিল, ২০১৭, রাত ৯.২০

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.