নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অাঁধারে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদারগোষ্ঠী যা অপারেশন সার্চলাইট নামে পরিচিত। এই গণহত্যার ভয়াবহতা বর্ণনা দিতে গিয়ে ২৬ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেদক সাইমন ড্রিং লিখেছিলেন, '২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।' পুরো নয়মাসব্যাপী চলে গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, অগি্নসংযোগ, লুণ্ঠন যা পৃথিবীর হিংস্রতার ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম। একাত্তরে বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তার জন্য পাকিস্তান কি কোনোরকম অনুতপ্ত? ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে কি? ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। মানুষ ভুল করবে আবার ক্ষমা চাইবে। ভুল করা এবং ক্ষমা চাওয়ার মাঝখানে কতগুলো ধাপ রয়েছে। কেউ কোনো একটা ভুল করল এবং ভুল করার পরে সে বুঝতে পারল যে কাজটি ভুল হয়েছে তথা অন্যায় হয়েছে। এই ধাপে সে মানসিক যন্ত্রণায় দগ্ধ হবে। মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সে ক্ষমা চাইবে। সুতরাং মানুষ প্রথমে ভুল করে, তারপর ভুল বুঝতে পারে, তারপর সে ক্ষমা চায়। কিন্তু কেউ যদি ভুল করে তা স্বীকারই না করে অর্থাৎ তিনি যা করেছেন তা ভুল নয়, সঠিক- তবে তো ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। পাকিস্তানিদের কথাবার্তা এবং আচার-আচরণে অন্তত তাই মনে হয় যে তারা একাত্তরে বাঙালিদের সঙ্গে কোনো ভুল করেনি। পাকিস্তানের কোনো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী এখন পর্যন্ত একাত্তরের গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাননি। পাকিস্তানের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের বক্তৃতা-বিবৃতি থেকে বোঝা যায়_ তারা ক্ষমা চাইবে তো দূরের কথা, তাদের অনেকে এখনো বাংলাদেশ সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ সব উক্তি করে চলেছেন। এই তো কিছুদিন আগে পাকিস্তানের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বলে বসলেন, '১৯৭১ সালে যদি পাকিস্তানের হাতে পারমাণবিক বোমা থাকত তবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি সৃষ্টি হতো না!' ২০০৬ সালে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের কবরস্থ মরদেহ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আনা হয়। মতিউর রহমান যখন পাকিস্তানে শায়িত ছিল তখন তার সমাধির এপিটাফে উর্দুতে লেখা ছিল 'এখানে শুয়ে আছে এক গাদ্দার'। যারা বাংলাদেশের একজন বীরশ্রেষ্ঠকে গাদ্দার উপাধি দিতে পারে তারা বাংলাদেশের নিকট চাইবে ক্ষমা! ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান বাংলাদেশকে যে স্বীকৃতি প্রদান করেছে-এই ঢের বেশি। ১৯৭৪ সালে জুনের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় সরকারি সফরে আসেন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো। সে সময় তার সম্মানে প্রদত্ত এক নাগরিক সংবর্ধনায় ভুট্টো বলেছিলেন, একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য আমি শোক প্রকাশ করছি। অন্য আরেকজন পাকিস্তানি সরকার প্রধান একাত্তরের গণহত্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি হলেন_ সাবেক সামরিক একনায়ক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। ২০০২ সালের জুলাই মাসে সরকারি সফরে ঢাকায় এসে মোশাররফ সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের মন্তব্য খাতায় লিখেছিলেন, 'আপনাদের পাকিস্তানি ভাই ও বোনেরা একাত্তরের ঘটনাবলির জন্য আপনাদের বেদনার সাথে একাত্মতা বোধ করে। সেই দুর্ভাগ্যজনক সময়ে যে মাত্রাতিরিক্ত ঘটনা ঘটে তা দুঃখজনক।' এর আগে নওয়াজ শরীফও বাংলাদেশ সফরে এসে প্রায় একই কথা বলেছেন। ২০১১ সালের মার্চে ঢাকায় যখন বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলছিল তখন পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইমরান খান ঢাকায় ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'একাত্তর সালে সামরিক অভিযানের জন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।' ২০১২ সালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ঢাকায় এসেছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি যখন একাত্তরের ঘটনার জন্য পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি তুললেন, তখন তিনি তা কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বললেন, 'অতীত ভুলে গিয়ে আমাদের উচিত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।' লক্ষ্য করুন, জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ১৯৭১ সালের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন আর জুলফিকার আলী ভুট্টো করলেন শোক প্রকাশ। উভয়ের কেউই ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করলেন না। হিনা রাব্বানি খার তাদের চেয়েও এক কাঠি এগিয়ে। তিনি দুঃখ প্রকাশ বা শোক প্রকাশ তো দূরের কথা, অতীতকেই ভুলে যেতে বললেন। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের শিখ ধর্মাবলম্বীদের পুণ্য শহর অমৃতশহরের জালিয়ানওয়ালাবাগ। এর পাশেই শিখ তীর্থভূমি স্বর্ণমন্দির। গত শতকের গোড়ার দিকে এই জালিয়ানওয়ালাবাগে বৃটিশরা চালায় ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক হত্যাকা- যা জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা- নামে পরিচিত। এ ঘটনার দীর্ঘ ৯৪ বছর পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ হত্যাকা-স্থলে এসে এই প্রথম ক্ষমতায় থাকা একজন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেই প্রধানমন্ত্রীর নাম ডেভিড ক্যামেরন। তিনি বলেছেন,'নিরস্ত্র বেসামরিক লোকজনের ওপর বৃটিশ সেনাবাহিনী যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, সেই ঘটনা ছিল চরম লজ্জাজনক।' পরিদর্শন বইতে তিনি লিখেছেন, 'ইতিহাসের ওই লজ্জাজনক ঘটনা যুক্তরাজ্যের কখনো ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।' এর আগে ১৯২০ সালে এই ঘটনাকে 'নিষ্ঠুর' বলে মন্তব্য করেছিলেন সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। আর ১৯৯৭ সালে ভারত সফরকালে বৃটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক দিয়ে বলেছিলেন, 'ইতিহাসের দুঃখজনক মুহূর্তগুলোর বেদনাদায়ক উদাহরণ এটি।' ৯৪ বছর আগের ঘটনার জন্য বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী লজ্জা পেলেও মাত্র ৪২ বছর আগের নৃশংসতার জন্য লজ্জিত নন পাকিস্তানি শাসকরা। ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনা কখনো ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। আর পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার একাত্তরের নৃশংসতা আমাদের ভুলে যেতে বলছেন। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা-ে নিহত হয়েছিল প্রায় এক হাজার মানুষ আর পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদররা বাংলাদেশে হত্যা করে ৩০ লাখ মানুষ ও তাদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছে প্রায় তিন লাখ নারী। ৯৪ বছর আগের মাত্র এক হাজার মানুষের হত্যাকান্ডের ঘটনা যদি ভারতীয়রা ভুলতে না পারেন তাহলে আমরা বাঙালিরা এই তো সেদিনের ৩০ লাখ মানুষের গণহত্যা ভুলব কেমন করে? পাকিস্তানের বিশিষ্ট সাংবাদিক হামিদ মীর ১৯৭১ সালে ছিলেন এক কিশোর এবং তার বাবা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাবার কাছে তিনি শুনেছেন ১৯৭১ সালে পূর্বপাকিস্তানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার কথা। তাই তিনি বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন বহু আগেই। তাছাড়া পাকিস্তানের বেশকিছুসংখ্যক মানবাধিকারকর্মী পাকিস্তানের বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী এবং এজন্য তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। দেখা যাক কী হয়?
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২
সীমানা ছাড়িয়ে বলেছেন: পাকিচোদারা ক্ষমা চাইলে দুনিয়া উলটায় যাবে।
৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৫
রশিক রশীদ বলেছেন: ভাই একটা সমস্যায় আছি।
আমার প্রোফাইলে দেখাচ্ছে আমি সেইফ ব্লগার আমার পোষ্ট সরাসরি প্রথম পাতায় যাবে কিন্তু যাচ্ছে না । ঘটনা টা কি ?
আমার একাউন্টকি কউ হ্যাগ করেছে ? না কি?
আমার সর্বশেষ পোষ্টিটি দেখুন।
কারো কিছু জানা থাকলে উকপার করেন।
৪| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬
রাতুল রেজা বলেছেন: পাকিস্তানিরা ক্ষমা চাইবে কিনা তার চেয়েউ বড় কথা হল আমরা পাকিদের ক্ষমা করবো কিনা। তাই ওরা ক্ষমা চাইলো কি চাইলো না এটা নিয়ে চিৎকার করার কিছু নেই।
৫| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:১৯
পলাতক আসামী বলেছেন: ওরা ক্ষমা চাইল কি চাইল না।এগুলি গনার টাইম নাই।ওরা যে অভিশাপে আসে তাতেই আমি খুশি।
৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯
রবিউল ৮১ বলেছেন: পৃথিবীর হিংস্রতার ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠতম গণহত্যাকারী পাকিস্তানীরা নিজেদের এমন আচরণের কারণে একদিন এমনিতেই নিপাত হয়ে যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬
লেখোয়াড় বলেছেন:
ক্ষমা চাইবে ওই নির্লজ্জ পাকিস্তান!?
ওদের মতো নিচু আর কি কেউ আছে?