নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাইকোর 'পলায়ন' সম্ভব হলো না : মোশাররফের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে কানাডিয়ান পুলিশ

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬



বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সালিসি আদালত নাইকোর প্রতিকূলে অন্তর্বর্তীকালীন (প্রভিশনাল অর্ডার) আদেশ দিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট (ইকসিড) গত রবিবার এ আদেশ দেন। আগামী ডিসেম্বরে পূর্ণাঙ্গ রায় দেওয়া হবে। গতকাল সোমবার অন্তর্বর্তী আদেশের কপি হাতে পায় পেট্রোবাংলা। ইকসিডে দায়ের করা মামলায় টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের ঘটনার ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ দাবি ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহের জন্য নাইকোর পাওনার বিষয়ে স্থানীয় আদালতে বাংলাদেশ সরকার যে মামলাগুলো করেছিল, সে বিষয়ে নাইকোর আপত্তি আপাতত স্থগিত হলো। ফলে ডিসেম্বরের আগে কানাডীয় এ কম্পানি তাদের বাংলাদেশস্থ কোনো সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবে না। পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর গতকাল কালের কণ্ঠকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

অধ্যাপক হোসেন মনসুর বলেন, ক্ষতিপূরণের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নাইকো তাদের কোনো সম্পত্তি এ দেশ থেকে বিক্রি করতে পারবে না। একই সঙ্গে তাদের ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহ বাবদ সরকারের কাছে পাওনার বিষয়েও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, ছাতক গ্যাসক্ষেত্রের টেংরাটিলায় দুর্ঘটনার কারণে কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর পাওনা পরিশোধ স্থগিত ও তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য দেশের আদালতে মামলা দায়ের করে পেট্রোবাংলা। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ইকসিডে যায় নাইকো। ২০১০ সালের জুলাইয়ে ইকসিডে মোট দুটি মামলা করে তারা। একটি গ্যাসের বকেয়া বিল আদায়সংক্রান্ত, অন্যটি টেংরাটিলায় বিস্ফোরণের ক্ষতিপূরণ প্রদানসংক্রান্ত।

সূত্র আরো জানায়, পরে কুয়েতি একটি কম্পানির কাছে নাইকো তাদের সব স্বত্ব (বাংলাদেশে) বিক্রি করে চলে যেতে চাচ্ছে- এ কথা জানতে পেরে পেট্রোবাংলা নাইকোর সম্পত্তি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে। ইকসিডে এ প্রসঙ্গও উত্থাপন করে নাইকো।

একটি মামলায় নাইকো দাবি করে, তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে ২৭ দশমিক ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে গ্যাস বিল বাবদ। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বিল পরিশোধ করছে না। অতএব বিল পরিশোধের আদেশ দেওয়া হোক, অথবা সমপরিমাণ অর্থের ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে বাংলাদেশ সরকারকে আদেশ দেওয়া হোক।

অন্য মামলায় বাংলাদেশে অবস্থিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির অনুমতি চায় নাইকো। প্রথম মামলার বিষয়ে ডিসেম্বরে পূর্ণাঙ্গ রায় দেওয়া হবে। আর পূর্ণাঙ্গ রায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবে না বলে জানান পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন পর পর দুই দফা সুনামগঞ্জের ছাতক গ্যাসক্ষেত্রের টেংরাটিলায় অগ্নিকাণ্ডে টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরিশনগর, খৈয়াজুড়ি ও শান্তিপুরের ২০-২৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬১৬টি পরিবার। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির হিসাব অনুযায়ী বিস্ফোরণে তিন বিসিএফ (বিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস নষ্ট হয়। এতে আর্থিক ক্ষতি হয় ৭৪৬ কোটি টাকা। আর পরিবেশের ক্ষতির পরিমাণ ৮৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। তবে নাগরিক সংগঠন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির হিসাব অনুযায়ী অন্তত ২৬৫ বিসিএফ গ্যাস নষ্ট হয়।

২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশন (বেলা) উচ্চ আদালতে নাইকোর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ এবং দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিপূরণ দাবিতে নাইকোর বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। আদালত সরকারকে নির্দেশ দেন, ক্ষতিপূরণ আদায় না করা পর্যন্ত নাইকোর ফেনী গ্যাসক্ষেত্রের গ্যাসের বিল বাবদ অর্থ যেন পেট্রোবাংলা না দেয়। আদালতের আদেশে নাইকোকে বিল পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকে পেট্রোবাংলা। এই সূত্রেই ২০১০ সালের জুলাইয়ে ইকসিডে দুটি মামলা করে নাইকো। সূত্র



কানাডিয়ান কম্পানি নাইকো রিসোর্সের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে চান রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তা। একই সঙ্গে কানাডিয়ান পুলিশ নাইকোর সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফের বিরুদ্ধেও সাক্ষ্য দিতে চায়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিতে চান তাঁরা হলেন- লয়েড স্কপ এবং গ্রোগারি প্রাউস। কানাডার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের মাধ্যমে করা তাঁদের আবেদনটি এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে এসেছে। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে কমিশনে এই আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের দুজনের সাক্ষ্য নেওয়ার বিষয়ে দুদকের কোনো আপত্তি নেই বলেও দুদক সূত্রে জানা গেছে।

দুদক সূত্র জানায়, নাইকো দুর্নীতির ঘটনায় শেখ হাসিনার মামলাটি নিষ্পত্তি এবং খালেদা জিয়ার মামলা উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ থাকলেও মোশাররফের মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৯-এ বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। কানাডার কম্পানি নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের কাছ থেকে বিলাসবহুল টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি ও ভ্রমণ বাবদ পাঁচ লাখ ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। একই মামলায় আসামি করা হয়েছে নাইকোর ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফকে। ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে আসামি করা হয়েছে। এ দুজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের আগস্টে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়।

দুদকের মামলার তদন্তে বলা হয়, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ফেনী গ্যাস ক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত গ্যাসের ক্রয়চুক্তি (জিপিএসএ) সম্পাদনের প্রাক্কালে নাইকোকে সুবিধা প্রদানের অসৎ উদ্দেশ্যে নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফের কাছ থেকে ৯৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি ল্যান্ড ক্রুজার জিপ ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন। ওই সময় নাইকো গ্যাসের মূল্য প্রতি হাজার ঘনফুট (এমসিএফ) ২.১৫ থেকে ২.৩৫ ডলার পর্যন্ত দাবি করে আসছিল। তখন এ-সংক্রান্ত ক্রয় কমিটি একাধিকবার মিটিং করে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করলেও মন্ত্রীর পদত্যাগের পর গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ হয় ১.৭৫ ডলার।

কিন্তু ওই সময়ে প্রতিমন্ত্রীর গাড়ি ঘুষ কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মোশাররফ হোসেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগ করেন। পরে রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) ও বাংলাদেশের পেট্রোবাংলা পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দুটি তদন্ত কমিটি প্রতিমন্ত্রীর ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে।

উল্লেখ্য, নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেড ছাতক গ্যাস ক্ষেত্রে (টেংরাটিলা) ২০০৫ সালে পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার নাইকোর কাছে ৭৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করলেও তা পূরণ করেনি বহুজাতিক কম্পানিটি। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। সূত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.