নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সভা-সমাবেশ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আন্দোলনের এ ঘোষণা দিয়েছেন। সর্বশেষ ৭ জুলাই রাজনীতিক ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির ইফতার মাহফিলে তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারকে উৎখাতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। এজন্য ঈদের পর কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে উৎখাত করতে হবে (ইত্তেফাক, ৮ জুলাই ২০১৪)। এর আগে ২২ জুন জয়পুরহাটে এক জনসভায় তিনি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসে সমঝোতায় পৌঁছতে সরকারকে আহ্বান জানান এবং একই সঙ্গে ঈদের পর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তারও আগে ১৭ জুন তার গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি সমর্থিত ঢাকা বিভাগের উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতাকালে খালেদা জিয়া বলেন, সবাই আন্দোলনের কথা বলছে। জনগণ এখন জানতে চায়, এ অবৈধ সরকার কখন বিদায় নেবে? বিদেশীরাও দ্রুত নির্বাচন চায়। তাই এ সরকারকে হটাতে ঈদের পর নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে। এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সর্বশেষ ৫ জুলাই দলটির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপিতে একই সঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন প্রস্তুতি ও দল গোছানোর কাজ চলছে। ঈদের পর আন্দোলন কর্মসূচি জোরদার করতেই দল গোছানোর কাজ করা হচ্ছে (যুগান্তর, ৬ জুলাই)।
বিএনপিকে আন্দোলনে যেতে হচ্ছে কেন?
এক. আপিল বিভাগের বিভক্ত রায়ের আলোকে ২০১১ সালের জুনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের মধ্য দিয়ে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও অন্য দুটি বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর দাবি ও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি সরকার সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল। এ ব্যবস্থা বাতিলের পরও হয়তো বিএনপি তখন আন্দোলনে যেত না, যদি আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত রায়ের পর্যবেক্ষণ অনুসরণে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দশম সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিত। কিন্তু দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত রায়ে হ্যাঁ-সূচক পর্যবেক্ষণ থাকা সত্ত্বেও সে পথে না হেঁটে দলীয় সরকারের অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
দুই. জাতীয় সংসদে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট বর্জিত দশম সংসদ নির্বাচন যে অংশগ্রহণমূলক হয়নি এবং এতে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিফলন ঘটেনি, সেটা স্বীকার করেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ জানুয়ারি নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে আলোচনার মাধ্যমে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি সমাধানের ওপর জোর দেন এবং সে জন্য বিএনপিকে ধৈর্য ধারণ করতে, সহনশীল হতে এবং সব ধরনের সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, নির্বাচনের প্রাক্কালে আমি গণতন্ত্র ও জাতির শান্তি এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিরোধী দলকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা পরিহার করে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছি। আমি বিরোধী দলের সম্মানিত নেত্রীসহ সবাইকে আবারও আহ্বান জানাই, সন্ত্রাস ও সহিংসতা পরিহার করে যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদী জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় বসুন। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করেই সমাধান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আলোচনার স্বার্থে এ পর্যন্ত কঠোর কর্মসূচি পালনে বিরত আছেন এবং একাধিকবার সংলাপ শুরু ও সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি সমাধান করা হবে- প্রধানমন্ত্রী তার এ প্রতিশ্র“তি থেকে সরে আসার কথা সরাসরি না বললেও তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে এ ধরনের কিছুটা আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। ৩ জুলাই দশম জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সমাপনী ভাষণে তিনি বলেছেন, দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে আর নয়। সংবিধান অনুযায়ীই দেশ চলবে। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি যা বলতে চেয়েছেন তা হল, সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছর পর ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা বলে বেড়াচ্ছেন, তারা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করেছেন। সুতরাং তারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন। ২০১৯ সালের আগে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা বা সংসদ নির্বাচন নয়।
তিন. দশম সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় এবং জনগণের আকাক্সক্ষার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিফলন না ঘটায় হতাশা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার কথা বললেও একই সঙ্গে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে জরুরিভিত্তিতে অর্থবহ আলোচনা শুরুর তাগিদ দিয়েছে সরকারকে। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংসদের বাইরের বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসতে সরকারকে সর্বশেষ তাগিদ প্রদান করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। ১৯ জুন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বান কি মুন এ তাগিদ দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্র“তি এবং আন্তর্জাতিক মহলের পরামর্শ সত্ত্বেও আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের অনীহা বিএনপিকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিএনপির আন্দোলন সফল হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
প্রথমত, ঈদের পর জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন তীব্রতর করা হবে- বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্যের ওপর যুগান্তর পরিচালিত এক অনলাইন জরিপে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৪.৫৭ শতাংশ মনে করেন, এটি সম্ভব নয়। এটা ঠিক ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত দেশের অধিকাংশ মানুষ এখনও সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ। তবে একই সঙ্গে এটাও ঠিক, দেশের মানুষ এ মুহূর্ত আন্দোলন চান না। তারা চান রাজনৈতিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান। গত বছরের আন্দোলনে তারা সহিংসতা ও জানমালের যে ক্ষতিসাধন দেখেছেন, তাতে তারা আন্দোলনে যাওয়ার আগ্রহ অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন। তাছাড়া ১৯৯১-২০১৩ সময়কালে পালাক্রমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও সংঘাত তারা দেখেছেন। তারা দেখেছেন ক্ষমতার লোভে এ দুটি দল কীভাবে জাতীয় সংসদকে অকার্যকর করেছে। তারা দেখেছেন এ দুটি দলের শাসনামলে দেশ কীভাবে ধারাবাহিকভাবে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সাধারণ মানুষ তাই এ দুটি দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। তারা একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থান চান।
দ্বিতীয়ত, আন্দোলনের জন্য বিএনপিকে মূলত তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ওপর নির্ভর করতে হবে। গত বছর বিএনপির আন্দোলনে যতটুকু গতি এসেছিল তা মূলত এদের কারণে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের গা বাঁচিয়ে চলার মনোভাবের কারণে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে পারেনি। সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা ভালো করলেও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ তাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বর্তমানে তারা অনেকটা ক্লান্ত। তাছাড়া বিএনপির সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা এ মুহূর্তে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে খুব একটা আগ্রহী হবেন বলে মনে হয় না। তারা সরকারকে আরও কিছুটা সময় দিতে চাইবেন।
তৃতীয়ত, বিএনপির আন্দোলনে যাওয়ার হুমকিকে আমলে নিতে নারাজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এগুলো বিএনপির ফাঁকা আওয়াজ। এ মুহূর্তে আন্দোলনে যাওয়ার মতো শক্তি বিএনপির নেই। এটা শুধু আওয়ামী লীগ নেতাদের সন্দেহ নয়, এমন সন্দেহ অনেক বিএনপি নেতার মধ্যেও রয়েছে। তাদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আন্দোলনের সফলতা নিয়ে। তারা বলছেন, ব্যর্থ আন্দোলনের মুখে গত পাঁচ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিএনপি নেত্রী সর্বস্তরে দলের পুনর্গঠনের কথা বলেছিলেন। তা করা হয়নি। যেসব নেতার কারণে পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে, তাদের নেতৃত্বে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলন কীভাবে সফল করা যাবে? বিশেষ করে সর্বস্তরে দল পুনর্গঠনের আশ্বাসে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছিল, পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় তা হতাশায় পরিণত হয়েছে।
তাই জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনে যেতে হলে বিএনপিকে প্রথমে সর্বস্তরের মানুষের কাছে যেতে হবে, তাদের আন্দোলনে যাওয়ার যৌক্তিকতা বোঝাতে হবে। দ্বিতীয়ত, আন্দোলনমুখী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের নিয়ে সর্বস্তরে দল পুনর্গঠন করতে হবে। তৃতীয়ত, বিএনপিকে কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। কয়েকটি শক্তিশালী দেশ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রথম দিকে প্রশ্ন তুললেও পরে তারা তাদের সে অবস্থান থেকে সরে আসে। সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে আন্তর্জাতিক মহল নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেছে। তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে নমনীয় হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিএনপিকে চিন্তা করতে হবে। কারণ এ ব্যবস্থার পুনর্বহাল সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে বিএনপি তার একাদশ সংসদ নির্বাচনের মেনিফেস্টোতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে জনগণের সমর্থন চাইতে পারে। সুত্র
২| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:০৮
াহো বলেছেন:
জয় বাংলা
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:০০
রানার ব্লগ বলেছেন: বি এন পি এর পদ লেহন টাইপ রাজনীতি জতদিন চলবে , ততদিন এই রকম পরিস্থিতি চলতে থাকবে। দেশ ভর্তি আনদলন জমানোর হাজার লক্ষ ইস্যু, অথচ বি এন পি অপেক্ষায় আছে কেউ তারে এসে খমতায় বসাবে, তারেক গাধা ( আগামি প্রধান্মন্ত্রি) বিদেশ বইসা ছাগলামী করতেছে, দেশের নেতারা পাছা বাচানর জন্য আবলতাবল বকতেছে, বেগম জিয়া উন্মাদের মত আচারন করতেছে। তো আর কি।