নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশু ও মুসলিম হত্যা উত্সব : ইসলাম ও মানবতার রক্ষকরা কোথায়?

০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৪০





"প্রতিটি ফিলিস্তিনি মাকে হত্যা করো! যেসব ফিলিস্তিনি মা 'ক্ষুদে সর্প ছানার' জন্ম দিচ্ছে তাদেরকে হত্যা করো। ফিলিস্তিনিদের মারতে হবে এবং তাদের ঘরবাড়ি চুরমার করে দিতে হবে। তাহলেই তারা আর কোনো সন্ত্রাসী পুষতে পারবে না।" উস্কানিমূলক মন্তব্যটি একজন ইসরাইলী সংসদ সদস্যের। ফিলিস্তিনের মাটিতে গত দু'সপ্তাহব্যাপী চলা ইসরাইলী আগ্রাসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থায় এই মন্তব্যটি করেছিলেন তিনি। এর পরের ঘটনাপ্রবাহ আমাদের অজানা নয়। উক্ত সাংসদের মুখনিঃসৃত প্রতিটি কথার বাস্তবায়ন কীভাবে ঘটানো হয়েছে তা গণমাধ্যমের পাতায় আমরা প্রতিনিয়তই দেখে আসছি। আর এ থেকে এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, এমন মনোভাব ঐ সাংসদের ব্যক্তিগত মনোভাব নয়, এটা যেন ইসরাইলীদের জাতীয় মনোভাব। বস্তুত তারা ফিলিস্তিনি শিশুদেরকে ক্ষুদে সর্পই মনে করে। আর তাই সে সর্প ছোট থাকতেই খতম করে তাদের (ইসরাইলীদের) নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকে।

ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরা্্্ইলের সর্বশেষ হামলার সূত্রপাত ইসরাইলী তিন কিশোরকে সমপ্রতি অপহরণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। হামাসই ওই ঘটনা ঘটায় বলে মনে করে ইসরাইল। তবে হামাস তা অস্বীকার করে। পরে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে একইভাবে হত্যা ও অপহরণের পর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। এরপর গাজা থেকে রকেট ছোঁড়া হচ্ছে এমন দাবি তুলে 'অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ' শুরু করে ইসরাইল। কিন্তু এটা সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায় যে, শুধুমাত্র এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এতবড় আক্রমণ এবং এত প্রাণক্ষয় ঘটানোর কোনো কারণ নেই। অর্থাত্ ঘটনার সূত্রপাত এটা নয়, এটা একটি ছুঁতো মাত্র। আসল কারণ পূর্বে উল্লেখ করে এসেছি। কথিত ক্ষুদে সর্প ও তাদের জন্মদাতাকে হত্যা করাই ইসরাইলের উদ্দেশ্য। এ পর্যন্ত দেখা গেছে যে, ইসরাইলী বাহিনীর আক্রমণ সাধারণ ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে। নিখুঁতভাবে ফিলিস্তিনি বসতবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতে হামলা করা হচ্ছে। আর তাদের বর্বর হত্যাযজ্ঞের শিকার বেশি হচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুরা। যতবারই ইসরাইল ফিলিস্তিনে আক্রমণ করেছে ততবারই তাদের অন্যতম একটি লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ফিলিস্তিনি এই শিশুরা।

পরিসংখ্যান বলে, ১৯৪৮ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনী নাগরিক ইহুদিদের হাতে নিহত হয়েছে। আর এ সংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশই হলো নারী ও শিশু। ইহুদি জাতি সবচেয়ে বেশি চিন্তায় থাকে ফিলিস্তিনিদের জন্মহার নিয়ে। যখনই তারা লক্ষ্য করে যে ফিলিস্তিনিদের জন্মহার বৃদ্ধি পেয়েছে, তাদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে তখনই তারা ফিলিস্তিনি নিধনের উদ্যোগ ও কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়। ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলী হামলায় গত ১৩ বছরে ১ হাজার ৫১৮ শিশু নিহত হয়েছে। (এ হিসাব ইসরাইলী চলতি আগ্রাসনের পূর্ব পর্যন্ত) এ হিসেব অনুযায়ী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এই সময়ের মধ্যে গড়ে প্রতি তিনদিনে একজন করে ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এবার টানা ২৯ দিনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে ১ হাজার ৮৬৭ জন ফিলিস্তিন নাগরিক নিহত হয়েছে। তন্মধ্যে কেবল শিশুই রয়েছে কয়েকশ'।

ইসরাইল নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অবৈধতার ওপর ভিত্তি করে। ফিলিস্তিনিদের তাদের ভিটেমাটি থেকে উত্খাত করে সেখানে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত ছিল জাতিসংঘ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জয়ী পশ্চিমা শক্তির একটি সুস্পষ্ট অপরাধ। মধ্যপ্রাচ্যের অসামপ্রদায়িক চেতনাকে কলুষিত করে তোলে ফিলিস্তিনে জায়নবাদীদের আগমন এবং জেঁকে বসার ঘটনা। তারপর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে বিষফোঁড়ার মতো অবৈধভাবে আবির্ভূত ইসরাইল নামের রাষ্ট্রটি একদিকে যেমন ফিলিস্তিনিদের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও সৃষ্টি করছে নিরাপত্তাহীনতা। পশ্চিমা দেশগুলো শিশু অধিকারের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকারবদ্ধ বলে দাবি করলেও ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে নীরব। মানবতার ফেরি করে বেড়ানো এই মোড়লদের আচরণ বার বার প্রমাণ করছে- ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের মনোভাব ইসরাইলের সাথে অভিন্ন। ইসরাইলের স্বার্থই তাদের স্বার্থ। এই স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কে মরলো আর কে বাঁচলো তা তাদের কাছে অতীতেও বিবেচ্য ছিল না, এখনও নেই।

বর্তমানে প্রচলিত ও কথিত সভ্য দুনিয়ায় পশ্চিমাদের সংস্কৃতি, সভ্যতা, ধ্যান-ধারণা অর্থাত্ মনোভাবকেই শ্রেষ্ঠ জ্ঞান করা হয়। আর তাদেরই অতি আদরের দুলাল হলো ইসরাইল। তাদের পরোক্ষ সমর্থন আছে ইসরাইলের আগ্রাসী মনোভাবের পেছনে। এখন প্রশ্ন হলো সে হিসেবে কি ফিলিস্তিনি শিশুদের ব্যাপারে ইসরাইলের জাতীয় মনোভাবকেও সভ্য আখ্যা দিতে হবে? প্রশ্নটি সকলের জন্য নয়, শুধু তাদের জন্য যারা জীবনের সকল অঙ্গনে পাশ্চাত্যকেই শ্রেষ্ঠ জ্ঞান করে থাকে এবং সর্বদাই হীনমন্যতায় ভুগে থাকে।

সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩

ইউরো-বাংলা বলেছেন: অনলাইনে ইসরাইলের এক পত্রিকার কার্টুন দেখেছিলাম। কতগুলো সর্পছানা তাদেরকে ইসরাইল সৈন্যরা গুলি করে হত্যা করছে। ঐখানে সর্পছানা হিসাবে ফিলিস্থিনিদের বুঝিয়েছে।

উল্লেখ্য ইসরাইল মাঝে মধ্যে ফিলিস্থিনি হত্যাযক্ষ করে যেসব তান্ডব লীলা চালায় তা আমেরিকা তথা পরাশক্তিদের সমর্থন নিয়েই করে, বিশেষ করে সৌদি আরবের সমর্থন থাকে এক নম্বরে।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৭

জেরিফ বলেছেন: :( :( :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.