নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমুদ্র জয়, শেখ হাসিনার সাফল্য ও বিএনপির প্রতিক্রিয়া

১১ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:২৯



বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো সমুদ্র জয় করেছে। গত ৭ জুলাই ২০১৪ নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সমুদ্র বিরোধ সংক্রান্ত সালিশী আদালত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমার রায় প্রদান করে। এ রায়ে বিরোধপূর্ণ ২৫,৬০২ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে আন্তর্জাতিক আদালত ১৯,৪৬৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশকে এবং ৬,১৩৫ বর্গকিলোমিটার ভারতকে প্রদান করে। অঙ্কের হিসেবে বিরোধপূর্ণ এলাকার প্রায় ৭৬ শতাংশই পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭৪ সালে ভেনিজুয়েলার কারাকাসে, ১৯৭৫ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এবং ১৯৮২ সালের ৬ ডিসেম্বর জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন সম্মেলনে কোন্ দেশ সমুদ্র এলাকায় কতদূর অধিকার পাবে তা নির্ধারিত হয়েছিল। সে অনুযায়ী যে কোন দেশ তার মূল ভূখ-ের শেষ বিন্দু থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত টেরিটোরিয়াল জোন এবং পরবর্তী ২০০ নটিক্যাল মাইল ইকোনমিক জোন (অর্থনৈতিক এলাকা) এবং এর বাইরে কন্টিনেন্টাল এরিয়ায় (মহীসোপান) সামুদ্রিক অধিকার লাভ করবে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয়, পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ যদি তার তটরেখা থেকে একই আইনে সমুদ্রসীমা দাবি করে তবে বহু ক্ষেত্রেই বিরোধ দেখা দেয়া অস্বাভাবিক নয়। এ সকল বিরোধ আইন এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে মীমাংসার জন্য জাতিসংঘের এই সালিশী আদালতের প্রতিষ্ঠা।

বাংলাদেশের সঙ্গে সমুদ্রের অধিকার নিয়ে দু’প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় স্বাধীনতার পর থেকে। ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে সময় তাঁর সরকার ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস এ্যান্ড মেরিটাইম জোন এ্যাক্ট’ আইন পাস করে। এ আইন অনুযায়ী তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর সরকার বঙ্গোপসাগরের ১২ নটিকেল মাইল পর্যন্ত বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল জোন এবং ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে যে সরকারগুলো ক্ষমতায় আসে তাঁরা এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যার ফলে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ দেখা দেয়। এ পটভূমিতে বেশ কয়েকটি আলাপ-আলোচনা বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর শেখ হাসিনার সরকার আন্তর্জাতিক সালিশী আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মোতাবেক ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ‘সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল (ইটলস)’-এ মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ। একই বছর সমুদ্রে ন্যায্য অধিকার দাবি করে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধেও সালিশী মামলা দায়ের করা হয়।

এ কথা সকলের জানা যে, ২০১২ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার সামুদ্রিক বিরোধের মামলার রায় প্রদান করে। রায় অনুযায়ী বিরোধপূর্ণ ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত হয়। সব মিলিয়ে টেরিটোরিয়াল সমুদ্রসীমায় ১,১১,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পায় বাংলাদেশ। ভারতের বিরুদ্ধে দায়ের করা সালিশী মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৯ থেকে ১৮ ডিসেম্বর হেগের স্থায়ী সালিশী আদালতে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপিত হয়। শুনানিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (ম্যারিটাইম এ্যাফেয়ার্স ইউনিট) ও সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ রিয়ার এডমিরাল (অব) মোঃ খোরশেদ আলম। আদালতে বাংলাদেশ কৌঁশলি হিসেবে নিয়োগ করে এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের পল রাইখলার ও লরেন্স মার্টিন, যুক্তরাজ্যের জেম্স ক্রাফোর্ড, ফিলিপ স্যান্ডস ও অপলান রয়েল এবং ক্যানাডার পায়াম আখাভানকে।

সালিশী আদালতে ভারত সম দূরত্বের ভিত্তিতে বিরোধ মীমাংসার দাবি জানায়। তাদের বক্তব্য ছিল সমুদ্রের অধিকার নির্ধারণ করতে হবে সমুদ্রতট থেকে ১৬২ ডিগ্রী সীমারেখা অনুযায়ী। কিন্তু বাংলাদেশ বলেছে সমুদ্রের অধিকার দিতে হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে অর্থাৎ সীমারেখা হবে ভূমির মূল বিন্দু থেকে সমুদ্রের দিকে ১৮০ ডিগ্রী। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালত ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির জন্য রেডক্লিফের সীমানা নির্ধারণের যে মানচিত্র তাকে ভিত্তি করে অগ্রসর হয়। আদালতের রায়ে সমুদ্রের সীমারেখা টানা হয়েছে ১৭৭.৩ ডিগ্রীর অবস্থানে। এতে মূলত বাংলাদেশের দাবির ন্যায্যতাই প্রমাণিত হয়েছে। এ রায়ের ফলে বাংলাদেশ বিরোধপূর্ণ সমুদ্র এলাকার ৭৬% অর্থাৎ ১৯,৪৭৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করল। ভারতের সঙ্গে এ রায়ের ফলে সামগ্রিকভাবে ১,১৮,১১৩ বর্গকিলোমিটারের টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপান এলাকার পূর্ণ অধিকার ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো। এর ফলে বাংলাদেশ অত্র এলাকার সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত সকল প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের মালিকানা লাভ করে।

ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশের দাবি ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এক নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ এবং তলদেশের নানা জাতীয় উদ্ভিদ ও তন্তু জাতীয় জীববৈচিত্র্যের বিশাল ভা-ারের চাবি এখন বাংলাদেশের হাতে। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রের তেল-গ্যাস ও অন্যান্য খনিজ জাতীয় পদার্থের অনুসন্ধান, আহরণ ও উত্তোলনের অধিকার পেল বাংলাদেশ। ইতোপূর্বে পেট্রোবাংলা তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশের দাবিকৃত সমুদ্র অঞ্চলকে ২৮টি ব্লকে বিভক্ত করে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছিল। এর মধ্যে ১৭টি ব্লক নিয়ে মিয়ানমার এবং ১০টি ব্লক নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এই বিরোধের ফলে সমুদ্র এলাকায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নৌশক্তির মহড়াও প্রদর্শিত হয়। ২০১২ সালে হামবুর্গের আন্তর্জাতিক আদালতে দাবিকৃত ১৭টি ব্লকের মধ্যে ১২টি পায় বাংলাদেশ। হেগের সালিশী রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ১০টি ব্লকের সব অধিকার পেয়েছে। শুধু ৯, ১৪ এবং ২৪নং ব্লকের সামান্য অংশ ভারতের ভাগে পড়ে। একটি ব্লক পূর্ব থেকেই বাংলাদেশের অধিকারে ছিল। এখন বাংলাদেশ বিনা বাধায় এই সমস্ত ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করতে পারবে। ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর গণমাধ্যমে বলেছেন যে, সকল বাধা অপসারিত হওয়ায় বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল টার্মস এ্যান্ড কন্ডিশন প্রণয়ন করে সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দরপত্র শীঘ্রই আহ্বান করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতানুযায়ী মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে দুটি মামলায় সমুদ্র বিজয় অর্জন করে মৎস্য, খনিজ সম্পদ এবং তেল-গ্যাস আহরণ ও উত্তোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ অচিরেই অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রের কাতারে পৌঁছতে পারবে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে দুটি মামলায় বাংলাদেশের সমুদ্র জয়ের মূল কারিগর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যদি সাহসী হয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বৃহৎ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের না করতেন তা হলে কখনও এ বিজয় অর্জিত হতো না। তিনি শুধু মামলা দায়ের করেই ক্ষান্ত হননি-রায়ের ফলাফল যাতে বাংলাদেশের অনুকূলে আসে তার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কারিগরি ও প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত, সমুদ্র আইন সম্পর্কে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে তিনি এমন সব মানচিত্র, তথ্য এবং যুক্তি উপস্থাপন করেন যার সঠিক জবাব দেয়া সম্ভব ছিল না মিয়ানমার এবং ভারতের। এ ছাড়াও শেখ হাসিনা সমুদ্র আইন সম্পর্কে অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিদের বাংলাদেশের পক্ষে কৌঁসুলি নিয়োগ করেন। তাঁর দেশপ্রেম, সাহস এবং রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা বাংলাদেশকে এ বিরাট বিজয় এনে দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সাফল্যের মুকুটে আরও একটি সোনালি পালক যুক্ত হলো। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মামলার বাদী ডা: দীপু মনি এবং সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ রিয়াল এ্যাডমিরাল (অব) খোরশেদ আলমের ভূমিকাও ছিল বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।

এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে দু’দেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে দু’দেশের সরকারের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে। যেহেতু এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার কোন সুযোগ নেই সুতরাং মেনে না নিয়েও উপায় থাকে না। ৯ জুলাই ২০১৪ ভারতের বহুল প্রচারিত ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় বিশিষ্ট সাংবাদিক চারু সুদন কস্তুরি এক নিবন্ধে লিখেছেন :

‘এই রায়ের ফলে সমুদ্রের যে এলাকা ভারত বাংলাদেশের কাছে হারাল সেখানে আর ভারতীয় জেলেরা যাওয়ার সুযোগ পাবে না। ভারতের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন ওই এলাকার যে সব স্থানে তেল ও গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে চিহ্নিত করেছিল, সেখান থেকে আর তেল ও গ্যাস সম্পদ আহরণ করতে পারবে না।’

তার এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের সমুদ্র বিজয়ের বক্তব্যই উপস্থাপিত হয়েছে। একই নিবন্ধে ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন- ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন বলেছেন, ভারত ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত বিষয়ের সুরাহা হওয়ায় দুই দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সদিচ্ছা আরও জোরদার হবে।’

ভারতের সঙ্গে সালিশী মামলায় বাংলাদেশের জয়লাভ এবং বিশাল সমুদ্র এলাকায় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সারাদেশের মানুষ আনন্দিত হয়েছে এবং শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া না জানালেও তাঁর দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা এ রায়ের ওপর মতামত ব্যক্ত করেছেন। বিএনপি সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী এবং দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন বলেছেন, এ রায়ের ফলে ভারত সমুদ্রে একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। তিনি এ রায়ে দক্ষিণ তালপট্টি বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ৯ জুলাই ২০১৪ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদুও অনুরূপ বক্তব্য রেখেছেন। বিএনপির এ দু’নেতার প্রতিক্রিয়ায় মনে হলো তাঁরা রায়ের যথাযথ মূল্যায়ন না করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। ভারতের ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকা বলছে এ রায়ের ফলে ভারত সমুদ্রের মৎস্য এবং তেল-গ্যাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত হলো। আর বিএনপির নেতারা কোন ধরনের যুক্তি এবং তথ্য-উপাত্ত ছাড়া বলছেন ভারত সমুদ্রে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব পেয়েছে। কার বক্তব্য সঠিক-মেজর হাফিজ নাকি ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর?

ক্ষুদ্রাকারের দক্ষিণ তালপট্টি ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর সমুদ্রপৃষ্ঠে জেগে উঠলেও গত বেশ কয়েক বছর আগেই সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা বিলীন হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সালিশী আদালতের রায়ে সমুদ্রের এ অংশটি ভারতের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। আদালতে ভাবাবেগের কোন জায়গা নেই, তথ্য-উপাত্তই হলো মূল ভিত্তি। বাংলাদেশ দক্ষিণ তালপট্টি এলাকাকে নিজেদের দাবি করলেও এর সপক্ষে কোন প্রমাণ দিতে পারেনি। ১৯৮০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত সরকারিভাবে বাংলাদেশের যত মানচিত্র প্রণীত হয়েছে তার একটিতেও তালপট্টিকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়নি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ভারতের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর ২০১০ সালের মানচিত্রে প্রথমবারের মতো তালপট্টিকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। কিন্তু জুরি বোর্ড বাংলাদেশের এ দাবি গ্রহণ করেনি। বিএনপি নেতা মেজর হাফিজ ও শামসুজ্জামান দুদুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যায়-তাঁদের সরকারের সময় মানচিত্রে তালপট্টিকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়নি কেন? সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি সরকার কোন উদ্যোগ নেয়নি-এ সত্য সবাই জানে। তাদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ-ভাল কাজের প্রশংসা করতে না পারেন অন্তত নিন্দা করবেন না। মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশের যে কোন মঙ্গল হয় না এ সত্য কি কখনও বুঝবেন না?

সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-১

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৩৫

শাফি উদ্দীন বলেছেন: বিস্তারিত পড়ে জানলাম। গর্বে মন ভরে উঠলো। মূল্যবান পোষ্ট।

১১ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৯

তালপাতারসেপাই বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.