![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
১৫ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ? অবশ্যই না। তবে কেন ? তিনি হঠাৎ ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট তাঁর জন্ম দিন পালন করা শুরু করলেন-এই নিবন্ধ থেকে তা অনেকটা জানা যাবে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট রাতের অন্ধকারে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য স্বপরিবারে হত্যা করে রাষ্ট্র মতা দখল করে নেয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রাষ্ট্র মতায় এলে ১৫ আগষ্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষনা করে এবং দিনটি জাতীয় ভাবে পালনের সরকারী সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। আর তখনই একটা হীন মতলবে শোক দিবসের পাল্টা হিসেবে একই দিন বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম দিনের উৎসব পালন করার ব্যাপারটির সূত্রপাত ঘটে। প্রত্যেক মানুষের একটি জন্মদিন থাকে। ঘটা করে অনেকে তা পালনও করে থাকেন। আর সেলিব্রেটির জন্মদিন হলে ত কথাই নেই। তা তারা নিজের পালন না করলেও ভক্ত, সমর্থক, অনুসারীরা তা পালন করে থাকেন। বেগম খালেদা জিয়া নিঃসন্দেহে এদেশের অন্যতম একজন সেলিব্রেটি। ১৫ আগস্ট যদি বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন হতো তাহলে কোন কথাই ছিল না। জাতীয় শোক দিবস হউক বা অন্য যাই হোক না কেন, একই দিনে কারো জন্ম হলে সে কী তার জন্ম দিন পালন করবে না ? অবশ্যই করবে। কিন্তু ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার প্রকৃত জন্ম দিন নয়। এটা তাঁর বানানো জন্ম দিন এবং এই জন্ম দিনের শুরু ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর। উদ্দেশ্য কেবলমাত্র ঘোষিত জাতীয় শোক দিবসের শোক প্রকাশকে তুচ্ছ, তাচ্ছিল্য, কটা ও খাটো করা। বেগম খালেদা জিয়ার আসল জন্মদিন যা তাঁর পরিবার, শিা প্রতিষ্ঠান, বিয়ের কাবিন এবং ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সরকারী সূত্রে গণ মাধ্যমগুলির রেকর্ডে নথিভুক্ত আছে। ১৯৮১ সালের ৩০শে মে প্রেসিডেন্ট জিয়া নিহত হওয়ার পর থেকেই বিএনপিতে রাজনৈতিক বিশৃংখলা দেখা দেয়। বিএনপির রাজনৈতিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে বেগম জিয়া রাজনীতিতে আসেন। গৃহবধু থেকে রাজনৈতিক দলের নেত্রী হওয়ার পর বেগম জিয়ার সাফল্য সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন তাঁরই পিতা ইসকান্দার মজুমদার। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী তৈয়বা খাতুন তাঁদের তৃতীয় মেয়ে খালেদা খানম পুতুলের জন্ম, শিা, বিয়ে, বংশ পরিচয় ও পারিবারিক পরিচয় তুলে ধরেছিলেন ১৯৮৪ সালে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায়। উক্ত সাাৎকারের এক অংশে পিতা সাঈদ ইসকান্দার বলেছিলেন, আমার তৃতীয় মেয়ে হচ্ছে খালেদা। খালেদার জন্ম ১৯৪৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর একটি ঐতিহাসিক দিনে, যে দিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে বিশ্বের বুকে শান্তি এলো। আমাদের ফ্যামিলি ফিজিসিয়ান ছিলেন ডাঃ অবনী গোস্বামী। তিনি বলেছিলেন আপনার এই মেয়ে অত্যন্ত ভাগ্যবতী হবে। তার নাম আপনারা শান্তি রাখুন। সা¤প্রদায়িক পরিস্থিতির কারনে সেটা তখন সম্ভব ছিল না। তাই তার ডাক নাম রাখলাম পুতুল। খালেদা জিয়া সবারই আদরের এবং দেখতে শুনতেও সবার চেয়ে ভালো ছিল। সেজন্য আমরা পুতুল বলেই ডাকতাম। আজো সেই নামেই আমরা ডাকি। তার পুরো নামছিল খালেদা খানম। ১৯৬১ সালে খালেদার সাথে জিয়াউর রহমানের বিয়ে হয়। তখন জিয়া ছিল ক্যাপ্টেন। ডি.জি.এফ আইয়ের অফিসার হিসিবে তার পোষ্টিং ছিল দিনাজপুর। জিয়া ছিল আমার স্ত্রীর ভাগ্নে। তার চাচাত বোনের ছেলে। খালেদা সেবার মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছে মাত্র। বিয়ের কয়েক দিন আগে জিয়া আমাদের বাসায় এসে একদিন হঠাৎ করে বলে বসলো আপনারা আগামী শুক্রবারের মধ্যে যদি বিয়ে দেন তাহলে বিয়ে হবে, নইলে আর বিয়েই করব না। আমরা বললাম বেশ তাই হবে। বিয়ে হয়ে গেল দিনাজপুরের মুদিপাড়ায়। বিয়েতে জিয়ার মামা, নানা ও বিভাগীয় অনেক বন্ধু-বান্ধব উপস্থিত ছিলেন। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১৯৩৭ সালের ২৯ মার্চ। আমার স্ত্রীর জন্ম ১৯২৪ সালের মার্চ মাসে। নাম তৈয়বা খাতুন। তার বাপের বাড়ি দিনাজপুরের (বর্তমান পঞ্চগড়ের) চন্দন বাড়িতে। তারা মীর জুমলার বংশধর। বাংলাদেশী টি ফ্যামিলী নামে খ্যাত। এই ফ্যামেলি বক্সার যুদ্ধে বৃটিশ সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল। পরে বৃটিশ সরকার তাদেরকে তামার পাতে লেখা সনদ উপহার দেয়। তারা বিনা খরচে ইংল্যান্ড যেতে পারতো। যার ফলে এদের ভিতরে অনেকেই মেম বিয়ে করে বিলেতবাসী হয়ে গেছেন। আমার শ্বশুড় ছিলেন জেলা সাব রেজিষ্টার। আমার স্ত্রীর কোন ভাই নেই। তারা দু’বোন। ঐ সাক্ষাৎকারের আরেক অংশ বেগম খালেদা জিয়ার মা তৈয়বা খাতুন তাঁর মেয়ে সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘খালেদা খুব বেশি লেখাপাড়া করত না, তবে লেখাপড়ায় ভাল ছিল। নাচ শিখেছে ওস্তাদের কাছে। অনেক ফাংশনে নেচে পুরস্কার পেয়েছে। গান শুনতে ভাল বাসতো। কথা খুব বেশি বলতো না। লেখাপড়া করেছে প্রথমে মিশনারী কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ও পরে দিনাজপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে’। বেগম জিয়ার মা-বাবা প্রদত্ত সাাৎকার অনুযায়ী তাঁর জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ সাল এবং লেখাপড়া হাইস্কুল পর্যন্ত। ১৯৬১সালে মেট্রিক পরীা দেওয়ার পরই তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর লেখাপড়া করেছিলেন বলে তাঁর মা-বাবা উল্লেখ করেন নাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের রেকর্ডে দেখা যায় বেগম জিয়া ১৯৫৪ সালের ১লা জানুয়ারী দিনাজপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন। ভর্তি রেজিষ্টার অনুযায়ী তাঁর জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল। তিনি ঐ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে ঢাকা শিা বোর্ডের অধীনে মেট্রিকুলেশন পরীায় অংশ গ্রহণ করেন। ঢাকা বোর্ডের রেকর্ডে দেখা যায় খালেদা খানম, পিতা মোহাম্মদ এসকান্দর অত্র বোর্ডের আওতাধীন দিনাজপুর কেন্দ্রের দিনাজপুর বালিকা বিদ্যালয় হইতে ১৯৬১ সালে মেট্রিকুলেশন পরীায় অংশ গ্রহণ করিয়া অকৃতকার্য হন। তাঁহার রোল নম্বর ছিল রোল-দিনা নং এফ-৭৯২। রেকর্ড মুলে তার জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল। ফলাফলে দেখা যায় তিনি ইংরেজী, ইতিহাস, ভুগোল ও ঐচ্ছিক বিষয়ে অকৃতকার্য হন। বিদ্যালয় ও ঢাকা শিা বোর্ডের রেকর্ড থেকে দেখা যায় তাঁর জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ সাল এবং তিনি মেট্রিক ফেল করেছেন। পরবর্তীকালে তিনি আর মেট্রিক পরীায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন বলে কোন রেকর্ড ঢাকা শিা বোর্ডে নেই। মা-বাবার বক্তব্য অনুযায়ী বেগম জিয়ার জন্ম সাল এবং বিদ্যালয় ও শিা বোর্ডের রেকর্ডের জন্ম সালের মধ্যে এক বৎসরের পার্থক্য দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে বয়স কমানো। তাই জন্ম তারিখ ঠিক রেখে জন্ম সাল এক বৎসর কমিয়ে দেওয়া হয়। বেগম জিয়ার বিয়ের কাবিনে দেখা যায় তাঁর জন্ম তারিখ ৫ আগস্ট ১৯৪৪ সাল। এর কারণ হচ্ছে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বেগম জিয়ার প্রকৃত জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টম্বর ১৯৪৫ সাল বা শিা সনদের জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টম্বর ১৯৪৬ সাল অনুযায়ী বিয়ের সময় তার বয়স দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৪ বা ১৫ বছর। বিয়ের জন্য আইন সিদ্ধ নয়। তাই আইন সিদ্ধ করার জন্য জন্ম তারিখ এমনভাবে পিছানো হয় যাতে ১৬ বৎসর হয়। এখানে কাবিনের প্রয়োজনে জন্ম সাল এবং মাস পরিবর্তন করা হলেও তারিখ ৫ ঠিক রাখা হয়। ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচনী ফরমে এবং নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিভিন্ন পত্রিকার অফিসে এবং রেডিও ও টেলিভিশনে সরকারী ভাবে পাঠানো তার জীবন বৃত্তান্তে তার জন্ম দিন ১৯ আগস্ট ১৯৪৫ সাল উল্লেখ করে প্রচার করা হয়, যা ঐ সময়কার পত্র-পত্রিকায় লিড নিউজ আকারে ছাপা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দণি কোরিয়া সফর কালে সরকারীভাবে ছাপানো প্রধানমন্ত্রীর জীবন বৃত্তান্তে এবং তাঁর লাল কূটনৈতিক পাসপোর্টে জন্ম তারিখ উল্লেখ আছে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল। তাছাড়া অন্যান্য আরো অনেক সরকারী রেকর্ড পত্রে তাঁর জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর উল্লেখ আছে। গত তত্ত¡বধায়ক সরকারের সময় প্রণীত জাতীয় পরিচয় পত্রে দেখা যায় বেগম জিয়ার জন্ম তারিখ ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সাল। এই সন তারিখ যে একেবারে সঠিক নয় তার প্রমাণ তাঁর শিক্ষা সনদ এবং বিয়ের কাবিন। শিক্ষা সনদ অনুযায়ী তিনি ১৯৬১ সালে মেট্রিক পরীায় অংশ নেন এবং বিয়েও হয় সেই ১৯৬১ সালে। শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী একজন শিার্থী সাধারণভাবে ১৬ বৎসর বয়সে মেট্রিক পরীায় অংশ নিয়ে থাকে। বিশেষ কারণে এক দুই বৎসর বেশ কম হতে পারে। তবে ১৪ বৎসরের কম বয়সে মেট্রিক পরীায় অংশ নেওয়া যায় না। আবার ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিয়ের কনের বয়স কমপে ১৬ বৎসর পূর্ণ হতে হবে। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্ম হলে ১৯৬১ সালে তাঁর বয়স দাঁড়ায় মাত্র সাড়ে ১৩ বৎসর। এই বয়সে মেট্রিক পরীায় অংশ নেওয়া বা বিয়ের কাবিন রেজিষ্ট্রি করা মোটেও সম্ভব নয়। স¤প্রতি প্রকাশিত বিএনপির নীতিনির্ধারকদের অন্যতম সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ লিখিত ‘কারাগারের দিনগুলি’ বইয়ে ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মদিনকে বিতর্কিত জন্মদিন বলে উল্লেখ করেছেন। বেগম জিয়ার এতগুলো জন্ম তারিখ ও সাল পর্যালোচনা করে দেখা যায় তিনি বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় জন্ম সাল বদলিয়েছেন বয়স কমানোর জন্য, বিয়ের কাবিনে জন্ম সাল এবং মাস বদলিয়েছেন বয়স বাড়িয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রি আইন সিদ্ধ করার জন্য। জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্মসাল এবং তারিখ বদলিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ঘোষিত জাতীয় শোক দিবসের শোককে ম্লান করার জন্য। শোকের দিনে তথাকথিত জন্ম দিনের কেক কেটে আনন্দ উল্লাস, হৈ হুল্লা করার জন্য। যে মহান নেতার আত্মত্যাগ ও আজীবন সংগ্রামের ফসল এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। যার বদৌলতে অনেকের মত আজ গৃহবধু ও প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে, বিরোধী দলীয় নেতার আসনে। যে মহান নেতার প্রত্য হস্তেেপ সে দিন যে গৃহবধুর সংসার টিকে ছিল, আজ সেই গৃহবধু সেই মহান নেতার মৃত্যু দিবসকে ম্লান করার জন্য নিজের ভূয়া জন্মদিন পালন করছেন।
সত্যিই সেলিউকাস, বিচিত্র এই দেশ, তার চেয়ে বিচিত্র এই দেশের মানুষ। সুত্র
১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৫
তালপাতারসেপাই বলেছেন: পঞ্চ পাণ্ডবের দ্বারা জন্মদিনের ?
২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫০
হিলিয়াম এইচই বলেছেন: তার জন্ম যদি ৩. বার হইতে পারে তাইলে আমার টা নয় কেনু কেনু কেনু??? :'(
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:৫৮
ওপেস্ট বলেছেন: খালেদা জিয়াকে জন্মাদনের শুভেচ্ছা রইল ।