![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
দেশে উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠনগুলো আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। জঙ্গিদের গোপনে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টার নানা তথ্য প্রায়ই প্রকাশিত হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহ আদালতে নেয়ার পথে জেএমবির তিন শীর্ষ নেতাকে প্রিজনভ্যান থেকে তাদের সহযোদ্ধা জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনাই প্রমাণ করে তাদের তৎপরতা। কারাগারে শীর্ষ জঙ্গিরা বাইরে তাদের অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিচ্ছেনÑ এরকম খবরও ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। জানা গেছে, মাঠে সংগঠন আবার সক্রিয় করে তুলতে কাজ করছে মূলত খালাস ও জামিন পাওয়া জঙ্গিরা। জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত ও বিচারকাজে আশানুরূপ অগ্রগতি না থাকা তাদের পুনরায় সক্রিয় হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছেÑ এরকম ধারণার পক্ষেও যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। গতকালের ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলমান মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতির কারণে কারাবন্দী অবস্থায় জঙ্গি সংগঠনের অনেক সদস্য তৎপর রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তথ্য গোপন করে জঙ্গিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আর ছাড়া পেয়েই তারা আবারও একই অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবি এবং হরকাতুল জিহাদ-হুজির মামলাগুলোর ক্ষেত্রে সামান্য অগ্রগতি থাকলেও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোয় দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করতে না পারায় এসব মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পরও অনেক জঙ্গি সংগঠনের সদস্যই ছাড়া পেয়ে যায়। ফলে অনেক আসামি আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারো অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রিজনভ্যান থেকে জেএমবির তিন শীর্ষ নেতাকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার মামলাটি পর্যন্ত ঝুলে আছে। ধরা যায়নি ছিনিয়ে নেয়া মৃত্যুদ-ে দ-িত দুই জঙ্গিকে। গত কয়েক বছরে সারাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৮৩টি। এর মধ্যে তদন্তাধীন ১১টি মামলা। বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৭২টি। দীর্ঘসূত্রতার কারণে এখন পর্যন্ত একটি মামলারও রায় হয়নি। ইতোমধ্যে জামিনে ছাড়া পেয়েছে ১০৯ জন আসামি। পলাতক রয়েছে পাঁচজন। র্যাব ও পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২৬৫ জন আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৫১ জন। একই সময় জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাওহীদের ২৬ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে দুটি মামলা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই দুটি মামলা বিচারাধীন আছে। একজন আসামি কারাগারে থাকলেও ইতোমধ্যে জামিনে বেরিয়ে গেছে ২৫ জন জঙ্গি। অন্যদিকে মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত ৩৯ জঙ্গির ভাগ্য ঝুলে আছে আপিল প্রক্রিয়ায়। আর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত আরো ৬৪ জঙ্গি। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত শীর্ষ জঙ্গিদের ধরাছোঁয়ার বাইরে পালিয়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক তো বটেই, এমনকি কারাগারের ভেতরে যারা রয়েছে তারাও কম বিপজ্জনক নয়। কারণ তারা পলাতক এবং খালাস ও জামিন পাওয়া জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সংগঠনকে আবার সক্রিয় করে তুলতে কাজ করছে। কাজেই জঙ্গি তৎপরতা নির্মূলে দ-প্রাপ্ত জঙ্গিদের দ- দ্রুত কার্যকর করা, ঝুলে থাকা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেয়া দরকার। পাশাপাশি তথ্য গোপন করে বা অসত্য তথ্য দিয়ে যাতে জঙ্গিরা জামিন নিতে না পারে সেদিকেও সংশ্লিষ্টদের নজরদারি দরকার। এছাড়া কারাগারে জঙ্গিদের কর্মকা-ের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা এবং বাইরে জঙ্গিদের তৎপরতা ঠেকানো এবং পালিয়ে থাকা জঙ্গিদের খুঁজে বের করার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের কার্যক্রম জোরদার করা দরকার।
©somewhere in net ltd.