নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
সহিংস রাজনীতির মাশুল গুনছে জামায়াত-শিবির। বিগত নির্বাচনের আগে এক বছর লাগাতার সহিংস 'আন্দোলন' করে দলটির লক্ষ্য পূরণ হয়নি; বরং আরও বেশি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। সহিংসতার জন্য দেশে-বিদেশে সমালোচিত হয়ে নমনীয় ধারায় ফিরলেও মামলার কারণে প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরতে পারছে না। দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল নেতাদের প্রায় সবাই সহিংসতার মামলার আসামি। দলের সর্বোচ্চ ফোরাম নির্বাহী পরিষদের ২০ জনের ছয়জন কারাগারে। বাকিদের ১২ জনই একাধিক মামলার আসামি হয়ে আত্মগোপনে অথবা বিদেশে রয়েছেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে বিগত সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে তাণ্ডব চালায় জামায়াত ও ছাত্রশিবির। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণার পর এ সহিংসতা চালানো হয়। এ সহিংস তাণ্ডবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় একশ' ব্যক্তি নিহত হন। আগুনে পুড়ে ছাই হয় সহস্রাধিক যানবাহন। প্রকাশ্যে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা ও সরকারি কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগে ব্যাপক সমালোচিত হয় জামায়াত।
জামায়াতের হিসাবে, এসব ঘটনায় সারাদেশে ছয় হাজার মামলায় দলের লক্ষাধিক নেতাকর্মী আসামি হয়েছেন। নেতাদের কেউ
জেলে, কেউ আত্মগোপনে, কেউ আবার নিষ্ক্রিয়। দলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কার্যালয় তালাবদ্ধ প্রায় তিন বছর। প্রকাশ্যে দলীয় কার্যক্রম নেই।
জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের ২৩ সদস্যের তিনজন মৃত। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পাঁচজন কারাগারে। বাকি ১৫ জনের ১২ জনই বিভিন্ন সহিংসতার মামলার আসামি। তাদের একজন জেলে। দু'জন দণ্ডিত হয়ে পলাতক। আটজন আত্মগোপনে, একজন গ্রেফতার এড়াতে বিদেশে। বাকিরা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়।
জামায়াত সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের অধিকাংশই পলাতক। ৩৬ উপজেলা চেয়ারম্যানের ১৮ জন কারাগারে। বাকিরাও প্রকাশ্যে নেই। তাদের সবার বিরুদ্ধে সাঈদীর রায়পরবর্তী সহিংসতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা মহানগরের শীর্ষ দুই নেতা দণ্ডিত হয়ে পলাতক। চার মহানগর আমির কারাগারে। কর্মপরিষদের ৫৪ সদস্যের ৪১ জনই মামলার আসামি। ৭৭ জেলা আমিরের প্রায় সবাই মামলার আসামি। ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি, সেক্রেটারিসহ কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশ নেতা আত্মগোপনে।
জামায়াতের দাবি, এসব মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করেন দলের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। তিনি বলেন, 'আমাকেও ২৯ মাস কারাগারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি।' জামায়াতকে নির্মূলে যে যড়যন্ত্র চলছে, তার অংশ হিসেবেই এসব মামলা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এ বক্তব্যের জবাবে পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সমকালকে বলেন, রাজনীতির নামে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিও রাজপথে কম-বেশি সহিংসতা করেছে। কিন্তু জামায়াত যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। এটা ছিল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক প্রকার অঘোষিত যুদ্ধ। রাজপথে পুলিশ সদস্যকে যেভাবে পিটিয়ে মেরেছে, তা আন্দোলন হতে পারে না। গাছ কাটার রাজনীতি আগে কখনও দেখা যায়নি।
২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল থেকে ব্যাপক সহিংসতা হয়। দলটির কর্মীরা সেদিন প্রকাশ্যেই পুলিশের তিনটি গাড়িতে আগুন দেয়। এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ। তার বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা রয়েছে। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মতিঝিলে অগি্নসংযোগ মামলারও আসামি তিনি। চার বছর ধরে আত্মগোপনে থাকলেও কখনোই আদালতে হাজির হননি মকবুল আহমাদ।
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ১৩ মামলার আসামি। সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনেই আছেন। নায়েবে আমির মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২৩। তিনি দুই দফায় প্রায় দু'বছর কারাবাসের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের নভেম্বর থেকে কারাগারে। তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ১১। খুলনাতেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যান এ নেতা। ওই দিনই তার বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় হত্যা ও অগি্নসংযোগের অভিযোগে দুটি মামলা হয়। এর পর আর দেশে ফেরেননি তিনি।
নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর আমির ও নায়েবে আমির রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদ আদালত অবমাননার অভিযোগে দণ্ডিত আসামি। তিন মাসের কারাদণ্ড হলেও আত্মসমর্পণ না করে আত্মগোপনে আছেন। রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৩টি এবং হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। নির্বাহী পরিষদ সদস্য তাসনীম আলম দুই দফায় কারাবাসের পর চলতি বছরে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে আছেন। ১৯ সেপ্টেম্বরের সহিংসতার মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি তিনি। তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ১৬।
নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুল হালিম দুই মামলা ও নূরুল ইসলাম বুলবুল সাত মামলার আসামি। মাওলানা রফিউদ্দিন ও এটিএম মাছুমের বিরুদ্ধে মামলা সংখ্যা জানা যায়নি। তারাও আত্মগোপনে। মামলা নেই ইসলামী ব্যাংক চেয়ারম্যান ও জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবু নাসের মুহম্মদ আবদুজ্জাহের এবং আবু তাহেরের বিরুদ্ধে।
বিএনপি ও অন্য দলের নেতারা হরতালের মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিলেও জামায়াত নেতারা তা করেন না। ডা. তাহের এ প্রসঙ্গে বলেন, আদালত ও আইনের প্রতি জামায়াত নেতাদের আস্থা রয়েছে। কিন্তু আদালতে গেলে সরকারের হয়রানির শিকার হতে হবে_ এ আশঙ্কা থেকেই আদালতে যেতে পারছেন না তারা।
তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জামায়াত বাংলাদেশের আইন-আদালতে বিশ্বাস করে না বলেই আদালতে আত্মসমর্পণ না করে পালিয়ে বেড়ায়। তারা যদি নির্দোষই হয়, তাহলে আইনিভাবে মামলা মোকাবেলা করা উচিত। তিনি বলেন, বিএনপির পরামর্শে জামায়াত যে সহিংসতা করেছে, তার খেসারত দিচ্ছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দলের আমির ও পাঁচ নির্বাহী পরিষদ সদস্য কারাগারে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে আরও মামলা আছে। আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অস্ত্র মামলাসহ ছয়টি মামলা রয়েছে। আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি।
সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২৮ অক্টোবর হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির অভিযোগে আরও তিনটি মামলা রয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে জাকাত দুর্নীতির মামলা রয়েছে। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম সহিংসতার অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে দুই মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি।
সুত্র
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:০০
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ষাট ও সত্তরের দশকে পশ্চিম বঙ্গসহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে এবং বাংলাদেশের কিছু এলাকায় নকশালবাড়ি আন্দোলন ব্যপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এটা ছিল ধনী জোতদার, সামন্ত ও পুঁজিবাদী ধনী লোকেদের গলা কাটা আন্দোলন। কিন্তু উদ্দেশ্য ভালো থাকলেও রাজনীতি ও কর্ম কৌশল ভুল থাকায় এই আন্দোলন অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়ে। আজ চারু মজুমদার, কানু সান্যাল, অসীম মুখার্জি, আব্দুল হক, মোহাম্মদ তোয়াহা, সিরাজ সিকদার এদের নাম মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে।
জামাত শিবিরের ক্ষেত্রেও একই পরিণতি ঘটবে। এই পলিমাটির মানুষ সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ পছন্দ করে না। একদিন এদের নাম নিশানাও মুছে যাবে বাংলাদেশের মাটি থেকে। চরমপন্থা ইসলাম ধর্মেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৩৫
এস এম ইসমাঈল বলেছেন: ভাল ও সময় উপযোগী পোসট করেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৫৯
হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: এসব গুহা মানবের স্হান নেই বাংলাদেশে