নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুক্তরাষ্ট্রে চার লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে জামায়াতের চুক্তি

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫



মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারাধীন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে জোর লবিং। মার্কিন প্রশাসনকে প্রভাবিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে জামায়াতের পক্ষে সমর্থন বাড়াতে কাজ করছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারাধীন মীর কাসেম আলীর ভাই মীর মাসুম আলী ও আরেক জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাকীবুর রহমান নিজামী। তাদের সৃষ্ট সংগঠন ‘অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’ এবং ‘হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ চালাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা। আর তাদের নিয়োগ করা ‘কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট ইনকরপোরেশন’ এবং ‘গ্রিবোস্কি গ্লোবাল স্ট্রাটেজিস’ মার্কিন প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কেসিডি আবার ‘ক্লোয়াক্রম অ্যাডভাইজর’ ও ‘কে গ্লোবাল’ নামের দুটি লবিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করেছে সাব-কনট্রাক্ট।কেসিডির সঙ্গে গত ২৮ মার্চ জামায়াতের স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির কপি বাংলাদেশ প্রতিদিনের হাতে এসেছে। ওই চুক্তিপত্রে বলা হয়েছে, ‘অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’-এর পক্ষে প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে কাজ করবে ‘কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট ইনকরপোরেশন’। এতে অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন জনৈক জিয়াউল ইসলাম এবং কেসিডির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন প্রতিষ্ঠানের কো-চেয়ারম্যান কাই এন্ডারসন। এই চুক্তিপত্রে অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ২৫২/এ, লেক এভিনিউ, স্টেটেন আইল্যান্ড, নিউইয়র্ক-১০৩০৩। এর আগে ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এই ঠিকানা মীর কাসেম আলীর ভাই মীর মাসুম আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের। এই ঠিকানায় থাকা ‘রোজডেল মীর ডেভেলপমেন্ট’ এবং ‘দিগন্ত মিডিয়া, ইউএসএ’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠানেরই রেজিস্ট্রেশন মীর মাসুম আলীর নামে করা হয়েছে।অন্যদিকে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার বিরোধিতায় সোচ্চার ‘হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ গত ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি করেছে ‘জাস্ট কন্সাল্টিং এলএলসি’ নামের একটি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে। এই ফার্মটির নাম পরবর্তীতে পরিবর্তন হয়ে হয়েছে ‘গ্রিবোস্কি গ্লোবাল স্ট্রাটেজিস’। চুক্তি করা ‘হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ হচ্ছে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ড. নকীবুর রহমানের গঠন করা সংগঠন। নকীবুর রহমান আবার মীর মাসুম আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র। চুক্তি অনুসারে, গ্রিবোস্কি গ্লোবাল স্ট্রাটেজিসের কাজ হবে মার্কিন কংগ্রেস এবং আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক ইউএস কমিশনকে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার বিরোধিতায় প্রভাবিত করা। অন্যদিকে, কেসিডির সঙ্গে করা চুক্তির কার্যপরিধি অংশে উল্লেখ আছে, ‘চুক্তির নব্বই দিনে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও বিরোধী দলের প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের আচরণের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে। এ জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সংবলিত একটি স্ট্রাটেজিক প্ল্যানও তৈরি করা হবে। এর অংশ হিসেবে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক, পররাষ্ট্রনীতি গবেষক ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সামনে বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ বিশেষত জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে একটি রাজনৈতিক পর্যালোচনা তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে একটি রেজুলেশন গ্রহণ করতে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে মার্কিন হাউস বা সিনেটের স্টেট ডিপার্টমেন্ট রি-অথরাইজেশন বিল এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংশ্লিষ্ট সাব কমিটির ফরেন অপারেশন ও অন্যান্য এজেন্সি সম্পর্কিত বিলগুলোতে ‘ট্রাইব্যুনাল বিরোধী নেতিবাচক ভাষা’ ব্যবহার করার। এর বাইরে কেসিডির দায়িত্ব হবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সেন্ট্রাল অ্যান্ড সাউদার্ন এশিয়া ব্যুরো ও ইন্টারন্যাশনাল অপারেশনের সঙ্গে ক্লাইন্ট জামায়াতের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ স্থাপন। এই পদক্ষেপগুলোর উদ্দেশ্য হলো, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাংলাদেশের সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক অংশীদারদের চাপ সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে ‘সুবিচার থেকে ট্রাইব্যুনালের বিচ্যুতির ফলে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার ওপর সৃষ্ট নেতিবাচক প্রভাব’-কে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সমাজের সামনে নিয়ে আসবেন স্ট্রাটেজিক কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞরা। চুক্তিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করতে চারটি পদ্ধতিকে ফোকাস করেছে কেসিডি। যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া, রিপোর্টার, কলামিস্টদের প্রভাবিত করতে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, প্রচারণার পাশাপাশি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তৃতীয় কোনো দেশের বিশ্বাসযোগ্য মুখপাত্র দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতার কথা বলা হয়েছে লবিস্ট কেসিডির পক্ষ থেকে। এই কাজের জন্য চুক্তির ৫০ হাজার ডলারের মধ্যে ১৬ হাজার ৬৬৬ ডলার করে প্রতিমাস শেষের আগেই ইলেকট্রনিকভাবে কেসিডির সিটিব্যাংক এনএ’র নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে।চুক্তিপত্রগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি যখন সামনে আসে তখনই জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এই লবিস্ট ফার্মগুলোর সঙ্গে পুনরায় চুক্তি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই চুক্তির প্রাথমিক দিনক্ষণ শেষ হয়েছে। চুক্তির মেয়াদ না বাড়িয়ে থাকলে জুলাইয়ে একটি শেষ হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ স্টিফেন জে র‌্যাপ আগস্টে ঢাকা সফর করে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা জানান। গতকাল কূটনৈতিক মহলে যোগাযোগ করা হলে কেউ এই চুক্তির সঙ্গে স্টিফেন জে র‌্যাপের সফরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে কূটনীতকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম একটি স্বীকৃত ব্যবসা। এর দ্বারা অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের নীতি প্রভাবিত হয়। আবার কেসিডি অ্যাসোসিয়েটের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুসারে, কেসিডির ১৪০ ক্লাইন্টের মধ্যে মীর কাসেম আলী সর্বোচ্চ অর্থ প্রদানকারীদের মধ্যে অন্যতম।জানা যায়, শুধু এই লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা নিয়েই বসে নেই মীর কাসেম আলীর ভাই মীর মাসুম আলী ও আরেক জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাকীবুর রহমান নিজামী। তারা ‘অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’ এবং ‘হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ নামে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ-সেমিনারের আয়োজন করছেন নিয়মিতই। এসব সভা-সমাবেশে হরহামেশাই দাবি করা হয় টাইব্যুনাল আসলে ‘বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন’, ‘বিচার বিভাগীয় হত্যাকাণ্ড চালানো’ এবং ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র বহিঃপ্রকাশ। এর অসংখ্য ভিডিও-অডিও, ছবিও আছে ইন্টারনেটে।

সুত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.