নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপি জোটে ভাঙন

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৯

শরিক কয়েকটি দলের জোট ছাড়ার হুমকিতে বেশ বিব্রত ও অস্বস্তিতে পড়েছে ২০ দলের প্রধান বিএনপি। সারাদিন দৌড়ঝাঁপ করেও বিদ্রোহী শরিকদের ম্যানেজ করতে পারেননি দলটি। এ অবস্থায় অনিবার্য ভাঙনের মুখে ২০ দলীয় জোট।

অবশ্য, বিএনপি নেতারা বলছেন, জোট ভাঙার নেপথ্যে অন্য একটি চক্র কাজ করছে। ওই চক্রটি চাইছে জোটে ভাঙন ধরুক।

ন্যাপ-ভাসানীর সভাপতি শেখ আনোয়ারুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলুর জোট ছাড়ার পর গতকাল শনিবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) মহাসচিব আলমগীর মজুমদার নেতৃত্বাধীন একাংশও জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জোট ছাড়ার পাইপ লাইনে আছে আরো বেশ কয়েকটি শরিক দল।

সম্প্রতি কুমিল্লায় এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের ওপর হামলার ঘটনায় জোট থেকে বের হওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন দলটির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। কিন্তু তাদের দাবি অনুযায়ী, ওই ঘটনায় কুমিল্লা উত্তরের সভাপতিসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করে শেষ রক্ষা হয়। তবে এখনও তাদের অবস্থান পরিষ্কার নয় বলে জানা গেছে। জোটের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে একটি কোর কমিটি গঠনের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছিলেন অলি আহমেদ। কিন্তু সে বিষয়ে খালেদা জিয়া কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় সর্বশেষ জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অংশ নেননি কর্নেল অলি।

জানা গেছে, পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকাতে না পেরে ভবিষ্যত্ লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে গিয়ে হতাশ শরিকরা। একে একে নানা কারণ দেখিয়ে জোট ছাড়ছেন এই দলগুলো। জোট ছাড়ার ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে, জোটের শরিক হিসেবে তাদের কোনো মূল্যায়ন করে না বিএনপি। সব সময়ই বিএনপি- জামায়াতের নেয়া সিদ্ধান্ত জোটের শরিকদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়।

জোটের ভাঙন ঠেকাতে ২০ দলের মহাসচিবদের নিয়ে বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রী কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই বৈঠকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে জোটের শরীক দলের কোনো কোনো মহাসচিব উপস্থিত ছিলেন না। তবে এই বৈঠকে নেতারা জোটবদ্ধভাবে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এরপরও জোটের আরেক শরিক ইসলামিক পার্টির মহাসচিব এম এ রশীদ প্রধানের নেতৃত্বে একটি অংশ জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও ওয়াকিবহাল। তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে পাল্টা কৌশল নিয়েও ভাবছেন। চলতি মাসের প্রথম দিকে ‘অতি গোপনে’ জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই বৈঠকে জোট, জোটের আন্দোলন ও কূটনৈতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জামায়াতের অবস্থান দলটির নেতারা খালেদা জিয়ার কাছে পরিষ্কার করেছেন।

গত ২৪ আগস্ট ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলুর নেতৃত্বে একটি অংশ জোট থেকে বেরিয়ে যায়। তার আগে ৫ জানুয়ারির ভোট সামনে রেখে ন্যাপ-ভাসানী সভাপতি শেখ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে একটি অংশ জোট থেকে বেরিয়ে গেছে।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট থেকে ১৮ দলীয় জোট হয়। পরে কাজী জাফর আহমেদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ও সাম্যবাদী দলের একাংশ এই জোটে যোগ দেয়ায় এটি ২০ দলীয় জোটে রূপ নেয়।

শনিবার সকালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে ‘অধিকতর গণতান্ত্রিক চর্চা’সহ পাঁচ দফা দাবি পূরণে খালেদা জিয়াকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) একাংশ। অন্যথায় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এনডিপির একাংশের নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার। তিনি বলেন, ভারতের বিষয়ে জোটনেত্রীকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। জোটের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে আন্দোলনের তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। জোটে অধিকতর গণতন্ত্র চর্চা করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী? এসব বিষয়ে সুরাহা করতে জোট নেত্রীকে আমরা ৭২ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। নইলে আমাদের জোট থেকে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর থাকবে না। জোট থেকে বেরিয়ে গেলে নতুন জোট গঠন করবেন বলেও জানান আলমগীর মজুমদার। এনডিপির চেয়ারম্যান পদ থেকে খোন্দকার গোলাম মূর্তজাকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার কথাও বলেন নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার। খোন্দকার গোলাম মূর্তজার নেতৃত্বে এনডিপির মহাসচিব ছিলেন আলমগীর মুজমদার।

এনডিপির এই অংশের নতুন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে আলিনুর রহমান খান সাজুকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাকরাইলের ঈশা খাঁ হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনে অতিথি সারিতে জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, মহাসচিব আবদুল হাই মণ্ডল, ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হকও ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ রশীদ প্রধান, যিনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

আলমগীর মজুমদারের পাশে বসেছিলেন এনডিপির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মাহবুবুল আলম ফারুক, তপন খান, এ আর জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মির্জা আমিন আহমেদ ইয়ান। তার সঙ্গে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন, জয়নাল আবেদিন, মাওলানা আবদুল কাইয়ুমও ছিলেন। এছাড়া দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন খান বাদশা, মনিরুজ্জামান মুনির, লিয়াকত আলী ও শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আলমগীর মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভারতবিরোধী। অথচ জোট নেত্রী ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে পানি সমস্যাসহ অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে কী করবেন, তা নিয়ে তিনি কোনো কথা জনগণের কাছে বলছেন না।

ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ঢাকা এলে তার সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাত্ না করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, অথচ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য হোটেলে গিয়ে তিনি অপেক্ষা করেছেন। আন্দোলনের কর্মসূচি নেয়ার ক্ষেত্রে জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের কোনো মতামত নেয়া হয় না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি একক সিদ্ধান্তে কর্মসূচি ঠিক করে। ভারতের বিষয়াদিসহ অন্যান্য বিষয়ে জোটনেত্রীর পক্ষ থেকে যদি সত্ উদ্যোগ কিংবা সমাধান না আসে, তাহলে ২০ দলীয় জোট ৫০ দলীয় জোটে রূপান্তর করে এই অনৈতিক সরকারকে হটানো যাবে না।

খোন্দকার গোলাম মূর্তজার বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর দলের প্রেসিডিয়াম সভা ও ১৯ সেপ্টেম্বর নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। দলের নীতি-আদর্শ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিবর্জিত কার্যক্রমের কারণে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত রাতে সাংবাদিকদের এম এ রশীদ প্রধান বলেন, ‘বিএনপি জোটে অনেক দিন ধরে আছি। সেখানে আমরা উপযুক্ত সম্মান পাচ্ছি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেও কিছুই করতে পারলাম না। এখন দেশ-জাতির কল্যাণে এবং গণতন্ত্র রক্ষায় নতুন কিছু তো করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু চিন্তাভাবনা আছে। সংবাদ সম্মেলনে সেগুলো জানাব। এর মধ্যে ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মোবিন সস্ত্রীক হজে গেছেন। এ ছাড়া জোবায়দা কাদের চৌধুরী (সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বোন) ও আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মুসলিম লীগও ২০-দলীয় জোট থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জোটের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। জোট থেকে বের হওয়া দলগুলোকে নিয়ে ‘ডেমোক্রেটিক ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট’ নামে আরেকটি জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শেখ শওকত হোসেন নিলু এর নেপথ্যে কাজ করছেন। ২৫ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে এ জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ‘ডেমোক্রেটিক ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট’-এ ২০-দলীয় জোটের আরও অন্তত তিনটি দলের একাংশ যোগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.