নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ মুজিব জাতির হত্যাকারী ও পাকবন্ধু - তারেক রহমানের মিথ্যাচার

০১ লা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:০৯

কাঁচা আমের রসটা অম্ল রস, কাঁচা সমালোচনাও গালিগালাজ, অন্য ক্ষমতা যখন কম থাকে তখন খোঁচা দিবার ক্ষমতাটা খুব তীক্ষè হইয়া ওঠে। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর



কবি গুরু ঠিকই বলেছেন..





বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তারেক রহমান বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু নয়, ‘পাকবন্ধু’। জাতির জনক নয়, জাতির হত্যাকারী। তিনি বলেন, ‘৭ মার্চে পাকিস্তানের পক্ষে সেøাগান দিয়ে শেখ মুজিব বক্তৃতা শেষ করেছেন। ২৫ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, এটি তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার দলিল হয়ে থাকবে। এর পর তিনি স্বাধীনতাকামীদের নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সঙ্গত কারণেই বলা যায়, শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নয়, পাকবন্ধু।’

সোমবার রাত ৯টায় পূর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের প্র্রথম রাষ্ট্রতি বিশ্বনেতা শহীদ জিয়াউর রহমান : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সভায় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে বিএনপির প্র্রতিষ্ঠাতা ও প্র্রয়াত রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের সম্মানে নামকরণকৃত ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’র নামফলক গ্রহণ করেন তারেক রহমান। তার হাতে নামফলকটি তুলে দেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি অব স্টেটের এ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা মোজাম্মেল নান্টু।

সভায় তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিব ৭ মার্চ কিংবা ২৫ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে মুক্তিযুদ্ধে এত লোক মারা যেত না। যার অদূরদর্শিতা কিংবা আপোসকামিতার ফলে মুক্তিযুদ্ধে এত লোকের প্রাণহানি হয়েছে, তিনি ‘জাতির জনক’ হতে পারেন না। তিনি হত্যাকারী।

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরেন শেখ মুজিব। এসেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রকে পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি থেকে দু’দিন পরই প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান। সংবিধানের এতবড় মৌলিক পরিবর্তনের সময়ও তিনি জনগণের মুখোমুখি হওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে স্বাধীন হওয়ার পর যিনিই পাকিস্তানের পাসপোর্ট গ্রহণ করেন আইনের দৃষ্টিতে তিনি সেই দেশেরই নাগরিক। একজন পাকিস্তানের নাগরিক কীভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী হলেন, আজ হোক কাল হোক সেই প্রশ্নের জবাব অবশ্যই জনগণের সামনে দিতে হবে।

সভায় তারেক রহমান ১৯৭৩ সালে তৎকালীন ছাত্রনেতা বর্তমানে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, ‘৭৩ সালের ৩ জানুয়ারি দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, দেশের জনগণ এবং গণমাধ্যমের কাছে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ছাত্রহত্যার অভিযোগে শেখ মুজিবের সব পদবী প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। কেউ যেন শেখ মুজিবের নামের আগে বঙ্গবন্ধু কিংবা জাতির জনক না বলেন, না লেখেন।

তারেক রহমান বলেন, গত কয়েক মাস আমি বেশ কয়েকটি বক্তৃতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ এবং এর পূর্বাপর ঘটনা এবং ইতিহাস বিকৃতির আড়ালে পড়ে থাকা কিছু কঠিন সত্য তুলে ধরেছি। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তির বিপরীতে কিছু ব্যক্তি লাফঝাঁপ করেছে। কারণ তাদের কোন যুক্তি নেই। আবার যুক্তি দিলেও শেখ হাসিনার কাছে মুক্তি নেই।

তিনি বলেন, ইতিহাসের কোন সত্য শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে গেলেই আওয়ামী লীগ এবং তাদের অনুগতরা তাকেই রাজাকার হিসেবে অপপ্রচার চালায়। তারা এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডারের কমপক্ষে ছয় জনকে রাজাকার অপবাদ দিয়ে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ‘একটি বই লিখে মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক একে খন্দকার রাজাকার আর বেয়াই খন্দকার কিংবা নুরা খন্দকার নির্দোষ। তারেক রহমান বলেন, ধীরে ধীরে ইতিহাসের সত্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। হুমকিধমকি কিংবা র‌্যাবের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে সত্য আড়াল করে রাখা যায় না।

তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার কথার খুব একটা গুরুত্ব জনগণের কাছে নেই। সব সময়ই কোন ঘটনাকে নিয়ে বাচালতা করা তার স্বভাবসিদ্ধ। কিন্তু জনগণের ভয়টা অন্যখানে, তা হলো, বর্তমানে রাষ্ট্রক্ষমতা এমন একজনের হাতে কুক্ষিগত হয়ে আছে যাকে ২০০০ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত ‘রং হেডেড’ বলেছিল, যিনি ‘হাবরিস সিনড্রমে’ আক্রান্ত কিনা, সেটি পরীক্ষার জন্যও বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।

সমাবেশে তারেক রহমান বলেন, যারা শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল, ক্ষমতার লোভে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বহীন, মিডিয়ানির্ভর সেসব ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থে শেখ হাসিনা এখন জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার এবং বিএনপিকে তাদের অপপ্রচারের টার্গেট করেছে।

তিনি বলেন, অপপ্রচার চালিয়েও শেখ হাসিনা শিকাগোতে জিয়াউর রহমানের নামে সড়কের নামকরণ ঠেকাতে পারেননি। দেশে-বিদেশে জিয়াউর রহমানের অবদান স্বীকৃত হচ্ছে। জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্মের স্বীকৃতির জন্য আদালতের রায়ের প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য আর নিরাপদ নন, তার কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, নিরাপদ নয় বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ।

তারেক রহমান বলেন, জাতিসংঘ যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়েছে হাসিনার এমন মিথ্যাচারেরও জবাব দিয়েছে দেশগুলো। এতে হাসিনা লজ্জা না পেলেও দেশের নাগরিকরা বিব্রত। হাসিনা এখন জঙ্গী জুজুর ভয় দেখাচ্ছেন। এটি হাসিনার কূটকৌশল। তাঁর বাবাও নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে জনগণকে বাকশালের ভয় দেখাতেন।

তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, হাসিনা বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে চায়। এবারও জাতিসংঘে গিয়ে তিনি সেটি করে এসেছেন। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ জঙ্গীবাদ সমর্থন করে না। তাই বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদমুক্ত রাখতে হলে দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে হাসিনার বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া এখন সময়ের দাবি।

তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ কখনই জনগণের মনের ভাষা বুঝতে পারেনি। তারা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ কিংবা ২৫ মার্চেও স্বাধীনতাকামী জনগণের ভাষা বোঝেনি। তেমনি বুঝতে পারেনি স্বাধীনতার পরও। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী লাখো জনতাকে নিরাপদ মনে করেনি শেখ মুজিব, তিনি নিরাপদ মনে করেছেন হানাদার বাহিনীকে।

তিনি বলেন, শেখ মুজিব কিংবা শেখ হাসিনা তাঁরা কখনই জনগণের সমর্থনের ওপর ভরসা রাখেনি। এ কারণে শেখ মুজিবের স্বীকৃতি আদায়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জিয়াউর রহমান একটি অবিসংবাদিত নাম। ২৫ মার্চ হঠাৎ করেই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। হঠাৎ করেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে জীবনবাজি রাখেননি। বাংলাভাষা ও তৎকালীন সময়ে বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের চেতনা তিনি লালন করেছেন ছাত্রাবস্থা থেকেই।

তিনি বলেন, বিচারপতি সায়েমের পদত্যাগের পর ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। সেখানেও তিনি সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘোচাতে সক্ষম হন।

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়। সেই সময় আওয়ামী লীগ ছিল বিলুপ্ত। আর বিএনপির জন্মই হয়নি। শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর তার মন্ত্রিসভার সদস্য বাকশাল নেতা খোন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের নবেম্বর মাসে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ মোশাররফের ভাই ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন মোশতাক আহমদ। মোশতাককে সরিয়ে খালেদ মোশাররফ রাষ্ট্রপতি বানান শেখ মুজিবের নিয়োগ করা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি সায়েমকে। একই সঙ্গে মোশতাকের জারি করা সামরিক শাসনের আওতায় ১৯৭৫ সালের ৬ নবেম্বর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকও নিযুক্ত হন বিচারপতি সায়েম। এর আগে ৭৫ সালের ৩ নবেম্বর তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করেন খালেদ মোশাররফ। এরপর খালেদ নিজেই নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন। কিন্তু খালেদের ক্ষমতা ভোগ করার সৌভাগ্য হয়নি। তিনিও নিহত হন।

তারেক রহমান বলেন, কেন-কীভাবে খালেদ মোশাররফ নিহত হয়েছিলেন এটি সেই সময়কার জঙ্গী নেতা ইনুকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, শেখ মুজিব সম্পর্কে তৎকালীন জঙ্গী নেতা বর্তমানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অক্ষম ছিলেন, তিনি বিরোধী আন্দোলনে ভীত হয়ে পড়তেন। মানুষের ওপর তিনি এক রকম জোর-জবরদস্তি চালাচ্ছিলেন, তাঁর মধ্যে সমালোচনা বা বিরোধিতা সহ্য করার শক্তি ছিল না।

সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস। সভায় বক্তব্য দেন ব্রিটেন সফররত বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা আইনজীবী এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সাবেক উপমন্ত্রী এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এমএ মালেক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালাম, তারেক রহমানের উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এ্যাসিসট্যান্ট প্রেস সেক্রেটারি মুশফিকুল ফজল আনসারীসহ অনেকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.