নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম মানুষের মধ্যে হত্যা সম্বন্ধে বিচার করা হবে
মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর পবিত্র কালামে ঘোষণা করেছেন_'নির্দিষ্ট কোনো জাতির বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে তাদের প্রতি অবিচার করতে উদ্বুদ্ধ না করে। তোমরা নির্বিশেষে সবার প্রতি সুবিচার করো। কারণ এটাই তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। (জেনে রেখো) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজের খবর রাখেন। (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত-৮)। পবিত্র এই আয়াতের কথা থেকে সহজেই বোঝা
যাচ্ছে, মানুষের প্রতি অবিচার করা ইসলামের সমর্থনযোগ্য কাজ হতে পারে না। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা এ দেশের মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন ও গণহত্যা চালায়। এই ভয়াবহ সময়ে আমাদের দেশে কিছু দালাল শ্রেণীর মানুষ ছিল, যারা অসহায়দের বাড়িঘর লুটপাট করেছে, হত্যা করেছে এবং পাকিস্তানি বাহিনীর সহচর হিসেবে কাজ করছে। তারাই হচ্ছে যুদ্ধাপরাধী। তারা অসহায় লাখ লাখ নারীর ইজ্জত নষ্ট করেছে এবং নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করছে, তাদের অর্থসম্পদ লুণ্ঠন করেছে। এসব যুদ্ধাপরাধীকে আল্লাহতায়ালা কখনো ক্ষমা করবেন না। যারা যুদ্ধের সময় নির্যাতিত হয়েছিল, তারা ছিল মজলুম; এবং মজলুমের দোয়া আল্লাহ কবুল করে থাকেন_এটা আল্লাহতায়ালার ওয়াদা। আল্লাহ বলেছেন_'এ কারণেই আমি বনী ইসরাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি, যদি কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে, সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। আর যে কারো জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত-৩২)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম মানুষের মধ্যে হত্যা সম্বন্ধে বিচার করা হবে। (বুখারি-মুসলিম)
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মুসলমান নামধারী অমানুষরাই অসহায় মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এদের বিচার করতে ইসলামে কোনো বাধা নেই। ইসলাম মজলুমের পাশে।
ইসলামের বিধানের আলোকেই সেই কালো অধ্যায়ের অবসান ঘটানো হোক
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সার্বিক ইতিহাস আমাদের জানা। যে স্বপ্ন নিয়ে ১৯৪৭ সালে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তানের জন্ম, তা থেকে শাসকরা আলোকবর্ষ দূরে সরে আসতে থাকে। নিপীড়ন আর বঞ্চনার অশুভ যাত্রা শুরু হয়।
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'অত্যাচারী শাসকের সামনে ইনসাফের কথা বলা উত্তম জিহাদ।' (আবু দাউদ ও তিরমিজি)। রাসুল (সা.)-এর সময়ের যুদ্ধগুলোতে মুসলমানরা আক্রমণকারীর ভূমিকায় ছিল না; ছিল প্রতিরোধকারীর ভূমিকায়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিও ছিল অনাক্রান্ত। অন্যায়ভাবে। ইতিহাসের প্রেক্ষাপট বলে, মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা যুদ্ধের আইন অমান্য করে অমানুষিক নির্যাতনের পথ বেছে নেয়, যা ছিল সর্বৈব অনৈতিক। মানবাধিকার লঙ্ঘন, সম্পদ লুণ্ঠন, অগি্নসংযোগ, নির্যাতন ও ধর্ষণ ছিল ভয়াবহ।
সাক্ষ্য-প্রমাণে ও বিচার-বিশ্লেষণে যদি কেউ যুদ্ধাপরাধী প্রমাণিত হয়, তার বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত।
কোরআন-হাদিসের আলোকে শান্তি ও যুদ্ধাবস্থার যুদ্ধনীতি হচ্ছে :
১. জীবিত দগ্ধ করা যাবে না।
২. আহত যোদ্ধাকে আক্রমণ করা যাবে না।
৩. যুদ্ধবন্দিকে হত্যা করা যাবে না।
৪. বন্দিত্বে বা বাঁধা অবস্থায় কাউকে হত্যা করা যাবে না।
৫. আবাসিক এলাকা লুণ্ঠন করা যাবে না।
৬. অধিকৃত অঞ্চলের নাগরিকের কোনো কিছুই বিনিময় ছাড়া গ্রহণ করা যাবে না।
৭. শত্রুর মৃতদেহ বিকৃত করা যাবে না।
৮. শত্রুর মৃতদেহ ফেরত দিতে হবে।
৯. সন্ধি ভঙ্গ করা যাবে না।
হজরত আবু বকর (রা.) সিরিয়া অভিযানকালে হজরত উসামা (রা.)-কে উপদেশ দেন_'প্রতারণা করো না, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ো না, অঙ্গহীন করো না, শিশু-বৃদ্ধ ও নারীদের হত্যা করো না, ফলবান বৃক্ষ কেটো না, খাওয়ার জন্য ছাড়া ভেড়া, গরু বা উট হত্যা করো না। যেকোনো উপাসনালয়ে উপাসনারত ব্যক্তিকে উত্ত্যক্ত করো না।' উপরোলি্লখিত সব নীতিই পদদলিত করা হয়েছিল মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে।
যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে : যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং যুদ্ধাপরাধীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণান্তে আইন বিশেষজ্ঞরাই সিদ্ধান্ত নেবেন কাদের মুক্ত করে দেওয়া হবে আর কাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সুরা তাওবার ৫ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। বন্দিকে মুক্ত করে দেওয়ার পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.) বদর যুদ্ধে বন্দি উক্বা বিন আবু মইত ও নজর ইবনে হারিসকে হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন। মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দুশমনদের ক্ষমা করে দেন, যা ছিল অভূতপূর্ব। কাবাঘরে আশ্রয় নিলে নিরাপদ থাকবে ভেবে ইবনে কাত্তাল কাবায় প্রবেশ করেছিল।
কিন্তু তার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে হত্যার আদেশ দেন।সংক্ষিপ্ত এ আলোচনায় দেখা যায়, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী মুক্তি বা শাস্তি_উভয় বিধানই রয়েছে ইসলামে। স্বাধীনতাযুদ্ধকালে যে বর্বরতম, নিষ্ঠুরতম, জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত হয়েছে মানবতার বিরুদ্ধে, উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবশ্যই হওয়া উচিত। ইসলামের নামে যে ঘৃণ্যতম অধ্যায় রচিত হয়েছে, ইসলামের বিধানের আলোকেই সেই কালো অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলে তা অপরাধ হবে না নিশ্চয়ই।নজর-ই-জিলানী
একাত্তরে ইসলামের যে অপব্যবহার হয়েছিল, সেই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, এমন নৃশংসতার নজির বিরল। তবে সবচেয়ে খারাপ ও সুদূরপ্রসারী ক্ষতিকর যে কাজটি তখন হয়েছিল, তা হলো ইসলামের নামের অপব্যবহার। ইসলামী রাজনীতির নামে জামায়াতে ইসলামী এবং এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ তখন মানবতাবিরোধী অপরাধকর্মে নেমেছিল। মহান মানবতাবাদী ধর্ম ইসলামের নামে রাজনীতিতে নেমে রাজনীতিকে কত ন্যক্কারজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যায়, এর বাস্তব চিত্রটা দেখা গেছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়। রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য। আলবদর বাহিনী গঠন করা হয়েছিল অভিজাত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী হিসেবে। আলবদর ইসলাম ধর্মের এক মহান গৌরবের নাম।
ইসলামের প্রদীপ নিভিয়ে দেওয়ার জন্য কুরাইশদের শক্তিশালী বাহিনী যখন মদিনা আক্রমণ করতে যায়, তখন বদরের প্রান্তরে আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরত্বের সঙ্গে সেই বাহিনীকে মোকাবিলা করেছিলেন। রাসুল (সা.)-এর ৩১৩ জন বীর সাহাবি সেদিন শাহাদাতবরণ করেছিলেন। তবে যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর জয় হয়েছিল, আর কুরাইশদের পরাজয় হয়েছিল। অত্যাচারী শক্তির নৃশংস থাবা থেকে ইসলাম সেদিন রক্ষা পেয়েছিল।
আলবদর ইসলামের এক পবিত্র নাম। বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতির ধারক অপশক্তি সেই পবিত্র নামকেও কলঙ্কিত করেছিল। রাজাকার-আলবদর-আলশামস প্রভৃতি ইসলামী নাম ব্যবহার করে বাহিনী গঠন করে দেশের স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, নারী নির্যাতন চালানো হয়েছিল। পরিকল্পিতভাবে দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল ওই আলবদর বাহিনী। এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল এই বলে যে মুক্তিযুদ্ধ ইসলামবিরোধী এবং তারা ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। স্বাধীনতালাভের ৩৯ বছর পর এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য ওই বিচার খুবই দরকার ছিল। এতে কিছুটা হলেও পাপ মোচন হবে। তবে একাত্তরে ইসলামের যে অপব্যবহার করা হয়েছিল, সেই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।
প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীর বিচার যদি হয় সেটাই হবে ইসলামের বিজয়
যুদ্ধাপরাধী ও ইসলাম_দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুতে অবস্থিত। ইসলামের সঙ্গে অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধের কোনো সম্পর্ক নেই। যুদ্ধাপরাধের বিচার বর্তমানে বাংলাদেশে আলোচিত ইস্যু। যুদ্ধাপরাধীর বিচার : পরিপ্রেক্ষিত ইসলাম_এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় হলো, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে কি ইসলামী আইন প্রযোজ্য হবে? ইসলাম বলে ন্যায়সংগত ও যুক্তিসংগত বিচারের কথা। যুদ্ধাপরাধীর বিচার সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগতভাবে বাংলাদেশের মাটিতে হোক, এটা সব বিবেকবান সচেতন নাগরিকের একান্ত কাম্য। যুদ্ধাপরাধী যে দলের বা যে পদেরই হোক না কেন, এর সুষ্ঠু ও সঠিক বিচার অবশ্যই হতে হবে। বিচারের নামে যাতে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে দায়ী করা না হয়, সেদিকে সরকারকে সুদৃষ্টি দিতে হবে। তবে চিহ্নিত অপরাধীরা যদি ধর্মের কথা বলে তবু তাদের পাকড়াও করতেই হবে। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু ও শেষ করতে হবে সম্পূর্ণ ন্যায়সংগত প্রক্রিয়ায়। ইসলামের প্রতি কোনো রকম অবমাননা করা হলে এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের অন্তরে আঘাত লাগে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে সরকারের নির্বাচনী ওয়াদার বরখেলাপ হবে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম। এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী। (দুঃখজনক হলেও সত্য, একাত্তরে এ দেশের একটি গোষ্ঠী ইসলামের নাম ব্যবহার করে ইসলাম রক্ষার নামে এমন সব ন্যক্কারজনক কাজে লিপ্ত হয়েছিল, যা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে।) কোনোক্রমেই যেন ইসলামকে ব্যবহার করে কেউ পার পেয়ে না যায়। কারণ ইসলাম আমাদের অপরাধের সঙ্গে আপস করতে শিক্ষা দেয় না। ইসলাম হলো শান্তির প্রতিমূর্তি। প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীর বিচার যদি হয়, সেটাই হবে ইসলামের বিজয়। পরিশেষে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হোক, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হোক, বাংলাদেশ হোক বিশ্বের মানচিত্রে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী রাষ্ট্র_এই কামনা করছি।
***কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করলএকাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর ধর্ষণ, খুন, অগি্নসংযোগ আর গণহত্যা বিশ শতকের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। অথচ ইসলাম সহিংসতাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
অন্যায়ভাবে হত্যাকে সবচেয়ে বড় গুনাহ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে বলা হয়েছে_'নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্দক কর্মকাণ্ডের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল, আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত-৩২)
বাংলাদেশের ইতিহাসে যেসব ব্যক্তি প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী বলে পরিচিত, তাদের বিচার হওয়ার জন্য ইসলামে সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে_দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা_(তিরমিজি)। তাই এই ঘৃণিত কাজের বিচার ইসলামের দৃষ্টিতে অবশ্যই হওয়া উচিত। মহান রাব্বুল আলামীন বলেছেন_'আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী তুমি তাদের মধ্যে বিচার করো, তোমার কাছে যে সত্য এসেছে তা পরিহার করে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবে না।' (সূরা মায়িদা, আয়াত-৪৮)তিনি আরো বলেন, 'অপরাধী ও অপরাধিনীর প্রতি মায়া-মমতা ও সহানুভূতি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার করতে বাধা প্রদান না করে।' দুঃখজনক হলেও সত্য, আজও এই প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি বিশ্বসভায় তেমনভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে না। ফলে বিশ্বদরবারে ইসলাম ও শান্তিপ্রিয় মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য সোচ্চার হয়ে উঠলেও বিচার হচ্ছে না। তবে এর প্রকৃত বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত।
যুদ্ধাপরাধীরা যেন ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে না পারে
একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের বিরোধিতা করে যুদ্ধাপরাধে যারা লিপ্ত হয়েছিল, তাদের একটা বড় অংশই মহান ধর্ম ইসলামের নাম ব্যবহার করেছিল। তারা যুদ্ধাপরাধের মতো ন্যক্কারজনক কাজ করেছে, সে জন্য বিচার হওয়া দরকার এবং তারা যে মহান শান্তির ধর্ম ইসলামের অবমাননা করেছে, সে জন্যও বিচার হওয়া দরকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখন বাংলাদেশে একটি আলোচিত ইস্যু। সরকার হয়তো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে, কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের অনেকেই এখনো ইসলামের নামের আড়ালে আশ্রয় নিয়ে তাদের অপরাধ ঢাকতে চায়। এই অপচেষ্টা যেন আর কোনো অবস্থায়ই পার না পায়, সে জন্য সমগ্র মুসলমানসমাজকেই সচেতন হওয়া দরকার।
আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধ যে ইসলামবিরোধী যুদ্ধ ছিল না এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা যারা করেছে তারা যে প্রকৃত অর্থে ইসলামেরই বিরোধিতা করেছে, এটা জাতির কাছে পরিষ্কার হওয়া উচিত। রাজাকার, আলবদর ও আলশামস যে ইসলামের অবমাননা করেছে_এটা জাতির কাছে স্বীকার করে আল্লাহর দরবারে তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। যুদ্ধাপরাধ ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধ এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করাও ছিল ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধ।
সুত্র
©somewhere in net ltd.