নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
হরতাল দিলে যে রায় পাল্টায় না তা গত দুই বছরে বুঝতে পেরেছে দেশবাসী। কিন্তু বোঝেননি জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ দিন থেকে এ পর্যন্ত দলটি ৩২ দিন হরতাল পালন করেছে, যার মধ্যে ২৫ দিনই ছিল সরাসরি আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করে ডাকা। কিন্তু বিচার ঠেকানো যায়নি। এরই মধ্যে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। ৯০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে দলটির সাবেক আমির গোলাম আযমের। দলের শীর্ষস্থানীয় আরো কয়েক নেতাই সাজা ভোগ করছেন কিংবা ফাঁসির অপেক্ষায় আছেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছর ১৭ জুলাই জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছিলেন, 'আরেকটি প্রবণতা শুরু হয়েছে, রায় পছন্দ না হলেই তা প্রত্যাখ্যান করা। রায়ে আপনি সংক্ষুব্ধ হতে পারেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন, কিন্তু রায় প্রত্যাখ্যান করার কোনো সুযোগ নেই; তা যে পক্ষই হোক না কেন। রায় প্রত্যাখ্যান করে আপনারা আমাদের আহত কমরন- এটি আদালত অবমাননার শামিল। আশা করি, এটি থেকে বিরত থাকবেন।'
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের এ বার্তা কানে নেয়নি জামায়াত। এর পরও আদালতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রায় প্রত্যাখ্যান করে ২০টি হরতাল পালন করেছে দলটি। সরকার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে কোনো আবেদন করেনি আদালতে। আদালতও স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ সপ্তাহেও ছুটির দিন ছাড়া বাকি সব কটি দিনই জামায়াতের হরতালের কবজায়।
জানতে চাইলে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল দেওয়া- এটি স্পষ্ট আদালত অবমাননা। এটি আদালতও বলেছেন, আমিও বলি। কিন্তু আমাদের যে আদালত অবমাননা আইন রয়েছে, সেখানে এ অপরাধের দায়ে শাস্তির বিধান নেই।' তিনি বলেন, "আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতালের অপরাধে শাস্তি দিতে চাইলে আদালত অবমাননা আইনটি সংশোধন করতে হবে। তবে দেশে প্রচলিত দণ্ডবিধির আওতায় হরতালকারীদের শাস্তির অওতায় আনার বিধান রয়েছে। এ আইনে শাস্তির মাধ্যমে এ রকম অদালত অবমাননার 'গর্হিত' কাজ বন্ধ করা যেতে পারে।" প্রবীণ এই আইনজীবী আরো বলেন, 'আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল দিয়ে নৃশংসতম অপরাধ ও জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টও উদ্যোগ নিতে পারেন। কারণ হাকোর্টের রায়েও হরতালের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত রয়েছে।'
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণার পর জামায়াতের ডাকা হরতালকে আদালত অবমাননা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। গত সোমবার কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের রায় দেওয়ার পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, 'যাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা নেই, তারাই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকে। জামায়াতও রায় নিয়ে হরতাল ডেকে আদালত অবমাননা করছে। তারা প্রমাণ করছে, আইনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধা নেই।' তবে জামায়াতের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা বিষয়টি দেখব। তবে এটি একা আমাদের বিষয় নয়। আদালতও বিষয়টি দেখতে পারেন।'
ভারতে বন্ধ্-এর বিরুদ্ধে কঠোর আদালত : জানা যায়, হরতাল বা বন্ধ্-এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ভারতের আদালত। সে দেশের হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় আছে এ ধরনের কর্মসূচির বিরুদ্ধে। বন্ধ্-এর বিরুদ্ধে প্রথম রায় আসে ১৯৯৭ সালে কেরালা হাইকোর্ট থেকে। ওই রায়ে জোর করে বন্ধ্ পালনে বাধ্য করাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরের বছর প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মাকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ ওই রায় বহাল রাখেন।
বন্ধ্ ডাকায় জরিমনা হয়েছিল বিজেপির : ২০০৪ সালে বোম্বে হাইকোর্ট ভারতের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিজেপি ও শিবসেনাকে ২০ লাখ রুপি করে জরিমানা করেন মুম্বাইয়ে বন্ধ্ ডাকার দায়ে। জোর করে বন্ধ্ পালন করায় শহরের ৫০ লাখ রুপির সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করে একটি বেসরকারি সংস্থা রিট করলে ওই রায় দেওয়া হয়। একই বছর তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা 'বাংলা বন্ধ্' অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন কলকাতা হাইকোর্ট। ২০০৭ সালের জুন মাসে দিল্লিতে ডাকা এক বন্ধ্-এ জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়াকে জাতীয় লজ্জা বলে উল্লেখ করেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
কানাডার সংবিধানে হরতাল অধিকারই নেই : কানাডার সংবিধানে ধর্মঘট বা হরতাল জাতীয় কোনো কর্মসূচি পালনের অধিকার নেই। ওই দেশের সুপ্রিম কোর্ট ১৯৮৭ সালে একটি রেফারেন্স মামলায় এ বিষয়ে রুল জারি করেন।
সুত্র
২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৭
কিবর বলেছেন: শুধু হরতাল ডাকার মধ্যেই তার সীমাবদ্ধ ছিল, প্রিকেটিং করতে বা লাঠি নিয়ে হাইকোর্ট অভিমুখে মিছিল করতে দেখা যায় নি। সত্যি তার খুব ধৈর্য্যশীল। তবে একটা নাসিম থাকা দরকার ছিল জামাতের।
৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১০
হাসান নাঈম বলেছেন: কোন আদালকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখান হয়েছে?
সেই আদালতে যার রায় বাদি বিবাদী কেউ মানে না?
যার রায়ের বিরুদ্ধে মাসব্যাপি রাস্তা বন্ধ করে শ্লোগান দিলেও আদালত অবমাননা হয় না?
সেই আদালত যার প্রধান বিচারপতি স্কাইপে কেলেঙ্কারী মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করে?
সেই আদালত যাকে কাজে লাগিয়ে তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা হয়েছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য??
সেই মেরুদন্ডহীন আদালত যে রাস্তার আন্দোলন আর সরকারের প্রভাবে যাবজ্জীবন স্বাস্তিকে বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড করতে বাধ্য হয়??
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় এত এত গলদ, যেটা জামায়াতের আইনজীবীরা এবং যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বার বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর কোন তোয়াক্কা না করে ট্রাইব্যুনাল যাচ্ছতাই ভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একের পর এক ফাঁসির রায় দিয়ে যাচ্ছে - আর তার প্রতিবাদে একটা হরতালও করা যাবেনা?
দেশে যে অরাজকতা চলছে - এব্যাপারে তো রাস্তার একটা ফকিরও জানে। এরকম সরকারের গঠন করা ট্রাইব্যনালের অন্যায় রায়ের প্রতিবাদে একটা হরতাল ডাকলে তাতে কি আদালতকে বৃদ্ধাংগুলি দেখানো হয়ে গেল?