নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
পাঁচতলার সিঁড়ির শেষ ধাপ। করিডোরের মেঝেতে ছোপ-ছোপ রক্তের দাগ। মেঝে ছাপিয়ে পাশের দেয়ালজুড়েও রক্ত। গুলির আঘাতে সামনের দেয়ালে অসংখ্য ছিদ্র। জানালার কাচও অক্ষত নেই। টুকরো টুকরো কাচ ছড়িয়ে রয়েছে মেঝেতে। ‘করিডোর’ লেখা একটি সাদা কাগজ ঝুলছে দেয়ালের একপ্রান্তে। পুলিশ টাঙিয়েছে এটি। এখান থেকে করিডোর কিছুটা সোজা গিয়ে দুই দিকে ভাগ হয়েছে। এই দুই দিকেই রয়েছে কয়েকটি কক্ষ। সিঁড়ির গোড়াতেও রয়েছে দুটি কক্ষ। একটি কক্ষের দরজা খোলা থাকলেও বাকিগুলো বন্ধ। হালকা আলো আর কড়া গন্ধ চারপাশজুড়ে। এমনই চিত্র দেখা গেছে বহুল আলোচিত জাহাজবাড়িখ্যাত ‘তাজ মঞ্জিল’-এর ৫ তলার জঙ্গি আস্তানায় গিয়ে। পুলিশের অভিযানের প্রায় ৭ দিন পর গতকাল সোমবার জাহাজবাড়ি খুলে দেয় পুলিশ। ভাড়াটিয়ারা সকাল থেকেই বাসা ছাড়তে শুরু করেন। ভাড়াটিয়ারা জানিয়েছেন, এখনো সেই রাতের আতঙ্ক কাটেনি তাদের। কোথাও জোরে শব্দ হলে আঁতকে উঠছেন তারা। জাহাজবাড়ির বাসিন্দা মো. শাহীন আমাদের সময়কে বলেন, জাহাজবাড়ির নাম শুনলে অন্য বাড়িওয়ালারা ভাড়াই দিতে চাচ্ছেন না। জাহাজবাড়িতে ভাড়া থাকতাম শুনলেই বাসা থেকে জোর করে বের করে দেন বাড়িওয়ালারা। একপ্রকার এই বিষয়টি গোপন করেই বাড়িভাড়া নিয়েছি। গত ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডের ওই বাসায় ‘অপারেশন স্টর্ম টোয়েন্টি সিক্স’ নামে পরিচালিত পুলিশের ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান নামে এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পালিয়ে যায় আরেক জঙ্গি। পুলিশ বলছে, ‘জাহাজবাড়ি’ নামে পরিচিত ৬ তলা ওই বাড়ির ৫ম তলার বাসাটি ‘জঙ্গি আস্তানা’ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। জাহাজবাড়ির তৃতীয় তলার বাসিন্দা মো. শাহীন। বাবা-মা আর ছোট ভাই-বোনদের নিয়ে এই বাড়িতে থেকেছেন বছরদুয়েক। ভাড়া দিতেন ১২ হাজার টাকা। ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে যান পরিবারের সবাইকে নিয়ে। এরপর কখনো মসজিদে, কখনো দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় কাটিয়েছেন। অনেক খোঁজাখুুঁজি করে এরই মধ্যে একটি বাসাও জুটিয়েছেন। কিন্তু পুলিশি বাধার কারণে এতদিন জাহাজবাড়ির নিজেদের বাসায় ঢুকতে পারছিলেন না। গতকাল পুলিশের অনুমতি মিললে বাসা বদলের কাজ শুরু করেন শাহীন। শুধু শাহীন নয়, জাহাজবাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারাও মালপত্র নিয়ে চয়ে যাচ্ছেন। বাড়িটির বিভিন্ন বাসা থেকে আসবাবপত্র বের করে আনার দৃশ্য দেখতে ভিড় করে স্কুলপড়–য়া শিক্ষার্থীরা। তবে কিছুুক্ষণ পরপর পুলিশ তাদের সরিয়ে দিচ্ছিলেন। তৃতীয় তলার অপর একটি বাসার বাসিন্দা সুমনা বেগম। ১৪ হাজার টাকা ভাড়ার ওই বাসায় দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। ঘটনার দিন সকালে বের হয়ে আর বাসায় ঢুকতে পারেননি তারাও। মিরপুর-২ নম্বরের নতুন ভাড়া নেওয়া বাসায় চলে যাচ্ছিল পরিবারটিও। অভিযানের আগে-পরের প্রায় পুরো সময় তিন তলার এই বাসাটিতে অবস্থান নেয় পুলিশের সোয়াট টিমের সদস্যরা। পুলিশ সদস্যদের ওই রাতে চা বানিয়েও খাওয়ান পরিবারটি। সুমনা বেগমের ছোট মেয়ে সাবিহা লালমাটিয়া মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছেন। এই কদিনে বাসায় ঢুকতে না পেরে পড়াশোনা করতে পারেননি। সাবিহা আমাদের সময়কে বলেন, ওই রাতে পুলিশ ছিল আমাদের বাসায়। শুধুই মনে হচ্ছিল জঙ্গিরা এসে সবাইকে মেরে ফেলবে। এখনো ভুলতে পারছি না সেই দুঃসহ স্মৃতি। এখনো কোথাও জোরে শব্দ হলেই আঁতকে উঠি। জাহাজবাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের মিরপুর থানার এসআই জহির উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, রোববারও আমরা ভাড়াটিয়াদের কয়েকজন বাড়িটির ভেতরে ঢুকতে দিয়েছিলাম। সোমবারও অনেকে ঢুকে নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে বের হচ্ছেন। ভাড়াটিয়াদের যেটি ইচ্ছা সেটিই করছেন তারা। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই বলে জানান তিনি। তবে রোববার জাহাজবাড়িতে ঢুকতে চেয়েও পুলিশের অনুমতি পাননি বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন ভাড়াটিয়া।
সুত্র
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮
আততায়ী আলতাইয়ার বলেছেন: কুমিল্লা ভারসিটির উদ্ধার হওয়া অস্ত্র দেখতেসি কল্যানপুরের জঙ্গি আস্তানায় উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের চেয়েও বেশি দেখা যাচ্ছে