নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
গত বছর সেপ্টেম্বরের শেষে ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজারকে ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হলে সবাই চমকে ওঠে। তার পরপরই রংপুরে ঘটে জাপানি নাগরিক কুনিয়ো হোশি হত্যা। বিদেশিদের নিশঙ্ক মনে বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ানোর মুক্ত পরিবেশে ছেদ পড়ে। হত্যার অভিযোগে আটক সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশি হলেও বিদেশি হত্যার পেছনের রাজনীতি খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয় না। উদ্দেশ্য নতুন না হলেও সন্ত্রাসের নতুন চরিত্র ও মাত্রা লক্ষ্য করার মত।
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশি নিহত হলে আতঙ্ক তৈরি হয় দেশি-বিদেশির মনে সমানভাবে। বিদেশি দূতাবাসগুলো নিরাপত্তার দাবিতে বেশ সোচ্চার হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা ঘাটতির কারণ দেখিয়ে পূর্বঘোষিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন, বৈঠক ও দেশীয় অনুষ্ঠান খুব দ্রুত বাতিল করে সারা বিশ্বে শঙ্কার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিদেশি চলাচলে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের দেশত্যাগসহ অনেক কিছুই চোখে পড়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক করে নিরাপত্তা জোরদার করতে স্নায়ুচাপ বাড়িয়ে দেয়। নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ঢাকা নিরাপদ মনে হলেও সারা দেশে বিদেশি নিরাপত্তার ব্যাপ্তি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
বাংলাদেশের নিরাপদ পরিবেশ না পেয়ে সন্ত্রাসী ক্রীড়নকরা বিদেশে আস্তানা গেড়ে বাংলাদেশে হামলা করার কলকাঠি নাড়লেও বিদেশি সরকারগুলোকে বেশ নির্বিকার দেখা যায়। সন্ত্রাসের বিশ্বায়নের সঙ্গে নিরাপত্তার ঝুঁকি আন্তর্জাতিক সীমানার বেড়া অনেক আগেই ভেঙে ফেলেছে। ইন্টারনেটের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সন্ত্রাসের মাত্রাও বেড়েছে। নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তার ধারণাও বদলে গেছে। সব দেশের দায় সৃষ্টি হয়েছে নিরাপত্তার বর্মকে শক্ত করার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোর সমকামী ক্লাবে জঙ্গি হামলায় অর্ধশত মানুষের জীবনহানি হলেও কোনো দেশ নিরাপত্তার অভাব নিয়ে চেঁচামেচি করেনি। নিজ দেশে মরলে নিরাপত্তা হুমকির মাত্রার হেরফের হয় না বলেই মনে হয়। ইস্তাম্বুলের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার পর দ্রুত বেগে মেরামত কাজ শেষ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যক্রম পুনরায় চালু হলে সবাই সাধুবাদ জানায়। জঙ্গি হামলার উদ্দেশ্য পরাভূত হয়েছে বলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। জঙ্গিবাদী হামলার পর দ্রুত জনজীবন স্বাভাবিক করে জঙ্গি হামলার উদ্দেশ্যকে পণ্ড করার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে জীবনধারাকে স্থবির করে ফেলা যাবে না বলে পশ্চিমা নেতাদের নির্দেশনা শুধু তাদের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেলেও তৃতীয় বিশ্বের প্রেক্ষাপট যেন সম্পূর্ণ আলাদা। ফ্রান্সের নিস শহরে ট্রাক দিয়ে পিষে মারলো ৮৪ জন নিরীহ মানুষকে। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী অকপটে বললেন ফ্রান্সকে জঙ্গিবাদের মধ্যেই বাস করতে হবে।
ইসলামিক স্টেট খেলাফতের পরিধি ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সমর্থিত বাহিনীর যুগপত্ আক্রমণের মুখে জায়গা হারাচ্ছে, প্রাণ হারাচ্ছে, সম্পদের ক্ষয় হচ্ছে। সম্মুখ যুদ্ধে পিছু হটলেও দৃশ্যত মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে জঙ্গি হামলার মাত্রা বেড়ে চলেছে। নিরাপদ স্থানের হদিস পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। বিদেশি দূতাবাসগুলো বাংলাদেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে মুখে স্বাগত জানালেও নির্ভীক আচরণ থেকে দূরেই থাকছে।
কূটনৈতিক পাড়াকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়ায় দেশীয়রা দুর্ভোগে পড়েছেন। চলাচলের কড়াকড়িতে গুলশান এলাকার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা পথে বসতে চলেছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতের সরকারি কৌশল হিসেবে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্ছেদ নোটিস জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে স্বাভাবিক আচরণের বিপরীত অবস্থা প্রদর্শন করছে। প্রতিরক্ষা বর্মকে শক্ত করে হামলার সম্ভাব্যতা ও ক্ষতি কমানো গেলেও ঝুঁকি কমানো যাবে না। নিশ্চয়তা তৈরি করতে হলে সব রাষ্ট্রকে দায় নিতে হবে এবং স্ব স্ব ভূমিতে জঙ্গি ও উগ্র মতাদর্শের নিরাপদ জায়গার অবসান ঘটাতে হবে।
গুলশানে হামলার পর সেনা অভিযানে সব হামলাকারী নিহত হয়েছে, শোলাকিয়ার ঈদ জামায়াতের হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে পুলিশ। সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে পাওয়া সূত্র থেকে কল্যাণপুর জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মিললে নয়জন ভয়ানক জঙ্গি নিহত হয়। সূত্র থেকে সূত্র খুঁজে গোয়েন্দারা এগুচ্ছে আর নতুন নতুন তথ্যের দেখা পাচ্ছেন। আইএস-এর নাম করে চালানো হামলার পেছনে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির মদদ সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে।
গুলশানে বিদেশি হত্যার পরিকল্পনা বিদেশের মাটিতে হয়েছে এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশিরাই হামলা সংগঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে বলে খবর বের হচ্ছে। বাংলাদেশের জঙ্গি হামলা শুরু থেকেই বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে ঘিরেই বিবর্তিত হয়েছে। বিএনপি জোট ক্ষমতা হারানোর পর ইসলামের নামে জঙ্গিবাদের বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসে। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল গঠিত হলে জঙ্গিবাদের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় শাসক পরিবর্তন। শাসক বদলে আন্তর্জাতিক শক্তির হস্তক্ষেপের ক্ষেত্র তৈরির উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই জঙ্গি হামলা আবর্তিত হয়। বিদেশি হত্যার পেছনে কাজ করেছে অদৃশ্য রাজনৈতিক স্বার্থ—যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করা।
যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীকে বাঁচাবার জন্যই চালিয়েছে ইদানীং কালের জঙ্গি হামলা। হামলার পরিকল্পনার নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ওয়াশিংটনের হোটেল, পরিকল্পনায় জড়িয়েছেন ফাঁসিতে ঝোলা যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান ও জামায়াতের দেশি ও বিদেশি নেতারা। হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে প্রবাসী বাঙালি কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীকে বলে প্রকাশিত হয়েছে খবর। কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক শেহজাদ রউফ অর্ক। এর আগেও একজন বাঙালি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক আইএসের জন্য যোদ্ধা সংগ্রহের কাজে নেমে ধরা পড়েছিল আরেক জন সরাসরি জঙ্গিদের হামলার পেছনে কাজ করছিলেন। এই সব বাঙালি বিদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশের জঙ্গিবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।
সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে সহিংস ইসলামের চিহ্ন পাওয়া গেলেও খুব একটা জায়গা করে নিতে পারেনি। বিদেশি বিদ্বেষের উপস্থিতি আগে কখনও দেখা যায়নি। ৩০ লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ধর্মান্ধতার বেড়াজাল ভেঙে মানুষের সার্বজনীন অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিবিষ্ট ছিল। শ্রেণি বৈষম্যের বিরুদ্ধে কঠিনভাবে প্রত্যয়ী বাংলাদেশ লড়েছে ধর্মান্ধ পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানকে বাঁচাতে গিয়ে ইসলামকে ভর করে রাজনীতি করা দলগুলো বেছে নিয়েছিল সহিংসতার পথ। নিরীহ জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল অন্যায্য যুদ্ধ। জিহাদি তকমা লাগিয়ে জায়েজ করতে চেয়েছিল গণহত্যা, ধর্ষণসহ মানবতা বিরোধী অপরাধকে। মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বদলে বাঁচানোর চেষ্টায় পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে।
দুইমেরু সম্পন্ন বিশ্বের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের মারপ্যাঁচে ফেলে বাংলাদেশের অঙ্কুর বিকশিত হতে বাধা পেয়েছে পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি দেশ নিয়ে গড়ে ওঠা পশ্চিমা মোর্চা থেকে। মদদ পেয়েছে উগ্রবাদী সহিংস ইসলামে বিশ্বাসী রাজনীতি। জনতার আক্রোশ থেকে বাঁচতে অনেক যুদ্ধাপরাধী আশ্রয় পেয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলোতে। ইউরোপ ও আমেরিকাতে গড়ে তুলেছে ইসলামের নামে উগ্রবাদী ঘাঁটি। চোখের সামনে সহিংস উগ্রবাদের বিস্তার ঘটলেও না দেখার ভান করে থেকেছে সেদেশের সরকার। ভূ-রাজনীতির স্বার্থ হাসিলের অবলম্বন হিসেবে ইসলামবাদী রাজনীতিকে সুরক্ষা দিয়েছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার নামে। আফগানিস্তানের মুজাহিদ বাহিনী সময়ের বিবর্তনে পরিবর্তিত অবয়ব নিতে থাকে, জন্ম হয় তালেবান ও আল-কায়েদা। পৃথিবী সংক্রামিত হতে থাকে জঙ্গিবাদের ক্যান্সারে। ইরাক যুদ্ধের অদূরদর্শিতা থেকে জন্ম নিল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক জঙ্গিবাদী অপশক্তি দায়েস বা ইসলামিক স্টেট এবং সিরিয়ার পশ্চিমা মদদপুষ্ট অরাজকতা থেকে পুষ্টি নিয়ে বিস্তার ঘটিয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করলো।
জঙ্গি হামলা হার্ড টার্গেট থেকে সরে গিয়ে সফট টার্গেটে নিবদ্ধ হলে নিরীহ মানুষ অকাতরে প্রাণ হারাতে থাকে। নিরীহ মানুষের নিরাপদ বিশ্ব হয়ে ওঠে মারাত্মকভাবে অনিরাপদ। কোথাও কম আর কোথাও বেশি। নিউইয়র্কের জোড়া স্তম্ভ ধ্বংস হলে ঘোষিত হলো জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
পঁচাত্তর পরবর্তী ২১ বছরের শাসনামলে ধর্মপুঁজি করা রাজনৈতিক দলগুলো নতুন করে জায়গা করেছে। ধর্মীয় মূল্যবোধকে কাজে লাগিয়ে নতুন দলেরও জন্ম হয়েছে। রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তিকে পরিবর্তিত করে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগাবার মানসে সহিষ্ণু ইসলামের মধ্যে উগ্রবাদকে ঢুকিয়ে মূলত তাদের শাসনকে স্থায়ী রূপ দিতে চেয়েছে। তৈরি হলো ধর্মান্ধকরণের মহাকৌশল, একদিকে আসলো পাকিস্তানি কৌশল অপর দিকে আসলো অঢেল রিয়েল, দিনার, ডলার ও পাউন্ড। ছোট থেকেই মাথা দখলের জন্য অলক্ষ্যে বদলে গেল পাঠ্যসূচী, গড়ে উঠলো নতুন নতুন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থ প্রাপ্তির বিদেশি নির্ভরতা কমাতে বিনিয়োগ করা হলো ব্যাংক, বীমা, হাসপাতাল, মিডিয়া, ব্যবসা ও বাণিজ্যে। গড়ে উঠলো বিশাল উগ্রবাদী ইসলামের আর্থিক সাম্রাজ্য। মানুষের মনকে প্রভাবিত করার জন্য বিভিন্ন মোড়কে জনকল্যাণমুখি সংস্থা। স্থায়ী ক্যাডার তৈরি ও ধরে রাখার জন্য শুরু করা হলো আর্থিক প্রণোদনা, চাকরি, ব্যবসার পুঁজি ও ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
প্রবাসে বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায় গড়ে উঠলো বাংলাদেশি যুদ্ধাপরাধী ও ইসলামি উগ্র মতাদর্শ ধারকদের নিরাপদ স্বর্গ। বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের ইসলামের দাওয়ার আড়ালে জিহাদি যোদ্ধা বানানো শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতারা দেশে চিহ্নিত হয়ে বিচারের মুখোমুখি হবার সম্ভাবনায় পড়লে পশ্চিমা দেশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশে চিহ্নিত জঙ্গিবাদী ও ইসলামি উগ্রবাদীদের দেখা যায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকার রাস্তায়, নির্বিঘ্নে প্রচার চালাচ্ছে, মসজিদে বয়ান দিচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, সেমিনার করছে, রেডিও-টেলিভিশন কেন্দ্র চালাচ্ছে, পত্রিকা প্রকাশ করছে, উগ্রবাদের বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। বিদেশে পড়তে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের জিহাদি বানিয়ে সিরিয়া পাঠাচ্ছে নতুবা বাংলাদেশ পাঠাচ্ছে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটাতে।
পশ্চিমা ডিগ্রির শিক্ষক সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সবচেয়ে বেশি ভয়ানক জঙ্গির জন্ম হয়েছে। শিক্ষকদের নামেও জঙ্গি হামলার সহায়তার অভিযোগ আসছে। যুক্তরাজ্যের শিক্ষা কর্মসূচির অংশীদার স্বনামধন্য স্কুলগুলোতে জঙ্গিবাদী মতাদর্শ শেকড় গেড়েছে। পশ্চিমা সখ্যে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বেশি জড়িয়ে পড়েছে। বাঙালি সংস্কৃতি ও কৃষ্টি চর্চার প্রতি অবহেলা ও অবজ্ঞা আত্মপরিচয় ও আত্মগরিমার জায়গা সঙ্কুচিত করে মরু সংস্কৃতির প্রতি ঝোঁক প্রকারান্তরে জঙ্গিত্ব বরণে শিক্ষার্থীদের উত্সাহিত করেছে। দোষ না ধরলেও দায় খুঁজতে হবে নির্মোহভাবে।
সরকার বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী বা জন-বিরোধী ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা হয় বিদেশের মাটিতে। বিদেশি হত্যার পরিকল্পনা হয় বিদেশের মাটিতে। বিদেশি নিরাপত্তার দায় কি বাংলাদেশের একার? বাংলাদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য নিরাপদ জায়গা করে দিয়ে নিরাপত্তা খুঁজলে সমাধান মিলবে না।
জঙ্গি হামলায় জর্জরিত ফ্রান্স হুমকির মুখেই ইউরোপ ফুটবল শিরোপা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। নিস শহরে ট্রাক হামলার ৮৪ জনের প্রাণহানি হলে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী বলেন ফ্রান্সকে জঙ্গি হামলার মধ্যেই বাসকরা শিখতে হবে।
বিশ্বকে নিরাপদ করতে হলে সব রাষ্ট্রকে সমানভাবে আন্তরিক হতে হবে। জঙ্গি মতাদর্শকে জায়গা দিয়ে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা যাবে না। রাজনৈতিক স্বার্থকে চরিতার্থ করতে জঙ্গিবাদের ব্যবহার থেকে সরে আসতে হবে। এক দেশের জঙ্গি সব দেশের হুমকি বলে স্বীকৃতি না দিলে জঙ্গি হামলা বন্ধ করা যাবে না। থামানো যাবে না নিরীহ মানুষ খুন। জঙ্গিবাদের দায় শুধু আক্রান্ত দেশের নয়, দায় সব দেশকেই নিতে হবে ভবিষ্যতে নিরাপদ পৃথিবী গড়তে হলে।
সুত্র
©somewhere in net ltd.