নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাস্থ্যখাত :সাফল্য এসেছে কঠিন নিষ্ঠায়

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৫


স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। যে কোনো কিছু হারালেও ফিরে পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু স্বাস্থ্য হারালে আর ফেরত্ আসে না। এমন সব আপ্তবাক্য কেবল কথার কথা নয়, স্বাস্থ্যের উন্নতি মানে প্রকৃতই একটি দেশের সব কিছুর উন্নতি। কারণ, যে কোনো উন্নয়ন ও সৃষ্টির পূর্বশর্ত হলো সুস্থ স্বাভাবিক জীবন। আর সেই সুস্থ স্বাভাবিক জীবন বাংলাদেশের বৃহত্ একটি জনগোষ্ঠীর জন্য একসময় ছিল অনেকটাই সোনার হরিণের মতো। কিন্তু সেই বিবর্ণ চিত্র আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের জাদুকরী প্রিজমের ভেতর দিয়ে সপ্তরঙায় ঝলমল করছে।

উদাহরণ দেওয়া যাক ব্রিটেনের বিশ্বখ্যাত জার্নাল ‘ল্যানসেট’ থেকে। ২০১৩ সালের ২২ নভেম্বর ও ২০১৪ সালের ২২ মার্চ অনলাইন সংখ্যায় ‘ল্যানসেট’ তুলে ধরেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের এক অভূতপূর্ব সাফল্যের চিত্র। ‘বাংলাদেশ : ইনোভেশন ফর ইউনিভার্সেল হেল্থ কভারেজ’ এবং হেল্থ ইন বাংলাদেশ : লেশসন অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শিরোনামের প্রবন্ধে ল্যানসেট জানিয়েছে—বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অভূতপূর্ব উন্নতির গ্রাফ স্পষ্ট। পাঁচ বছরের নিচের শিশুমৃত্যু রোধ, টিকা কার্যক্রমসহ বহু বিষয়ে শিক্ষা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্যের বিভিন্ন খতিয়ান তুলে ধরে ‘ল্যানসেট’ জার্নাল। কিছুদিন আগে ভারতের নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের যেসব খাতের উন্নতি দেখে প্রশংসার ফুলঝুড়ি ফুটিয়েছেন, তার মধ্যে স্বাস্থ্যখাত অন্যতম। তিনি বলেছেন, ভারত অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে থাকলেও স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত সূচকে বাংলাদেশের তুলনায় অত্যন্ত পিছিয়ে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিষয়গুলোতে ১৯৯০ সালে ভারতের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানে এগিয়ে আছে।

প্রকৃতপক্ষে অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রগতি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। অর্থনৈতিক প্রগতি হলেই মানবিক প্রগতির জন্য অর্থ পাওয়া যায়। মানবিক প্রগতির অন্যতম খাত হলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার যেসব খাতে অভাবিত সাফল্য এনেছে, তার মধ্যে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা অন্যতম। গত ৮ বছরে স্বাস্থ্যখাতের যে উন্নতির গ্রাফ সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে, তার কিছু চিত্র এখানে প্রদর্শন করা যেতে পারে। তবে শুরুতেই বলা যায়, এই উন্নতির গ্রাফের পথপ্রদর্শক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন দেশটির হাল ধরলেন তখন সারাদেশে চিকিত্সাব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত বেহাল। তিনি গরিব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সমপ্রসারণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করেন। সেসময় চিকিত্সকরা সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেতেন না। বঙ্গবন্ধু চিকিত্সকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিলেন। তখন সারাদেশে হাসপাতাল ছিল মাত্র ৬৭টি। তিনি সরকারি চিকিত্সা ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রতি থানায় একটি করে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত এভাবে সারাদেশে ৩৭৫টি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল নির্মাণ করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে প্রায় সপরিবারে হত্যার পর অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও এতিমদশা বিরাজ করে।

অতঃপর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এলে স্বাস্থ্যখাত পুনরায় জনবান্ধব রূপ পরিগ্রহ করতে শুরু করে। স্বাস্থ্যকে গণমুখী ও জনবান্ধব করার জন্য ১৯৯৮ সালে দরিদ্র মানুষের প্রতি লক্ষ রেখে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করা হয়। শেখ হাসিনা আইপিজিএমআরকে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালগুলোকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরু করেন, যা ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়।

২০০১ সালের পর পুনরায় কালোছায়া নেমে আসে স্বাস্থ্যখাতে। তবে ২০০৯ সালে পুনরায় সরকারে আসার পর গরিব মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন কাজ পুনরায় চালু করেন শেখ হাসিনা। এ পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১৩ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে, যেগুলোতে ৩১ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৮২ শতাংশ এলাকাবাসী সেবা নেয়। আর দিনের হিসাবে গড়ে সেবা নেওয়া মানুষের সংখ্যা ৩৫ জন। ক্লিনিকগুলো বাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় এবং সেখানে বিনামূল্যে সাধারণ রোগের ওষুধ পাওয়া যায় বলে দিন দিন এই সেবাগ্রহীতার সংখ্যাও বাড়ছে।

স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছেন। তাঁর একনিষ্ঠ পরিশ্রমের বর্ণিল চিত্রও আজ উদ্ভাসিত। সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের সফলতায় বাংলাদেশ বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। কালাজ্বরে মৃত্যুর হার এখন শূন্যের কোঠায়। যক্ষ্মা রোগের চিকিত্সায় সফলতার হার এখন ৯৪%। এইচআইভির বিস্তারের লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। ২০১১ সালে বার্ড ফ্লু প্রতিহত করা হয়েছে। হেপাটাইটিস-বি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, রুবেলার টিকা এখন সরকারি টিকা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশকে এখন পোলিওমুক্ত রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০১ সালেই বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত করেছিল। এ ধরনের বিভিন্ন জনবান্ধব ও গরিবমুখী কাজের ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত আজ তৃতীয় বিশ্বের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। নবজাতক মৃত্যুর হার বর্তমানে প্রতি হাজারে ২৪ এবং ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার বর্তমানে প্রতি হাজারে ৩১ জনে নেমে এসেছে। মাতৃমৃত্যুর হার বর্তমানে প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৮১। আর, ওষুধ রপ্তানিতে সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ায় বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮০ থেকে ৯০টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি করা হচ্ছে। সব জেলা হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা, যেগুলো ২৫০ শয্যার ছিল সেগুলোকে ৫০০ শয্যা এবং ৫০০ শয্যার হাসপাতালকে এক হাজার শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলো এখন গরিব মানুষের চিকিত্সাপ্রাপ্তির ভরসার জায়গায় পরিণত হয়েছে। সব সরকারি হাসপাতালে রোগীপ্রতি খাবারের বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৩৬টি। দেশে এই প্রথম জেলা হাসপাতালগুলোতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)। উন্নত বিশ্বের মতো নতুন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক। প্রত্যন্ত গ্রামের হাসপাতাল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’ প্রকল্পে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামের রোগীরাও বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের মতামত পাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। রোগীরা এখন উন্নত চিকিত্সার জন্য বিদেশে কম যাচ্ছে এবং জটিল ও দুরারোগ্য রোগের চিকিত্সা দেশেই গ্রহণ করতে শুরু করেছে।

স্বাস্থ্যখাতের অভাবিত সাফল্যে এই বর্ণিল চিত্র সৃষ্টির নেপথ্যে শেখ হাসিনার সরকার শেষ ৮ বছর পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে। তার সুফল পাচ্ছে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার ভেতরেও কীভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হওয়া যায়, তার জাদুকরী উদাহরণ প্রতিনিয়তই তৈরি করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, এভাবে এগিয়ে চলবে সকল বাধার বিন্ধ্যাচলকে অতিক্রম করে।
সুত্র

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



উনি চিকিৎসার জন্য যায় আমেরিকা, প্রেসিডেন্ট মরে সিংগাপুরে, উনার বয়স্ক মহিলারা গলায় তাবিজ লাগায়; শেখ হাসিনার দেশরত্ন!

২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


মোহাম্দ নাসিমের চিকিৎসা কোথায় হয়?

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪৮

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ২০০১ সালের পর পুনরায় কালোছায়া নেমে আসে স্বাস্থ্যখাতে।

ঔ সময়টাতে জ্বিনে আছর করছিল। খালেদা জিয়া জ্বিন ছাড়াতে জানতেন না।

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৩

ফ্রিটক বলেছেন: কামারকে দই এর বাইনাপত্র দিলে যা হয় তাই হচ্ছে। যে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিজে ডাক্তার না, তার মাধ্যমে এই খাতের কতটুকু উন্নয়ন সম্ভব,তা সচেতন সবার জানা। সরকারের ভুমিকা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.