নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিস্তা চুক্তির প্রশ্নটিকে এড়ানো কেন!

০৯ ই মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:৩২


বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি হবে কী-না তা একটি বড় ইস্যু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ এর ১০ জানুয়ারি দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারতে যান তিনি। তখন দুই দেশের মধ্যে ৫০ দফা যৌথ ইস্তেহার ঘোষণা করা হয়। এর ওপর ভিত্তি করে প্রায় ৮ বছর বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু বহু আকাঙ্ক্ষিত তিস্তার পানিবন্টনের ইস্যুটি বারবার ভেস্তে গেছে ভারতে চলমান নেতিবাচক পানি-রাজনীতির কারণে। এই রাজনীতির কথা সরাসরি এখন বলছেন বাংলাদেশের পানিমন্ত্রীও।

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে তিস্তা নিয়ে কী হবে, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে রোববার (৫ মার্চ) ঢাকায় ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’-এর অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এ-প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করেই বলেন, ‘পানি নিয়ে ভারতে এখন রাজনীতি হচ্ছে।’

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংহ ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুজনেই তিস্তার (পানিবণ্টনচুক্তি) বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'এ নিয়ে কাজ চলছে। তিস্তার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রেখে বাকিটুকু দুই দেশ ভাগ করে নেবে। তবে দুই দেশ কে কতো শতাংশ পানি নেবে তা এখনও ঠিক হয়নি।’

স্থল সীমানা নির্ধারণসহ বিভিন্ন ইস্যু বাস্তবায়িত হয়েছে। তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গীকার এবং প্রতিশ্রুতি থাকলেও পানি নিয়ে নেতিবাচক প্রাদেশিক রাজনীতির কারণে ভারত এ বিষয়ে চুপ করে রয়েছে। তবে এরই মধ্যে সন্ত্রাস ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে দুই দেশের কৌশল নির্ধারণে একটি কাঠামোর মধ্যে কাজ করতে ব্রতী হয়েছে।

বেশ কয়েকবার ভারত গেলেও প্রধানমন্ত্রী এবারের সফরটি দ্বিপক্ষীয়। এরই মাঝে ভারতের বর্তমান ও সাবেক –এই দুই প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফর করে গেছেন।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তার বিষয়ে একটি পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। এ চুক্তি অব্শ্যই হওয়া উচিৎ। আমাদের জন্য যেমন পদ্মাচুক্তি ভীষণ প্রয়োজন ছিল, সেরকমই আমাদের একটা বিরাট সমস্যা যে, তিস্তার পানি আমরা পাচ্ছি না। তাই ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর ঢাকা সফরকালেই তিস্তাচুক্তিটি স্বাক্ষরিত হবে বলে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার খুবই আশা করেছিল। তখন না হলেও জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী বারবার তিস্তা চুক্তির কথাই তুলে ধরেছেন।

এরপর নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হবার পর যখন ঢাকায় এলেন, তখন তিনিও ইঙ্গিতে বলেছিলেন, নীতিগতভাবে এ চুক্তি করতে তার কোনো বিরোধিতা নেই। তবে তিনি এটা বলার চেষ্টা করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ চুক্তির বিষয়ে সঙ্গে রাখতে হবে। আমরা ভেবেছিলাম, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের পরে পরিবেশটা ইতিবাচক হবে। তিস্তার বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত আসবে। এতদিন ধরে চুক্তিটি না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তা ‌আমাদের জন্য অত্যন্ত চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি আশা করব, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে সুসম্পর্ক রয়েছে, তার প্রতিফলন ঘটবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় বিচ্ছিন্নবাদীদের কঠোর হাতে দমন করার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘নো টলারেন্স’ নীতি ও সিদ্ধান্ত ভারতেও সমাদৃত হয়েছে। আমরাও আশা করব, আমাদের প্রাণের দাবির বিষয়ে ভারত জোরালো উদ্যোগ নেবে।’

আবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, ‘এ সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সীমান্তে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ হত্যার বিষয়টিও উঠে আসা উচিত। সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে তা দু:থজনক। বন্ধুরাষ্ট্রের কাছ থেকে এমন আচরণ কখনোই কাম্য নয়। যদিও ভারত বরাবরই বলে আসছেন, তারা সীমান্তহত্যাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনবে।কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক মোহম্মদ জমির বাংলানিউজকে বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের এসফরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা আশা করি যে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এবং (তিস্তার) পানিবণ্টন সমস্যা নিয়ে গঠনমূলক কাজ হবে। এ সফরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণদানকারী ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানো হবে। ১৯৭১-এর স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের শহীদ ও তাদের পরিবারগুলোর প্রতি বাংলাদেশ সব সময় সজাগ।বঙ্গবন্ধুও সজাগ ছিলেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সকল ক্ষেত্রে ভারত যে ভূমিকা নিয়েছে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে এজন্য বাংলাদেশ সরাসরি কৃতজ্ঞ জানিয়েছে। যারা শহীদ পরিবার আছেন তাদের স্মরণ করি শ্রদ্ধার সাথে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শুধু উন্নয়ন বা বাণিজ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রয়োজন বোধে দুই বিরুদ্ধে আমরা যা দেশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রুখতে উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক ভিত্তিতে সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে। এ সফরের মাধ্যমে যে ইস্যু সমাধা হয়নি সেগুলো উদ্যেগ নেওয়া হবে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক আব্দুল মোমেন চৌধুরী বলেন, ‘পরপর দু’জন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এ কারণেই প্রটোকলের দিক থেকে দেখলে শেখ হাসিনার সফরটি ‘ডিউ’ হয়ে ছিল। এ সফরে বাংলাদেশের সকলেই চেয়ে আছে তিস্তার বিষয়ে কী হবে। এটাই প্রথম ও প্রধান বিষয়। এত বছর হয়ে গেল, তিস্তা ইস্যুটি ভারত সমাধা করতে পারেনি। ড.মনমোহন সিংয়ের সফরের পরেও এ বিষয়ে অগ্রগতি হলো না, কেন হলো না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সম্পর্কের উন্নতি তো হচ্ছে না। তিস্তা নিয়ে মমতার কী মত সেটাও জানা যাচ্ছে না।’

আব্দুল মোমেন চৌধুরী আরও বলেন,‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে অনেক কিছুই হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত দুই পক্ষই এতে লাভবান হয়েছে। তবে আরো অগ্রসর হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর এ সফরটি হওয়া একান্ত দরকার।’

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে ১ বিলিয়ন ও ২০১৫ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে ২ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। এবারের সফরে ভারতের প্রদেয় ঋণের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। আর সেজন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে ভারতের মোট ৯টি প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা চুক্তি হতে পারে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের ভারত সফরে দু্ই দেশের মধ্যে ৪০টির বেশি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম চুক্তি হতে যাচ্ছে নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে। কিন্তু তিস্তা নিয়ে সকলেই চুপ। সবাই সম্ভাবনার কথাই বলছে।কিন্তু তিস্তা নিয়ে প্রবল আশাবাদের কথা কেউই বলছেন না। যদিও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক আশাবাদ ব্যক্ত করছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ড. জয় শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক শেষে, তথাপি স্বয়ং পানিসম্পদমন্ত্রীর কণ্ঠে ঝরেছে পরোক্ষ হতাশারই ইঙ্গিত:‘পানি নিয়ে ভারতে এখন রাজনীতি হচ্ছে’।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় নির্ধারণের জন্য গত ফেব্রুয়ারিতে জয়শঙ্কর বাংলাদেশে এসে পানি নিয়ে ইতিবাচক কিছু শোনাননি। তিনি এ বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ কিছুই বলেননি।
সূত্র

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভারত কখেনাই নিজের স্বার্থ ছেড়ে বাংলাদেশের স্বার্থে চুক্তি করে নি, করবেও না!

আওয়ামীলীগ িক তা বোঝে না? বোঝ! বুঝেও ক্ষমতার স্বার্থে স্রেফ দিয়েই যাচ্ছে! বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূণ্য!
হোক তা পানি! ট্রানজিট ফির অলিক সিঙ্গাপুর বানানোর স্বপ্ন! সীমান্তে হত্যা! বানিজ্য বিশাল ঘাটতি! চড়া সুদে ঋন ফাদ! সংস্কৃতিক আগ্রাসন! সবই ভারতের একতরফা স্বার্থ!

নিজের অধিকার নিয়ে জাগার লোকও কি হারিয়ে গেছে?????

২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:১২

সঞ্জয় নিপু বলেছেন: আসলে কিচ্ছুই হবে না এই তিস্তা চুক্তি আমাদের সাথে , এর সাথে পশ্চিম বঙ্গের রাজনৈতিক অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে।

৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬

এক হতভাগা বলেছেন: তিস্তা নিয়ে রাজনীতি শুধু ভারত নয় বাংলাদেশেও হচ্ছে ! তিস্তা নিয়ে এত বেশি আলোচনা হচ্ছে যে এর নিচে চাপা পরে যাচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু । বিশেষ করে নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে চুক্তিটা বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী । ভারতীও পুরনো অস্ত্র কেনার চুক্তি থাকছে এখানে । আছে চড়া সুদে ঋণ দেয়ার চুক্তি ! গঙ্গা চুক্তি করেও কি ন্যায্য পানি পেয়েছিলো বাংলাদেশ ??? সুতরাং তিস্তা চুক্তি করেও ন্যায্য পানি কখনো পাবে না বাংলাদেশ, বরং তিস্তা কে আলোচনায় রেখে অন্যান্য আমাদের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করিয়ে নিচ্ছে ভারত । ভারতের একটা প্লাস পয়েন্ট হলো আমাদের যেকোনো দলের কাছ থেকেই দেশ বিরোধী চুক্তি করিয়ে নিতে পারে ভারত শুধু একটি কথার ভিত্তিতে '' সামনের নির্বাচনে ভারত আপনার পাশে থাকতে চায় '' !! যেদেশে ক্ষমতার উৎস জনগন নয় সে দেশের সরকারকে সহজেই পাশের বড় দেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.