নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামীম কিশোর

তামীম কিশোর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোটরবাইক‬ ২

১২ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৪৭

চায়ের দোকান, সাথে বিড়ি সিগারেট আর সন্ধাকালে পুরি সিঙ্গারা বেচে।
শামিম ক্যাশে বসে দেখে তার ছোট ছেলেটা ফেল ফেল কইরা তাকিয়ে আছে দোকানের পাশে দাঁড়ানো মোটরবাইকটার দিকে। মুন্না মাত্র এসে থামল। বাইকে বসেই শামিমরে বলল চা দিতে।

২/৩ টা ডালাই কারখানার মালিক মুন্না। পুরান বাইকটা বেচে নতুন একটা নিছে, একদমই নতুন।কাউকে হাত লাগাতে দেয়না। সবসময় ধুয়ে মুছে চক চক রাখে। মনে হয় এইমাত্র কিনে আনল। পাশের বাড়িওয়ালীর ছেলে শ্যামল একদিন বলছিল চালাবে। উত্তরে মুন্না বলেছিল,

এহ!!! সরে অ পরে অ ...

শ্যামল আর কোনোদিন চালাতে চায়নি।

বাইকে বসেই ৩/৪ চুমুকে চা শেষ করলো। শামিমকে বাইকটা দেখতে বলে তার কারখানার গলির ভেতরে হাওয়া হয়ে গেল।

শামিমের ছোট ছেলে সায়েম, অর্ধনগ্ন হয়ে মাটিতে বসা। পাশে তার মা দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া সিঙ্গারার খামিরের মধ্যে এক দলা আলু সেদ্ধ ভরে আর মুখটা গুজে দেয়। সায়েম মার শাড়ি টানে আর আঙ্গুল দিয়ে মোটর বাইক দেখায়। শামিমের বউ টান দিয়া শাড়ি ছারায়া নেয় আর পা দিয়ে সায়েমকে দূরে সরাইয়া দেয়, বলে

কাপড় ছার, কামের সময় জালাইছনা...

সায়েম চার হাত পায়ে হেঁটে আবারো মার দিকে আগায়। শাড়ি ধরে টানে আর ছল ছল চোখে মার দিকে চায়। শামিমের বউ নিচে তাকায়া আরও বিরক্ত হয় আর মুখ বাকিয়ে বলে,

নাই ২ পয়সা, আবার গাড়ি!
তর বাপেত আমারে বান্দি পাইসে, সরলি হেনতে...

ঝাড়ি দিয়ে কাপড় ছাড়ায় আবারো। সায়েমের নিচের ঠোটটা উলটে আসে, চোখ ভিজে যায়, ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে সায়েম।

শামিম বুঝতে পারে তার বউ কোন কারনে তার উপরে চটা। অন্য সময় হলে ছেলের সাথে এই আচরণের কারনে হয়তো ২/১ টা কথা বইলাই ফেলত।

ক্যাশ থেকে উইঠা গিয়া আস্তে করে কোলে নেয় শামিম সায়েমকে। সায়েম ফুঁপাতে থাকে অনবরত। বাবা তাকে কোলে নিয়া দোকান থেকে নামে আর কিছু না বলেই মুন্নার পার্ক করা বাইকটার উপরে বশায়া দেয়।

অর্ধনগ্ন সায়েম কিছুক্ষন হতভম্ব, জ্বল জ্বল করা চোখ মুহূর্তে বদলায় হাঁসিতে। সিটে বসে সামনের দিকে ঝুঁকে পরে, কাত করা বাইকের নাগালের মধ্যে একটা হাতল ধরে সে আর একটা হাত শূনে রেখে মুখ দিয়ে শব্দ করতে থাকে...

ভুম ভুম ভুমমমম... ভুউউউউউউউউউউউ... ... ...পিপ পিপ... ... পিইইইইইইপ ...

শামিম বাইকের পাশে দাঁড়াইয়া ছেলের আনন্দ দেখে।
হঠাৎ মুন্না উপস্থিত গলির মাথায়।

কিরে শাইমা তরে না কইসি গাড়ি দেইখা রাখতে... নামা তোর পোলারে...
এহ... সিটটারে করসে কি দেখসত?

শামিমের থতমত মুখ। তড়িঘড়ি করে পোলারে নামায়া দোকানের মেঝেতে রাখে। সায়েম আবারও ফোঁপাতে শুরু করে। শামিম দোকান থেকে ন্যাকরা এনে বাইকের সিটটা মুছে দেয়। মুন্না মোটরবাইক ে চড়ে বসে। স্টার্ট দেয়, শামিমকে চায়ের দাম দিতে দিতে বলে,

জানোস, গাড়ি ধুইতেই কত টেঁকা লাগে?

মুন্নার বাইক মৃদু ভুম ভুম শব্দ করতে করতে মুরাদপুর জিরো পয়েন্টের দিকে হারিয়ে যায়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:২১

উল্টা দূরবীন বলেছেন: :|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.