নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামীম কিশোর

তামীম কিশোর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোটরবাইক‬ ৩

১২ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৫০

ধীর পায়ে এগুতে থাকে মেজবা, রোকনের ঔষধের দোকানের দিকে। এই দোকান, এর পর আরও অন্তত ১৪ টা দোকানে যেতে হবে।

বয়স ২৩, ডিগ্রি পরীক্ষাটা না দিয়েই চলে এসেছে ঢাকায় ঔষধ কোম্পানির চাকরীর জননে। যদিও রাজনৈতিক সমস্যাটা না হলে পরীক্ষাটা দেয়া ই যেত।সারাদিন ইস্ত্রি করা সার্ট আর প্যান্ট পরতে হয়। তবে গলিতে কাদা থাকলে আর প্যান্ট গোটানের জন্নে এরিয়া ম্যানেজার শুধু একটু ভ্রু কুঁচকায়। তবুও প্রতিদিন কাজ শুরুর আগে টাইটা সে পরীক্ষা না করে ছাড়েনা।

দোকানের কাছাকাছি আসতেই, সেলিম ভাই শব্দবিহীন লাল মটরবাইকটা স্টার্ট দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। যেন, দেখেও না দেখার একটা ভান। বড় কোম্পানি, ভালো বেতন, তাই মোটরবাইক টাও বেশ, বোতাম টিপে স্টার্ট দেয়।

১৪টা থেকে অন্তত ১০টা দোকানে অন্তত ১০০০ টাকার ওষুধ বিক্রি করতে পারলে, এই সপ্তাহের লক্ষ্যটা পূরণ হবে।
তাকে দেখেই রোকন বলে,

ঐ মিয়া, ডেলি ডেলি কেন আহেন... ছেস্রার মতো?
কইসিনা লাগবোনা!

মেজবা হকচকিত হয়ে পরে, আমতা আমতা করে বলে,

না... মানে... যাইতেসিলাম একদিকে, আপনে আসেন ভালো?

এক দোকানএ না করে দেয়া মানে সম্ভাবনা কমে যাওয়া। তারপর ও
কিছুক্ষন দাড়িয়ে ত্থাকে মেজবা।

মিয়াঁ, টেঁকার লাইগা রং ভি করায়ার পারিনা...
আপনে আয়া খাম্বার লাহান খাড়ায়া থাকেন...
হোম্নের হপ্তায় আয়েন... যান!!

মেজবার মনে পরে যায় ঢাকা ফার্মেসীর কথা। বুড়ো আর যাই হওক রোকনের মতো এমন খেছ খেছ করে না। চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলে ঠিকই কিন্তু শেষ মেশ কিছুই কেনে না। আজ পর্যন্ত, সিভিটা ছাড়া বুড়োর কাছে মেজবা আর কিছুই বেচতে পারে নাই। খালি মুখে মধু ভরা...

মেজবা দোকান থেকে বের হয়ে, পরবর্তী দোকানের দিকে আগায়।
চাকরির প্রথম মাস এইটা। এইভাবে প্রতি মাসে ১০,০০০ করে ৪ মাস করতে পারলেই একটা মোটরবাইক দিবে, এরিয়া ম্যানেজার। তবে বোতাম ওয়ালা মোটর বাইক পাইতে হইলে আরও ৬ মাস ঠিক ঠাক ১৫,০০০ টাকার ঔষধ বিক্রি করতে হবে।

বাইক ছাড়া গেলে আজকাল দোকানদার কেন, দোকানের কর্মচারীও দাম দিতে চায়না। কিছু বললেই বলে,

বসেন, মাহাজন এখন বেস্ত।

মেজবা ঢাকা ফার্মেসীর সামনে এসে দেখে ৩ টা মোটরবাইক দোকানের সামনে। বুড়ো মেজবাকে দেখেই হাসি মুখে বলল,

বসেন, এনাদের বিদায় করে আপনার সাথে কথা আছে।

মেজবা বসলো। মনে মনে ভাবে, আর মাত্র ৪টা মাস, তারপর মেজবারও মোটরবাইক থামিয়ে এই দোকানের সামনেই নামবে। সবার আগে বুড়ো তার সাথেই কথা বলবে আর বড় কোম্পানির লোকজন অথবা দোকানের কর্মচারী তাকে দেখবেই দেখবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.