![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্যারিসে আইএসের আক্রমণের পর ফরাসি যুদ্ধজাহাজ শার্ল দ্য গল ভূমধ্যসাগর থেকে সিরিয়ায় আইসিস অবস্থানের ওপর বিমান হামলা করে যাচ্ছে। মার্কিনিরা তুরস্ক আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিমানক্ষেত্র থেকে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সম্প্রতি জি-২০ দেশগুলোর যে সভা হয়েছে, সেখানে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে সবাই এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, আসলে মূল শত্রু হচ্ছে আইএস। আসাদকে নিয়ে আগে যে মতপার্থক্য ছিল সেটা এখন কৌশলের প্রশ্নে এসে ঠেকেছে। তাহলে আইসিসের বিরুদ্ধে পরাশক্তিগুলোর সহযোগিতার একটা পরিস্থিতি কিছুটা তৈরি হয়ে এসেছিল; কিন্তু রুশ বিমান ভূপাতিত করার ঘটনা সব আবার এলোমেলো করে দিয়েছে।
পরিণতি কী হতে পারে?
অনেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটে যেতে পারে বলছেন। বিশ্বযুদ্ধের প্রথমে যে রকম স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়, এখানেও সেরকম ঘটছে। তবে তেল ও দাহ্য পদার্থের ওপর নির্ভরশীল সভ্যতা, পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়ন ও বাজার ব্যবস্থার ওপর প্রতিটি দেশের যে নির্ভরশীলতা, তাতে যুদ্ধ পরাশক্তিগুলোর জন্য আত্মঘাতী হবে। তাছাড়া রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর পক্ষপাতী নয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ন্যাটো। পাশ্চাত্যে থিংকট্যাংক ও নীতিনির্ধারকদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, পাশ্চাত্যকে যুদ্ধে নামিয়ে আনা সবসময়ই আল কায়দার দিক থেকে একটি পরিচিত কৌশল ছিল। সেই কৌশল বিফল হয়েছে দাবি করা যাবে না।
আইসিস আল কায়েদা নয়। একটি ভূখ- দখল করে একজন খলিফার নেতৃত্বে গঠিত একটি দেশ হিসেবে হাজির হয়েছে সে। একে মোকাবেলার কোনো স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন নীতি-কৌশল পাশ্চাত্যের আছে বলে মনে হয় না। কারণ আইডিওলোজীকে ধ্বংস করা যায় না। অপরপক্ষে যত সাধারণ মানুষ আহত হবে বা গৃহহীন হবে তত আইসিসের জানবাজ যোদ্ধার সংখ্যা বাড়বে। যাদের জন্মই হইছে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তারা উগ্রপন্থি হওয়া স্বাভাবিক। সাইকোলোজি এটাই বলে। আমার এ মন্তব্য অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য না হতে পারে। কিন্তু তার মীমাংসা আজ নয়। এটুকু আপাতত বুঝলে যথেষ্ট, ইরাক আক্রমণ থেকে শুরু করে আজ অবধি পাশ্চাত্য নীতি ও কৌশলের ফল হয়েছে জিহাদি যুদ্ধ পরাজিত করা দূরের কথা, বরং এই যুদ্ধ আল কায়দা থেকে আইসিসে রূপান্তরিত হয়েছে। জিহাদি মতাদর্শ ও কৌশলের গুণগত পরিবর্তন ও রূপান্তর ঘটেছে। একে উপেক্ষা করার সুযোগ খুব কম। এবং দুনিয়াব্যাপী এই যুদ্ধ তরুণদের প্রবল আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছে।
সিরিয়ার যুদ্ধের মধ্যে নতুন যে যুদ্ধ-শরণার্থী সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার ফলও সুদূরপ্রসারী হবে। সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের জনপদগুলো যুদ্ধে বিধ্বস্ত ও ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এখন পাশ্চাত্য শরণার্থী নিতে রাজি নয়। তারা তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে। এর পরিণতি কী দাঁড়ায় এখনই বলা সম্ভব নয়, তবে তা ভালো হবে না একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেলে আর পেছনে যাবার জায়গা থাকে না, তখন মরণকে উপেক্ষা করে সামনে যায় মানুষ। শরনার্থীদের ক্ষেত্রে এমন হলে পশ্চিমাবিশ্ব খুবই খারাপ পরিস্থিতিকে ফেস করতে হবে।
©somewhere in net ltd.