![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একটা 'আমি' হবো এই ইচ্ছা ও আকাঙ্খায় কেটে গেছে দুইটি দশক হই হই করে হয়ে ওঠা হয়নি পূর্ণাঙ্গ ভাবে কখনই অতঃপর আমার ইচ্ছারা ডালপালা মেলেছে আজ কত শত প্রতিক্ষা প্রহর শেষে, কত শত সাধনার পর আমি একটা 'আমি' হব এই চিন্তায় কেটে যায় রাত
রাত ১১.৪৫ । মেয়েটি আজ খুব যত্ন করে কফি বানাচ্ছে সাধে যেন কোন ঘারতি না হয় । এ পর্যন্ত সে ৯ কাপ কফি বানিয়েছে একটিও তার মন মত হয় নি কোনটায় মিল্ক পাউডার বেশি দিচ্ছে, কোনটায় কফি মেট । গরুর দুধ যতটা সম্ভব গরম করে ঘন করে ফেলছে । এবার মনে হয় একটু চিনি বেশি দিলেই হবে । দু কাপ পারফেক্ট কফি তৈরি করে আর একটা জিনিস মিশাতে হবে আজকের কফিটি হতে হবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর। রাত ১১.৫৫ মেয়েটি এখন নুপুর পরবে পায়ে । ঠিক ৫ মিনিট পর ওর প্রথম বিবাহ বার্ষিকী । ওর বিয়ের ৪ বছর হলেও এটাই ওর প্রথম বিবাহ বার্ষিকী কারন ওর বিয়ে হয় ৪ বছর আগে ২৯ সে ফেব্রুয়ারি ।
******************
মেয়েটির নাম রিদিতা বয়স ২২ । ৬ বছর আগে যখন ওর বয়স ১৬ স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে নতুন কলেজে । নতুন পরিবেশ নতুন মানুষদের সাথে পরিচয় । হোস্টেলে থাকা শুরু করে । খাচার পাখি মুক্ত হলে যেমনটা হয় ওর তেমনটা হয়েছিল । এর মাঝে পরিচয় হয় শুভ্রর সাথে । রিদিতা বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ডের পরিচিত । রক্ত দিতে গিয়ে পরিচয় । রিদিতাকে পছদ না করার কোন কারন নেই আবার শুভ্রও ভালো চাকরি করে দেখতে হান্ডসাম ভালো লেগে যায় দুজন দুইজনের । তারপর প্রেম । প্রথমে দেখি কি হয় থেকে রিদিতা সত্যি সত্যি ভালোবেসে ফেলে শুভ্রকে, শুভ্রও তার অতীত ভুলে রিদিতাকে আঁকড়ে ধরতে চায় বেচে থাকার পথ খোঁজে । কিন্তু একটু বেখেয়ালি ভুল !! নতুন ভালবাসায় মগ্ন দুজন , পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষায় রিদিতা ফেল করে বসে ৩ টা সাবজেক্টে । জানতে পেরে যায় রিদিতার পরিবার । কাউকে কিছু না জানিয়ে এলাকার কলেজে ট্র্যান্সফার করে নিয়ে যায় ওকে । শুভ্রর সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ । রিদিতা তবুও অপেক্ষা করে আবার ফিরে পাবে শুভ্রকে ।
*******************
সোহান , স্কুল ,কলেজে বিতর্ক , প্রকাশনায়, স্পোর্টস সাংগঠনিক কার্যক্রমে একটিভ থাকা ছেলেটি ইনেক্তিভ শুধু প্রেমেই । ওর সাথের ছেলেরা যখন হিসেবে ব্যাস্ত কে কয়টা প্রেম করছে তার , সোহান তখন শুধু ভাবে ওর মত কালো , হাল্কা পাতলা ছেলেটি প্রেমের বাজারে একেবারেই মূল্যহীন । ফাইনাল ইয়ারে বসে ডিপার্টমেন্টের একটা প্রগ্রামে ফার্স্ট ইয়ারের একটা মেয়েকে দেখে চোখে আটকে যায় তার । খুব সুন্দরী ছিল না মেয়েটা হাল্কা গড়নের মধ্যে একটা ইনোসেন্ট ভাব ছিল আর সেটাই চোখে লেগে যায় সোহানের । মজার ব্যাপার হল মেয়েটাই তার সহকারী হল তাই কাজের জন্য মাঝে মধ্যেই ফোনে বা সরাসরি কথা বলতে হত । বন্ধুদের বলে বন্ধুরাও উঠে পরে লাগে । প্রোগ্রাম শেষ হয়ে যায় । ওদের কথা চলতে থাকে এক সময় বলেই দেয় সোহান ভালবাসে তাঁকে । ভালোবাসা পূর্ণতা পায়না সোহানের । মেয়েটা বলে সে তার পরিবারের কাউকে কষ্ট দিতে পারবে না । সোহান মেনে নেয় শুধু বলে তাঁকে সাপোর্ট দেবার জন্য যেন পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করার যোগ্য করতে পারে নিজেকে । ১ বছর চলে ওদের এমন কথা, সোহানের পরীক্ষা চলে আসে পরীক্ষা চলে আসে মেয়েটিরও যোগাযোগটা কমে আসে । এর পর শুনতে পায় কোন এক ছেলের সাথে প্রেম করছে মেয়েটি ।
****************
রিদিতার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ ওর পরিবার আর অপেক্ষা করতে চাচ্ছে না । ভালো ছেলে খুজতে থাকে । পেয়েও যায় ছেলে বিসিএস ক্যাডার । ছেলের পরিবার রিদিতাকে দেখে পছন্দ করেছে শুধু ছেলে নাকি গাইগুই করছে নিশ্চয়ই কোন সমস্যা আছে । ভালভাবে খবর নিয়ে দেখা গেল কোন সমস্যা নেই মেয়েকে এই ছেলের হাতে তুলে দেওয়াই যায় । দুই পক্ষ সম্মত হল ছেলে মেয়ে নিজেরা কথা বলুক ।
***********
ফ্লাক্সে করে কফি এনে সোহানের পাশে বসল রিদিতা ?
রিদিতাঃ আজ তারিখটা মনে আছে তোমার ?
সোহানঃ হ্যা আজ আমাদের বন্ধুত্তের ৪ বছর ১০ দিন আর আমাদের বিয়ের ৪ বছর ।
রিদিতাঃ ৪ টা বছর কেটে গেল ।
সোহানঃ ৪ বছর ১০ দিন ।
রিদিতাঃ তুমি একটুও বদলাও নি ।
সোহানঃ বদলানো কি ঠিক হত ?
রিদিতার মনে পরে যায় সোহানের সাথে দেখা হওয়ার প্রথম দিনে । প্রথম কথা সেই বলে
রিদিতাঃ আমাকে সাহায্য করতে পারবেন ?
সোহানঃ কেমন ?
রিদিতাঃ আমি একটা ছেলেকে ভালবাসি, আমি আপনাকে বিয়ে করব আপনি বিয়ের পর আমাকে ওর কাছে রেখে আসবেন । আপনার মেয়ের অভাব হবে না আমি আপনার জন্য ভালো মেয়ে খুজে দেব প্রমিজ ।
সোহান হাসে । সোহান নিজেই বলতে এসেছে সে কোন ভাবেই এ বিয়ে করবে না , ইনফ্যাক্ত সে বিয়েই করবে না । কোন মেয়েকে নতুন করে ভালোবাসা তার পক্ষে সম্ভব না।
সোহান আর রিদিতার বিয়ের পর রিদিতা গিয়েছিল শুভ্রর কাছে , নাহ শুভ্র পারেনি । রিদিতা চলে যাবার পর শুভ্র তার আগের ভালোবাসা ফিরে পায় বিয়ে করে ওরা । সোহান বার বার বলেছিল ওকে ফিরে যেতে নতুন করে সংসার শুরু করতে রিদিতা যায় নি । এই চার বছরে সোহান রিদিতাকে কখনো বুঝতে দেয়নি সে তার পরিবারের বাইরে আছে । রিদিতার প্রয়োজনটা কিভাবে যেন আগে বুঝে যায় সোহান তাই কিছু না চাওয়ার আগেই স্বামীর মত সব দায়িত্ব পালন করে গেছে । কিন্তু স্বামীর অধিকারে কখনো সামনে দাড়ায়নি রিদিতার । বরং প্রতি মুহূর্তে মনে করিয়ে দিয়েছে সে একজনকে ভালোবাসে । রিদিতা দেখত প্রতি রাতে ছাদে তারাদের সাথে কথা বলছে সোহান ।
রিদিতাঃ তুমি এখনো ওকে আগের মতই ভালোবাসো ?
সোহানঃ হ্যা , আগের মতই । রিদিতা তোমাকে আমি আগে বলছি ও ছাড়া আমি আর অন্য কাউকে ভালোবাসার চেষ্টাও করব না ।
রিদিতা মগে কফি ঢালে , নিজে এক মগ নেয় সোহানকে এক মগ দিতে দিতে...
রিদিতাঃ সোহান তুমি কি জানো গত এক বছর ধরে আজকের দিনটির জন্য অপেক্ষা করছি ? গত একবছরের বেশি সময় ধরে আমি বুঝতে পারছি আমি তোমাকে ভালবাসি । তোমার ভালোবাসার কাছে বার বার হেরে বুঝেছি ভালোবাসা কি । সোহান আমি আমার প্রথম ভালো্বাসা পাইনি আমার দ্বিতীয় ভালোবাসা আমি ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে বেচে আছে তা আমি মেনে নিতে পারবো না । মৃত্যুটা তাই অনিবার্য ছিল । তুমি এই মাত্র যে কফিটায় চুমুক দিলে তাতে পটাসিয়াম সায়ানাইড ছিল । তুমি কিছুক্ষণের মধ্যে মরে যাবে , আমি চাইনা তুমি একটুও কষ্ট পাও অনেক ভালবাসিতো, তাই পটাসিয়াম সায়ানাইড দিলাম । অপেক্ষা করো আমিও আসছি ।
পরের দিন তদন্তকারি দল দুইটা লাশের পাশে একটা কাগজ পেল । যেখানে লেখা ছিল "আমাদের মৃত্যুর জন্য ভালোবাসা দায়ী "
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২১
নষ্টছেলে তানিম বলেছেন: ভাই এত জোরে হাসি দিছিলেন !!!! এতদিন পর শুনলাম !!!
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ২:২৪
ছয় শব্দের অস্তিত্ব বলেছেন: হাঃ হা হা আহ হাঃ হাঃ