নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লঘু বুদ্ধির লঘু মানব!

তন্ময় সাগর

ব্যাক্কল কথন!

তন্ময় সাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

দোসর!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৩৪

ঠিক স্বপ্ন না । পরাবাস্তব অনুভুতি কাকে বলে সেরকম কিছু কি না, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। ঘুমায়নি বোধহয়। জেগেই আছে।

বাথরুমে পিছলে পড়ে দু পা দুই দিকে। জংঘা বরাবর রক্তের স্রোত। কোমড়ের নিচটা থেতলে বসে আছে বাথরুমের মেঝের ফ্যাকাশে টাইলসে। চোয়াতে চোয়াতে রক্ত পুরো মেঝে ছাপিয়ে ক্ষীণ স্রোতের শব্দ করে জালি বেয়ে নিচে গড়াচ্ছে ।
গাঢ় লাল, কোথাও হালকা লাল, মেঝের ফ্যাকাশে সাদা, অদ্ভুত এক রং তৈরি করেছে। মেঝে ও দেয়ালের মিলনস্থলের কালসিটে দাগ আরো কিম্ভুত আবহ দিচ্ছে। খানিক পড়ে তীব্র ব্যাথায় জ্ঞান ফেরায় ব্যাথার অনুভুতি আরো বাড়লো। মুহূর্তেই বুঝে গেল কী ঘটছে। কী পরিহাসের স্বীকার সে। মাথার মগজ টগ টগ করছে। কান্নায় চোখ টইটুম্বর। এক বিন্দু নড়তে না পারলেও হাত বাড়িয়েই মোবাইলটা পেল পূর্ণেন্দু। কমোড থেকে উঠার সময় মোবাইলটা টিস্যু স্টান্ডের উপরে রেখেছিলো। হাত কাপছে, নিঃশ্বাস ঘন ঘন। মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে যাবে না তো ! রক্তে মাখামাখি হয়ে গেলো মোবাইলটা। অলক্ষেই এক হাত মাথা মুখ থুতনি হয়ে গলায় এসে ঠেকল পূর্ণেন্দুর। জ্ঞান আছে এখনো তার, এটা ভেবেই অবাক হচ্ছে। জ্ঞান হারিয়েছিল সে স্মৃতি বিস্মৃত। হাতের তালুতে থাকা রক্তে মাথা মুখ গলা যে লাল রক্তে ভিজে চ্যাট চ্যাটে হয়ে গেছে সেটা দেখলে পূর্ণেন্দু আবার জ্ঞান হারাতো নিশ্চিত।
পরিতাপের বিষয় কারো নাম্বারই বের করতে পারছে না। ডিসপ্লে রক্তে লাল ও পিচ্ছিল হয়ে গেছে। ঢোক গিললো পূর্ণেন্দু। নিজেকেই সান্তনা দিচ্ছে, মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। রক্ত বের হচ্ছে তো হচ্ছেই। বন্ধ হচ্ছে না। ওর ও নেগেটিভ। রেয়ার গ্রুপ। নাহ। যে করেই হোক কাউকে ডাকতেই হবে। গায়ের জামায় মোবাইলের ডিসপ্লেটা মুছে নিলো। রিং হচ্ছে। কেউ ধরছে না। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ধরলো। কী আশ্চর্য্য গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না। গোঙগান্নি আর কান্না মিলে কেমন যেন একটা শব্দ। ওপাশ থেকে বার কয়েক হ্যালো হ্যালো করে কী মনে করে কেটে দিলো! মরিয়া হয়ে উঠলো পূর্ণেন্দু। বাঁচতেই হবে। বাথরুমে পিছলে পড়লে এরকম হতে পারে সেটা তার ধারনাতেই ছিল না। অথচ তার নিজের সাথেই এমন হল । এতো হৃদয় বিদারক পরিণতি হতে যাচ্ছে তার । ফাঁকা বাসা। গত তিন ধরে একাই আছে সে। কাউকে ডাকতে পারলেও, বাসায় ঢুকতে পারবে না কেউ। সব দরজা জানালা বন্ধ। শীতের দিন। মেইন দরজায় মস্ত তালা। নিঃসাড় হয়ে যাচ্ছে পূর্ণেন্দুর নিচটা। তীব্র ব্যাথা কমে আসছে মনে হয়। ঝি ঝি অনুভুতিটা বাড়ছে, আস্তে আস্তে উঠে আসছে উপরে। সারা শরীরে ছড়াচ্ছে। জ্ঞান হারাচ্ছে না কি সে! নিজের সাথে কথা বলছে পূর্ণেন্দু। গগণ বিদারী চিৎকার করে সে হাক দিলো কেউ বাঁচাও আমাকে! বাঁচাও। বাঁচাও!! ঝিঝি অনুভুতি এখন আর অনুভুতি নাই। দু কানে তীব্র শব্দ ঝিঝি। ঝিঝি। শরীর বেঁকে আসছে। ঘাড় মাথা অসম্ভব ভারি লাগছে এখন পূর্ণেন্দুর। শরীর কাত হতেই মাথাটা বারি খেল পানির ট্যাপে। পানির নল খুলে যাওয়ায় পানি পড়ছে মাথা মুখ গাল চোয়াল বেয়ে। কিন্তু রক্ত ধুয়ে যাচ্ছে না কেন? কী অসম্ভব!

পিঠে ভেজা ভেজা লাগছে! হঠাৎ নিজেকে বিছানায় আবিস্কার করলো পূর্ণেন্দু। এই শীতেও পিঠ ঘেমে একাকার। চোখ বড় বড় করে ছাদে ঝুলানো ফ্যান দেখছে সে আবছা আলোয়। গলা শুকিয়ে কাঠ। মুখে হাত বুলালো। ঢোক গিললো। ঘুমিয়েছিল! এতো জলদি তো তার ঘুমাবার কথা না। স্বপ্ন না দুঃস্বপ্ন দেখলো? জেগেই ছিল? স্বপ্নে অনুভুতি এতো তীব্র হতে পারে!! কী যে হচ্ছে তার সাথে আজকাল....

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ছোট্ট হলেও বেশ হয়েছে....

+++

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩০

তন্ময় সাগর বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: পূর্ণেন্দু মনে হয় মদতদ কিছু খেয়েছে।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩১

তন্ময় সাগর বলেছেন: আতংকে দিন কাটছে পূর্ণেন্দুর!

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: বাপরে কী ভয়ংকর অনুভূতি
খুব ভালো লাগলো

লেখার হাত ভালো মাশাআল্লাহৱ
লিখেন আরও

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩২

তন্ময় সাগর বলেছেন: ধন্যবাদ। মাঝে মাঝে চেস্টা করতে মন চায়। অলস। হয়ে উঠে না।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫৮

ফয়সাল রকি বলেছেন: বেশ চলছিল! আরেকটু হলেই বেচারা বিশ্বাস করে ফেলেছিল সবকিছু, সাথে আমিও।
লেখায় +++

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৩

তন্ময় সাগর বলেছেন: বিশ্বাস করাতে পারলে কাজের কাজ হত।

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: চলে...

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৩

তন্ময় সাগর বলেছেন: চললে তো ভালই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.