নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রূপালী আলোর পথে

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

একরামুল হক শামীম

http://www.facebook.com/samimblog আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। স্বপ্ব দেখতে এবং স্বপ্ন দেখাতে চাই আজীবন।

একরামুল হক শামীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লগের সাহিত্য ও ব্লগ সাহিত্য

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ ভোর ৬:৩৭

ব্লগ কি সাহিত্য? অর্থাৎ ব্লগে আমরা যেসব গল্প-কবিতা পড়ি সেগুলোকে সাহিত্য বলা যায়? আরও কিছু প্রশ্ন প্রাসঙ্গিকভাবেই পাশাপাশি চলে আসে। যদি ব্লগের গল্প, কবিতা, উপন্যাসগুলোকে সাহিত্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাহলে তার ভবিষ্যৎ কী হবে? ব্লগাস্ফিয়ারের বাইরে এদের অবস্থান কেমন হবে? এই প্রশ্নগুলো উঠেছিল ব্লগে কিছু কিছু পোস্টের মাধ্যমে। মোটাদাগে বলতে গেলে এই প্রশ্নগুলো এখন অনেকটাই মীমাংসিত। এপ্রসঙ্গে মনে করে যেতে পারে ২০০৭ সালের একুশে বইমেলায় প্রথম কোন ব্লগারের লেখা বই প্রকাশিত হয়। ব্লগার শুভ (আলী মাহমেদ) এর লেখা বইটির নাম ‌শুভ’র ব্লগিং। ব্লগার শুভর লেখা ব্লগ পোস্টগুলোই বই আকারে প্রকাশিত হয়। বাংলা কমিউনিটি ব্লগের মাত্র ১ বছর ২ মাসের কিছু বেশি সময়ের মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব সামনে এনে দেয় এই বইটি। উত্তরটি হলো ব্লগের পোস্টও বই আকারে প্রকাশ হতে পারে। শুভ’র ব্লগিং বইটিতে মূলত ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে ব্লগার শুভ’র মতামতর্ধমী ব্লগপোস্ট। সেই অর্থে একটি প্রশ্ন অমীমাংসিত থেকে যায়। সেটি হলো ব্লগের গল্প, উপন্যাস কিংবা কবিতা বই আকারে প্রকাশিত হবে কিনা। এই আলোচনাও এরইমধ্যে মীমাংসিত। কারণ ব্লগে প্রকাশিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস এরইমধ্যে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। একটা প্রশ্ন অবশ্য প্রাসঙ্গিকভাবেই করা যায়। এই বইগুলোর সাহিত্যমান কতোটুকু। সাহিত্যের ডিসকোর্সে কতোটা প্রভাব রাখতে পেরেছে ব্লগের কিংবা ব্লগারদের বই। এই আলোচনায় নানামত রয়েছে, বিরোধ রয়েছে। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে কিছু কিছু বই সাহিত্যমানের বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রাখার দাবি করতে পারে।



ভিন্ন আঙ্গিকে যদি প্রশ্ন করা, ব্লগ কি সাহিত্য? এই প্রশ্ন পুরো ব্লগের জন্যই। ব্লগে নানা ধরনের লেখালেখি হয়। এরমধ্যে আছে দিনলিপি, স্মৃতিচারণ, চলমান ঘটনার বিশ্লেষণ, মতামত, জার্নাল, সিনেমা ও বই সমালোচনা, ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক লেখা, ছবি ও ছবির আলোচনা, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ছড়া ইত্যাদি। এরমধ্য থেকে আলোচনার সুবিধার্থে গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও ছড়াকে শুরুতেই সাহিত্য হিসেবে ধরে নেওয়া যাক। এর বাইরে বাকি যে বিষয়গুলো রয়েছে তা কি সাহিত্য? এই বিতর্কে দুইদিকেই ব্লগারদের অবস্থান রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন- ব্লগ সাহিত্য। এখানে লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস তো অবশ্যই সাহিত্য, এর পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় ব্লগে প্রকাশিত হয় যেগুলোকে সাহিত্যের উপাদান হিসেবেই মনে হয়। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন- ব্লগ মূলধারার সাহিত্য না, কারণ এতে দিনলিপি ঢুকে যায় অনেকটাই। দিনলিপির সংস্রবটা সমস্যা না। মূলধারার সাহিত্যে সবটা সাহিত্যিক/শৈল্পিক সৃষ্টি খুব গাঢ় হয়, ব্লগে সেটা ছড়িয়ে থাকে হাজারটা ছোট ছোট কথায়।



কোন কোন ব্লগার অবশ্য ব্লগকে লেখালেখি চর্চা করার জায়গা হিসেবে দেখেছেন। তাদের মতে, ব্লগ লেখালেখি মকশো করার জায়গা হিসেবে মন্দ না। এখানে সম্পাদকের শাসন নেই, প্রত্যাখ্যাত হয়ে নবীন লেখকের মুষড়ে পড়ার ভয় নেই। বরং আছে তাৎক্ষণিক মন্তব্যে ভালোমন্দ যাচাইয়ের সুবিধা। অভ্যাসটা ধরে রাখতে পারলে তা ফল দেবে, কেউ কেউ ভালো লেখকও হয়ে উঠবেন। আবার কোন কোন ব্লগার ব্লগকে লেখকের মার্কেটিংয়ের জায়গা হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। বই প্রকাশে এবং প্রচারের সঙ্গে মার্কেটিং জড়িত। বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের বর্তমান অবস্থা নীরিক্ষা করলে দেখা যাবে এখানে কয়েকজন লেখকের বই-ই ঘুরে ফিরে বেশি বিক্রি হয়। এই সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৫-২০ জনের বেশি হবে না। বাকি লেখকদের বই বিক্রির পরিমান খুবই কম। এই ‘সর্বোচ্চ ১৫-২০ লেখকই’ ঘুরে ফিরে বছরজুড়ে মূল সাহিত্যালোচনায় থাকছেন, পত্রিকার সাহিত্য পাতায় এদের লেখা কিংবা এদের লেখার সমালোচনা ছাপা হচ্ছে। ফলে পাঠক ঘুরেফিরে তাদের লেখার সাথেই পরিচিত হচ্ছেন এবং তাদের বই কিনছেন। যে আলোচনাটি এখানে প্রাসঙ্গিক তা হলো পাঠক যদি কোন লেখকের লেখার সাথে পরিচিত না থাকেন তাহলে তিনি কেন সেই লেখকের কোন বই কিনবেন? ব্লগ এই বিষয়টির ক্ষেত্রে একটি পর্যবেক্ষণ নিয়ে হাজির হয়েছে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ব্লগারদের বই ভালো বিক্রি হয়েছে। এর কারণ ব্লগাররা তাদের লেখালেখি প্রকাশের জায়গা পেয়েছেন, পাঠকের কাছে পৌঁছানোর উপায় পেয়েছেন। তাছাড়া ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে ব্লগারদের সার্কেলও হয়ে গেছে। ফলে নতুন লেখকদের সাহিত্য করার জন্য ব্লগ একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র।



সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে ব্লগের সম্ভাবনার কথা বলতে গিয়ে ব্লগার পান্থ রহমান রেজা লেখেছেন, ‘আমার ধারণা, ব্লগ বর্তমানে আমাদের ভুবনে নতুন বিষয় হলেও আগামী দিনে এটাই লেখালেখির (সাহিত্যচর্চার) বড় একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে। নতুন ব্লগভিত্তিক সাহিত্যিকগোষ্ঠীর পাশাপাশি মুলধারার লেখকরাও ব্লগ সাহিত্যে আসবেন। নিয়মিত লিখবেন। আর এজন্যই ব্লগের পাঠকদের মেজাজ মর্জির খোঁজখবর রাখা দরকার বলে আমি মনে করি। এটা বরং যারা আগামী দিনে ব্লগ নির্ভর সাহিত্য করবেন, তাদের কাজে দেবে। (পান্থ রহমান রেজা, নতুন দিনের ব্লগ সাহিত্য, একটি অভিমত, সচলায়তন, জুলাই ২০০৮)। ব্লগ ও সাহিত্যের পার্থক্য নিয়ে ব্লগেই বেশকিছু বিতর্ক হয়েছে। সেই বিতর্কে ব্লগারদের নানা মন্তব্য এসেছে। সেইসব মন্তব্য থেকে প্রাসঙ্গিক দুইটি মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। ব্লগার ইশতিয়াক রউফ লেখেছেন, “সাহিত্যরস উপলব্ধির জন্য অনেক সময় দরকার, স্থির চিত্ত দরকার। সাহিত্য সময় লিখিত, পঠিত। ব্লগ সেই তুলনায় অনেকটাই ‘দৌঁড়ের উপর’ লেখা। এই গতিই ব্লগকে আলাদা করে দেয় অন্য যেকোন মাধ্যম থেকে। গতির কারণেই লেখার আকার সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে ব্লগে। সময়ের স্বল্পতার কারণেই সময়ের সাথে সাথে আরো গতিশীল মাধ্যম আসবে।” (ইশতিয়াক রউফ, সচলায়তন, ২০০৮)। ইশতিয়াক রউফ ব্লগের গতির কথা বলেছেন। এই কথার সত্যতা মেলে ব্লগের পোস্ট ও মন্তব্যগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে। পোস্ট খুব বড় হলে সহব্লগারদের কাছ থেকে অনুযোগ লক্ষ্য করা যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লগের গতির চর্চা রয়েছে। তবে সময় নিয়ে ব্লগ লিখে তা প্রকাশ করার প্রবণতাও বেড়েছে। ব্লগার রণদীপম বসু মন্তব্যে লেখেছেন, “ব্লগ আর সাহিত্য, দুটোকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায় বেঁধে ফেলা কি ঠিক? সাহিত্য যদি হয় সংযোগ বা সমন্বয়সূত্র, অতীতের সাথে বর্তমানের, লেখকের সাথে পাঠকের, পাঠকের সাথে পাঠকের, যাপিত জীবনের বাস্তবতার সাথে মানবমনের উপলব্ধির, ব্লগ কি এর বাইরে? এই যে আমরা ব্লগরব্লগর করছি, এটা সাহিত্য নয় কে বললো? সাহিত্য তো মঙ্গল গ্রহ থেকে আনা কোন আচানক জিনিস নয়। যদি আসেও, পৃথিবীর সংশ্লেষণে তাও তো সাহিত্যের অংশ হয়ে যাচ্ছে। ব্লগে যিনি কবিতা লিখছেন, যিনি ছড়া লিখছেন, যিনি ভ্রমন কাহিনী লিখছেন, যিনি আজাইরা প্যাঁচালের নামে তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করছেন, যিনি প্রবন্ধ নিবন্ধের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার সংশ্লেষ ঘটাচ্ছেন, কোনটা সাহিত্য নয় ? শুধু গল্প কবিতা উপন্যাস বা প্রবন্ধ নিবন্ধকেই সাহিত্য নাম দিয়ে যারা সাহিত্যকে জানতে অজান্তে গন্ডিবদ্ধ করে ফেলছেন, তারা মূলত ব্লগ নামের দ্রুত কার্যকর ও বিশাল সম্ভাবনাময় একটা মাধ্যমকে খন্ডিত দৃষ্টিতে দেখছেন বলে আমার বিশ্বাস। ব্লগে যিনি কেবল মাত্র মন্তব্য করছেন, তিনিও সাহিত্যস্রোতের বাইরে নন। ব্লগার মানেই হচ্ছে সময়ের অগ্রবর্তী সাহিত্যিক সত্ত্বা।” (রণদীপম বসু, সচলায়তন, ২০০৮)



ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে কি তাহলে লেখক তৈরি হচ্ছে? বাংলা ব্লগিংয়ের সঙ্গে যারা জড়িত তারা এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ-সূচক জবাব দিবেন বলেই মনে হয়। ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে ‘মূলধারার সাহিত্য পাতার’ লেখক হয়ে উঠেছেন। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন ব্লগারের গল্প, কবিতা মূলধারার সাহিত্য পাতায় ছাপা হয়েছে। বলে রাখা ভালো, ‘মূলধারার সাহিত্য পাতায়’ লেখা প্রকাশিত হলেই তাকে লেখক বলা যাবে কিনা সেই বিতর্কে এখানে যেতে চাচ্ছি না। ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে লেখক তৈরি হওয়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক লেখেছেন, “ব্লগে লিখে লিখেই অনেক শক্তিশালী লেখকের সৃষ্টি হয়েছে। ব্লগ কমিউনিটি তাদের লেখালেখির সুযোগ করে না দিলে হয়তো সংবাদপত্র-লিটল ম্যাগাজিনের মতো দ্বাররক্ষক-নিয়ন্ত্রিত মাধ্যমে লেখালেখি করে লেখক হয়ে ওঠা তাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। কেবল সামহ্যোয়ার ব্লগে লিখেই আবির্ভাব ঘটেছে (অ)গাণিতিক (তানভীরুল ইসলাম), আকাশচুরি (তারিক স্বপন), মোস্তাফিজ রিপনের মতো গল্পকারের। ২০০৯ সালে সামহ্যোয়ার-এর ব্লগারদের বাৎসরিক প্রকাশনা ‘অপরবাস্তব ৩’-এ এরকম বেশ কয়েকজন শক্তিশালী নতুন গল্পকারের গল্প প্রকাশিত হয়েছে। আবার সাইবারমাধ্যমে লিখতে লিখতে মুদ্রণমাধ্যমে গ্রন্থপ্রকাশে উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন অনেকেই এবং এর সংখ্যা প্রতি বছর বেড়ে চলেছে।” (ফাহমিদুল হক, বাংলা ব্লগ কমিউনিটি : মতপ্রকাশ, ভার্চুয়াল প্রতিরোধ অথবা বিচ্ছিন্ন মানুষের কমিউনিটি গড়ার ক্ষুধা, যোগাযোগ, ডিসেম্বর ২০১০)। অন্যদিকে কথাসাহিত্যিক ও ব্লগার আহমাদ মোস্তফা কামাল এ সম্পর্কে লেখেছেন, “ব্লগের ক্রমবর্ধমান বিকাশ দেখে মনে হচ্ছে, ক্রমশই এই বিষয়টি তরুণ সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। যারা কোনোদিন লেখার কথা ভাবেনও নি, তারাও হয়তো লিখতে শুরু করেছেন। লিখতে লিখতেই শিখে গেছেন, আলোচনা সমালোচনা উপদেশ পরামর্শ তাদেরকে ধীরে ধীরে গড়ে তুলছে। আর এখানেই ব্লগ অন্যান্য যে কোনো মাধ্যমের থেকে আলাদা ও অধিকতর আকর্ষণীয়। সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমেই এখানে একজন লেখকের গড়ে ওঠার প্রাথমিক কাজটি সম্পন্ন হয়।” (আহমাদ মোস্তফা কামাল, অপরবাস্তব:সাহিত্যচর্চার নতুন ধরন, বইয়ের জগৎ, ২০০৯)



সমকালীন বাংলা কমিউনিটি ব্লগ শিরোনামের একটি লেখায় ব্লগার শেখ আমিনুল ইসলাম লেখেছেন, সবুজপত্র পত্রিকাকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে যে রেঁনেসার সূত্রপাত হয়েছিল, একটি অমিত সম্ভাবনাময় সাহিত্যিক গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছিল, যারা আমাদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনেক উঁচুতে। বর্তমানে বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোকে কেন্দ্র করে তেমনই রেঁনেসা শুরু হয়ে গেছে। ব্লগগুলো থেকে তৈরি হচ্ছেন অনেক প্রতিভাশীল ও অমিত সম্ভাবনাময় কবি ও সাহিত্যিক। বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদী ও সাহিত্যে নব-সংযোজন লিটল ম্যাগাজিনের চর্চা চলছে। এখান থেকেও বের হয়ে আসবে অনেক প্রতিভাশালী লেখক, কবি ও সাহিত্যিক। প্রতি বছর অমর একুশে বই মেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোতে পড়ে যায় সাঁজ সাঁজ রব। বিভিন্ন ব্লগ কর্তৃপক্ষ ও ব্লগারদের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে প্রকাশিত হয় ব্লগারদের কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের বই। এ সব পদক্ষেপই আমাদের বাংলা সাহিত্যকে নিয়ে যাবে অনেক দূর ও অনেক উচ্চতায়। (শেখ আমিনুল ইসলাম, সমকালীন বাংলা কমিউনিটি ব্লগ ভাবনা, সামহ্যোয়ারইন ব্লগ, এপ্রিল ২০১০)



ব্লগের সাহিত্যচর্চা সম্পর্কে বলতে গিয়ে আহমাদ মোস্তফা কামাল লেখেছেন, “গত এক দশকে সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনার একটি হল-ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে লেখালেখির চর্চার উদ্ভব হওয়া। অন্যান্য ভাষায় ব্যাপারটি অনেক আগেই শুরু হলেও বাংলাভাষায় এবং বাংলাদেশে এর উদ্বোধন হয় ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৫ সালে সামহোয়ারইন ব্লগ-এর মাধ্যমে। সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে ঘটনাটি বাংলাদেশে একেবারেই নতুন বলে মূলধারার সাহিত্যজগতে এটি এখনো তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব তৈরি করতে পারে নি বটে, বা মূলধারার সাহিত্য-আলোচনায় অনলাইন লেখকদের কথা উল্লেখিত হয় না বটে, তবে আগামী দশকের শেষে গিয়ে হয়তো দেখা যাবে-এটি বিকল্প গণমাধ্যমের এক গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে উঠেছে, এবং হয়তো সেদিন সাহিত্য-আলোচনায় এই লেখালেখিকে আর অস্বীকার করার উপায় থাকবে না।” (আহমাদ মোস্তফা কামাল, অপরবাস্তব:সাহিত্যচর্চার নতুন ধরন, বইয়ের জগৎ, ২০০৯)।তিনি ছাপা মাধ্যমে লেখালেখির সঙ্গে ব্লগের মতো অনলাইন মাধ্যমের লেখালেখির কিছু পার্থক্য চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো এক. এখানে কোনো সম্পাদকীয় শাসন-অনুশাসন নেই, ফলে যে কেউ যে কোনো ধরনের লেখা প্রকাশ করার অধিকার রাখেন। সেই অর্থে এটি অনেক মুক্ত ও স্বাধীন মাধ্যম। দুই. এই মাধ্যমে লেখক-পাঠকদের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া অত্যন্ত চমৎকার। লেখা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকরা তাদের মতামত জানাতে থাকেন, কোনো প্রশ্ন থাকলে প্রশ্ন করেন, কোনো পরামর্শ থাকলে সেটিও লেখককে জানিয়ে দেন। লেখকও এইসব প্রশ্নের উত্তর দেন, মতামতের ব্যাপারে তার নিজস্ব অবস্থানটি পরিষ্কার করেন। একটি লেখা এইসব বিবিধ মতামত নিয়েই পূর্ণাঙ্গ হয়ে ওঠে এবং অধিকতর আকর্ষণীয় রূপে পাঠকদের কাছে হাজির হয়। তিন. এখানে লেখক-পাঠকদের সম্পর্ক এক তরফা নয়! একজন লেখক একইসঙ্গে পাঠকও, বা একজন পাঠক একসঙ্গে একজন লেখকও। ফলে পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করার একটি চমৎকার মাধ্যম হয়ে উঠেছে এটি। চার. লেখাগুলো সাধারণত উন্মুক্ত থাকে এবং পৃথিবীর যে-কোনো স্থান থেকে যে কেউ যে কোনো সময় সেগুলো পড়বার স্বাধীনতা ভোগ করে থাকেন। অর্থাৎ ছাপা-বইয়ের যেমন দুষ্প্রাপ্যতার একটা ব্যাপার আছে, চাইলেই যে কোনো সময় যে কোনো পাঠক সেটি পড়তে পারেন না, অনলাইনে সেই দুষ্প্রাপ্যতা নেই।



কেউ কেউ বলে থাকেন ব্লগ লেখে কেবল ব্লগারই হওয়া সম্ভব হয়, ব্লগ লেখে সাহিত্যিক হওয়া যায় না। এ ব্যাপারে ব্লগার নীড় সন্ধানী লেখেছেন, “নিন্দুকেরা কিংবা ঈর্ষাবায়ুগ্রস্তরা যাই বলুক, এই তরুণ ব্লগারদের কেউ কেউ একদিন প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক হবেন। প্রকাশকেরা তখন আগাম পয়সা দিয়ে তাঁদের বুকিং দিয়ে রাখবেন, পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদকেরা ঈদসংখ্যার পৃষ্ঠা পূরণ করতে এঁদের শরণাপন্ন হবেন। কিন্তু তখন তাঁর প্রতিষ্ঠার কাল, উপার্জনের কাল, খ্যাতির কাল। উন্মেষের কাল তিনি পেরিয়ে এসেছেন ব্লগেই। জীবনের সেরা লেখাগুলোও রেখে এসেছেন ব্লগে। সবচেয়ে ভালো লেখাগুলো লেখার সময় তিনি সাহিত্যিক স্বীকৃত নন, প্রকাশকের আবদারে গার্বেজ লেখার সময়েই তিনি সাহিত্যিক। (নীড় সন্ধানী, ব্লগ লিখে ব্লগারই হয়, ব্লগ লিখে সাহিত্যক নয়, নির্মান ব্লগ, এপ্রিল ২০১১)



প্রাসঙ্গিক একটি আলোচনা এখানে যুক্ত করা যেতে পারে। বেশ কয়েকজন লেখক তাদের সাহিত্যিক পরিচয় নিয়েই ব্লগে লেখালেখি করতে এসেছেন। অনেকেই ব্লগিংয়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। তবে পর্যবেক্ষণ হলো ব্লগে যে চলমান মিথস্ক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার সাথে অনেক সাহিত্যিকই মানিয়ে উঠতে পারেননি। ফলে অনেক ‘মুদ্রন-লেখক’ কিছু দিন ব্লগে লেখে ব্লগ ছেড়ে দিয়েছেন। এই শ্রেণীর কেউ কেউ পরোক্ষভাবে ব্লগে অসংযত মাধ্যম হিসেবেও অভিহিত করেছেন। অবশ্য কিছু কিছু লেখক ব্লগের মিথস্ক্রিয়ার চ্যালেঞ্জটি (লেখক-পাঠকের মুখোমুখি অবস্থান) মোকাবেলা করেই ব্লগে নিয়মিত লেখে যাচ্ছেন।

মন্তব্য ৪৯ টি রেটিং +২০/-০

মন্তব্য (৪৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:০৬

পটল বলেছেন: ++

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:০১

একরামুল হক শামীম বলেছেন: পড়ার জন্য ধইন্যাপাতা :)

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:৪২

নষ্ট কবি বলেছেন: :) আমি লেখালেখি করার জন্যই ব্লগে এসেছি

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:২৯

একরামুল হক শামীম বলেছেন: দারুন। একটা উদাহরণ হাতের কাছেই পেয়ে গেলাম।

৩| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:২৯

ময়নামতি বলেছেন: আমার মনে হয় ব্লগ ভাবের আদান প্রদানের অন্যতম মাধ্যম,
অনেকের মাঝে অনেক সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে তা প্রকাশ বা বিকশিত করার এটি একটি মাধ্যম।

কারন সাহিত্যের পাতায় নিজের অবস্থান থাকলেও সুযোগ আর সীমাবদ্ধতা এখানে ফেক্টর,
এক্ষেত্রে ব্লগ উম্মুক্ত কিন্তু নজরদারী আছে। কর্তৃপক্ষ কোন একটা পক্ষের দালালী ও করে কেউ আবার নিয়ন্ত্রন করতে চেষ্টা করে।
তার পর নতুন একজন লেখককে সুযোগ করে দিতে ব্লগের প্রশংসা করতেই হবে।
আপনার লেখা ভাল লাগল। প্রিয়তে রাখলাম।++++++++++++

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৩২

একরামুল হক শামীম বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষনগুলো ভালো লাগলো। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৪২

আকাশটালাল বলেছেন: |-) |-) |-)

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৩২

একরামুল হক শামীম বলেছেন: কিতা?

৫| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:০৪

অণুজীব বলেছেন: ভাই কি ব্লগ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন নাকি? :)

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৪০

একরামুল হক শামীম বলেছেন: কাছাকাছি কিছু একটা করছি :)

৬| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:০০

মুনতাশীর বলেছেন: অনেক সুন্দর বিশ্লেষণী পোস্টের ধন্য ধন্যবাদ।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫১

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

৭| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৫৯

ত্রিশোনকু বলেছেন: গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও ছড়া ছাড়াও অন্যান্য লেখাও সাহিত্য হয়ে উঠতে পারে, চার্চিলের Autobiography সাহিত্যে নোবল পুরষ্কার পেয়েছিল যার অনেকটাই দিনলিপি।

অন্যদিকে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ছড়া যদি রসোতীর্ণ না হয় তা হলে বড়জোর তাকে বটতলার সাহিত্য বলা যাবে।

ব্লগ আসলে একটা মাধ্যম। যেটার অস্তিত্ব গত শতকের শেষেও ছিল না।

ছাপাখানা আবিষ্কারের আগে সাহিত্য চর্চার সিংহ ভাগই হত মৌখিক ভাবে। লোকায়ত সাহিত্যের বিশাল অংশই তারপরও মানুষের মুখে মুখে চর্চিত হয়েছে।

ছাপখানা আবিষ্কারের পর যেমন সাহিত্য একটি নতুন ও অপেক্ষাকৃত স্থায়ী মাধ্যম পেয়েছিল তেমনি ইনটারনেট আবিষ্কারের পর ব্লগ নামের একটি মাধ্যম এসেছে সাহিত্য চর্চার যা মানুষের আর্থিক ও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দিয়েছে।

রথী মহারথীরা যে যাই মতামত দিক না কেন এটা অবশ্যম্ভাবী যে ব্লগ সাহিত্য চর্চার একটি শক্তিশালি মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠত হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৬

একরামুল হক শামীম বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো। এই বিষয়গুলো লেখায় যোগ করে নিতে চাই আপনার বক্তব্য আকারে।

৮| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৯

ত্রিশোনকু বলেছেন: অসুবিধে নেই, যোগ করে নিতে পারো।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১৩

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ধইন্যাপাতা

৯| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩৩

চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট।

আমি যখন ব্লগে লেখা শুরু করি তখন ভালো করে লিখতে পারতাম না। কিন্তু ব্লগারদের লেখা পড়তে পড়তে ধীরে ধীরে লেখা আয়ত্তে আসে আমার। এখন আগের চাইতে অনেক ভাল লিখতে পারি ব্লগিং-এর কল্যাণে। :)

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩১

একরামুল হক শামীম বলেছেন: আরেকটা উদাহরণ পাওয়া গেল :)

১০| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:০৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: ব্লগে এসে অনেক ভালো ভালো কবি/গল্পকারের লেখার সাথে পরিচিত হয়েছি। আমি মনে করি তাদের অনেকেরই ব্লগার পরিচয়কে ছাপিয়ে খ্যাতনামা লেখক হয়ে উঠবেন। তখন আমরা গর্ব করে বলতে পারবো, তাদের সূচনা এবং অনুপ্রেরণা ছিলো ব্লগ।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫০

একরামুল হক শামীম বলেছেন: আমারও এমনটাই ধারণা।

১১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:১৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: গুড!!

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪৫

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ধইন্যাপাতা

১২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৫৯

মাহমুদা সোনিয়া বলেছেন: happy blogging :) :) :)

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪৬

একরামুল হক শামীম বলেছেন: শুভ ব্লগিং :)

১৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৩১

রেজোওয়ানা বলেছেন: ব্লগ সাহিত্য চর্চার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠছে, এটা অনস্বীকার্য। এখানে সব চাইতে যেটা বেশি ভাল মনে হয় আমার কাছে, পাঠকের সাথে লেখকের সরাসরি কম্যুনিকেশন। এক্ষেত্রে পাঠকের মূল্যায়ন যদি কোন ব্যাক্তি সম্পর্কের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে (যেটা ব্লগে খুব বেশি দেখা যায়), নিরপেক্ষ মূল্যায়ন হয়, তাহলে সেটা লেখকের নিজের উন্নয়নের জন্য অনেক বেশি ফলপ্রসু হবে।

আর দিনলিপিও ও যে সাহিত্যের অন্যতম একটা ধারা হতে পারে, এমন নিদর্শন বিশ্বসাহিত্যে অনেক অনেক আছে, এই বিষয়ে দ্বিমত পোষনের কোন উপায় নেই।

আপনার বিশ্লেষণ মূলক লেখাটা ভাল লেগেছে.......

১৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৩৩

রেজোওয়ানা বলেছেন: ব্লগ সাহিত্য চর্চার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠছে, এটা অনস্বীকার্য। এখানে সব চাইতে যেটা বেশি ভাল মনে হয় আমার কাছে, পাঠকের সাথে লেখকের সরাসরি কম্যুনিকেশন। এক্ষেত্রে পাঠকের মূল্যায়ন যদি কোন ব্যাক্তি সম্পর্কের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে (যেটা ব্লগে খুব বেশি দেখা যায়), নিরপেক্ষ মূল্যায়ন হয়, তাহলে সেটা লেখকের নিজের উন্নয়নের জন্য অনেক বেশি ফলপ্রসু হবে।

আর দিনলিপিও ও যে সাহিত্যের অন্যতম একটা ধারা হতে পারে, এমন নিদর্শন বিশ্বসাহিত্যে অনেক অনেক আছে, এই বিষয়ে দ্বিমত পোষনের কোন উপায় নেই।

আপনার বিশ্লেষণ মূলক লেখাটা ভাল লেগেছে.......

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪৭

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ব্যক্তি সম্পর্কে প্রভাবিত হয়েই ব্লগে মূল্যায়ন করা হয় বেশি। ফলে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন অনেক সময় হয় না। এই সমস্যা অবশ্য ব্লগের বাইরেও আছে।
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

১৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:২৮

ইশতিয়াক আহমেদ চয়ন বলেছেন: ++++++++++

০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৪:৪৪

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৬| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৫:০১

স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: প্রিয়তে রাখছি
সময় করে মন্তব্য করবো

০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:২২

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ।

মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম।

১৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৫:৩৪

রিয়েল ডেমোন বলেছেন: চুপচাপ দেখে যাওয়া এবং সেই দর্শন থেকে দেয়া আপনার পোষ্টগুলার তুলনা হয় না শামীম ভাই। ব্লগের ভূমিকা ও পৈস্থিতি নিয়ে এই পোষ্ট নিঃসন্দেহে একটি সুন্দর পোষ্ট।

শুভকামনা ভাইয়া। শুভ নববর্ষ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:৩৮

একরামুল হক শামীম বলেছেন: মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

শুভকামনা। শুভ নববর্ষ :)

১৮| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:০৫

সুদীপ্ত কর বলেছেন: ভাল লাগলো আপনার পোষ্ট।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:৪২

একরামুল হক শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

১৯| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৫১

আবু সালেহ বলেছেন: শামীম তোমারে নববর্ষের শুভেচ্ছা......বেজায় ব্যস্ত মনে হচ্ছে....মেসেজ পাইছো....??

ব্লগ পর্যালোচনা ভালা হইছে....++

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:১০

একরামুল হক শামীম বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা সালেহ ভাই। মেসেজ পাইছি :)

ধইন্যাপাতা পড়ার জন্য।

২০| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এমন একটা আর্টিকেল পড়ার আগ্রহ আমার বহুদিনের, বিশেষ করে একটি লিটল ম্যাগাজিনে ছাপবার জন্য। বিশ্লেষণ খুব ভালো লাগলো।

আপনি লিখেছেন, ব্লগে আমরা যেসব গল্প-কবিতা পড়ি সেগুলোকে সাহিত্য বলা যায়? আমার মনে হয় প্রশ্নটা অবান্তর। আপনি পরবর্তীতে জবাব দিয়েছেন নিজেই : আলোচনার সুবিধার্থে গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও ছড়াকে শুরুতেই সাহিত্য হিসেবে ধরে নেওয়া যাক। অর্থাৎ, গল্প, কবিতা, ছড়া, উপন্যাস যা ব্লগে ছাপা হয়, সাহিত্যের সংজ্ঞানুযায়ী এগুলো সাহিত্যই। সংবাদপত্রের সাময়িকীতে, বা বিশেষ সংখ্যাগুলোতে যেসব গল্প, কবিতা, ইত্যাদি ছাপা হয় ওগুলো যেমন সাহিত্য, ব্লগে পোস্ট করা গল্প, কবিতাগুলোও তেমনি। প্রশ্ন বা সন্দেহ থাকতে পারে, ব্লগে গল্প, কবিতা নামে যা পোস্ট করা হচ্ছে ওগুলো সত্যিকারেই গল্প বা কবিতা হচ্ছে কিনা। এটাও আবার অবান্তর প্রশ্ন হয়ে উঠবে- আমি যেটাকে কবিতা বলছি আপনার কাছে সেটা গার্বেজ মনে হতে পারে। অর্থাৎ কোনো লেখাকে যদি গল্প, কবিতা, উপন্যাস বলতে পারি তা সাহিত্য নয় তো কী? বাজারের সওদার তালিকা, খেলোয়াড়দের নামীয় তালিকাকে নিশ্চয়ই আমরা সাহিত্য বলি না।

আপনি শুরু করেছেন প্রশ্ন দিয়ে : ব্লগ কি সাহিত্য? ব্লগকে আমি এ পর্যন্ত যেরূপ দেখছি তাতে একে একটা চলমান সংবাদপত্রের সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যেখানে সংবাদপত্রের প্রায় সব এলিমেন্টই বর্তমান রয়েছে। এখন প্রশ্ন : আমরা কি সংবাদপত্রকে সাহিত্য বলতে পারি? মনে হয় পারি না; সংবাদপত্রের সেই অংশটুকুকে আমরা সাহিত্য বলতে পারি, যেটুকুতে সাহিত্যিক উপাদান রয়েছে। সংবাদপত্রের কলামগুলো সাহিত্যমূল্য বহন করে, এর সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, বিশেষ ফিচার সমূহ সাহিত্যমূল্য সম্পন্ন; অধুনার খেলাধুলার পাতায়, অর্থনীতির পাতায় অনেক সমৃদ্ধ প্রতিবেদন সন্নিবেশিত দেখা যায়, যার মধ্যে সাহিত্যের রসযুক্ত উপাদানগুলো বিদ্যমান থাকে; এসবের বাইরে একটা সংবাদপত্রে আরো নানাবিধ বিষয় থাকে যাতে সাহিত্যের গুণ বা রস বা বৈশিষ্ট্য নেই। ব্লগের লেখাগুলোর ধরণ কিন্তু অনেকটাও ওরকম। অতএব, আমি মনে করি, কোন্‌টা সাহিত্য আর কোন্‌টা তা নয় তা নির্ণয়ের জন্য যেমন কিছু ক্রাইটেরিয়া রয়েছে, সেসব ক্রাইটেরিয়ার বিচারেই ব্লগের সব লেখাকেই সাহিত্য না বলে কেবল সাহিত্যগুণ সম্পন্ন লেখাগুলোকেই সাহিত্য বলা যেতে পারে। বই আকারে ছাপা হলেই কি তা সাহিত্য? এডুকেশনাল ডিসিপ্লিনে সাহিত্য, ইতিহাস, আইন, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ইত্যাদিকে আলাদাভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। তাই বলে কি ইতিহাস বা ফিজিক্সের কোনো বিষয় সাহিত্য হতে পারে না? হ্যাঁ পারে, যখন তাতে সাহিত্যের উপদানগুলো বিদ্যমান থাকে। আজমল স্যারের বায়োলজি বইটা কি সাহিত্য? কিংবা স্টিফেন হকিন্সের এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম?

ব্লগাস্ফিয়ার কোনো স্থায়ী মাধ্যম নয়, যেমন নয় সংবাদপত্রও। এজন্যই সংবাদপত্রে ছাপা হওয়া গল্প, কবিতা, উপন্যাস সমূহ আবার বই আকারে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। ব্লগের লেখকগণও স্বপ্ন দেখেন তাঁদের বই ছাপা হবে (ব্যতিক্রম থাকতে পারেন কেউ কেউ)। তবে, ব্লগ লেখালেখি চর্চার জন্য সর্বোত্তম মাধ্যম নিঃসন্দেহে; লেখা ছাপা হবার জন্য ছুটোছুটি করতে হয় না, এবং অমনোনীত হবার কোনো ভয় নেই- এ হলো সবচেয়ে বড় সুবিধা। তবে দুঃখজনক হলো, প্রতিষ্ঠিত অনেক লেখক ও কবি, যাঁদেরকে আগে এ ব্লগসাইটে দেখেছি তাঁরা অনেকেই ব্লগ ছেড়ে চলে গেছেন, কিংবা খুব অনিয়মিতভাবে ব্লগে আসছেন । হতে পারে, তাঁরা অলরেডি মূলধারার প্রিন্ট মিডিয়ার সাথে জড়িত, তাঁদের লেখা ছাপা হবার জন্য ছুটোছুটি করতে হয় না, অমনোনীত হবারও কোনো ভয় নেই তাঁদের; আবার অনেককে দেখা যায় সাহিত্যচর্চার জন্য ফেসবুককে নিয়েছেন স্বচ্ছন্দ মাধ্যম হিসেবে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, আজকাল লিটল ম্যাগের জন্য তেমন সাড়া পাওয়া যায় না- যাঁরা মানসম্পন্ন সাহিত্য রচনা করেন, তাঁরা বড় পত্রিকাঅলাদের কাছে তা জমা দিয়ে থাকেন, আর যাঁদের লেখা জমা পড়ে তাঁরা খুবই নবীন। ব্লগ এই নবীনদের জন্যই হতে পারে সাহিত্যচর্চার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্রবিশেষ। এঁরা একদিন ম্যাচিউর হবেন, এবং ধীরে ধীরে ব্লগ থেকে সরে গিয়ে মূলধারর প্রিন্ট মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়বেন, সাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা বলতে যা বোঝায়, সেই প্রাপ্তি ঘটবে তখনই।

আবারো বলছি, লেখাটা খুব ভালো লেগেছে। এ বিষয়ে আপনার গবেষণা অব্যাহত রাখবেন আশা করি।

শুভেচ্ছা থাকলো।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৩৬

একরামুল হক শামীম বলেছেন: আপনার মন্তব্যটা খুবই ভালো লাগলো।
আমার লেখাটি কখনও এডিট করলে আপনার বিশ্লেষণগুলোও যোগ করে নেওয়া যাবে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:১৯

জুন বলেছেন: বাংলা সিনেমার বিখ্যাত ডায়লগ 'ছোটো বেলা থেকে ', আমার ও তেমনি ছোটোবেলা থেকেই লেখা লেখি করার খুব শখ ছিল। জানি না কি লিখি তবুও ব্লগে আমি সবরকম লিখেই আমার অনেক দিনের শখটা মিটিয়ে থাকি। এখানে ফিডব্যাকটা খুব সহজে পাওয়া যায় যা আমার ভালোলাগে ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । কিন্ত যখন মাঝে মাঝে শুনি ব্লগ সাহিত্য চর্চার জায়গা নয় তখন আমার ২/১ টা সাহিত্য কর্ম নিয়ে ভীষন লজ্জায় পরে যাই :(

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:১৩

একরামুল হক শামীম বলেছেন: মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ জুন আপু।

২২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:৪০

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: আপনার পোস্ট খুব ভাল লাগল।

ব্লগের সাহিত্য ও ব্লগ সাহিত্য

এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে আপনি চমৎকার একটা কাজ করেছেন। আমার প্রথম প্রশ্ন ঠিক আপনারই মতন। ব্লগে প্রকাশিত গান, গল্প এবং কবিতা সত্যিই কি সাহিত্য পদবাচ্য?

আমরা জানি, প্রচুর পরিমান সাহিত্য পোস্ট আপলোড হয়। ইনফ্যাক্ট একক ক্যাটেগরীতে সর্বাধিক। তবে তার কত শতাংশ সাহিত্য সেটা প্রশ্ন।


ব্লগে বেশ কিছু লেখক লিখতে শুরু করেছেন শুধুমাত্র ব্লগটাতে বিকল্প বা প্রতি মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করে। কিন্তু সবচাইতে বড় যে ব্যাপার টা ঘটেছে এখানে সেটা হল পাঠকে লেখকে মিথস্ক্রিয়া। যা অনেক লেখককে দিয়েছে অসীম প্রেরণা এবং এর ফলেই লেখক কবি গন তথাকথিত মূল ধারায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ব্লগে যার যা মনে আসে তার তা লিখতে থাকার সবচেয়ে বড় সাফল্য হল, বেশ কিছু কবি লেখক তৈরি করেছে ব্লগ, যারা কিনা ব্লগ পোস্ট পড়েই লেখা শুরু করেন। এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তারা প্রতিষ্ঠিত ব্লগারদের ছাপিয়ে আলাদা স্থান নিতে পেরেছেন। তাই সাহিত্যের নামে এই অপচয়টা আমার কাছে সত্যিকার অর্থে অপচয় মনে হয় না। কারণ এই অপচয় টুকুই সাহিত্য মনষ্ক পাঠক তৈরিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে।

আর লেখকদের পরম্পরায় যদি ঘাটতি লাগে তবে একটা সঙ্কট। প্রতি বছর বইমেলার পরে অনেক কবি লেখক ব্লগ লেখা বন্ধ করে দেন। পারস্পরিক অভিজ্ঞতার আদান প্রদান ব্লগের সাহিত্য ধারাকে সমৃদ্ধ করে। তাই এই অনিয়মিত হয়ে যাওয়া কিন্তু নবীন লেখকদের নিজেদের ঝালিয়ে নেবার পথে অন্তরায়।

তার পরেও আমার মনে হয় খুব বেশি দিন নেই তথাকথিত মূল ধারার লেখকদের কাতারে ব্লগ লিখিয়েরা চলেই আসবেন

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:০৯

একরামুল হক শামীম বলেছেন: আপনার মতো আমিও এমনটাই বিশ্বাস করি। ব্লগের অনেকেই এখন খুবই ভালো লেখছে।

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

২৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৪৩

আহসান জামান বলেছেন:
চমৎকার কাজ, ভালো লাগা।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৩০

একরামুল হক শামীম বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ২:৪২

সামাজিক জোছনা বলেছেন: জানলাম।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:০০

একরামুল হক শামীম বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: চমৎকার একটা লেখা। আমি গত একবছর ব্লগে আছি, কিছু বিষয় আমাকে ভাবাচ্ছিল গত কয়েক দিন। আপনার চমৎকার পোস্ট এবং সাথে বিশেষ করে সোনাবীজ ভাইয়ের কমেন্ট খুব ভালো লাগলো!

পোস্ট প্রিয়তে।

শুভকামনা!

২৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার একটি লেখা পড়লাম। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.