নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোজা

মানবিক, যৌক্তিক আর অযৌক্তিক। সোজা কথা আরেকটা মানুষ। দশ জনের ভীরে ডুবে থাকার প্রানান্ত চেষ্টায় থাকা মানুষ।

তানভীর- বিন- হাসান

ভোরের আলোয়, দুপুর রোদে আর হয়নাকো সুড়সুড়ি। হচ্ছি আমি বুড়োই ভীষণ, হচ্ছ তুমি বুড়ি। [email protected]

তানভীর- বিন- হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফাটাকেস্ট।

২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ১:৫৫

ভারতীয় ছবির বিশাল একটা দর্শক আছে বাংলাদেশে। সোজাসাপ্টা ভাবে বলতে গেলে বাংলাদেশী - বাংলা ছবি যা দেখে তার চেয়ে শত, ক্ষেত্র বিশেষে হাজার গুনে বেশী দেখে ভারতীয় ছবি। এখন তালিকায় নতুন যোগ আবার ভারতীয় বাংলা ছবি, যা সংখ্যা টা আরও বেশীতে উন্নিত করেছে। এই প্রসঙ্গে এখানেই একটা উদাহরণ যোগ করি- লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চাকরী করেছিলাম ছয়মাস। বিভিন্ন ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তা ছিলাম, বাসায় ফিরলেই দেখতাম মিঠুন অভিনীত ফাটাকেস্ট চলছে। বিলিভ ইট অর নট- সপ্তাহের ৫ কর্মদিবস শেষে এমন দিন খুব কমই গেছে যেদিন এসে এই একই দৃশ্য দেখতে হয় নি।



হায়- ফাটাকেস্ট!!!



বাংলা চটুল, আধুনিক এবং রোমান্টিক গানের বাজার ভালো হয়েছে ৪/৫ বছর হল, নচেৎ অর্ধযুগ আগেও হিন্দি গান ছিল বাংলাদেশী বিনোদনের অন্যতম খোরাক। বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান হিন্দি দিয়ে শুরু, হিন্দি খ্যামটা দিয়েই শেষ হত।



কিছুদিন আগে মিরাক্কেলে জামিল আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম কে পচানোয় আমাদের মনের যে জ্বলন-পোড়ন, সেটা কিন্তু সে নিজেই আমাদের একজন বলে। মিরাক্কেল টিম তাকে প্রথম করেছে, সেটা একান্তই তাদের ব্যাপার। তারা আমাদের নিচু হওয়াটাকে তাদের জন্যে ইতিবাচক ভাবতেই পারে, অবশ্যই তাদের ব্যাপার। অন্য দেশ, অন্য মানুষ কে নিচু না করলে তারা কিভাবে উপরে উঠবে, এ তাদের ব্যাপার, আপনি তাদের দোষারোপ করতে পারেন না।



আপনি তাদের ঘৃণা করতে পারেন।



অনেকদিন কোন ছবিই দেখা হয় না। এক সময় প্রচুর ছবি দেখতাম। বলাই বাহুল্য, হিন্দি ছবিই বেশী দেখা হত, কিছুটা গানের কারণে, কিছুটা সংস্কৃতিতে সামঞ্জস্যতার কারণে, আমরা অতি সহজেই ভারতীয় ছবির সাথে রিলেট করতে পারি। আর সহজ- সস্তা মানেই জনপ্রিয়তা। একটা সময় খেয়াল করলাম, অনেক সস্তা ভারতীয় ছবিতে কৌতুকের একটা সাধারণ উপজীব্য আমাদের দেশ, আমাদের বাংলাদেশ।



অনেক আগে দেখা একটা ছবির কথা মনে পড়ছে, নামটা খেয়াল নেই, কারণ একটা দৃশ্য দেখেই রিমোট চেপে দিয়েছিলাম। ছবিতে বাংলাদেশ থেকে আসা এক ছেলেকে নিয়ে খুব হাসি ঠাট্টা হচ্ছে আড্ডায়। হাসির কারণ, কোন কারনই খুঁজে পেলাম না, তাকে জিজ্ঞেস করা হল- তু কাহাসে আয়া? সে বলল- বাংলাদেশ। শুরু হল- হাসি!!!!??? আজগুবি, কিছুই বুঝলাম না।



২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 16 th December- একাত্তরের যুদ্ধ কাদের মাঝে হয়েছিল সে ইতিহাস আপনি বেমালুম ভুলে চোখে- মুখে আন্ধার দেখবেন এই ছবি দেখলে।



২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত খুশী- নায়কের বন্ধু মদ্যপ অবস্থায় নায়ক কে যা শোনায় সেটা হল- " আমার সোনার বাংলাদেশ, ভালবাসি"- আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের মদ্যপ সংস্করন। এমন কি জাতীয় সংগীত গাইলেও সেটাকে রবীন্দ্র সংগীত বলেই ইতিবাচক ভাবেই নেয়া যেত, কিন্তু এখানে বাংলাদেশ বলা হচ্ছে।



২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত- হ্যালো ডার্লিং- এক অসৎ, দুশ্চরিত্র কর্মচারীকে শাস্তিস্বরূপ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। তাকে তিনটি শর্ত দেয়া হয়- ১) বাংলাদেশ, ২) পদত্যাগ, ৩) ছাটাই। বাংলাদেশ এতই খারাপ।



হাতে সময় থাকলে এমন হাজারো তথ্য বের করে আনা আমার পক্ষে খুবই সম্ভব। কিন্তু এখন ঘুম আসছে, আর স্মৃতি কাজ করছে না।



আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। সেটা স্বীকার না করা অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই নয়, কিন্তু, মাথা নিচু করে সব সয়ে যাবো বলে কথা নেই।



যা বলতে চাইছি তা হল- ওদের দেশ, ওদের ভাষা, ওদের ছবি, ওদের টাকা, ওদের শিল্পী। ওদের যা ইচ্ছা তাই করতে পারে ওরা। আমরা তাতে বাঁধা দেবার বা আঙ্গুল তাক করে কিছু বলে লাভ নেই। আমরা কি করতে পারি, আমরা ঘৃণা করতে পারি। বাংলাদেশ, এদেশের মানুষ অন্তত সাধারণ ভারতীয় দের কাছে এখন নিচু এক জাতি। সেটা তাদের এই মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার কাজ কর্ম দেখেই বোঝা যায়। তারা সচেতন বা অসচেতন কোন ভাবেই বাংলাদেশ কে গোনায় ধরেনা। আপনার ঘৃণা করতে দোষ কি? আচ্ছা, ঘৃণাই না করুন, নিজের দেশের সম্পর্কে ব্যাঙ্গ শুনলে অন্তত মাথায় রাখুন। ভুলে এড়িয়ে না যান। সচেতন থাকুন, অচেতন নয়।



ছবির প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু করলাম, আইপিএল দিয়ে শেষ করব।



তৈরি থাকুন, শ্রীশান্ত এর মত কুকুর শাবক দের পাপ লঘু করার নিমিত্তে বাংলার একটাও ক্রিকেটার এর গায়ে যদি মিথ্যে পাপের বোঝা চাপানোর চেষ্টা করা হয়, কেউ এড়িয়ে যাবেন না। আমাদের চুপ থাকাটা আমাদের দুর্বলতা নয়। আমাদের কটাক্ষ করা হয়, আমরা কিছু বলিনা বা গায়ে মাখিনা সে আমাদের উদাসিন্য মাত্র।



এইবার আর নয়। পাকি হায়েনাদের যেমন ঘৃণা ছুড়ে দিয়েছেন, তেমন ভারতীয় উন্নাসিক গুলানদেরও ছুড়ে দিন তীব্র শ্লেষের তীর। আমাদের স্বকীয়তা আছে। আমরা বাংলাদেশী। পাক-ভারতের মাঝামাঝি ঝুলে থাকা কীট নই কোন।



আমরা ছবির ফাটাকেস্ট নই কোন, আমরা বাস্তবের মতিউর, রব। আমরা ছবির একশন হিরো নই, আমরা রাজপথের আসাদ, জব্বার।



সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে, সার্থক জনম মাগো তোমায় ভালবেসে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৪৫

বোকামন বলেছেন:



আমরা ছবির ফাটাকেস্ট নই কোন, আমরা বাস্তবের মতিউর, রব। আমরা ছবির একশন হিরো নই, আমরা রাজপথের আসাদ, জব্বার।

২| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৪৮

ইয়ার শরীফ বলেছেন: আমরা বাস্তবের মতিউর, রব। আমরা ছবির একশন হিরো নই, আমরা রাজপথের আসাদ, জব্বার।
+++++++

৩| ২৫ শে মে, ২০১৩ ভোর ৬:০৮

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আমাদের স্বকীয়তা আছে। আমরা বাংলাদেশী। পাক-ভারতের মাঝামাঝি ঝুলে থাকা কীট নই কোন।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৩ সকাল ৯:৩৭

বিডি আইডল বলেছেন: এইটা একটা ট্র্যাশ জাতি

২৫ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

তানভীর- বিন- হাসান বলেছেন: কোনটা ভাই?

৫| ২৫ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৩৬

জাহাজ ব্যাপারী বলেছেন: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টার একটি দিক হলো চলচ্চিত্র। ইন্ডিয়ান সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে। উঠতি বয়সের অনেকে বন্ধু মহলে হিন্দিতে কথা বলে ও ফেসবুকে ইংরেজী হরফে হিন্দিতে স্ট্যাটাস দেয়।
ইন্ডিয়ান সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে বাংলাদেশী স্বকীয়তা যে বিপন্ন তা কোনক্রমেই অতিকথন নয়।

২৫ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

তানভীর- বিন- হাসান বলেছেন: সহমত।

৬| ২৫ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯

গোবর গণেশ বলেছেন: বাংলাদেশের বিনোদন ভালো না লাগলে চুপ কইরা বইসা বিড়ি খাই তবু হিন্দি দেখিনা, শুনি না। ইন্ডিয়ান বাংলা বলেন আর হিন্দি কোনটাই দেখি না। আজকাল দেখার মতো অনেক বাংলা আছে। না থাকলে ইংরেজি দেখি, তবু হিন্দি বা কোলকাতা নয়।

যারা হিন্দিতে কথা বলতে খুব পছন্দ করে, তারা নিজের পরিচয় কতটুকু জানে সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

২৫ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

তানভীর- বিন- হাসান বলেছেন: না হিন্দি, উর্দু, ফার্সি দেখাতে সমস্যা নেই, সমস্যা হল এরা এমুন ক্যান?? অন্যদের পচায়া উপরে উঠার ধান্দা কইরা লাভ কি? সিড়ি তো নিজেরই বাইতে হয়, তাই না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.