নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি সন্তুষ্ট আত্মা। সকল প্রশংসা আল্লাহর।

আমি ব্লগার হইছি!

আমি হলাম পাপীতাপী। আর তোমরা সবাই সাধু।

আমি ব্লগার হইছি! › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযোদ্ধা সাত্তার বলেন, অস্ত্র জমা দিলেও ট্রেনিং জমা দেইনি

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:০৪

মহান মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষে দেশের প্রয়োজনেই জমা দিয়েছিলেন যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র। কিন্তু জমা দেইনি ট্রেনিং। দেশের প্রয়োজনে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, জামায়াত-শিবির আর যুদ্ধাপরাধীদের আস্ফলন রোধে সেই ট্রেনিং কাজে লাগাতে প্রস্তুত আমি। যারা দেশকে আবারও পাকিস্তান বানাতে চায়, সা¤প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সকল মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক জনতাকে এক হওয়ার আহবান জানান তিনি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর উপলক্ষে দৈনিক গ্রামের কাগজের সাথে একান্ত আলোচনায় এসব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও ২৫ মার্চের রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরীহ মানুষের উপর আতর্কিত হামলা আমাদের দারুনভাবে নাড়া দেয়। সিন্ধান্ত নিই যুদ্ধে যাব। ১৯ মে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম ব্যাচে ভারতের বনগাঁ মতিগঞ্জ শিমুলতলা স্কুল মাঠে আমাদের বাছায় করা ১৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ দেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রফেসর শফিউল্যাহ। আমার সঙ্গে আরও যারা ছিলেন তাদের মধ্যে আব্দুল মান্নান, তরিকুল্যাহ, রবি, শাহাজান, লিফটন, খয়রাত, মুরাদ, ফজলু, কল্লোল, ইজ্জত আলী, রকিব অন্যতম। এছাড়াও ভারতের ইস্ট ইন্ডিয়া ক্যাম্প সংলগ্ন বিশাল এক আম বাগানে আমাদের প্রশিক্ষণ দেন হাবিলদার দুধু মিয়া।

কোন কোন এলাকায় যুদ্ধ করেছেন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বুড়িনদিয়া, চৌগাছা, কায়েমকোলা, কাশীপুর, বর্ণি এলাকার যুদ্ধে এফএফ গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছি। এসময় চৌগাছার পাতিবিলা এলাকায় মিত্র বাহিনীর এন্টি এয়ারক্রাপ্টের গুলিতে একটি পাকিস্তানি বিমান বিধ্বস্থ হয়। পাকিস্তানি পাইলট ইসতেকার আহমেদ প্যারাসুটে নেমে আসে। আমাদের সাথে থাকা মঞ্জুর ও হুদা তাকে আত্মসমর্পন করান এবং তাকে ভারতের সেনা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

যুদ্ধকালীন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ভারতের পেট্টাপোল থেকে মেজর এমএ মঞ্জুর ও ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা আমাকে বয়রা নিয়ে যান। ঐ ক্যাম্প থেকে আমরা এসে চৌগাছার গরীবপুরে ২জন পাক সেনাকে গুলি করে মেরে ফেলি। পরে লাশ দুটির হাত-পা বাঁশের সাথে বেধে বয়রা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন আমাদের সাথে পাকবাহিনীর ভয়াবহ ট্যাংক যুদ্ধ হয়। এসময় পাক সেনাদের ছোড়া সেলের টুকরা আমার পায়ে লাগে কিন্তু তার পরেও সহযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকি। ঐদিন আমরা পাকবাহিনীকে পরাজিত করে ৭টি ট্যাংক দখল করে নিই।

যশোর জেলাকে প্রথম শত্রুমুক্ত করা প্রসঙ্গে আব্দুস সাত্তার বলেন, ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে মেজর এমএ মঞ্জুর, ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা, লেফট্যানেন্ট গুপ্ত ও ক্যাপ্টেন আসাদের নেতৃত্বে আমরা চৌগাছা হয়ে যশোর ক্যান্টনমেন্টের দিকে এগোতে থাকি। ৬ ডিসেম্বর যশোর প্রথম শত্রুমুক্ত হয়। পাক সেনারা তখন যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে যশোরের রাজারহাটে অবস্থান নেয়। পরের দিন পাক বাহিনী রাজারহাট ছেড়ে খুলনার শিরোমনি সোনালী জুট মিলে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা আত্মসমর্পন করে। সেখান থেকে তাদেরকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়।

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পর হলেও বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা হলে দেশ কলঙ্কমুক্ত হবে। কিন্তু যুদ্ধের পরাজিত শক্তি এ বিচার বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা যুদ্ধের পরে অস্ত্র জমা দিলেও আমাদের ট্রেনিং জমা দেয়নি। এসব পরাজিত শক্তিকে রুখতে প্রয়োজনে আবারও অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। দেশের সব কলঙ্ক মুছে দিয়ে আমরা একটি সোনার বাংলা গড়তে চাই। এজন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধা-জনতা একতা গড়ে তুলব। বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাড়াবে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এটাই প্রত্যাশা করি।



আজ ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:২০

দায়িত্ববান নাগরিক বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধা সাত্তার বলেন, অস্ত্র জমা দিলেও ট্রেনিং জমা দেইনি

ভালো লাগলো অনেক। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান থাকবে সব সময়। আমরা তরুন প্রজন্মও বেচে যাওয়া বুড়া ও নব্য রাজাকারদের বাংলাদেশ ছাড়া করব।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৩:১৭

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: খুব ভালো কথা বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৩:২৪

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: আপনি যেটা বলেছেন তা যদি সত্যি তরুণ প্রজন্ম করতে পারে তাহলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কিছুটা শোধ করা যাবে।

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:৫৫

এবং আব্দুল্লাহ বলেছেন: দুঃখে চৌক্ষে ফানি আই ফড়ল।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৩:২০

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: আপনার কাছে কি ফানি মনে হলো ব্যাপারটা? দু:খ টা কার জন্যে?
মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আমরা গর্ব করি।

দায়িত্ববান নাগরিক বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান থাকবে সব সময়। আমরা তরুন প্রজন্মও বেচে যাওয়া বুড়া ও নব্য রাজাকারদের বাংলাদেশ ছাড়া করব।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৩৩

ছন্নছাড়া সিফাত বলেছেন: ভালো লিখেছেন ভ্রাতা ++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৫

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: ধন্যবাদ সিফাত ভাই

৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৭

বদ বলেছেন: মুক্তি যোদ্ধাদের ঋণ শোধ করতে সার্টিফিকেট ধারীদের আরো বেশি করে টাকা দেওয়া দরকার

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:০০

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: টাকা দিয়ে কি মুক্তি যোদ্ধাদের ঋণ শোধ হ্য় মনে করেন আপনি?
দু:খ লাগলো আপনার কথায়। সামান্য শ্রদ্ধা তাদের প্রতি আপনার নেই।

৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৫

htusar বলেছেন: ভাল লেখা।

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৪৪

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.